রাইটার #দিলরুবা হাসান পামি
রিয়াঃমানুষ কতটা নিচে নামাতে পারে তা আমি আমার বাবা, ভাইয়াকে না দেখলে কখনও বুঝতে পারতাম না।আমাকে আমার পরিবার থেকে আলাদা করছে।আমার আসল বাবা মা কে তা আমার মনে নেই।আমার শৈশব, কৈশোর সবকিছু শেষ করছে এরা।আমি তাদের হাতে খেলনা মাএ।এছাড়া আমাকে তারা কখনও কিছুই ভাবে নি।কি না করছি ওদের জন্য। আজ তার মূল্য এটা।আমার ভালবাসার দিকে হাত বাড়িয়ে।একমাএ এই মানুষটি আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসেছ। আমি কিভাবে কখন যে তোমার ক্ষতি কারণ হয়ে দাড়িয়েছি তা বুঝতেই পারি নি?
উকিলকাকুঃহ্যালো রিয়া মা,শুনতে পারছ তুমি?হ্যালো?
উকিলকাকুর ডাকে রিয়া ভাবনার জগতে থেকে বের হয়ে আসে।রিয়া উকিলকাকু বলে,
রিয়াঃউকিলকাকু, নকল উইল বানানোর পিছনে একটাই উদ্দেশ্য ছিল আর সেটা হচ্ছে বাবা, ভাইয়ার হাত থেকে আদিবকে বেচানো কিন্তু তারা যে, এতটা নিচে নামবে তা জানা ছিল না। তারা আমার আদিবকে পৃথিবীতে থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে।তারা ওকে মরে ফেলবে।একটা মেডিসিন আসে যেটা দিয়ে আদিবকে তারা মরবে।পুলিশ কেস হলে কোন লাভ হবে না।কারণ সেই মেডিসিনের এমনই গুণ যা কেউ সহজে ধরতেই পারবে না। সবাই ভাবে heart attackকে আদিবের মৃত্যু। আসলে এটা যে, একটা খুন তা কেউ বুঝতেই পারবে না।কোন প্রমাণ নেই। আর তারাও বেচে যাবে।
উকিল কাকু ঃকি ভয়ানক মানুষ এরা।এরা তো মানুষই নয়।নরপিশাচ।মানুষ রূপ শয়তান একেকটা।ইচ্ছে করছে ওদের পুলিশ দিতে এখনই কিন্তু ওরা যে চালক আইন বেড়াজাল কেটে ঠিক বের হয়ে আসবে।আর তা তোমার, আদিব কারোও জন্য মঙ্গলজনক নয়।তাই আমাদের ভেবে চিন্তে এগুতে হবে।
রিয়াঃআমাদের হাতে ২দিন সময় আছে।যা করা এই দুইদিনের মধ্যে করতে হবে।২দিন পর ওরা সেই মেডিসিনটা হাতে পাবে আর তারপর তারা তাদের ভয়ানক খেলায় মেতে উঠবে।প্লিজ হেল্প উকিলকাকু। একমাত্র আপনি ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। আপনি আমার পিতৃতুল্য, আমি তো আপনার মেয়ে মত তাই না?সেই অধিকারে এক মেয়ে তার বাবাকে বলেছে তার মেয়ে জীবন বাঁচতে।আদিবের কিছু হলে আমি মরে যাব😭😭😭
উকিলকাকু ঃরিয়া মা,এসব বলতে নেই মা।তোমার এই বাবা তো তোমাদের পাশে আছে। আমি থাকতে তোমাদের কিছু হবে না।এতে যদি আমার জীবন যায়,যাক না। আমি পিছ পা হব না মা।
