বাগেরহাটের ফকিরহাটে খুলনা-মংলা ও বাগেরহাট মহাসড়ক দিয়ে দেদারে পাচার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ চিংড়ি রেনু পোনা ও মাদক। এই কারবারে সক্রিয় স্থানীয় একাধিক সিন্ডিকেট। নিম্নমানের চিংড়ি রেনু পোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মৎস্য খামারিরা। ছেয়ে যাচ্ছে মাদক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পাশের দেশ ভারতের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর ও সাতক্ষীরা হয়ে খুলনার জিরোপয়েন্ট থেকে বাগেরহাটে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে চিংড়ি পোনার সঙ্গে আসা মাদক। অন্যদিকে ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুুয়াকাটা, বরিশাল থেকে আসা নদী ও সাগরের নিষিদ্ধ রেনু পোনা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রো বাস, মিনি কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে করে প্লাস্টিকের ড্রাম, কলসি ও ককসিটের ভেতর শুকৌশলে ভরে পাচার হচ্ছে চিংড়ি রেনু পোনা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশা দ্রব্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিংড়ি চাষীদের রেনু পোনার চাহিদা মেটাতে প্রশাসনের কিছুটা নমনীয় আচারণে মাদক চোরা কারবারীরা বেছে নিয়েছে চিংড়ি পোনা ব্যবসায়ীর ছদ্দবেশ। ফলে মাদক ও নিষিদ্ধ রেনু পোনা চোরকারবারীদের কাছে ফকিরহাটে হয়ে উঠেছে নিরাপদ রুট। ফকিরহাটে থ্রি-হুইলার মাহেন্দ্র চালক সেলিমের নেতৃত্বে একটি চক্র আহরণ নিষিদ্ধ রেনু পোনা রাতের আঁধারে দূরপাল্লার যানবাহন থেকে নামিয়ে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিংড়ি রেনু পোনা ব্যবসায়ী ও আহরণকারীরা বলেন, বিভিন্ন আড়ত মালিকদের কাছ থেকে চিংড়ি পোনা দেওয়ার জন্য দাদন নিয়ে পোনা সংগ্রহ করেন তারা। সাগর ও নদী থেকে পোনা ধরা নিষেধ থাকলেও প্রশাসনকে রাজি খুশি করে চিংড়ি পোনা ধরা হয়। কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরকে রাজি খুশি করে রাতের আঁধারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোল্লাহাট সীমান্তবর্তী মাদ্রাসা ঘাট, ফকিরহাটের ফলতিতা মৎস্য আড়ত, গোডাউন মোড়, আরা ফিলিং স্টেশন, খান ফিলিং স্টেশন, সাধের বটতলা থেকে বাইপাস সড়ক পিলজংগ হয়ে কাঠালতলা যাওয়ার পথে, টাউন নওয়াপাড়া মোড়ে, কাটাখালী, শুকদাড়া, খুলনা-বাগেরহাট মাহাসড়কের মহাদেবের দোকান, মাথা ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যায় চিংড়ি পোনা। মাদক ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে অনেকেই বাধ্য হয়ে রেনু পোনার সঙ্গে মাদক আনতে বাধ্য হন। মাদক ব্যবসায়ীদের কথা না মানলে রেনু ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়া হয় প্রশাসনের হাতে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিক্রয় নিষিদ্ধ সাগর ও নদীর রেনু পোনার সঙ্গে আসা মাদক মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে পথে নামিয়ে নেয় পূর্ব নির্ধারিত ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিরা।
থ্রি-হুইলার মাহেন্দ্র, নছিমন, করিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে রাতের আঁধারে অনায়াশেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে মাদকসহ বিক্রয় নিষিদ্ধ চিংড়ির রেনু পোনা।
কতিপয় সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় ফকিরহাটের সদর এলাকায় রেল রোড, ফলতিতা বাজার ও রামপালের ফয়লা বাজার এলাকায় প্রতিদিন ভোরে বসে বিক্রয় নিষিদ্ধ রেনু পোনার হাট। অন্যদিকে ভারত সীমান্ত থেকে আসা ও ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, বরিশাল এলাকা থেকে যাওয়া চোরা কারবারীদের কাছ থেকে কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের নামে হরিনটানা থানা ও রূপসা টোল প্লাজা এলাকায় চাঁদা আদায় করে গোপাল (৩০), সুজনসহ(২৮) অজ্ঞাত নামা কতিপয় ব্যক্তি।
ফকিরহাট উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিত বলেন, ফকিরহাটে আট হাজার চারশ চিংড়ি চাষীর কয়েক কোটি চিংড়ি পোনার চাহিদা রয়েছে। আমরা চাষীদের মান সম্মত হেচারির রেনু পোনা চাষ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে হ্যাচারির মান সম্মত রেনুপোনার সঙ্কট দেখা দেওয়ায় অনেকেই বিকল্প পথ অবলম্বন করে। জনবল সঙ্কট থাকায় সেই আকারে অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। তবে নিম্নমানের ও বিক্রয় নিষিদ্ধ রেনুপোনা বিক্রয় প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাটাখালী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, রেনু পোনার আড়ালে মাদক চোরা কারবারিদের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে তথ্য পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, নদী-সাগর বা হ্যাচারির রেনু পোনা তাৎক্ষনিক সনাক্তের কোনো যন্ত্র আমাদের কাছে না থাকায় অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়না।
If you like my work then please support me with your like comment and subscribe ♥️😃
since they have this idea, let them act fast before it is too late