#ছোটগল্প
একটি অপ্রত্যাশিত মধ্যরাত, অতঃপর...
নুসরাত জাহান লিজা
আচমকা বাস থেমে যাওয়ায় সামনের দিকে হেলে পড়তেই হালকা তন্দ্রা ভাবটা কেটে গেল মিলির। ব্যাগ হাতড়ে মুঠোফোন বের করে দেখল চার্জ শেষ হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল ওর, জানালার পাশে বসা লোকটির অবশ্য কোন হেলদোল দেখল না ও। একবার আশেপাশে তাকিয়ে আবারও গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজল লোকটা। কিছুক্ষণ পরে বাসের কন্ডাক্টর ক্যাটক্যাটে গলায় জানাল, বাস আপাতত আর যাবে না, কী একটা সমস্যার কথাও বলল, ঠিকমতো খেয়াল করতে পারেনি মিলি!তখন অস্বস্তি বেড়ে কয়েকগুণ সাথে আশঙ্কা! বাসের লাইট জ্বালিয়ে দিতেই হাতের ঘড়িতে দেখল রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। এই সময় ওর বাড়িতে পৌঁছে নিজের বিছানায় ঘুমোবার কথা, আর এখন কিনা মাঝ রাস্তায় এক অনিশ্চিত যাত্রী!
এসেছিল চাকরির ভাইভা দিতে, এসব দৌড়াদৌড়ি ও একাই করে, বাবাকে এসবে টানাটানি করা ওর পছন্দ নয়। আর তাছাড়াও বিকেল পাঁচটার বাসটা দশটা সাড়ে দশটার মধ্যেই পৌঁছে যায়, বাসস্ট্যান্ডে বাবা এসে দাঁড়িয়ে থাকেন ওকে নিতে। দিব্যি চলে যায় এই করেই, প্রায় এক দু'সপ্তাহ পরপরই কোনো না কোনো পরীক্ষার ডেইট পরছে, শুধু শুধু বাবাকে এর মধ্যে টেনে আনার কোন মানে হয় না। প্রথমবার শুধু বাবার সাথে এসেছিল, খুব একটা সমস্যা হয় না বলেই একা একাই চলাফেরা করে ও।
যখন জানানো হলো বাস আর এগুবে না, তখন মিলির মাথায় শুধু আকাশ না, পুরো সৌরজগত ভেঙে পড়েছে যেন! একে তো প্রায় মধ্যরাত, তার উপর একেবারেই একা ও, অস্বস্তি সরে গিয়ে ভয় জায়গা করে নিল দ্রুতই। পাশের লোকটার খুব একটা হেলদোল দেখা গেল না তবুও, নির্বিকার মুখে হাত পা নাড়িয়ে আড়মোড়া ভাঙল, হাই তুলল বার দুয়েক। এরপর আশেপাশে তাকিয়ে রাস্তার দু'পাশের গাছের সাড়ি আর সরিষা ক্ষেত দেখল যেন আলো আঁধারিতে।
এরপর আচমকা মিলির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,
"কী করবেন এখন, বাসেই অপেক্ষা করবেন নাকি নেমে অন্য কোনো বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করবেন?"
