যার নামের আগে বা পরে ,অপরাধীর যেকোনো তকমা-
অনায়েসে জুড়ে দেওয়া যায় ৷
অন্ধ বললেও মন্দ হয় না ,যে প্রাক্তনের প্রেমে মজে ছিল
পবিত্র প্রেম যার চোখে পড়ে নি ৷
খুনি তকমা জুড়লেও অতি নগণ্য মনে হবে-
যে ভালোবাসা খুন করেছে ,কত কল্পণা খুন করেছে ,
জন্ম হওয়ার আগেই খুন করেছে কত ইচ্ছেদের !
তবুও কিছু ইচ্ছে দিনলিপির বুক ছুঁয়েছে
আজ যা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে ,
দুচোখের অশ্রুতে ভিজে যাচ্ছে বুক পকেটের দিকটাও!
এই যেমন ইচ্ছে ছিল-
আমার বুকে মাথা রেখে আর্তনাদ শোনা ,
দুষ্টুমি করে, বুকের হৃদস্পন্দন গুনা !
অথচ বুক কেন! ভালোবেসে কখনও-
পায়ের কাছেও বসতে দেয় নি ৷
কত বার যে আমাকে নিয়ে ফুচকা খেতে চেয়েছিল ;
বলতে গেলে হয়তো আরো বছর চারেক লেগে যাবে ৷
আমি খুব আইসক্রিম পছন্দ করতাম
কখনও জানা হয় নি ,
সেও খুব আইসক্রিম প্রিয়সী ছিল ৷
আমাকে সাথে নিয়ে আইসক্রিম খাবে বলে-
আর আইসক্রিম খাওয়াই হলো না !
"একটা আইসক্রিম দু'জনে মিলে খাবো ,
ইচ্ছে করেই তোমার গালে লেপ্টে দেবো৷"
এই লাইন দু'টো যে কত বার লেখা-
নতুন করে লিখতে গেলে কলম ক্লান্ত হবে ৷
চোখের জলে লেপ্টে যাওয়া কালিই বলে
সেদিন সে কতটা কেঁদেছিল ,
যেদিন সামান্য আমার বালিশে মাথা রাখার জন্য ,
কত কিছুই না বলেছিলাম ৷
দিনলিপির সাতশতম পৃষ্ঠা স্পষ্ট বলে ,
কতটা অপমান বোধ করতো সে ,
চায়ের কাপের হাতলের দিকটায় পান করাকে-
যখন খুব বিশ্রীভাবে অপমান করতাম ৷
কিন্তু আজ-
আমার তৃষ্ণার্ত বুকে ,
মাথা না রাখতে পারার চাপা কষ্ট বোধ করি ৷
ফুচকার নাম শুনলে
আর সবার মতো জিভে নয়,চোখে জল আসে ৷
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ,
আইসক্রিম না খাওয়ার ব্রত পালন করছি ৷
আজ আমার বালিশ সরিয়ে ,
তার বালিশে মাথা রাখি,চুলের সুবাস খুঁজি ৷
বিছানার যে পাশটায় সে শুয়ে থাকতো ,
সেখানেই সারাদিন ঘুমাতে ইচ্ছে করে
খুঁজতে থাকি তার গাঁয়ের সুঘ্রাঁণ !
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ,
এই বালিশে,এই চাদরে তার আদর খুঁজে যাবো ৷
চিহ্ন দেওয়া চায়ের কাপটা ভেঙে ,
তার ঠোঁট লাগানো কাপটায় ,ঠিক হাতলের দিকটায় ;
ঠোঁট লাগিয়ে থাকি চা শূন্য কাপে ৷
শেষ ইচ্ছেটাও আমি রাখতে পারলাম না ,
"আমায় তুমি ক্ষমা করো" ৷
যতটুকু ভালোবাসা পেলে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত-
ভালোবাসার অভাববোধ হবে না ,
ঠিক ততটুকু ভালোবাসা তুমি দিয়েই গিয়েছ ৷
তাই ইহলোক ও পরলোকে ,
আর ভালোবাসার প্রয়োজন নেই ৷
শুধু তোমাকে প্রয়োজন ,শুধু তোমাকে ৷
কবিতা:এপিটাফের ঠিকানায়
রচয়িতা:শাহিদুল ইসলাম