রাইটারঃদিলরুবা হাসান পামি
সিহাবঃআমাইয়া i really sorry. এমনটা করা আমার উচিত হয় নি।ক্ষমা করে দাও প্লিজ।করবে তো আমাইয়া?
আমাইয়াঃহুম।
সিহাবঃতুমি rest নাও।একটু পরের সায়মা খালা এসে তোমার খাবার দিয়ে যাবে।আমি উনাকে বলে দিচ্ছি, কেমন?খবরদার বিছানা থেকে উঠো না।না হলে এর থেকেও কঠিন শাস্তি রয়েছে তোমার কপালে।আমি কি করতে পারি সেটা তো তুমি নিশ্চয়ই বুঝে গেছে এতক্ষণে।
সরি আমাইয়া তোমার ভাল জন্য আমাকে তোমার সাথে এভাবে আচরণ করতে হচ্ছে। এছাড়া কোন উপায় নেই।তুমি বুঝবে না এখন কিন্তু আমার বিশ্বাস তুমি একদিন সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে।আমি তোমাকে save রাখতেই এসব করছি।তোমাকে এভাবে আটকিয়ে রাখতে চাই না। কিনআমি যে নিরুপায় আমাইয়া।রিয়া হতো জেনে গেছে এতক্ষণে যে, তুমি বেঁচে আছো।সে তোমাকে ছাড়বে না আমাইয়া। ওর নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারে।(মনে মনে সিহাব ভাবছে)।
সিহাবঃআমাইয়া যা বলেছি মনে যেন থাকে।আমি অফিসে যাচ্ছি। তাড়াতাড়ি চলে আসব।এসে যদি শুনি তুমি আমার কথার অবাধ্য হয়েছ তবে দেখবে আমি তোমার কি হাল করি?
আল্লাহ মালিক আমি কি করছি?কেন এমন শাস্তি দিচ্ছো আমায়?পৃথিবীতে এত মানুষ থাকতে আমার এই মানুষটির সাথেই দেখা হল।সবসময় আমাকে ভয় দেখাচ্ছে😡😡
আমাইয়াঃআমি কি baby?why u treat me like a child?(রেগে বলল)।
সিহাবঃআমাইয়া?
আমাইয়াঃ কেন করছেন আমার সাথে আপনি এমন?
সিহাবঃআমি তোমাকে কখনই তা ভাবি নি।আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না কখনও আর কাউকে তা করতে দিব না।তুমি জেনে রেখো আমাইয়া এই সিহাব বেঁচে থাকতে কেউ আমাইয়ার এক চুলও স্পর্শ করতে পারব না। এখন তুমি rest নাও।আমি খালাকে দিয়ে তোমার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
আমাইয়াকে সে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আমাইয়ার রুম থেকে বের হয়ে যায়।
ঘড়িতে ১১ঃ৩০ (সকাল)বাজছে।সিহাব এখন অফিসে।তার কেবিনের সে এবং মিস্টার বসে রয়েছে।
মিষ্টারঃবস একটা কথা বলব?
সিহাবঃহুম।
মিস্টার ঃবস আপনার কি হয়েছে?আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?কোন সমস্যা? বস আপনি আমার সাথে শেয়ার করতে পারেন।
সিহাবঃমিস্টার তুমি তো জান সব।
মিস্টার ঃজ্বী বস।আদিব স্যারের Absent এ আপনি উনার সব দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন।একজন ডাক্তার হওয়া সও্বেও আপনি বিগত তিনবছর ধরে আদিব স্যারের কোম্পানিকে খুব ভালভাবে দেখে রেখেছেন।নিজের professionকে এভাবে sacrifice করে কে বস?আমি জানি আপনি আপনার ভাইকে খুব ভালবাসেন। বস যদি কিছু না মনে করেন তবে একটা কথা বলতে পারি?
সিহাবঃবল মিস্টার।
মিস্টার ঃবস আমি এটাও ভালভাবে জানি আপনি কোন কারণ ছাড়া কিছু কখনও করেন না।তবে বস?
সিহাবঃতবে কি মিস্টার।তুমি কি আমাইয়ার কথা বলছ?
মিস্টার ঃজ্বী বস।আপনিই ঠিক ধরেছেন।বস এভাবে কি আমাইয়া ম্যামকে রাখা ঠিক হচ্ছে?না মানে একজন অবিবাহিতা মেয়ে, একজন পুরুষের সাথে এভাবে থাকলে সমাজ তা ভাল চোখে দেখে না।আমি জানি আপনি এদেশের হলেও আপনার whole life আমেরিকাতে কেটেছে।তাই এদেশের কালচার আপনি হয়তো জানেন না।এদেশের মানুষ যে এখনও এতটা মর্ডান হই নি।আর আপনার চোখে আমি ম্যামের জন্য যে যা দেখেছি তা আমি আগে কখনও কোন মেয়ের জন্য দেখি নি।
সিহাবঃআমি কি করব মিস্টার বল?আমি যে ওকে এখন যেতে দিতে পারি না।কারণটা তো জান তুমি।রিয়া ওকে বাঁচতে দিবে না।মেরে ফেলবে।আমি জেনে বুঝে কিভাবে ওকে মৃত্যুর মুখে ঢেলে দিতে পারি?শুধুমাএ সমাজ কি বলে সেটা ভেবে?বল মিস্টার।
মিস্টার ঃবস আপনি আমাইয়া ম্যামকে ভালবাসে খুব সেটা আমি ভালভাবে জানি।ওনার কোন ক্ষতি হতে দিবেন না সেটাও জানি।বস আপনি কি পারেন না ওনাকে সারাজীবনের জন্য আপনার কাছে রাখতে?
