বিএমএ মহাসচিব প্রফেশনাল পরীক্ষা নিয়ে যে বক্তব্য দিলেন, তা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সকলেরই মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
আমাদের বিগত কর্মসূচি তাদের চিন্তাভাবনায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি,এটা পরিষ্কার।
সেদিন যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে এপ্রোচ করেছিলাম আমরা, যেটাকে তারা আমাদের modesty ভেবে নিয়েছেন।
এবং চিরাচরিত কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তারা মিষ্টিকথায় আমাদের সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
আজকের সাক্ষাৎকার অনেককেই হয়তো মানসিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।
কিন্তু এতদূর এগিয়ে এসে আমরা যদি পিছিয়ে যাই,
তাহলে চিকিৎসক সমাজের মেরুদণ্ডহীনতার আরেকটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই যৌক্তিক আন্দোলন,
কেউ বলবে না, কতটা কষ্ট স্বীকার করে, কত আত্নবিশ্বাসী হয়ে এ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম আমরা, সাধারণ মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
যে যাই বলুক, এ আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতি দিতেই হবে।
আমি এই আন্দোলনের একাত্মতা প্রকাশকারী একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরতে চাই -
১) শুক্রবারের মধ্যে প্রত্যেক জেলায় শক্তিশালী জেলা কমিটি গঠন করা হোক।
যারা সত্যিকার অর্থে উদ্যমী,নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, আত্মবিশ্বাসী তাদের নিয়েই কমিটি করা হোক।
২) প্রতিটি মেডিকেলের সিআরদের নিয়ে একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হোক, যাতে করে সেন্ট্রালের যেকোনো সিদ্ধান্ত তারা নিজ নিজ মেডিকেলে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
এতে করে কোনো শিক্ষার্থীর Lack of information হবে না।
৩) প্রতিটি জেলার প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্সের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে মিডিয়া কাভারেজ বেশি পাওয়া যাবে নিঃসন্দেহে।
এখানে অনেকের অভিভাবক / আত্মীয়স্বজন ইলেক্ট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ার সাথে যুক্ত।
প্রয়োজনে উনাদের সাহায্য নিয়ে কেউ সংকোচ করবেন না, আমাদের আন্দোলন/ দাবি যৌক্তিক, এই বিশ্বাস নিজে রাখুন, ছড়িয়ে দিন পরিবারের মাঝে।
৪) পরিস্থিতির কারণে এখন অনেকেই বাড়িতে অবস্থান করছেন। কোনো দ্বিধা না করেই নিজ জেলার মেডিকেলের কর্মসূচিতে যোগ দিন। সকলে ঢাকায় অবস্থান করছে না, জেলার আন্দোলনে গিয়ে কি হবে, এমন মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসুন।
প্রতিটা জেলায় প্রচুর মেডিকেল স্টুডেন্ট আছে,
নিজের অবস্থান থেকে চাইলে আমরা অনেককিছুই করতে পারি। মনে রাখবেন - সম্মিলিত শক্তি, ভয়াবহ শক্তি। আমাদের একতাবদ্ধ থাকলে কোনোকিছুই অসাধ্য নয়।
৫) আপনি যদি মন থেকে আন্দোলন সমর্থন না করতে পারেন, মৌনতা অবলম্বন করুন, দয়া করে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। আর আমি সকলকে অনুরোধ করবো, আগামী কয়েকদিন আমাদের বিরোধিতা করে যেসব পোস্ট আসবে, সেগুলোতে গঠনমূলক সমালোচনা করুন, তাও সম্ভব না হলে দয়া করে ইগনোর করুন।
বিরোধিতাকারীরা যত খারাপ ভাষা ব্যবহার করুক না কেন, আমরা আমাদের টেম্পার হারাবো না, কিছুতেই না।আমাদের সফলতাই তাদের সকল উপহাসের জবাব হয়ে আসবে।
৬) অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছেই দাবি আদায়ের জন্য যেতে হবে। সেক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয়দের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। আপনারা আমাদের অথোরিটির সাথে শীঘ্রই দেখা করে প্রয়োজনে আল্টিমেটাম ইস্যু করুন, যদি তারা কোনো লিখিত বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে গড়িমসি করেন।
অনেক কথা হলো,বন্ধুরা, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ঝড় তোলা হলো, এবার সময় সুসংগঠিত হয়ে রাজপথে নামার। এতগুলো বছর তো নিজের স্বার্থচিন্তা করলেন, নিজের জন্য বাঁচলেন। এই কটা দিন না হয় নিজের প্রফেশনের মানুষদের জন্য বাঁচলেন।
খুব বেশি ক্ষতি হবে কি তাতে?
মনে রাখবেন, এ আন্দোলন ব্যর্থ হলে তার ফল কিন্তু আমাদের যে কাউকেই ভোগ করতে হতে পারে।
কাজেই নিজের স্বার্থচিন্তা করে যৌক্তিক এ কর্মসূচি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না।
সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের দাবি আদায় করে নেয়ার, নিজেদের মেরুদণ্ডহীনতার অপবাদ ঘোচানোর।
আমি স্বপ্ন দেখি, আলো আসবেই।
আপনারা দেখেন তো?