সহসা কোনো উত্তর দিতে পারল না মিলি, নিজের উপরে প্রচন্ড রাগ হলো। কেন যে আরেকটু দ্রুত আসতে পারল না বাসস্ট্যান্ডে! ইন্টারভিউ শেষ করে বিশাল জ্যাম পেরিয়ে যখন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছল, জানতে পারল মিনিট কয়েক হলো ওর কাঙ্ক্ষিত বাসটা ছেড়ে গেছে। পরের একটা লোকাল বাস আছে, যেটা সাতটায় ছাড়বে। ঢাকায় ওর তেমন কোনো কাছের আত্মীয় পরিজন নেই। অগত্যা ওই লোকাল বাসকেই ভরসা করতে হলো। কিন্তু সাতটা বললেই কী আর সাতটায় ছাড়ে? লোক ঠাসাঠাসি করে বাস ভর্তি করিয়ে ছাড়তে ছাড়তে সেই আটটার পরে। এরপর তো ঢিমেতালে চলা আর কিছুক্ষণ পরপর সেই বাসে গাদাগাদি করে আরও লোক ভর্তি করা। এসব বাসকে কেন মুড়ির টিন বলা হয় সেটা হাড়েহাড়ে টের পেল মিলি। আর এখন তো অর্ধেক রাস্তা আসতেই এই মুড়ির টিনের দম শেষ! কী করবে কিছুই মাথায় আসছে না।
পাশের লোক আবারও জিজ্ঞেস করতেই সম্বিতে ফিরল ও,
"আসলে বুঝতে পারছি না কী করব! আমি তো এখানকার কিছু চিনি না।"
"আরেকটু সামনে গেলেই একটা বাজার আছে, খুব একটা দূরে না, হাঁটা পথ। ওখানে গেলে হয়তো কোনো একটা ব্যবস্থা হবে।"
দ্বিধা কাটিয়ে মিলি বলল, "আপনি কোথায় যাবেন? "
"দেখি, আমার এক বন্ধুর বাড়ি আছে বাজারের কিছু পরেই। কোনোকিছুর ব্যবস্থা না হলে ওইখানেই হয়তো যাব!"
আশেপাশে তাকিয়ে দেখল সবাই প্রায় নেমে যাচ্ছে। জনা কয়েক যারা বাসে থাকছে এদের চেহারা দেখে বাসে বসে থাকার ভরসা পেল না। কেন যে সেলফ ডিফেন্স শেখেনি! তাহলে কারও উপর ভরসা করতে হতো না।
"যাবেন নাকি বলুন, আর নয়তো জায়গা দিন, আমি নেমে যাই।" তাড়া লাগায় লোকটা।
"আচ্ছা চলুন তবে, বাজারের দিকে যাই।" কিছুক্ষণ ভেবে নেমে যাওয়াই মনস্থির করল। লোকটার বয়স ত্রিশের কাছাকাছি হবে হয়তো, ভালো ফ্যামিলির ভদ্রগোছের ছেলে বলেই মনে হলো। এসব ভেবেই উঠে দাঁড়াল মিলি।
এছাড়া আর কিছু মাথায় আসছে না ওর, এই ছাব্বিশ বছরের জীবনে এরকম সংকটে কখনো পড়েনি। অচেনা, অপরিচিত এক লোকের সাথে নেমে এলেও ভরসা করতে পারছে না এতটুকু। কী এক ভয় আর অনিশ্চয়তায় ভেতরটা কাঁপছে দুরুদুরু! ভয়, শঙ্কা সর্বোপরি প্রবল অনিশ্চয়তা নিয়ে পিছু নিল অচেনা আগন্তুকের!
আকাশে মস্ত এক চাঁদ, সেখান থেকে উছলে পড়ছে আলোকের ঝর্ণাধারা! ওরাও সেই আলোতে ভিজে একাকার!
"আপনার কাছে মোবাইল আছে?"
পকেট হাতড়ে মোবাইল বের করে বাড়িয়ে দিল মিলির দিকে। মিলি সেটা হাতে নিয়ে দেখল বন্ধ হয়ে আছে।
"আপনার ফোনটা তো বন্ধ!"
"হ্যাঁ, চার্জ শেষ হয়ে গেছে।" আবারও নির্বিকার মুখে উত্তর দিল লোকটা।
কিন্তু এবার মিলির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল,
"চার্জ নেই যখন তখন ফোনটা আমাকে দিলেন কেন? আপনার ফোনের চেহারা দেখে আমি কী করব?"
"আরে, আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? আপনি ফোন চেয়েছেন আমি দিয়েছি, চার্জ নেই সেটা তো আর আমার দোষ নয়, নাকি?"