সিহাবঃকি বলছ মিস্টার এসব?আমাইয়া কি আমাকে accept করবে?তুমি তো জান কোন পরিস্থিতিতে আমাদের দেখা হয়েছে।ও আমাকে খুব ভয় পায়।ওর কাছে আমি খুব খারাপ একজন মানুষ।ও যে আমাকে কখনই ভালবাসবে না।আমাকে কখনই মেনে নিবে না নিজের স্বামী বলে।
মিস্টার ঃবস ম্যামকে আপনার মনে কথা বলে দেখুন না 😊😊আমার বিশ্বাস উনী আপনাকে না করতে পারবেন না।
ওদিক আমাইয়া তার রুমে চুপচাপ শুয়ে আছে।তার মনটা ভীষণ খারাপ। তার নিজেকে খাঁচায় বন্দি পাখির মত লাগছে।আম্মু আমাকে রেখে চলে গেছে অনেক দূরে। আমি চাইলেও তাকে দেখতে পারব না কখনও।কারণ মানুষ মরে গেলে কেউ আর ফিরে আসে না।বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন জানি না তিনি বেচে আছেন কি না? চাচার সংসারে থেকে অনেক কষ্টে করে লেখাপড়া শেষ করি।অনেক চেষ্টার পর একটা জব হল ভেবেছিলাম আমার কষ্টের দিনগুলোর অবসান হচ্ছে, কিন্তু না সেটা আর হল না।ভাগ্য আমায় কোথায় নিয়ে ছেড়েছে আজ?আম্মু,আব্বু কোথায় তোমরা?আমি আর পাচ্ছি না।তোমরা কেন আমায় একা রেখে চলে গেলে।ফিরে আসব না তোমরা।না হলে আমাকে তোমাদের কাছে নিয়ে যাও। আমাইয়া ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর সিহাব অফিস থেকে বাসায় ফিরে।খালা মানে আমাইয়াকে যিনি দেখাশোনা করেন উনাকে সিহাব বলে,
সিহাবঃমেয়েটি কোথায়?
খালাঃম্যাম তো তার রুমেই আছেন।ম্যামের মনটা আজ ভীষণ খারাপ।আপনি যাওয়ার পর থেকেই কাঁদছেন।খাবার দিয়ে এসেছি কিন্তু উনি খান নি।
সিহাব উনাকে কিছু না বলে সোজা সিড়ি দিয়ে উঠে আমাইয়ার রুমে চলে যায়। তার রুমে গিয়ে দেখে আমাইয়া ঘুমাছে।সে আমাইয়ার পাশে গিয়ে বসে।আমাইয়া ঘুমানোর আগে কেঁদে তা তার চোখ দেখে বুঝা যাচ্ছে। কারন তার চোখ থেকে এখনও পানি পড়ছে।
সিহাব আমাইয়া চোখ মুছে দিয়ে বল,
সিহাবঃআমি তোমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছি না আমাইয়া?আর কিছুদিন সহ্য কর এসব।তারপর তুমি মুক্ত।
সিহাবের হাতের স্পর্শ পেয়ে আমাইয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়।সে সিহাবকে তার মাথার কাছে বসে থাকতে দেখে চমকে উঠে।
আমাইয়াঃআপনি?কখন এসেছেন?সরি আমি বুঝতে পারি নি কখন সে ঘুমিয়ে পড়েছি।ক্ষমা করবেন।
সিহাবঃ এসব কি আমাইয়া?সারাদিন না খেয়ে আছো কেন?খেতে চল আমাইয়া। আমি খুবই ক্ষুধার্ত।
আমাইয়া ঃআমার ক্ষুধা নেই, আমি খাব না।আপনি খেয়ে নিন।সকাল থেকে তো কিছুই খান নি। খেয়ে নিন অনেকবেলা হয়েছে।
সিহাবঃখাবে না মানে কি?তোমাকে খেতেই হবে।ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক।😡😡
সে আমাইয়ার হাতে ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে যায়।ডাইনিংরুমে নিয়ে গিয়ে চেয়ার টেনে আমাইয়াকে বসিয়ে দেয়।তারপর নিজের হাতে আমাইয়াকে খাইয়ে দেয় সে।আমাইয়া কিছু বলছে না।কারণ সে জানে সিহাবের সাথে সে পারবে না।ছেলেটা যে খুব জেদী আর খুব রাগি।কিন্তু সে যে খুব ভাল একজন মানুষ, আমাইয়া তা বুঝতে পারছে।
Excellent.. I am waiting for your next article..