গল্পের মেয়েটার নাম নাবিলা।
গল্পের এই মেয়েটা বিয়ের এক অনুষ্টানে আসে।বিয়ের অনুষ্টান টা হল তার এক বান্ধবীর বোনের।
কিন্তু অনুষ্টানে আসার পর থেকেই...
একটা ছেলের জন্য সে ঠিক মত কোনো কিছুই করতে পারছে না।
কারণ ছেলেটা তার পিছনে আঠার মত লেগেছে।যেখানেই সে যায়. সেখানেই ছেলেটা তার পিছে পিছে যায়.
(মনে মনে ছেলেটাকে.. অনেক গালি দিয়েও তার মনে শান্তি পায় না).
একটু সময়ের জন্য তাকে ছেলেটার চোখের আড়াল হতে দিতেছে না
(মনে মনে বলতে থাকে.. কি এমন দোষ করেছি ছেলেটার কাছে. কিসের জন্য সে আমার পিছে লেগেছে)
সময় চলতে থাকে সে ও তার পিছে লেগেই থাকে।
মাঝে মাঝে তার চোখে চোখ রেখে... মুচকি মুচকি হাসে।
এটা দেখে নাবিলা রাগে ফাটে।তা দেখে ছেলেটা আরও মজা নিয়ে হাসে।ছেলেটা দেখে নাবিলা রাগে নাক মুখ লাল করে ফেলেছে।
তখন নাবিলাকে আরও রাগানোর জন্য ছেলেটা কি করল জানেন.!
নাবিলার চোখে চোখ রেখে তাকে চোখ মেরেছে।এটা দেখে নাবিলা আরও রেগে যায়...(মনে মনে বলতে থাকে... কি বেহায়া ছেলে রে)
তখন নাবিলা ছেলেটার দিকে বড় বড় চোখ বের করে... দাঁতে দাঁত লাগিয়ে কট মট করতে থাকে... যেন সে ছেলেটা কে খেয়ে ফেলবে।
আর গল্পের ছেলেটা... মনে মনে বলতে থাকে... রাগ কুমারী কেন তুমি আমাকে এখনো চিনোনি।
আমি যে তোমার বাবুনি... কেন তোমার সাথে আমি টাংকি মারতেছি
আর কেনই বা তুমি রাগে ফাটতেছ...
কাছে এসে তার কারণ টা তো জেনে যাবে।
•
তার কিছুক্ষন পরেই যোহরের আযান পড়ে।
তখন নাবিলা নামাজ পড়তে চলে যায়।
নামাজ শেষে নিচ্চুপ রংধনুকে খুঁজে ফেসবুকে ডুকে।কিন্তু নিচ্চুপ রংধনুর কোনো খবর নেই।সে যে ম্যাসেজ দিয়েছিল তার ও কোনো উত্তর নেই।
কারণ নিচ্চুপ রংধনু তার সাথে অভিমান করেছে।নিচ্চুপ রংধনু বলেছিল তার সাথে একটু সময়ের জন্য দেখা করতে
কিন্তু নাবিলা তার সাথে দেখা করে নি।তাতে নিচ্চুপ রংধনু কি অনেক কষ্ট পায়।
তাই অভিমান করে নাবিলার কোনো ফোন ধরে না।ম্যাসেজ করলে ও তার কোনো উত্তর দেয় না।
•
নিচ্চুপ রংধনু ম্যাসেজ দিবেনা জেনেও নাবিলা আবার ম্যাসেজ দেয়।
নিচ্চুপ রংধনু... নিচ্চুপ রংধনু তুমি আমার সাথে কথা বলবে না.! আমার ফোনটা ধরবে না.! ম্যাসেজের উত্তর দিবেনা.!
আজ চার দিন ধরে তোমার সাথে আমার কোনো কথা হয় না।তাই আমার কিছুই ভাল লাগে না।তুমি কি বুঝ না.! তোমাকে প্রতিটা মুহূর্ত খুব মিস করছি।
কেন তুমি আমাকে এত কষ্ট দিতেছ.? নিজেই বা কেন কষ্ট পাইতেছ তার কারণ টা তো বলবে
এই... নিচ্চুপ রংধনু তুমি জানো না.! তোমার কন্ঠটা না শুনে আমি একটা দিন ও থাকতে পারি না।
প্লীজ আমার ফোনটা ধর.
ম্যাসেজ টা পাঠিয়ে নাবিলা নীরব কান্না করতে থাকে।
মনে মনে বলতে থাকে.. কি করব বল তোমাকে বলার মত যে আমার সাহস নেই।তোমাকে না বলে যে, এই বাড়িতে এসে পড়েছি।তাই তো তোমাকে কিছুই বলতে পারেনি আর দেখাও করতে পারেনি তোমাকে না করে দিয়ে কি আমি ও কষ্ট কম পেয়েছি।প্লীজ একটি বার কথা বল..