এরকম উত্তরে নিজের মেজাজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রচণ্ড রকম বেগ পেতে হলো মিলিকে। দাঁতে দাঁত চেপে দৃষ্টিতে কাঠিন্য এনে একবার লোকটির দিকে তাকিয়ে ফোনটা ফেরত দিল।
বাড়িতে সবাই নিশ্চয়ই ভীষণ চিন্তায় আছে, বাবা হয়তো বসে আছে বাসস্ট্যান্ডেই! ফোনটা থাকলে তাও বাসায় জানাতে পারত। এই যে অদ্ভুত সুন্দর চাঁদের আলো, তাও ওর কাছে কেমন যেন পানসে লাগছে! ক্ষুধার্ত ব্যক্তির কাছে পূর্নিমার চাঁদ যেমন ঝলসানো রুটির মতো, সেরকমই এই পৃথিবী ভাসানো জোছনাকেই ওর একমাত্র বিশ্বস্ত সঙ্গী মনে হচ্ছে। বারবার মনে হচ্ছে পাশাপাশি চলা লোকটাকে ঠিক কতটা বিশ্বাস করা যায়? খচখচে একটা অনুভূতি থেকেই যায় মনে!
হাঁটাপথ বললেও অনেকটা হাঁটার পরেও যখন বাজারের দেখা পাওয়া গেল না, বুকের ধুকপুকানি ক্রমশ বাড়তে থাকল। তারমধ্যে তাড়াহুড়োয় দুপুরে ঠিকমতো খেতেই পারেনি ভাইভার টেনশনে, এখন ক্ষুধা জেঁকে বসেছে একেবারে। আর বাস ধরার তাড়া থাকায় কোনো খাবারও নিতে পারেনি। আর কতদূর যেতে হবে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে কী করবে না ভাবতে ভাবতেই অদূরেই বাজারের আভাস পেল।
বাজারেও একেবারে নিথর নীরবতা, একটা দোকানে শুধু টিমটিমে আলো জ্বলছে, অনেকটা টঙ দোকানের মতোই। দোকানের লোকটা ভেতর থেকেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছিল, হয়তো ঘুমাবার বন্দোবস্ত করছে। দ্রুত পা চালিয়ে লোকটাকে নিরস্ত করতে পারল। ঘড়িতে একটা ছুঁই ছুঁই, দুজনে বসে চা আর টোস্ট নিল। এছাড়া এই দোকানে আর কিছু খাবার উপযুক্ত মনে হলো না। পেটকে কিছুটা শান্ত করতে চা-টোস্টই বেছে নেয়। এরকম পাড়াগাঁয়ে মধ্যরাতেও যে দোকান খোলা ছিল এই পরম ভাগ্য।
আবারও পা বাড়ায় অনিশ্চিত গন্তব্যে! আশ্চর্য, এখনো কেউ কারোর নামই জানে না। মিলিই প্রথম জিজ্ঞেস করল,
"আপনার নামটা?"
"শফিক। আমি মাত্রই আপনার নামটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম।" গলায় উচ্ছ্বাস, যেন এই কাকতাল খুব মজার কিছু! এখানে এত মজার কী ছিল মিলির ঠিক বোধগম্য হলো না। নির্বিকার গলায় বলল,
"আমি মিলি।"
"একা একা রাতের বাসে যাচ্ছিলেন কেন?"
"ইন্টারভিউ ছিল।" সংক্ষিপ্ত উত্তর ওর। কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না।
"আমার জয়েনিং দুদিন পরে, আপনাদের এলাকায়। অবশ্য এর আগেও সেখানে গিয়েছি কয়েকবার। সেও অনেক আগে।" শফিক বলে উঠে।
"হুম" দুঃশ্চিন্তা নামছেই না মাথা থেকে।
"আপনি মনে হয় আমাকে এখনো ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারেননি। কী আর করা।"
সহসা থেমে গিয়ে কিছুটা অভিমানী সুরেই বলল শফিক।
মিলি কিছুটা যেন থমকাল এরকম কথায়! এই প্রথমবার খুব ভালো করে তাকাল শফিকের দিকে, পূর্ণ দৃষ্টিতে। সরল একটা অভিব্যক্তি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ল না, নাকি চোখ এড়িয়ে গেল এই অস্পষ্ট, অস্বচ্ছ আলো আঁধারিতে? সহসা মনে হলো বিশ্বাস করাই যায় লোকটাকে!