রিয়া আর উকিল কাকুর পরিকল্পনা অনুযায়ী আদিবের বাসায় একটা গোপন প্রবেশ পথ আছে সেই পথ দিয়ে আদিবকে বাসা থেকে খুব সাবধানে সর্তকতা অবলম্বন করে বেব করা হয়।যদিও এই পথের কথা আদিব আর রিয়া ছাড়া আর কেউ জানতো না।তবু চোখ কান খোলা রাখতে হবে বলা তো যায় রিয়ার ভাইয়া বা বাবা কোনভাবে এটা যদি জেনে যায় তবে তাদের আর রক্ষা থাকবে না।আদিবকে এম্বুলেন্স করে উকিলকাকু বাসায় নিয়ে যাওয়া হল।হাসাপাতালে রাখাটা নিরাপদ নয়।কারণ ওরা ঠিক খুজে বের করবে আদিবক।একমাত্র নিরাপদ স্থান এখন এই বাড়িটি।কেউ চিন্তাও করতে পারবে না যে, আদিব এখানে থাকতে পারে।
রিয়াঃউকিল কাকু আমার আদিবকে আপনার হাতে দিয়ে যাচ্ছি। ওকে দেখ রাখবেন।
উকিলকাকু ঃরিয়া মা---(চোখে জল নিয়ে)
রিয়াঃআমি কি ওর সাথে কিছুক্ষণ থাকতে পারি?
উকিলকাকু রিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যান।
রিয়াঃআদিব আমাকে ক্ষমা কর তুমি। আজ আমার জন্য তুমি একটা জীবন্তলাশে পরিনত হতে হয়েছে। আমাদের দেখা না হলেই ভাল হতো।আমি কেন এলাম তোমার জীবন, কেন?আদিব আমি চলে যাচ্ছি। এই জীবনে আমাদের আর দেখা হবে না।যদি অন্য কোন জীবন থেকে থাকে তবে আমি তোমাকে চাই সেই জীবনে।তবে রিয়া নয়।মাইয়া হয়ে।কোন খুনি হয়, কোন devil Queenও নয়।আমি তো একটা Devil killer যে, রক্ত ছাড়া কিছুই বুঝে না।আমি জানি তুমি একদিন ঠিকই সুস্থ হয়ে যাবে।আমাকে খুজবে না খরবদার।নিজের ভালটা এবার তো বুঝ।নিজের জীবনটা আবার নতুনভাবে শুরু কর প্লিজ।তোমাকে একটা hang করতে পারি আদিব?খুব ইচ্ছে করছে প্লিজ।
আদিব চোখের পলক ফেলে রিয়ার কথার উওর দেয়।
রিয়া আদিবকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেল।আদিবের ভিতরটা পোড়ে যাচ্ছে রিয়ার কান্না দেখে।আজ তারা চিরদিনের জন্য আলাদা হয়ে যাচ্ছে।তা ভেবে দুজনের খুব কষ্ট হচ্ছিল। আদিবের খুব ইচ্ছে হচ্ছিল রিয়াকে আটকানোর।কিন্তু সে সেই আবস্থাতেই নেই যে, রিয়াকে সে আটকাবে।
রিয়াঃভাল থেকো তুমি।কিছু কিছু কাহিনী সমাপ্তি মনে হয় এভাবে হয়, তা না?আমাদের দেখ হওয়াটাই ছিল ভুল।আমরা একে অপেরর জন্য নই।অন্ধকার সরিয়ে আলো পথে যাকে তুমি এনেছিলে আদিব সেই তোমার জীবনটাকে চন্দ্র গ্রহণের মত গ্রাস করছে।
আদিবঃইচ্ছে হচ্ছে তোমার গালে কষে চড় বসাতে।তুমি আমাকে এই ভাবলে?আজও তুমি তোমার আদিবকে চিলতে পারলে না রিয়া?(মনে মনে)
রিয়া আদিবকে ছেড়ে চলে যায় যাওয়া সময় আদিবের দিকে তাকিয়েছিল।আর আদিব রি--য়া, রি--য়া বলে ডাকছিল।আর রিয়া তা শুনেও না শোনার ভ্যান করে চল আসে। কারণ রিয়ার থাকাটা আদিবের জন্য ক্ষতিকর।
