আমেরিকার নির্বাচন, ইলুমিনাতির ক্ষমতা এবং বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ভবিষ্যৎবাণী করার ক্ষমতা
------------------------------------------------
ইলুমিনাতি নামের একটা শক্তিশালী সংগঠন আছে বিশ্বজুড়ে । বিশ্বের সকল বড় বড় রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক , সেলিব্রেটি, বিজ্ঞানী--সবাই এদের দলে।
আড়াল থেকে এরাই বিশ্বকে কন্ট্রোল করে।
দুরুম দুরুম করে এরাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে দেয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবে, সেটা অনেক আগেই ইলুমিনাতিদের কার্টুনে ছাপা হয়েছিল ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি বাদশাহ এর সাথে সমঝোতা চুক্তি করবে, সেটাও ইলুমিনাতিরা আগেই বলে গিয়েছিল। সিম্পসন কার্টুনের পাতায় ছাপা হয়েছিল সেই ছবি।
যেহেতু ,পুরা বিশ্ব ইলুমিনাতিদের কন্ট্রোলেই চলে, তাই তারা যা চায়, তাইই করতে পারে। তারা যা ঘোষনা দেয়, সেটাই বাস্তবায়ন করতে পারে। ফ্রেঞ্চ রেভোলুশন, আব্রহাম লিংকনের মৃত্যু সহ বিশ্বকে নাড়া দেওয়ার মত অনেক ঘটনার পিছনেই রয়েছে ইলুমিনাতি।
আজ ৩রা নভেম্বর, আমেরিকার ইলেকশন হচ্ছে। বলুন তো, কে জিতবে ? ইলুমিনাতি কাকে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে?
বাংলাদেশে এখন রাত ১০ টা । আমেরিকায় সকাল ১১ টা। আর ১২ ঘন্টা পরেই জানা যাবে , কে হবে প্রেসিডেন্ট। তার আগেই ভবিষ্যতবাণী করুন, কে হবে প্রেসিডেন্ট।
রেজাল্ট বের হওয়ার পরে, 'আমি আগেই বলেছিলাম' কিংবা 'অমুক বইতে লেখা ছিল' এমন কথা গ্রহনযোগ্য নয়। যা বলার, এখনই বলুন ।
২.
বিজ্ঞান বনাম অপবিজ্ঞান ( কিংবা থিওরি বনাম কন্সপাইরেসি থিওরি) কে পার্থক্য করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল -প্রেডিকশন। ভবিষ্যতবাণী করার ক্ষমতা ।
বিজ্ঞান প্রচুর ভবিষ্যৎবাণী করে, এবং সেগুলার একুরেসিও ভাল । অপবিজ্ঞান ভবিষ্যৎবাণী করতে চায়না খুব একটা। কখনো করলেও সেগুলার একুরেসি খুব কম ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রচুর ভবিষ্যৎবাণী করে,যে আগামী অমুক তারিখে পূর্নিমা হবে, অমাবশ্যা হবে , সূর্যগ্রহন হবে, চন্দ্রগ্রহন হবে, উল্কা বৃষ্টি হবে, ধূমকেতু দেখা যাবে, গ্রহানু আসবে পৃথিবীর কাছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এদের সব ভবিষ্যৎবাণী ই মিলে যায় ,মিনিট সেকেন্ড ধরে।
অন্যদিকে জ্যোতিষী (অপবিজ্ঞান) রা কি বলে? তারা গ্রহ নক্ষত্র হিসাব করে। রাশিফল হিসাব করে বলে, আজ আপনার অর্থযোগ শুভ। দূরের যাত্রা অশুভ ইত্যাদি ইত্যাদি ।
লক্ষ্য করুন, এদের প্রেডিকশন কিন্তু নির্দিষ্ট নয়। 'আজ সকাল ১১টা ২৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে আপনি মীরপুর ১০ নাম্বারের রাস্তায় বিহংগ পরিবহনের গাড়িতে দুর্ঘটনায় পড়বেন''--এমন সুনির্দিষ্ট কথা কিন্ত তারা বলে না।
যতটুকু বলে, ( যেমন- দূরের যাত্রা অশুভ ) সেটারও বিভিন্ন মিনিং থাকতে পারে, এবং সেটাও মেলে বেশ কম।
অন্যদিকে, বিজ্ঞান যেটা প্রেডিক্ট করে * যেমন- আজ সকাল ১১ টা ২৭ মিনিটে সূর্যগ্রহন শুরু হবে, শেষ হবে বিকাল ৩ টা ৪১ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে --সেগুলা একেবারে মিনিটে সেকেন্ডে মিলে যায় ।