দু'একটা গাড়ি পাওয়া গেলেও কেউই এত রাতে দূরে কোথাও যেতে সম্মত হলো না। অগত্যা শফিকের সাথে ওর বন্ধুর বাড়ি যেতে রাজি হলো নিতান্ত অপারগ হয়ে।
"স্যরি, আমার জন্য আপনি ঝামেলায় পড়ে গেলেন!" গলায় কিছুটা অপরাধবোধ।
"স্যরি কেন বলছেন? রাত বিরেতে একটা মেয়েকে একা ফেলে চলে যাব, এটা হয় নাকি?"
কৃতজ্ঞচিত্তে মাথা নাড়ে মিলি। যে ছেলের এতটা দ্বায়িত্ব বোধ তাকে আর অবিশ্বাস করে কী করে! কিন্তু মিলি তখনও জানে না যে, কিছু কিছু মানুষ থাকে যাদের সারাজীবনেও চেনা যায় না, সেখানে কয়েক মুহূর্তের পরিচয়ে কাউকে বিশ্বাস করা শুধু বোকামিই নয়, মূর্খতা। কারণ এই সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিতে অনেকেই ওঁত পেতে বসে থাকে, বিশ্বস্ততার টোপ ফেলে। সরল বিশ্বাসে পিছু নিল শফিকের, এতক্ষণ যেই সতর্কতা ছিল তাও ঢিলে হয়ে গেল। এরকম সুযোগের অপেক্ষায়ই হয়তো ছিল প্রতিপক্ষ! সরল বিশ্বাসের মাশুল দিতে হলো সব হারিয়ে, নিজের জীবনটা খুইয়ে।
মিলির বাড়ি থেকে অনেক খোঁজখবর নিয়েও যখন কিছু জানতে পারল না, তখনই দুদিনের মাথায় নদীতে এক মেয়ের লাশ ভেসে উঠে। মিলির পরিবারও সেই খবর পেয়ে ছুটে যায়, আর লাশটাকে মিলি বলে শনাক্ত করতে পারে। মিলির বাবার করা মামলায় কোনো অগ্রগতি হয় না, সময়ের সাথে সাথে ধামাচাপা পড়ে যায় সবটা। আসল অপরাধী থেকে যায় আড়ালেই, প্রমাণের অভাবে, নাকি ক্ষমতার প্রভাবে জানা নেই!
মাঝে পেরিয়ে গেছে অনেকবছর, এক বারো বছরের কিশোরী মেয়ের লাশ সামনে নিয়ে গগনবিদারী আর্তচিৎকারে ফেটে পড়ছে শফিক। সেই মেয়েটির বাবা সে। এত ছোট নিষ্পাপ ফুটফুটে মেয়েটার সাথে কে এমন করল, এতটা নিষ্ঠুর কেউ কীভাবে হতে পারে? এসব আহাজারি ঝরছিল গলায়, সহসাই বিস্মৃতির অতল থেকে নিজের বিশ্বাসঘাতকতার কথা ভেসে উঠল চোখের সামনে। সেই জোৎস্নালোকিত মধ্যরাতে একজনের বিশ্বাসকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিল। সে রাতে ও শুধু একটা মেয়ের সম্ভ্রম আর জীবনটাই নেয়নি, গলা টিপে মেরেছে বিশ্বাস নামক বস্তুটাকে। প্রথমে নির্ভরতা অর্জন করে, বিশ্বাসের গলায় কাঁচি চালিয়েছিল। সেসময় গাঁ ঢাকা দিয়ে পার পেয়েও গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতির বিচার বড্ড কঠিন, বড্ড নির্মম! জাগতিক বিচারব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে পারলেও প্রকৃতি কখনোই ভুলে যায় না, কখনোই ছাড় দেয় না। মানুষের প্রতিটি কৃতকর্মের ফল ফিরিয়ে দেয় কয়েকগুণ করে। উপরে আল্লাহ আছেন, তাঁর বিচার কেউ এড়িয়ে যেতে পারে না। আল্লাহ সকলকেই উত্তম প্রতিদান দেন।
"ভুলটা তো আমি করেছিলাম, আমার অপরাধের শাস্তি আমার মেয়েটা কেন পেল, আল্লাহ.."
