writer #Delruba Hasan Pami
আমি অন্বেষা। আমি যখন ছোট তখন আমার মা মারা যান।মা চলে যাওয়ার পর থেকে বাবা কেমন যেন হয়ে গেছেন।আমার সাথে ঠিকমত কথা বলেন না।সবসময় খারাপ আচরণ করেন তাই আমার খালা বাধ্য হয়ে আমাকে তার কাছে নিয়ে আসেন।খালু তাকে বাধা দেন নি।তাদের কোন সন্তান ছিল না।তারা আমাকে নিজের সন্তানের মত মানুষ করেন।এভাবে কেটে যায় অনেক বছর।অন্বেষা আজ ২৫ বছরে পা দিল।আজ অন্বেষার brithday। সকাল থেকে হৈচৈ শুরু হয়েছে বাড়িতে মানে অন্বেষার খালার বাড়তে।
খালামুনিঃঅন্বেষা মামুনি অনেক বেলা হয়েছে, উঠ।আর কত ঘুমাবি?আজ তো তোর?
অন্বেষাঃকি খালামুনি? তোমার মনে আছে আজ আমার?
খালামুনিঃও আমি তো ভুলেই গেছি আজ তোর job interview আছে।আমি না আজকাল সবকিছু ভুলে যাচ্ছি সহজে।কি বলব মা আমার তো বয়স হয়ে গেছে। তুই কিছু মনে করিস না মা।
অন্বেষার খালুঃমরিয়ম, কোথায় তুমি?এদিকে এসো।আমি বাজার থেকে ফিরেছি।ও গিন্নী কোথায় তুমি?
খালামুনিঃরে আসছি, আসছি।এত চেচামেচি কেন করছ তুমি?আরে আস্তে কথা বল। অন্বেষা বুঝতে পারবে তো।
অন্বেষা ঃআজ আমার জন্মদিন আর কারোও মনে নেই।কেউ আমাকে আর ভালবাসে না।কেউ না।মা তুমি কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে? মা😭
সে তার মায়ের ছবিটিকে বুকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে।
খালামুনিঃঅন্বেষা মামুনি তাড়াতাড়ি কর।আজ তোর job interview আছে তো। ১০টা বাজছে মা।তাড়াতাড়ি ready হয়ে নিচে আয় মা ।
অন্বেষা readyহয়ে নিচে নেমে এসে দেখে তার খালু এখনও ready হয় নি।তার আজ অন্বেষার সাথে যাওয়াট কথা ছিল।কিন্তু তিনি excuse দিলেন।
খালুঃঅন্বেষা মা সরি আমার শরীরটা খুব খারাপ ।তাই আজ আমার পক্ষে তোমার সাথে যাওয়া সম্ভব না।
অ্ন্বেষাঃডাক্তার চাচুকে কল দিয়েছ?
ওহ বুঝেছি দাও নি তো।দাড়াও আমি দিচ্ছি।
অন্বেষার খালু খালামুনিকে চোখের ইশারায় না করতে বলে।
খালামুনিঃঅন্বেষা মা তোর দেরী হয়ে যাচ্ছে তো মা। তুই বেরিয়ে পড়।আমি তো আছি।তোর খালুর বয়স হয়েছে। এসময় একটু এরকম হওয়াটা নরমাল।শরীর বেশী খারাপ হলে আমি তখন না হয় তোর ডাক্তার চাচুকে কল দিয়ে ডেকে আনব।কেমন মা?লক্ষী মা আমার এখন বেরিয়ে পড়।দেরী করলে বাস মিস করবি তো?
