আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

0 5
Avatar for Nly09
Written by
3 years ago

কিছুদিন পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জো বাইডেন নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প?

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

=======================

প্রায় আড়াইশ বছর আগে নির্ধারিত দিন-তারিখ অনুযায়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কোনদিন এর ব্যতিক্রম হয় নি। রীতি অনুযায়ী প্রতিটি অধিবর্ষের নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সুতরাং একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল চার বছর।

যদি কেউ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে চান তাহলে তাকে অবশ্যই জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক হতে হবে এবং কমপক্ষে ১৪ বছর আমেরিকায় অবস্থান করতে হবে। প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। মূলত আমেরিকার স্থপতি এবং প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের নিমিত্তে এই আইনটি করা হয়েছে। তিনি পরপর দুবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইচ্ছে করেই তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে আর প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেননি। ১৮ বছর বয়সী নাগরিক ভোটাধিকারপ্রাপ্ত হবেন।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমেরিকায় নাগরিকদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। বরং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি হলো পরোক্ষ। সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যায় না। যেমনঃ ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন। কিন্তু হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন নি। অর্থাৎ নাগরিকদের কাছে যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকরা যাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে চেয়ে ভোট দেন, অনেক ক্ষেত্রে তিনি প্রেসিডেন্ট নাও হতে পারেন৷ কারণ ইলেকটোরাল কলেজের ভোট বলে একটা ব্যাপার আছে। চলুন, সেটাও জেনে ফেলি।

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি

====================

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রাজ্যের হাতে থাকে কিছু ভোট। কোন রাজ্যের কতজন ইলেকটোর বা নির্বাচক থাকবেন সেটা নির্ভর করে ওই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে। ফলে এই রাজ্যে ইলেকটোরের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৫৫ জন। আবার ছোট ছোট কিছু রাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার আছে তিনটি করে ভোট। আলাস্কা এবং নর্থ ড্যাকোটা রাজ্যের হাতেও তিনটি করে ভোট রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারাদেশের সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে যে ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেকটোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেকটোরাল ভোট। এই ইলেকটোরাল ভোটই মূলত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি ভুমিকা রাখে।

এখন, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ৫৫ টি। ধরা যাক, ডোনাল্ড ট্রাম্প পপুলার ভোটে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে ১ ভোটে জিতেছেন অর্থাৎ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সর্বোচ্চ পপুলার ভোট পেয়েছেন। সেক্ষেত্রে ৫৫ টি ইলেকটোরাল ভোটই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে যাবে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন মাত্র এক ভোটে হারলেও ঐ রাজ্যের একটিও ইলেকটোরাল ভোট পাবেন না।

আবার ধরা যাক, জো বাইডেন আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ১ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন। তাহলে জো বাইডেনের ঝুলিতে যাবে মাত্র তিনটি ইলেকটোরাল ভোট। কারণ আলাস্কায় ইলেকটোরাল ভোট ৩ টি। দুটো রাজ্য মিলিয়ে জো বাইডেন পপুলার ভোট বেশি পেলেও ইলেকটোরাল ভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্প এগিয়ে থাকায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে তিনি এগিয়ে থাকবেন।

সমগ্র আমেরিকা জুড়ে ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮ টি। কোন প্রার্থী যদি এককভাবে ২৭০ টি বা তার অধিক ইলেকটোরাল ভোট পান তাহলে তিনি সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যান। আর ২৭০ টির কম অথচ সর্বোচ্চ ইলেকটোরাল ভোট পেলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য সিনেটের অনুমোদন নিতে হয়।

আমেরিকার এই নির্বাচন পদ্ধতির কারণে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। কারণ বড় দুটো রাজনৈতিক দলের নজর থাকে সেইসব রাজ্যের প্রতি যেসব রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট বেশি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হারও অনেক কম এবং তা মতো জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের মতো।

1
$ 0.17
$ 0.17 from @TheRandomRewarder
Avatar for Nly09
Written by
3 years ago

Comments