"India" এবং "ভারত"
================
INDIA:
India এবং ভারত দুটো নামের ভিন্নতার ক্ষেত্রে ব্যকরণিক কোন কারণ নেই। ঐতিহাসিক কারণে "India" এবং "ভারত" শব্দ দুটি আলাদা।
'India' শব্দটির উৎপত্তি গ্রীক শব্দ থেকে। এরপর ল্যাটিন, পার্সিয়ান ভাষার মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করেছে। India বলতে Indus river (সংস্কৃত- সিন্ধু নদ) এর তীরবর্তী এবং পেছনের এলাকা নির্দেশ করা হত। প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের বলত 'ইন্দোই' বা ‘ইন্দাস’ (সিন্ধু) নদী অববাহিকার অধিবাসী। ‘ইন্দাস’ নাম থেকেই ‘ইন্ডিয়া’ নামটির উৎপত্তি হয়। সিন্ধু নদের আদি ফার্সি নাম ছিল হিন্দু। ফার্সি ভাষায় সিন্ধু নদীকে বলা হতো হিন্দু নদী। সিন্ধু/হিন্দু নদের অববাহিকায় যারা বাস করত তাদের হিন্দু বলা হত৷ হিন্দু বলতে কোন ধর্মের অনুসারী বোঝাত না৷ অর্থাৎ সমস্ত ভারতে বসবাসকারীদের হিন্দু বলা হত৷ সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, 'India' নামটি ব্যবহৃত হতো প্রাচীন ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে। পরবর্তীতে এটি জনপ্রিয় হয় এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ 'India' বলতেই পছন্দ করেন।
ভারতঃ
'ভারত' নামটি বিভিন্ন প্রাচীন সংস্কৃত পুরাণ থেকে এসেছে। যেমন, বায়ু পুরাণে নামটি পাওয়া যায়। ভারত মূলত দেবতা ‘অগ্নি’র একটি নাম। ঋগ্বেদে ভারতী হিসেবে এখানকার অধিবাসীদের, বিশেষ করে যারা দশ-রাজার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল, বুঝানো হয়েছে। মহাভারতে ভরতের রাজ্যকে বলা হয় ভারতবর্ষ।
প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন পুঁথি, ধর্মীয় গ্রন্থ হতে 'ভারত' শব্দটির উদ্ভব। তারপর ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভারত বা ভারতবর্ষ
বলতে পছন্দ করে।
অর্থাৎ বলা যায়, 'ভারত', 'India' শব্দটির ভাষান্তর নয়।বরং দুটোরই আলাদা ঐতিহাসিক পটভূমি এবং মর্যাদা রয়েছে।
Egypt এবং মিশর
=============
মিশরঃ
'মিশর' নাম শুনতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে হাজার হাজার বছরের পুরনো পিরামিড, মমি ইত্যাদি। মিসরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন, সমৃদ্ধ, এবং রহস্যময়। শত শত বছর ধরে মিসরে প্রচলিত ছিল বিভিন্ন ভাষা, আর তাই মিসরেরও ছিল বিভিন্ন নাম। বর্তমানে এর প্রাতিষ্ঠানিক নাম "জমহুরিয়া মিসর আল-আ্যারাবিয়া বা আরব প্রজাতান্ত্রিক মিসর।"
নীলনদের তীরে অবস্থিত এই সুপ্রাচীন দেশটির কালে কালে অনেক নামই ছিল। প্রাচীন মিশরীয়রা তাদের দেশকে “কেমেট” নামকরণ করেছিল। “কেমেট” শব্দটির অর্থ হলো 'কালো মাটি'। এই নামকরণের পেছনের কারণটা হলো, মিশরের পাশ ঘেঁষে চলা নীলনদের তীরের মাটি ছিল কালো।
সাধারণভাবে, পূর্বে কায়রোর অধিবাসীদের মিশরীয় আর কায়রোকে মিশর বলা হত। লোকেরা মিশর বলতে সমগ্র দেশকে বোঝাতো, কিন্তু কায়রোর বাইরের অধিবাসীরা মিশর বলতে কায়রোকে নির্দেশ করতো। মজার ব্যাপার হলো 'মিশর' শব্দের অর্থ 'দেশ'। 'মিশর' নামকরণের পিছনে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা পাওয়া যায় না।
EGYPT:
মিশর বিজয়ের পর গ্রিকরা নামটি পরিবর্তন করে 'Aegyptus' রাখে। গ্রিক সাহিত্যে এ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন এক কাল্পনিক গ্রীক দেবতা বা রাজার নাম হিসেবে। নীল নদ এবং সমগ্র দেশের নাম হিসেবে 'Aegyptus' নামটি পাওয়া যায়। বহুল প্রচলিত হওয়ার কারণে বহু দেশে অনেক গ্রীক শব্দ আত্তীকরণ করা হয়েছে। 'Aegyptus' ও এমন একটি শব্দ। পরবর্তীতে আরো কিছু পরিবর্তনের পর ইংরেজি ভাষায় দেশটির এখনকার নাম 'Egypt'।
অর্থাৎ 'Egypt' এর অনুবাদ 'মিশর' নয়। বরং দুটিরই পৃথক ঐতিহাসিক পটভূমি এবং মর্যাদা রয়েছে।