বলেই চোখের পানি ফেলতে থাকে
•
নাবিলা চলে যাওয়ার পর আমি (নিচ্চুপ রংধনু)নামাজ পড়তে চলে যায়।
এই ছেলেটা আর কেউ নয় সেই হল নাবিলার নিচ্চুপ রংধনু ।নামাজ শেষে নিচ্চুপ রংধনু ফেসবুকে ডুকেই নাবিলার একটা ছবির দিকে তাকিয়েই থাকে।
কারণ নাবিলার চোখের দিকে একবার তাকালে আর চোখ ফিরানো যায় না।
তার চোখে যে অনেক মায়া।
নাবিলার এই কাজল কালো চোখের মায়ায় নিচ্চুপ রংধনু তার প্রেমে পড়ে।
ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই সম্যাসেজ টা আসে।ম্যাসেজ টা পড়ে ঐ নীল আকাশের দিকে... নিচ্চুপ রংধনু তাকিয়ে থাকে।
•
এই নাবিলার সাথে নিচ্চুপ রংধনু র পরিচয় হয় ফেসবুকে।নিচ্চুপ রংধনু ফেসবুুকে টুকটাক লেখা-লিখি করত।
একটা পেইজে র একটা গল্প নাবিলারখুব ভাল লাগে।তারপর অনেক কষ্টে তাকে পায়... নাবিলা ফ্রেন্ড হতে চাইলে
সে না করে।
কিন্তু নাবিলা ফ্রেন্ড হবেই।তারপর নাবিলা তার সম্পর্কে সব বলে এবং তার অনেক ছবি ও নিচ্চুপ রংধনু কে দেয়।পরে সে রাজী হয়।
•
তারপর ধীর ধীরে একটু কাছে আসা... একটু ভাল লাগা.. সেই ভাল লাগা
থেকে. একটু ভালবাসা।
একটু ভালবাসা দিয়ে. শুরু হয় তাদের নতুন পথ চলা...
দুজন জনের দুঃখ-কষ্টের গল্প বলত হাসি-আনন্দের গল্প বলত।
মাজে মাজে রাগ অভিমান করত।এভাবেই তাদের দিন কাটাত।আবার কখনো কখনো নাবিলা যদি তার ছবি দেওয়ার কথা বলত
তাহলে বলত ছবি দিয়ে কি করবে মানুষটাকেই দেইখো।
এভাবে প্রতিদিন শেয়ারিং কেয়ারিং এর মাধ্যমে তাদের দিন গুলি ভালই যাচ্ছিল।
•
হঠাৎ করেই নিচ্চুপ রংধনু র মামাতো বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার আগের দিন রাতে
নিচ্চুপ রংধনু(আরমান) স্বপ্ন দেখে নাবিলা রোড এক্সিডেন্টে মরে গেছে।এই স্বপ্নটা দেখে ঘুম থেকে উঠেই হাপাতে থাকে।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে এখনো অনেকটা রাত।ঐ রাতে তার আর ঘুম আসেনি।পরের দিন সকালে নাবিলা কে ফোন করে বলে দেখা করতে।
কিন্তু নাবিলা দেখা করে নি।কি করে দেখা করবে সে তো তার বাড়িতে নেই।আর এ বিষয়ে নিচ্চুপ রংধনু কেও কিছু বলেনি...
যদি নিচ্চুপ রংধনু রাগ করে।কিন্তু দেখা না করার কারণে সে নাবিলার সাথে অভিমান করে এবং খুব কষ্ট পায়।
মনে মনে বলতে থাকে নাবিলা একটি বার ও আমার কথাটাই শুনলে না কি বলতে চেয়েছিলাম।
সেই কষ্টে এখন পর্যন্ত নাবিলার সাথে একটু যোগাযোগ করেনি।
•
ঐ দিকে নাবিলা চোখ মুছতে থাকে আর ফোনটা হাতে নিয়ে নিচ্চুপ রংধনু র ম্যাসেজের অপেক্ষা করতে থাকে।কিন্তু ম্যাসেজ আর আসে না।
রুম থেকে বের হয়ে ঘুরাঘুরি করতে থাকে যেন মনটা একটু ভাল হয়।
হঠাৎ ছেলেটার কথা মনে পড়ল।ছেলেটা এখন আর তাকে ফলো করছে না এবং ছেলেটাকেও কোথাও দেখছে না।মনে মনে বলে বাচা গেল।
সে তার মত করে ঘুরতে থাকে ছেলেটাকেও খুঁজতে থাকে... কারন তার সাথে ঐ রকম ব্যবহার কেন করল
তা জানার জন্য।
ঘুরাঘুরি করার পরেও তার মন ভাল হয় নি।তার এখন খুব কান্না করতে ইচ্ছা করছে।
কারণ নিচ্চুপ রংধনু র সাথে কথা বলতে পারছে না।
নিচ্চুপ রংধনু কি করছে.. কোথায় আছে... কেমন আছে... সে কিছুই জানতে পারছে না।
তাই একটু একা থাকতে বাড়ির পাশে আসে।বাড়ির পাশে আসতেই অবাক হয় কারণ ঐ ছেলেটা যে ছেলেটা তাকে জ্বালিয়েছিল।
দেখে ছেলেটা এক দৃষ্টিতে ঐ নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
তখন নাবিলা ডাক দেয় এই যে শুনছেন.!