বিজ্ঞান কাজ করে অতীত ডাটা নিয়ে, ম্যাথমেটিকাল ইকুয়েশন নিয়ে। একটা গাড়ি ৬০ কিলোমিটার পার আওয়ার স্পিড নিয়ে জার্নি শুরু করলে ১০ মিনিট পরে সেটা কোথায় থাকবে, আপনি ইজিলি অংক করে বের করতে পারবেন ( S=ut+0.5at2 সূত্র) । টেকনাফ থেকে জার্নি শুরু করলে সে কবে তেতুলিয়ায় যাবে, সেটাও বের করতে পারবেন। আকাশের গ্রহ উপগ্রহ গ্রহানু ধূমকেতুরা কবে কখন পৃথিবীকে আঘাত করবে ,সেটাও নিশ্চয়ই বের করতে পারবেন ।
যেসব ঘটনা অনেক নতুন, পর্যাপ্ত ডাটা অনেক কম, সেখানে সূত্র বানাতে একটু সময় লাগে। করোনা মহামারীর সময় কত মানুষ মারা যাবে, সেই প্রেডিকশন একারনে খুব বেশি একুরেট হয়নি। তারপরেও ,অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তারের প্রেডিকশন একুরেসির অনেক কাছে গিয়েছে। যেমন-আমেরিকার ট্রাম্পের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডাক্তার এন্টনিও ফাউচি বলেছিলেন, আমেরিকায় ২ লাখ মারা যাবে করোনায়, অলরেডি মারা গেছে ২ লাখ ৩৭ হাজার।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিবিসির হাতে গত ২০০ বছরের ডাটা আছে। আধুনিক মেশিনপত্র দিয়ে তারা উপগ্রহের ছবি তুলতে পারে। বেশি বেশি ডাটা কালেক্ট করতে পারে। ফলে তাদের প্রেডিকশন বেশি একুরেট হয়।
বিবিসি প্রেডিক্ট করে, এ্যাশেজের ক্রিকেটে ম্যাচে দুপুর ১ টা থেকে ১ টা ৪০ পর্যন্ত বৃষ্টি হবে, তারপরে আর হবেনা । দেখা যায়, তাদের প্রেডিকশন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বা স্পার্সোর হাতে ডাটা কম। এ কারনে তাদের প্রেডিকশন একটু খারাপ হয়।
Mars Weather নামে একটা ফেসবুক পেজ আছে। ওরা খুবই একুরেট ওয়েদার প্রেডিকশন দেয়। ওরা জানায়, আজ বিকাল ৫ টা ১৫ মিনিট থেকে ৬ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টি হবে।
দেখা যায়, সত্যি সত্যিই সেই সময় বৃষ্টি হচ্ছে। পোলাপান ধুমায়া লাইক কমেন্ট থ্যাংক ইউ শুভেচ্ছা জানায়। কিন্তু ,কাহিনী হচ্ছে, ওরা এই প্রেডিকশন ফেসবুকে পোস্ট করে ৫ টা ২০ মিনিটে। মানে , বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেখে এডমিন তাড়াতাড়ি পেজে পোস্ট দিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও এইরকম। দল যখন খুব ভাল খেলে, জিতে যায়, তখন বলে, ''আমিই বলেছিলাম। আমিই মেহেদি মিরাজকে দলে ঢুকিয়েছি। আমিই একজন ব্যাটসম্যান কে বাড়তি খেলিয়েছি। আমিই টস জিতে ব্যাট করতে বলেছি। আমি আগেই জানতাম এই করলে এইই হবে। আমি আগেই জানতাম আজ ওরা জিতবে' ইত্যাদি ইত্যাদি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত কিছু জানায় সে ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। আগে কিছুই বলেনা।
৩.
অনেকে অনেক প্রাচীণ গ্রন্থ দেখিয়ে বলে, এই গ্রন্থে আগেই ভবিষ্যৎবাণী করা ছিল যে এমুনটাই ঘটবে। গ্রন্থের কথা অলংঘনীয়। এখানে যা লেখা আছে, সেটা অক্ষরে অক্ষরে মিলবেই।
এই 'গ্রন্থবাদী' দের ক্ষেত্রেও একই কথা । ঘটনা ঘটার আগেই কেউ প্রেডিকশন করতে পারেন। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে জানায়, অমুক বইয়ের চিপায় অমুক কথা লেখা ছিল। আমি আগেই বলেছিলাম !!!!