রিয়া ঠিক করে সে আর ফিরবে না।চলে যাবে অনেক দূরে সেখানে তাকে আর কেউ খোজে পাবে না।সেখানে আছে শান্তি। এই কলঙ্কময় জীবনের ভারবহন করতে করতে আমি যে আজ বড় ক্লান্ত। আমাকে এর থেকে মুক্ত হতেই হবে।তার আগে আমাকে দুটি কাজ করতে হবে ।আদিবের ভাই সিহাব খুব ভাল ডাক্তার।সিহাবকে ওর ভাইয়ের ব্যাপারের জানতে হবে আর দুজন মানুষকে তাদের কৃত কর্মের জন্য শাস্তি পেতেই হবে।সেটা কোন আইন আদালত নয়।আমি নিজে দিবে।অনেক খেলেছ তোমরা।তোমরা যে খেলা শুরু করেছ তার শেষটা হবে আমার হাতেই।হ্যা তোমাদের হাতে পুতুল তোমাদের কি হাল করবে তা তোমরা নিজেরাও বুঝবে না।তোমরা আদিবকে মরার প্লেন করছ তো, এবার সেইভাবে তোমাদের মরতে হবে।আর এটাই হবে আদিবের প্রতি করা অন্যায়ের উপযুক্ত শাস্তি। রিয়ার সেইভাবে তাদেরকে শেষ করে যেভাবে আদিবকে মারতে চেয়েছিল।তারপর সে পুলিশকে খরব দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসে, অতিরিক্ত alcohol পান করার কারণে বাবা, ছেলের মৃত্যু।
রিয়া যাব আগে সিহাবকে test করছিল। সে সিহাবকে বলে ,
রিয়াঃডা ঃসিহাব আহমেদ,আমাকে আপনি চিনবেন না।আর আমি এমন কেউ না যে আমাকে আপনার চিনতে হবে।ভেবে নিন আমি আপনার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। আপনার ভাইয়া আদিব আহমেদ খুব অসুস্থ।জীবন মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে দাড়িয়ে আছে প্লিজ বাচিয়েনি আপনার ভাইয়াকে। আর তার এমনটা হওয়ার পিছনে রয়েছে আপনার ভাবি রিয়া।
আপনার ভাইয়া এখন আপনাদের উকিল কাকু মানে আপনার বাবার ছোটবেলার বন্ধ, আপনাদের ফ্যামিলি lawyer এর বাসায় আছেন।আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে আসুন। আপনাকে আপনার ভাইয়ের পাশে এই মূহুর্তে থাকাটা খুব প্রয়োজন।আশা করি আপনি আমার কথা বুঝতে পারছেন।আমার একটা অনুরোধ, আমি কে সেটা বের করা চেষ্টা করবেন না কখনও।সরি অনেক long test করছি।ভাল থাকবেন।Good bye,Dr Sihab.
(হ্যাঁ রিয়া নিজের উপর সব দায় নিয়েছে,কারণ নিজেকে আদিবের এই অবস্থার জন্য দোষী মনে করে।সে ভাবে সে না আসলে আদিবকে এই দিন দেখতে হতো না)
রিয়া ভালভাবেই জানে সিহাব তাকে খুজে বের করবে।তাই সে তার ফোন ভেঙ্গে নদীতে ফেলে।দেয় তারপর কোথায় হারিয়ে গেল রিয়া, কেউ জানে না।সে কি বেচে আছে না মরে গেছে কেউ তা বলতে পারে না।
কাটতে থাকে সময় ।সিহাব জানে তার ভাইয়ের এই অবস্থার জন্য রিয়া দায়ী।রিয়াকে সে সেই যন্ত্রণা, কষ্ট দিতে চাইল যা আদিব পেয়েছে।
আদিবঃরিয়া?
