১) ‘মেয়েকে কী ররম জোব্বা পরে নিয়ে এসেছিস!’
আমার সাত বছরের বড় মেয়েকে বোরকা পরে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ির কর্তা তাচ্ছিল্যের স্বরে মেয়ের ড্রেস নিয়ে কটাক্ষ করে।
মেয়ের ড্রেস নিয়ে কটাক্ষ করার এই ঘটনা, আমি কোনদিন ভুলিনি, হয়তো ভুলবও না। আমার হৃদয় ক্ষত বিক্ষত হয়ে গিয়েছিল।
২) আমার এক পরিচিত বোন আমাকে উপহাস করে বলেছিল, 'এত ঢেকে ঢুকে বের হওয়ার কী দরকার? নাক মুখ ঢেকে তোকে একেবারে জঙ্গি জঙ্গি লাগে।’
আমি সেদিন উত্তর দেইনি।
দিন গড়ায়, সেই আপার স্বামী এক মেয়ের সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হয়। এখন তিনি হাড়ে হাড়ে পর্দা করা ফজিলত টের পান।
তার সাথে আবার একদিন দেখা। দুইজন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।
সাজুগুজু রঙ ঢং করা মেয়েদের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ‘সবাই যদি মাহরাম-নন মাহরাম মেনে চলত কতই না ভালো হত। তাহলে আর কেউ পরকিয়া করতে পারত না। এই যে রাস্তা দিয়ে রঙ ঢং করে মেয়েরা যাচ্ছে, গায়ে কাপড় থেকেও নাই, এগুলো সব বেশ্যা। পর পুরুষকে আকর্ষণ করার জন্য বাইর হইছে, বুঝলি?’
আমি হাসি, একদিন আমাকে বেশি কাপড় পরার জন্য কটাক্ষ করেছিলেন, আমি কেন তথাকথিত কম কাপড় পরা স্মার্ট নই সেজন্য উপদেশ দিয়েছিলেন, আজকে পালটে গেলেন? কেন? নিজের ঘাড়ে বেপর্দা করার ফল পেলেন বলে?
৩) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা তার ছাত্রী কেন নিকাব পরে, মুখ ঢাকে সেটা নিয়ে বিশাল স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, তার নাকি পড়াতে সমস্যা হয়। সেই ছাত্রীকে তিনি কষ্টও দিয়েছিলেন।
এরকম অনেক কুশিক্ষিত শিক্ষক আছেন যাদের এই ধর্মীয় পোশাকে চুলকায়। তারা কত ছাত্রীদের সবার সামনে লাঞ্চিত করেছেন, উপহাস করেছেন, কটাক্ষ করেছেন তার হিসেব নেই।
তাদের নাকি পড়াতে সমস্যা হয়। কী পড়াতে সমস্যা হয়?
আমিও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আমার ক্লাসে প্রচুর নিকাবি ছাত্রী থাকে। আমার তো বুঝাতে সমস্যা হয় না। লেকচারের ফাঁকে ফাঁকে পড়া ধরি, ফিডব্যাক নেই। আবার যাচাইয়ের জন্য ক্লাস টেস্টও নেওয়া হয়। খাতা কথা বলে, মুখ দেখার তো প্রয়োজন হয় না।
আসলে ঐ সেক্যুলার জালিম শিক্ষক শিক্ষিকার নিকাবে চুলকানি। কত মাজলুম ছাত্রীদের তারা বদ দুয়া পেয়েছে, তা তারা জানেও না।
আমাদের দেশ নাকি মুসলিম দেশ, এটা সম্পূর্ণ ভুয়া কথা। এটা আসলে মুসলিম নামধারীদের দেশ। এখানকার অধিকাংশ মানুষের হিজাব, নিকাবে চুলকানি, দাড়িতে চুলকানি।
এখানকার অধিকাংশ মানুষ জানে না সুদ হারাম, গান বাজনা হারাম। হালাল-হারাম সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম ধারণাও নাই।
অধিকাংশ মানুষ বিজাতীয় সংস্কৃতিতে মেতে থাকে, জন্মদিন, গায়ে হলুদ, অশ্লীল গান, নাচ আর ফ্রি মিক্সিং এর বিয়ে, পহেলা বৈশাখ এমন হাজারটা সংস্কৃতি বুকে ধারণ করে।
এরা নিজেরা পাপের সাগরে ডুবে থাকবে। কেউ যদি স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে যায়, তবে এরা কটাক্ষ করতে ছাড়ে না।
ইসলামের বেসিক রুলস মানা মুসলিমদের জঙ্গি উপাধি দিয়ে তাকে কটাক্ষ করে, হৃদয় ক্ষত বিক্ষত করে।
আল্লাহর বিধান নিয়ে যারা কটাক্ষ করে তারা কি?
আল্লাহর ফরজ বিধান নিয়ে যারা বিদ্রুপ করে তারা মুসলিম কিনা সেই ফতোয়া আমি দেব না।
আমার পরিচিত খুব তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত উঁচু র্যাংকধারী এক ভদ্রলোককে মাদ্রাসার গরিব ছাত্রদের 'টুপিওয়ালা' বলে ডাকতে শুনেছি।
এই হুজুর, এই দাড়িওয়ালা, এই টুপিওয়ালা, এই টেন্ট, এই তাবুওয়ালি, এই বোরকাওয়ালি...আরও কত বিকৃত নাম, কত উপহাস!...হোয়াট দ্যা ননসেন্স দে আর হু টেল লাইক দ্যাট!
আল্লাহর কসম, তোমাদের এই কটাক্ষের জবাব তোমরা অনন্ত জীবনে পেয়ে যেতে। কিন্তু তার আগেই তোমরা কিছু পেয়ে গেলে।
আজকে সবার মুখে মাস্ক, জীবন্ত তাঁবু বলে উপহাস করা মহান ব্যক্তির মুখেও মাস্ক।
এখন সারা শরীর ঢেকে মুখে মাস্ক পরতে লজ্জা করে না?
এখন PPE পরা ডাক্তারকে বলতে পারিস না, মুখ না দেখলে চিকিৎসা বুঝি না? ব্যাংকের সব কর্মী PPE পরে ভূত সেজে বসে আছে। এখন তাদের বলতে পারিস না, মুখোস পরলে চিনি না, কথা বুঝি না? বলতে যা একবার, চাবকানি খাবি!
.....গল্পটা কেমন লাগলো অব্যশয় কমেন্ট এ জানাবেন❤
0
2
Written by
Nurbegum
Nurbegum
4 years ago
Written by
Nurbegum
Nurbegum
4 years ago
This post is about borka. This post is very interesting. Thank you very much for your writing about borka. Keep your write again.