নস্ট্রাডামুস (১৫০৩-১৫৬৬) বোধ হয় এই লাইনে সবচেয়ে পপুলার। ফ্রান্সের এই লোক ছিলেন একইসাথে ওষুধ প্রস্তুতকারক , ওষুধ বিক্রেতা এবং গণক/ ভবিষ্যতবক্তা। Les Propheties নামের একটা বই তিনি লিখেছিলেন। তার শিষ্যরা দাবি করেন, এই বইয়ের প্রেডিকশনগুলা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়।
তার বইয়ে একটি কবিতা আছে---
"পঞ্চ এবং চল্লিশ ডিগ্রি আকাশ পুড়বে,
নতুন শহরের বড় আকারের অগ্নি অগ্রসর হয়:
এক মুহূর্তে একটি বড় আকারের শিখা ঝপিয়ে ছড়িয়ে পড়বে,
যখন নর্মান দ্বারা প্রমাণ রাখতে চাইবে।"
নস্ট্রাডামুসের শিষ্যরা দাবি করেন , এখানে নস্ট্রাডামুস নাইন ইলেভেনের টুইন টাওয়ার হামলার কথা বুঝাইছে । নিউ ইয়র্ক মানে নতুন শহর। পঞ্চ এবং চল্লিশ ডিগ্রি মানে ৪৫ ডিগ্রি অক্ষাংশ ,বা ৪০.৫ ডিগ্রি অক্ষাংশ , যা টুইন টাওয়ারের অবস্থানের কাছাকাছি।
এই কবিতাকে অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়। নতুন শহর দিয়ে নিউ জার্সি, নিউ হ্যাম্পশায়ার,নিউজিল্যান্ড যে কোনো কিছুই বোঝানো যায়। ৪৫ ডিগ্রি অক্ষাংশে ফ্রান্স ,জার্মানি,রাশিয়া সহ যে কোন উত্তর গোলার্ধের শহরকেই বলা যায় 📷
নস্ট্রাডামুসের আরেকটি কবিতা শোনায়।
ক্ষুধার সঙ্গে ভয়ঙ্কর পশুগুলো নদী অতিক্রম করবে,
বেশীরভাগ সেনাবাহিনী হবে নিম্নতর দানিয়ুবের বিরুদ্ধে।
বড়দের একটি লোহার খাঁচায় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে,
যখন কোনও জার্মানি শিশুরা দেখবে না।
এই প্রেডিকশন থেকে কি বুঝলেন ? মধ্যযুগে ইউরোপে প্রচুর যুদ্ধ হত, সেগুলার কথাই বুঝাইছেন তিনি?
না , নস্ট্রাডামুসের শিষ্যরা মনে করেন, এখানে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ এবং হিটলারের কথাই বুঝানো হয়েছে।
চাইলে আপনি এটাকে অনায়াসে আইউব খান এবং ১৯৭১ এর পাকিস্তানি আর্মির কথাও বলতে পারেন।
কথা হচ্ছে, ঘটনা ঘটার আগে নস্ট্রাডামুসের বই কিছু বলতে পারল না কেন ? ২০২০ সালে করোনা মহামারি হবে, এ বিষয়ে তার বই নীরব কেন ?
নাকি, করোনার ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হওয়ার পরে চিল্লায়ে উঠবে, ''আমিই বলেছিলাম। নস্ট্রাডামুসের লা প্রফেসি বইয়ের এত নাম্বার পৃষ্ঠায় লেখা আছে, অমুক দেশের অমুক বিজ্ঞানী এই এই ফর্মূলায় ওষুধ বানাবে''
৪.