অন্বেষা job interview এর জন্য বেরিয়ে পড়ে।রাস্তায় কোন রিক্সা না পেয়ে সে হাটতে শুরু করে।রাস্তায় কিছু বাচ্চা খেলছিল সে তাদেরকে দেখতে পেল।হাটতে হাটতে কিছুদূর যেতেই তার চোখ পড়ে রাস্তার পাশে বসে থাকা মা ও তার বাচ্চার উপর।বাচ্চাটি তার মায়ের কাছে খাবার চাইছিল। কিন্তু অসহায় মা তার মুখে কিভাবে খাবার দিবে? তার কাছে তো কোন টাকা নেই।তিনি তার সন্তানের এমন আবস্হা দেখে কাঁদছেন আর শাড়ীর আচল দিয়ে তিনি তার চোখ মুছছেন।
অন্বেষা আসার সময় তার খালামুনি তাকে খাবার প্যাক করে দিয়েছিলেন।অন্বেষার সেটার কথা মনে পড়ে।সে তার ব্যাগ থেকে খাবার বের করে বাচ্চাটিকে দিয়ে বলে,
অন্বেষা ঃএটা নাও।আশা করি তোমার ভাল লাগবে।এটা নিন। এই টাকা দিয়ে আপনার ও আপনার সন্তানের জন্য dress কিনে নিবেন।
বাচ্চাটির মা ঃআপনি খুব ভালা আপা।আজকাল মানুষ তো আমাদের দেখেও না দেখার মত করে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।আর আপনি আমাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন।আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।
অন্বেষাঃআজ আমি আসি।আমাকে আবার বাস ধরতে হবে।অন্যদিন আবার আসব কেমন?ভাল থাকবেন।
অনেক কষ্টে সে বাস ধরল।job interview শেষ করে সে এখন বাড়ি ফিরছে।তার কেমন যেমন মনে হচ্ছে কেউ তাকে follow করছে।
অন্বেষা ঃআরে কেউ তো নেই।তুই শুধু শুধু সন্দেহ করিস।তোকে কে follow করবে?
তাড়াতাড়ি সে পা চালিয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে।একটা অপরিচিত গাড়ী তাকে এতক্ষণ ধরে followকরছিল।অন্বেষা জানে না তাকে যে একটা গাড়ীটা সকাল থেকে follow করেছে।
বাসায় ফিরে সে তো অবাক।সে বুঝতে পারল সবাই যে সকাল থেকে তাকে surprise দেওয়া জন্য তার সাথে নাটক করেছে। তার বন্ধ বান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই আসছে।শুধু আসে নি তার বাবা।অন্বেষার চোখ যে শুধু তার বাবাকেই খুঁজছে।
অন্বেষাঃখালামুনি বাবা কোথায়?বাবা আসি নি?
খালামুনিঃনা রে মা, তোর বাবা আসতে নি।তুই মন খারাপ করিস না। তুই তো জানিস তোর বাবা কাজে খুব ব্যস্ত থাকে।পরে সে তোমার সাথে দেখা করতে আসবে।এই দেখ তোর বাবা তোর জন্য কি পাঠিয়েছে।
অন্বেষা ছোট থেকে তার বাবার জন্য অপেক্ষা করছে।বাবা হয়তো এই দিনটাতে তাকে দেখতে আসবে।না তার বাবা এসেছে না সে কোন গিফট পাঠায়।অন্বেষা যাতে তার বাবাকে ঘৃনা না করে তার জন্য তার খালা খালু তার জন্য গিফট কিনে।তারপর তাকে সেটা দিয়ে তার বাবার পাঠিয়েছেন বলে তাকে মিথ্যে সান্ত্বনা দেন।আজও তাই হল।অন্বেষা সেটা এখন ভালভাবে বুঝতে পারে।তবুও সে তাদের মন রক্ষার্থে কিছু বলে না।
জীবনের খুঁজে #
২য় পর্ব
অন্বেষার রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না।স্বপ্নে তার মাকে সে দেখে।সে যখন ছোট ছিল তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার মা আগুনে পোড়ে মারা যান।এমন কোন রাত নেই যে, সে এটা দেখ না।সে চিংকার করে পাশেরুমে তখন তার খালা খালু ঘুমাছিলেন।তার চিংকার শুনে তার খালামুনির ঘুম ভেঙ্গে যায়।তিনি অন্বেষার রুমে আসেন।তিনি এসে দেখেন AC চলছে তবুও অন্বেষা ঘামছে।তাকে যখন তিনি touch করে তখন সে ভয়ে কাপছিল।তিনি তার অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে তাকে বলেন,
খালামুনিঃঅন্বেষা মামুনি কি হয়েছে?এমন করছিস কেন? মামুনি বল কি হয়েছে?