নাবিলার দিকে ফিরতেই নাবিলা দেখে তার চোখে পানি টলমল করছে।
নাবিলা কে দেখে সেও অবাক হয়।কারণ নাবিলার চোখ গুলোও ফোলা ফোলা ছিল।তার বুঝতে আর বাকি নেই নাবিলাকে দেখে চলে যেতে থাকে।
পিছন থেকে নাবিলা ডাক দিলেও (নিচ্চুপ রংধনু) দাঁড়ায় নি।
•
ঐ সময় এর পর থেকে সে আর নাবিলার সামনে পরেনি।নাবিলা অনেক খুঁজেও তাকে পায়নি।রাতে নাবিলা দেখে তার বান্ধবির সাথে ছেলেটা কথা বলতেছে।
তখন সে আর কিছু বলার সুযোগ পায়নি শুধু তাদের কথা গুলো শুনছিল।
কিন্তু ছেলেটার কন্ঠটা তার কাছে খুব চিনা চিনা লাগছে।
তার কাছে মনে হচ্ছে এই কন্ঠটা আরও কোথাও শুনেছে
কিন্তু মনে হয়েও মনে হচ্ছে না।
•
তখন রাত প্রায় ১১টা বাজে ছেলেটাকে খুঁজতে খুঁজতে ছাদে আসে দেখে
চাঁদের দিকে আপন মনে থাকিয়ে আছে।
নাবিলা এসেই বলতে থাকে
আপনার সমস্যা টা কি.! তখন ডাকলাম কথা না শুনেই চলে আসলেন কেন.!
আবার চলে যেতে চেয়েছিল কিন্তু নাবিলার বাধা দেয়।তাই আর যেতে পারল না আবার কি সমস্যা.!
কথা না বলে চলে যাচ্ছেন কেন.?
আজ সকালে আমার সাথে ঐ রকম ব্যবহার করছিলেন কেন.! কি হল কথা বলেন।
তখন তো দেখলাম আমার বান্ধবির সাথে খুব কথা বলছিলেন কিন্তু এখন কথা বলছেন না কেন.!
আপনার পরিচয় দেন আপনার পরিবারের কাছে বিচার দিব তবুও কিছু বলে না।
•
আবার কথা বলতে শুরু করতেই মারে এক চর নাবিলা চর খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তখন সে পকেট থেকে ফোনটা বের করে তার হাতে দিয়ে তার সামনে থেকে চলে যায়।নাবিলা ফোনের দিকে তাকিয়েই অবাক সে যে তার নিচ্চুপ রংধনু
তার সামনে যায়।আবার কথা বলতে যাবে তখনেই আর একটা চর মারে।চর খেয়ে নাবিলার চোখে পানি এসে পড়ে।নাবিলা বলতে থাকে মারো আরও মারো তার পরেও একটি বার আমার সাথে কথা বল
•
তখন তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে(নিচ্চুপ রংধনু কিছু বলেনি)আর বলতে থাকে কি করব বল ঐ দিন আমি এই বাড়িতে ছিলাম তাই দেখা করতে পারেনি এবং ভয়ে কিছুই বলতে পারেনি।যদি তুমি রাগ কর কিন্তু এত কষ্ট পাবে যে এটা বুঝতে পারেনি।
আরমান(নিচ্চুপ রংধনু) ক্ষমা করে দাও না.! আর কখনো তোমাকে না বলে কোথাও যাব না কথা দিচ্ছি।
আমি কে কেন আপনার সাথে কথা বলব কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই।
কেন ঐ দিন দেখা করতে চেয়েছিলাম জানেন আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম আমি মরে গেছি।পরে দেখি যে বেচে আছি।
তাই আপনাকে এক নজর দেখতে চেয়েছিলাম।
তারপর এখানে এসে দেখি আপনি এই বাড়িতে।
এই টা আমার নানার বাড়ি পরে বোনের কাছে জানলাম আপনি তার বান্ধবি।
এই আপনি আপনি ডাকতেছো কেন.!
সকালে আমার সাথে ঐ রকম ব্যবহার করলে কেন(অভিমানী ভাবে)
•
নাবিলা কে আর কিছু বলার সুযোগ দেয়নি। তখন নাবিলার কপালে চুমু খেয়ে তাকে পরম আদরে জড়িয়ে ধরে
নাবিলা বলতে থাকে আমাকে কষ্ট দিলে নিজেও কষ্ট পেলে তাতে কি পেলে।দুইটা চর মারতে পেরেছি... এই লাভ টাই হয়েছে।
দেখ তো গালটা লাল বানিয়ে ফেলেছো মানুষ এই ভাবে মারে
---বেশ করেছি।।
আমি আমার নাবিলাকে মারব
আবার আদর করব… কোনো সমস্যা.!
তখন নাবিলা তার কাঁধে মাথা রেখে বলে
না কোনো সমস্যা না।
আবার শুরু হয় অভিমানী ভালোবাসা।