রিয়াঃ হুম,বল আদিব?
আদিবঃএতদিন কোথায় ছিলে তুমি?
রিয়াঃথাক না সেসব।
আদিবঃ না রিয়া আমি জানতে চাই সব। আমার থেকে লুকিয়ে রেখ না আর।বল আমায়।
রিয়াঃআমি তোমার দোষীদের শাস্তি দিয়ে নিজে হাত তারপর নিজেকে---
আদিবঃথামলে কেন?বল আমায় নিজেকে কি?রিয়া।
রিয়াঃএরা তো ওদের কৃতকর্মের শাস্তি পেল।কিন্তু তোমার অবস্থা জন্য দায়ী আসলে কে তাকে কি করে ক্ষমা করি।তাকে তো শাস্তি দিতে হতো তাই
আদিব ঃ কি বলছ তুমি?Are u mad?তুমি নিজেকে শাস্তি দিতে চেয়ছিলে?তুমি একবারও আমার কথা ভাবলে না। তুমি না থাকলে আমার কি হবে?তোমার আদিব কিভাবে বাচবে একবারও তোমার মাথায় আসে নি এটা?
রিয়াঃএসেছি কিন্ত আমি তোমাকে এইদিন দেখিয়েছি।
তোমাকে জীবন্তলাশ বানিয়েছি।নিজেকে কিভাবে ক্ষমা করব, বলতো?কিন্তু নিয়তি আমাকে মরতে দিল না।ঠিক বাচিয়ে নিল।সিহাবকে সব জানানোর পর আমার কাজ শেষ তখন আমি এই দুনিয়াতে থেকে চলে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি।নদীতে বুকে নিজেকে সমাহিত করতে চাইলাম।ঠিক তখন এক বৃদ্ধ দম্পতি আমাকে বাঁচালেন। তারা আমাকে নিজের সন্তানের মত দেখেন।তাদের নিজের কোন সন্তান ছিল না আমাকে পেয়ে তারা যেন নিজের সন্তানকে পেয়েছেন।আমার অতীত নিয়ে কখনও কোন প্রশ্ন করেন নি।এতটাই বিশ্বাস করতেন যে, নিজের কোম্পানি আমার নামে করলেন।আমি নতুন পরিচয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করলাম।কিন্ত তোমাকে কখনও ভুলতে পারি নি।তোমার স্মৃতিকে নিয়ে বাচতে চেয়েছিলাম যখন মরতে পারলাম না।যখন খুব ক্লান্ত হয়ে যেতাম, যখন হাজার লোকের ভিড়ে নিজেকে খুব একা লাগতো তখন আমি তোমাকে খুজেছি।কল্পনায় আসতে না তুমি, কতবার ডেকেছি জান।আমি পাগল তাই না?
আদিব রিয়া মাথায় হাত রেখে বলে,
আদিবঃকে বলেছে তোমায়?তুমি আমাকে তোমার জীবনের থেকেও যে ভালবাস।
এদিকে আমাইয়া আর সিহাব শপিংমল থেকে বের হল। আমাইয়া মাথা এখন শয়তানী বুদ্ধি কাজ করছ,
আমাইয়াঃআমার না ছোট থেকে খুব ইচ্ছে ডাক্তারকে বিয়ে করার।জানেন আমি ছোট থেকে এই স্বপ্ন দেখে বড় হয়েছি।Infant আজও একই স্বপ্ন দেখি।আমার স্বপ্ন বাস্তব হবে।সরি সিহাব স্যার আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না।(মুখ বাঁকিয়ে)
My Princess তুমি তো জান না যে, তোমার সামনে যে মানুষটি দাড়িয়ে রয়েছে তার আসল পরিচয় কি?সে আসলে একজন ডাক্তার। তুমি তো তার স্বপ্নই তো দেখব।(মনে মনে)
সিহাব ঃনা ঠিক আছে,এতে sorry feel করার কিছুই নেই।সবার একটা স্বপ্ন থাকে নিজের জীবন সাথীকে নিয়ে তোমারও থাকবে সেটা স্বাভাবিক। আমি তাতে কষ্ট পাচ্ছি না বিশ্বাস কর।(মুচকি হেঁসে)
Really? উনী কিছুই অনুভব করেছেন না।Jealous feel করানোর চেষ্টা করেছি সেটা না হয়ে উল্টো আমাকে সান্তনা দিচ্ছেন। সত্যি আপনি একটা Heartless person। (কাদু কাদু ভাব নিয়ে)
সিহাবঃআমার আছে জল,আমার আছে জল।
আমাইয়াঃকি?কি বলছেন এসব?
