আজকাল দেখি নারীবাদী শব্দটা নিয়ে প্রচুর ট্রল হয়। আর এসব ট্রল এর মূল বক্তব্যটা অনেকটা এই রকম
" আগেরকার যুগের নারীবাদীরা নারী শিক্ষা নিয়ে কথা বলত। আর এখন তারা ছোট পোশাক পড়া আর চুল কাটায় ব্যস্ত। তাদের আন্দলনের মূল বিষয় এখন পোশাক ছোট পরা।"
আচ্ছা, ব্যপারটা কি হাস্যকর না, যে আমার শরীরে আমি কতটুকু কাপড় জড়াব, আমার নিজের চুল আমি কতটুকু কাটব সেটা নিয়েও আমাকে রাস্তায় নামতে হয়?!
এখন বিতর্কের একটা বড় বিষয় হচ্ছে যৌন হয়রানির জন্য মেয়েদের পোশাক দায়ী কিনা। যেসব পুরুষ এটা দাবি করছেন যে মেয়েদের পোশাক এর জন্য দায়ী, তাদের মূল বক্তব্য কি এটাই বোঝায় না যে, "মেয়ে, তোমার শরীরের অনাবৃত অংশে আমি হাত দেব এবং এটা আমার ভুল না! বরং দোষ তোমার যে তুমি নিজেকে আমার আমার কামদৃষ্টি থেকে সরিয়ে রাখতে পারনি।" আচ্ছা, এটা কি একধরনের খোলা হুমকি নয়?! আর সেই সকল নারীর কথা বলছি যারা মনে করেন ধর্ষণের জন্য পোশাক দায়ী, তারা কি মুক্ত আহ্বান জানাচ্ছেন না সকল লম্পটদেরকে যে, "তোমাদের কামদৃষ্টি যদি না ঠ্যাকাতে পারি তবে এসো ধর্ষণ করো আমাকে, আমার মেয়েকে, আমার বোনকে এবং আমার মাকে।"
মেয়েদের কথা আলাদা করে বলার কারণ হল, যৌন হয়রানির এই বৈরী আবহাওয়ার আমরা যখন কেবল ছেলেদের দোষ দিতে ব্যস্ত, তখন যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মেয়েরাও নানা নেতিবাচক কথা ছড়াচ্ছে। আমার মনে হয়, একজন ধর্ষিতাকে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে আত্মহত্যা পর্যন্ত এগিয়ে নেয়ার পবিত্র দায়িত্বটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েরাই করে।
'অনন্ত জলিল' বা অপু ভাইয়ের মতো মানুষদের বলা কথা নিয়ে এত হৈচৈ হওয়ায় প্রথম দিকে খুবই বিরক্ত হতাম। এখন মনে হয় যে প্রতিবাদ এর প্রয়োজন আছে। একজন মুক্তমনা কখনই এ ধরনের কথা বলবে না। ছোট ছোট প্রতিবাদের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে। অবশ্য তাতে কয় শতাব্দী লাগবে তা ঠিক ধারনা করতে পারছি না।
ক্যামেলিয়া হোসেন মীম