অন্বেষাঃমা আমাকে ছেড়ে যেও না।মা চলে যাচ্ছে খালামুনি। মাকে বল না খালামুনি 😭😭আমাকে ছেড়ে না যেতে।আমি তাকে ছাড়া থাকতে পারব না।খালামুনি বল না মাকে😭😭
খালামুনিঃঅন্বেষা মামুনি, মা কোথাও যায় নি।সে তো তোর কাছেই আছে।তাকে তোর কাছে থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।
তিনি অন্বেষাকে ঘুম পারিয়ে দেন।সে ঘুমানোর পর তিনি নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
ঘড়িতে এখন সকাল ১০ঃ৩০বাজছে।অন্বেষা এখন নরমাল আচরণ করছে।রাতের কথা তার মনে নেই।কলিংবেল বাজছে।তার শুনে খালামুনি অন্বেষাকে বলেন
খালামুনিঃঅন্বেষা মামুনি দেখ তো কে আসছে?
খালামুনি তখন কিচেনে কাজ করছিলেন।
অন্বেষা গেইট খুলে লেটার রিসিভ করে।
খালামুনিঃমামুনি কে এসেছে?
অন্বেষা ঃখালামুনি আমার জবটা হয়েছে।
খালামুনিঃcongratulations. আমি জানতাম তোর জব হবে।joining date কবে?
অন্বেষা ঃ২ দিন পর খালামুনি।
অন্বেষা একজন Computer Engineer. তাই তার IT sector এ job পেতে অসুবিধা হয় নি।কিন্তু সে কি জানত যে সে একজন Angry Man এর Assistant হতে যাচ্ছে। যার রাগের কারণে ১মাসে ৪জন Assistant Resign করছে।আজ অন্বেষার joining date.অন্বেষা অফিসে যাওয়া পর মিস্টার তাকে তার কেবিনে যেতে বললেন।ওহ বলতেই তো ভুলে গেছি মিস্টার কে?তিনি হচ্ছেন প্রিন্স আহমেদের Manager। হ্যা এই প্রিন্স আহমেদই হচ্ছেন অন্বেষার new boss যাকে সবাই Angry Man বলে ডাকে।তার সামনে কথা বলার সাহস কারোও নেই। মূল্য গল্পে যাক এবার।
অন্বেষা ঃহ্যালো স্যার।
মিস্টার ঃ হ্যালো অন্বেষা।আজ তোমার এই অফিসের প্রথম দিন right?
অন্বেষা ঃRight sir.🤣🤣আপনি হচ্ছেন আমাদের কোম্পানির owner এর manager আপনি ঠিক না হয়ে পারেন।
মিস্টার ঃঅন্বেষা😡😡তুমি ভুলে যাচ্ছ আমি তোমার senior সে হিসাবে আমিও তোমার বস।অযথা তর্ক করবে না।এটা নাও।
অন্বেষা ঃএটা কি স্যা--র।
মিস্টার ঃঅন্বেষা একটু আগে কি বলেছি?আমি তোমার বস। আমার কথা চুপচাপ শুনবে।কোন প্রশ্ন করবে না।তুমি এত কথা কেন বলছ? কি দেখে তোমাকে যে এই কোম্পানিতে জব দেওয়া হল কে জানে?
অন্বেষাঃExcuse me Sir। আপনি আমার যোগ্যতা নিয়ে এভাবে প্রশ্ন করতে পারেন না।সে অধিকার আপনার নেই।আমি যোগ্য ছিলাম বলেই আমাকে আপনারা জব দিয়েছেন।😠😠
মিস্টারঃAh,little girl। এভাবে reacted কেন করছ? আমি তা বলতে চায় নি।এটা নিয়ে বস বাসায় যাও।
অন্বেষা ঃঠিকানা?