সিহাবঃআরে বাবা এত panic হওয়া কি আছে,আমাই---য়া😉।দূরে মাইকে এই কথাগুলো ভেবে আসছে শুনতে পাচ্ছ নিশ্চয়ই। আমার কথাগুলো খুব interesting লাগছে।তাই try করছি আমার মুখে শুনতে কেন লাগে।আমার গলা কিন্তু খারাপ না, তাই না?মেডিকেল কলেজের toperআমি,আর হ্যাঁ তার সাথে আমি আমার গানের গলার জন্যও বিখ্যাত ছিলাম।
আমাইয়াঃহুম
( অন্যমনস্কভাবে উওর দিয়ে সে)
সিহাবঃOh God,আমি এসব কি বলছি।আমি আমাইয়াকে surprise করতে চেয়েছি। আমি দেখতে চাই যখন সে জানবে তার এতবছরের স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে তার dream man তার সামনে তখন সে কি reaction দেয়, তা দেখতে চাই।কিন্তু এভাবে না।যাক আমাইয়া may be শোনেনি। ওকে দেখে তো তাই মনে হচ্ছে।
এটা তো বাংলাদেশ নয়, এখানে বাংলা গান আসবেই বা কোথা থেকে?এরা তো বাংলাই বুঝতে না।গান শুনবে কিভাবে?তার মানে আবার আমাকে বোকা বানিয়েছে।heartless, devil man. আমাইয়া আপন মনে সিহাবকে মনে মনে বকে যাচ্ছে। সিহাব আমাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।সে ভালভাবেই বুঝতে পারছে আমাইয়ার এখন কি করতে ইচ্ছে করছে।
কিডন্যাপ
পার্ট #১৩
সিহাবঃমিস,ওহ আমাইয়া আপনি কি এই জগতে আছেন?নাকি আবার জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছেন?ওহ হ্যালো শুনেছেন মিস?
আমাইয়াঃসব সময় আমার পিছনে লাগছেন কেন বলবেন তো আমায় ?না লাগলে বুঝি আপনার দিন ভাল যায় না?যখন থাকব না তখন বুঝবেন কেমন লাগে।
সিহাবঃকোথায় যাবেন আপনি? ওহ আপনার তো আবার ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তারকে বিয়ে করার।তো কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন? যান, যান এখনই যান তার কাছে(রেগে গিয়ে)
এই যা আমি আবার কি করেছি?এভাবে রাগ করার কি হয়েছে? কথায় কথায় আমার উপর করছেন উনী।এখন আমি কি করব?Oh God পৃথিবীতে এত মানুষ থাকতে এই মানুষটিকেই আমার জন্য রাখলে, যে কথায় কথায় রাগ করেন।লাল বানর,না লাল হনুমান একটা।আহ,কিভাবে এখন রাগ ভাঙ্গাব এই মশাইয়ের। মশাই একবার রেগে গেলে সহজে তার রাগ ভেঙ্গে না।কি জ্বালায় পড়লাম বাবা।কেন যে এত বকবক করি সবসময়?কবে আমার বুদ্ধি হবে? disgusting (মনে মনে বলে আমাইয়া এসব)
তুমি কি ভাবছ এখন আমি তা জানি Princess. ভাব ভাব কি আমার রাগ ভাঙ্গাবে?আমিও দেখতে চাই কি করবে তুমি?কিভাবে আমায় শান্ত করবে। (এসব ভেবে সিহাব মনে মনে হাসছে)