ইলুমিনাতি নামে একটা সংগঠন ছিল জার্মানিতে । ১৭৭৬-১৮০০ পর্যন্ত কার্যকলাপ ছিল। এরপর বন্ধ হয়ে যায়।
তাদের বেশ কিছু কাজ প্রচলিত ধর্মমতের বিরুদ্ধে যায়। এজন্য চার্চ তাদেরকে বিদ্রোহী/শয়তানের উপাসক ইত্যাদি বলত। কিন্তু তাদের নিজেদের কার্যকলাপে জ্ঞান চর্চা ছাড়া আর কোনো ধরনের আলামত পাওয়া যায়না।
একই ধরনের সংগঠন ছিল কোলকাতায় ,ইয়ং বেংগল মুভমেন্ট ( ১৮২০-১৮৬০) কিংবা ঢাকায় শিখা গোষ্ঠী (১৯২০-১৯৩০) যারা প্রচলিত ধর্মমতের কথা না শুনে জ্ঞানচর্চায় বেশি মনোযোগী হয়েছিল।
২০০০ সালে এঞ্জেলস এন্ড ডেমন্স নামে একটি থ্রিলার বই প্রকাশিত হয়। বইয়ের মধ্যে কাহিনীর প্রয়োজনে লেখকরা অনেক কিছুই ঢুকান। এলিয়েন, ইউ এফ ও, মারমেইড, ভ্যাম্পায়ার--বহুত কিছুই গল্পে পাওয়া যায়। কিন্তু এই বইয়ের লেখক, ড্যান ব্রাউন, তার গল্পের প্রয়োজনে দেখিয়েছেন, ১৭৭৬ সালের ইলুমিনাতি এখনো শেষ হয়নি। তাদের বংশধরেরা এখনো বেচে আছে। তারা বিশ্বের চিপায় চিপায় গুরুত্বপূর্ন জায়গায় বসে আছে। স্ট্রাটেজিকালি পৃথিবীকে কন্ট্রোল করতেছে তারা।
ইলুমিনাতির এই গল্পটা বেশ জনপ্রিয়তা পেল। ইলুমিনাতি নিয়ে সিনেমা হল, গেম হল। অনেকেই বিশ্বাস করলেই এই সংগঠনের কথা। কিছু পোলাপান ইলুমিনাতি অফিসিয়াল নামে নামে একটা ওয়েবসাইট ও খুলে ফেলল । ব্লু হোয়েল গেমসের মতই একটা বিশ্বব্যাপী গুজব ছড়িয়ে পড়ল।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রচুর শিক্ষিত সচেতন মানুষ ও ইলুমিনাতির অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন। ফেসবুকে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৩% মানুষ বিশ্বাস করেন, ড্রাকুলার অস্তিত্ব আছে। আর ২৭% বিশ্বাস করেন, ইলুমিনাতির অস্তিত্ব আছে।
১৮৯৬ সালে ব্রাম স্টোকার নামের এক লেখক 'কাউন্ট ড্রাকুলা' নামের এক বই লেখেন। এই বইতে তিনি নতুন প্রজাতির এক ভূতের বর্ননা দেন, যারা রক্ত খায়, বাদুড়ের মত উড়ে বেরায়, দিনে ঘুমায় রাতে জাগে , কফিনের মধ্যে শুয়ে থাকতে পছন্দ করে । এই বই লেখার পরে প্রচুর মানুষ দ্রাকুলা/ভ্যাম্পায়ারে বিশ্বাস করা শুরু করল।
২০০০ সালে এঞ্জেলস এন্ড ডেমন্স বই লেখার পরে ইলুমিনাতি বিশ্বাসী ভক্তদের পাওয়া গেল। এর আগে এরা কেউ কোথাও ছিলনা। বই এবং সিনেমা থেকে সবাই শিক্ষা লাভ করেছে। এরপরে আরো শত শত বই লেখা হয়েছে এই ইলুমিনাতি বিষয়টা নিয়ে। যদিও একাডেমিকরা বারবার খুজেও এদের সাম্প্রতিক কোনো কর্মকান্ডের কোনো প্রমাণ খুজে পাননি।
ইয়ং বেংগলরা যেমন ১৮৬০ এর পরে নাই হয়ে গিয়েছিল, শিখা গোষ্ঠী যেমন ১৯৩০ এর পরে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, ইলুমিনাতিও ১৮০০ এর পরে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
তো, আপনি কোন দলে ? ২০২০ সালে ইলুমিনাতির অস্তিত্ব আছে নাকি নাই ? কি মনে করেন আপনি ?
২৭% ইলুমিনাতি বিশ্বাসীদের কাছে আহবান করছি, আপনারা প্রমাণ দেখান প্লিজ। ট্রাম্প নাকি বাইডেন , কে জিতবে , মানে ইলুমিনাতিরা কাকে জিতাবে , আগে আগে বলে দিন ।
--------------------