মিস্টারঃএই যে ঠিকানা।
অন্বেষা তার রুম থেকে বেরিয়ে CEO sir এর বাড়ি যায়।বাড়ি বলে ভুল হবে প্রিন্স থাকেন তার ফ্ল্যাটে।এই শহরের তার বাবার নিজস্ব বাড়ি আছে তবুও সে একা একটি ফ্ল্যাটে থাকে। অন্বেষা লিফটে যখন ছিল তখন একটা ছোট ছেলে সাথে তার কথা হয়।
ছেলেটি তাকে বলেঃHello sister.
তার কথায় বুঝা যাচ্ছে সে এদেশের নয় বা English medium এ পড়ে।অন্বেষা তাকে ভালভাবে দেখছে বুঝার চেষ্টা করছে।আসলে সে কি এদেশে না বাইরের।কথা বলে সে জানতে পারে তার বাবা এদেশের মা বাইরের।তার জন্ম অামেরিকায়। এদেশে এসেছে তারা ২মাস হল।ও এই কারণে সে এত সুন্দরভাবে Englishকথা বলতে পারে। অন্বেষা মনে মনে বলে। কিন্তু সে জানে না ছেলেটি যে বাংলাও জানে।সে ভালভাবে বাংলায় কথা বলতে পারে ।🤣🤣
ছেলটি বললঃ sister 2nd floor।
অন্বেষাঃও হ্যা আমি তো ভুলে গেছি।bye little boy
ছেলেটি বললঃআমি ছোট নই।আমি বড় হয়ে গেছি। তোমরা বড়রা যে কি ভাব কি জানি?
অন্বেষা🤤ছেলেটি বাংলা বলে জানতে? এতক্ষণ না জানার ভ্যান কেন করছিল?দোষ্ট ছেলে😡😡
অন্বেষা তার বসের ফ্ল্যাটের কলিংবেল দিতেই একজন সুদর্শন পুরুষ এসে দরজা খুলে।তাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে সে swimming করছিল।
অন্বেষা ঃআরে কি করছেন?অন্বেষা হাত দিয়ে তার চোখ ধরে রেখেছে।
প্রিন্সঃswimming করছিলাম।আর swimming কি কেউ dress পড়ে করে,?bye the by how are u?
অন্বেষাঃআমি অন্বেষা আহমেদ,আপনার New assistant . plz কাপড় পড়েন নিন।এভাবে আমার সামনে আসবেন না।
প্রিন্সঃদেখ মেয়ে আমি তোমার বস, তুমি নও।আর এটা আমার বাসা।এখানে আমি কিভাবে থাকব এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমাকে এভাবে কখনও জ্ঞান দিতে আসবে না। মনে থাকবে।
আহা কোথাকার কে রে আপনি?আপনার under job করছি বলে কি ভেবেছেন নিজেকে।😡😡মনে মনে অন্বেষা বলে।
অন্বেষা ঃজ্বী বস বুঝেছি।
তারপর প্রন্স তাকে একটা shopping list ধরিয়ে দিয়ে বলল
প্রিন্সঃ কালকে আসার সময় এসব কিনবে আনবে।একটা জিনিসও যাতে miss না হয়।বুঝলে?
অন্বেষাঃyes boss
প্রিন্সঃএখন তুমি আসতে পার।
অন্বেষা তার বাসা থেকে বের হয়ে আসে।সে এখন রাস্তায় হাটছে।কি ভেবেছে নিজেকে? নাম প্রিন্স হলেই কেউ prince হয়।আমি তার Assistant আর সে আমার সাথে servant মত আচরন করছে।Ah!Mr.Devil Prince🤣🤣খুব ভাল নাম তো।তারপর থেকে অন্বেষা তার ফোন এই নামে তার বসের নাম্বার save করে রেখেছে।
Nice