পর্ব:১
ছোটখাটো একটা ছাতা মাথার উপর। আগের ছাতাটা কত ভাল ছিল। আব্বুর ছাতাটা। খুব সহজে ২-৩ জন থাকা যেত। আর এখন এই পিচ্চি ছাতায় ভিজে শেষ গালিব। ছোট ছাতা ব্যবহার না করলে নাকি স্মার্ট হওয়া যায় না। তাই একটা ছোট ছাতা কিনেছে কাল। এই বৃষ্টির মধ্যে চোখে sun glass. এটাকে এখন rain glass বলে মনে হচ্ছে। খুব বিরক্ত লাগছে চোখে এটা পরে থাকতে। চশমা ! ওহ কি বিরক্তিকর একটা জিনিস। কিন্তু কিছু করার নেই, স্মার্ট হতে হলে sun glass টাকে rain glass বানিয়ে হলেও পরতে হবে। প্রিয়তিকে খুব ভালবাসে গালিব। আর মেয়েটার জন্য একটু স্মার্ট হতেই হবে। সম্পর্ক নয়ত টিকবে না, বলে দিয়েছে প্রিয়তি। বড় ছাতাটা দেখে সেদিন কি চিল্লাচিল্লি না করল প্রিয়তি। তাই ছোট ছাতা কেনা। অবশ্য ঠিকই বলছে । প্রিয়তি কত স্মার্ট অত সুন্দর। ও যদি একটা পাগল পাগল টাইপ , আনস্মার্ট ছেলের সাথে ঘুরে কেমন লাগে না। গালিব এক জামা দিয়েই অনায়েসে সপ্তাহ পার করে দিতে পারে। কিন্তু এখন আর তা করলে হয় না।- তোমার কি এই একটাই জামা? - না, তা হবে কেন? - তাহলে এই ময়লা জামা পরে প্রতিদিন আসো কি ব্যাপার? - খুব আলসেমি লাগে জামা বের করতে। - জামা কি সব সিন্দুকে ঢুকিয়ে রাখছ নাকি? যে বের করতে আলসেমি লাগে। - আরে না। কি বল। এই যুগে সিন্দুক পাব কই? ঘুছিয়ে রেখে দিছি মাথার কাছে। প্রিয়তি বাম ভ্রু উঁচু করে তাকাল গালিবের দিকে। প্রিয়তিকে এই অবস্থায় দেখতে অসাধারণ লাগে। গালিবও একটু বাম ভ্রুটা উঁচু করার চেষ্টা করল।খুব অদ্ভুত লাগছে দেখতে। - এই এই চোখ এমন করছ কেন তুমি? - একটু তোমার মত করার চেষ্টা করছি। - আণ্ডা। চোরের মত লাগতেছে তোমাকে। - এসব কি কথা। তোমাকে না কি সুন্দর লাগে। - আমাকে লাগবেই। আমি তোমার মত ময়লা জামা পরে ঘুরি নাকি। তুমি কি নোংরা!! - জামা পরলে পুরনো হয়ে যাবে না? তাই এটা নষ্ট হবে আগে তারপর অন্যটা পরবো। একটু পাশে এসে গালিব হাত ধরতে যাচ্ছিল প্রিয়তির। দূরে সরে গিয়ে প্রিয়তি বলল- একদম ধরবা না আমাকে ময়লা জামা পরে। কি জঘন্য। ভাবা যায় তুমি নতুন জামা তুলে রেখে এই পচা ময়লা জামা পরে আমার সাথে দেখা করতে আসছ। তুমি এমন কেন? একটু স্মার্ট হতে পার না? আসলেই তো গালিব এমন কেন? একটু স্মার্ট হতে পারে না? আজ স্মার্ট হয়ে আসছে গালিব। মাথার চুল গুলো উপরের দিকে স্পাইক করে এসেছে হেয়ার জেল দিয়ে। - তুমি কি এভাবেই চুল আঁচড়াবে? - কিভাবে? - এই মদন মদন ভাবে। - কই? ভালই তো এটা। সবাই ভদ্র বলে চুল দেখে আমার। একদিন কি হল জানো, এক লোক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে। বসে করলেও হত। খুব মেজাজ খারাপ হল। আমি পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম হাতে আমড়ার আচার নিয়ে। এই দুর্গন্ধে। খাওয়া যায় বল? কি আর করা। আসতে করে দিলাম এক লাথি ব্যাটাকে পিছন থেকে। লোক তো তারাতারি করে ঠিকঠাক হয়ে পিছন ফিরে তাকাল। কে এই কাজ করল দেখার জন্য। আমার চেহারা দেখে তার মনে হয়নি যে আমি এই কাজ করেছি। বুঝ না, চেহারায় তো আমার innocent ভাব। উনি আমার কাছে জানতে চাইলেন আমি দেখেছি কিনা এই কাজ কে করেছে। আমি দুর্গন্ধের মধ্যে আচার খেতে খেতে বললাম, না তো আংকেল। তবে এক ছেলেকে দৌড়ে যেতে দেখলাম। আংকেল তো খুব আক্ষেপ নিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন। শান্তি মতন পরিবেশও নষ্ট করতে পারলেন না। হাহা। - এই চুপ। কি সব কথা বলতেছ। এর সাথে চুলের কি সম্পর্ক? - আছে। আমার চুল দেখেই উনি বুঝলেন যে এই অপকর্ম আমাকে দিয়ে করা সম্ভব না। - তুমি কি হেয়ার স্টাইল চেঞ্জ করবা কি করবা না বল। - না করলে হয় না? - না হয় না। আমার এই মদনের সাথে ঘুরতে অস্বস্তি লাগে। তুমি হেয়ার স্টাইল চেঞ্জ করে আসবা পরের দিন। একটু স্মার্ট হও না প্লিজ। আমার ভাল লাগে তোমাকে। - আচ্ছা। গালিব চুপ করে কথাটা বলল। প্রিয়তি হয়ত খুব রেগে গেছে। আজ তাই চুলের স্টাইল চেঞ্জ করে যাচ্ছে গালিব।চোখে sun glass বা rain glass . হাতে ছোট ছাতা। ভিজে শরীর শেষ। নতুন জামা ভিজে একাকার। ময়লা জামা পরে যাচ্ছে না আজ।সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে হবে যে। ---------------
very nice article. Your story is too good. I likes yor stories. Thank you.