গাড়ীতে চলছে তার আপন গতিতে। গাড়ীতে দুইজন বসেছেন।কারোও মুখে কোন কথা নেই।ড্রাইভিং সিটি বসে আছে সিহাব আর তার পাশে আমাইয়া।আমাইয়া এখন ব্যস্ত কিভাবে সিহাবের মান ভাঙ্গানো যায় এই চিন্তায়। হোটেল ফিরে যে যার রুমে চলে গেল।সেদিন আর তাদের খাওয়া হল না।
সারারাত এভাবে কেটে গেল।সিহাব এখন release করছে তার এমনটা করা ঠিক হয় নি।আমাইয়ার সাথে একটু বেশী করে ফেলেছে।যদিও সে আমাইয়ার সাথে রাগ করার অভিনয় করেছে।কিন্তু পাগলীটা সেটাকে seriously নিয়েছে আর সারারাত না খেয়ে থেকেছে।না এমনটা করা একদম ঠিক হয় নি।আমি খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলছি।আমাকে যেতে হবে ওর অভিমান ভাঙ্গাতে।
সিহাব আমাইয়ার রুমে গিয়ে দেখে আমাইয়ার রুমের দরজা খোলা।ভিতরে আমাইয়া নেই।আমাইয়াকে সিহাব পাগলের মত খুজতে থাকে।একজন এসে সিহাবের হাতে আমাইয়ার পাঠানো লেটার দিল,তাতে লেখা ছিল,
স্যার,আমি জানি আমার উপর ভীষণ রেগে আছেন আপনি।আর তাই কথা বলছেন না আমার সাথে।আপনি জানেন? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে? আমি।যে আপনার চুপ থাকটা আমি কিছুতে মেনে নিতে পারছি না। আমি আপনার সামনে হয়তো এই কথাগুলো বলতে পারতাম না ঠিকভাবে তাই পেপারের সাহায্য নিয়েছি নিজের মনের কথাগুলো আপনাকে জানানোর জন্য। খুব অদ্ভুত আমাদের রিলেশন। কিডন্যাপ দিয়ে যার শুরু। অচেনা দুজন মানুষ যাদের কোন মিল নেই।বলতে গেলে আমরা দুই পৃথিবীর দু'জন মানুষ।তবুও আমাদের নিয়তি আমাদেরকে এভাবে কাছে এনেছে।কখনও ভাবি নি জানেন যে আমার জন্য কেউ আসবে তাও আবার আপনার মত একজন।কেননা আমি যে খুব সাধারণ একটা মেয়ে।যার স্বপ্ন দেখেও বারণ ছিল। কখনই কল্পনাও করি নি আমার জীবনে আপনি আসবেন। প্রতি নিয়ত নিজের সাথে নিজের লড়াই করেছি। আমার brain বলছে আপনার থেকে দূরে থাকতে, আপনি কখনও আমার জন্য নন,আমার চাওয়া ঠিক নয়।আর আমার মন সে তো আপনাকে ভালবেসেছে খুব।আমি এভাবে থাকতে থাকতে পাগল হয়ে যাব একদিন।আপনিই বলুন না আমি কি করব এখন। তবে কি জানেন আমার জীবনে সব থেকে important মানুষ হচ্ছেন আপনি।যাকে আমি চাই। খুব ভালবাসি আপনাকে।এই পৃথিবীতে may be আমিই হব প্রথম মেয়ে যে একটা ছেলেকে এভাবে তার মনে কথা বলছে।
লেটারটি পড়ার সময় সিহাবের চোখ থেকে পানি পড়েছে।না এটা কষ্টের কান্না নয় আনন্দের কান্না ছিল।সিহাব তো এটা শুনতে চেয়েছিল।পাগলি আমার। এতটা ভালবাসা কিন্তু সামনে বলতে পারবে না বলে এই লেটার লেখেছে।এতবড় লেটার কেউ লেখে বুঝি!