শফিকের এমন আহাজারিতে প্রায় পুরো হাসপাতাল কেঁপে কেঁপে উঠছিল। শফিক আর ওর মেয়ের জন্য এতক্ষণ সবার প্রগাঢ় সহানুভূতি কাজ করছিল, কিন্তু যখনই নিজের পাপের ফিরিস্তি দিতে শুরু করল, তখনই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করল। যেটুকু সহানুভূতির প্রগাঢ়তা সবটাই শুধু ভিক্টিম মেয়েটার জন্যই থাকল, আর শফিকের জন্য শুধুই প্রগাঢ় ঘৃণা।
শফিক হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সব বলে ফেলল। পাশে বসা মেয়ের শোকে মূর্ছা যাওয়া অজ্ঞান স্ত্রী জ্ঞান ফিরে সবটা শুনে পাথরপ্রায়। এরকম এক মুখোশধারী ঘৃণ্য মানুষের সাথেই সে সংসার করেছে এতগুলো বছর! ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি কিছুই, এতটা কাছাকাছি থেকেও!
শফিকের কৃতকর্মের বলি ওর নিষ্পাপ মেয়েকে হতে হয়েছে, একজন বাবার জন্য এর থেকে ভয়ংকর শাস্তি আর কী হতে পারে! মেয়েটার তো কোনো দোষ ছিল না! নিষ্পাপ মেয়ের এমন পরিনতি কেউই চায় না, কারোই কাম্য নয়, কেউ সমর্থনও করে না। কিন্তু উপরওয়ালা হয়তো অন্যকিছু ভেবে রাখেন। এমন কঠিন শাস্তি দিয়ে হয়তো আরও অনেক শফিককে সতর্ক করে দেন। যেন এমন ঘৃণ্যতম কাজ করতে গেলে ওদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে তীব্র ভয়ে, নিজের প্রিয়জনের কথা যেন চোখে ভেসে উঠে।
সবার ঘরেই মা আছে, বোন আছে, একসময় সংসার পাতবে প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিয়ে, মেয়ের বাবাও হবে। তবুও কেন এই অধঃপতন, অবনমন চারিত্রিক, মানসিক, নৈতিক? বাইরের যে মেয়ের সাথে নিজের বিকৃত মস্তিষ্কের প্রকাশ ঘটায় সেও অন্য কারো মেয়ে, বোন, মা, স্ত্রী।
সবাই যদি অন্যের মা, বোনের দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকানোর আগে চিন্তা করত নিজের মা, বোনের দিকে কেউ একই দৃষ্টিতে তাকালে কেমন লাগবে, একই আচরণ করলে কেমন লাগবে? তবে কেউ এভাবে তাকানোর সাহস করত না। মিলির মতো কিংবা এই মেয়ের মতো হাজারো মেয়েরা বেঁচে যেত শফিকের মতো ঘৃণ্য পশুদের লালসা থেকে! এরা যখন নিজের ভুলটা বুঝতে পারে তখন আর কিছুই করার থাকে না, পাপের মাশুল দিতে হয় নিঃস্ব হয়ে, সবটা হারিয়ে। তাই সময় থাকতে এরকম হাজারও শফিকের বোধশক্তি জাগ্রত হওয়া অতি জরুরি।
............