তিনটি শব্দ শুনে চেয়েছিলাম আর তুমি আমাকে একটা কাব্য লেখে পাঠালে।দাও তোমার হচ্ছে এবার।
সিহাবঃআমাইয়া কোথায় তুমি?সামনে আসো বলছি?তা না হলে আজ তোমার খবর আছে?
একজন দাড়িয়ে আছে দরজার কাছে যিনি সিহাবকে লেটার দিয়েছিলেন।সে সিহাবকে ইশরায় দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আমাইয়া কোথায় আছে।
সিহাব সিড়ি দিয়ে উঠে ছাঁদে চলে গেল।
সিহাবঃকি ম্যাডাম আমার থেকে বাঁচার জন্য এখানে লুকিয়ে রয়েছেন?
আমাইয়াঃকে বলছে আমি লুকিয়ে আছি?আপনি এখানে কেন আসছেন?আপনার তো এখানে আসার কথা নয়।কেন আসছেন আপনি?
সিহাবঃতুমি আমার উপর সাথে এমন করছ কেন?কি হয়েছে তোমার?ওহ আমার উপর রাগ হয়েছে বুঝি, তা আমাকে কি করতে হবে?
সিহাব হাটু গেড়ে আমাইয়ার সামনে বসে।
আমাইয়াঃআরে এসব কি করছেন?কেউ দেখে ফেলে কিভাবে বলেন তো?উঠুন বলছি।
সিহাবঃআগে তোমার হাতটা দাও,তারপর উঠব।
আমাইয়া সিহাবের দিকে তার হাত বাড়িয়ে দেয়।সিহাব আমাইয়ার হাতে রিং পড়িয়ে দিল।তারপর উঠে আমাইয়া পাশে দাড়িয়ে মুচকি হেসে বলে,
সিহাব ঃম্যাডাম এটা হচ্ছে আপনার কাব্যের উওর।
আমাইয়াঃ কাব্য?আমি তো একটা লেটার লিখেছি আর সেটাকে আপনি কাব্য বলছেন।
সিহাবঃ কাব্য না তো কি? কি সব লেখেছো তুমি?আহা আমাইয়া simple 3 words সেগুলোই missing(মুখ বাকিয়ে)।
আমাইয়াঃকেন আমি তো লেখেছি।
সিহাবঃনা লেখ নি তুমি?
আমাইয়াঃআমি লেখেছি তো।আমি আপনাকে খুব ভালবাসি।
সিহাবঃতাই বুঝি?(মুচকি হেসে)
আমাইয়াঃনা আমি আপনাকে ভালবাসি না।আপনি খুব খারাপ, খুব বাজে।Devil king
সিহাবঃOh, really,তবে তুমি কি?
আমাইয়াঃDevil'Queen.
সিহাবঃমানে তো আমার রাণী তাই দাড়াছে, তাই না?
আমাইয়াঃআহা,আপনি আবার আমাকে আপনার কথার জালে জড়াছেন।হ্যা, হ্যা আপনাী queen, এখন শান্তি পেয়েছেন।
সিহাবঃMy silly girl,i love u so much(আমাইয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে)
আমাইয়াঃআরে,আরে করছেনটা কি?আমার চুলগুলো সব এলোমেলো হয়ে যাবে তো।আমাকে পাগলি দেখবে তখন আপনার ভাল লাগবে তো?নিশ্চয়ই লাগবে না
সিহাবঃতাতে কি হয়েছে?লাগলে, লাগবে so what?
I read your all article part & good command on your picture