রুদ্র কে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি,খুব সহজ-সরল ভালো মনের বালক,ক্লাসের টপ 5 এরমধ্যে একজন,যে সবসময় পরিপাটি হয়ে থাকতে প্রয়োজনের বেশি কখনোই কথা বলেনা, অপ্রয়োজনে এমনকি বাসা থেকে বের হতো না আমার দেখা মতে রুদ্র এখনো খুব ভালো ছেলে,
সে যখন নবম-দশম ছিল নিবেদিতা নামে একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করত নিবেদিত ক্লাসের টপ ফাইভ এর মধ্যে একজন, নিবেদিত ছিল উড়নচণ্ডী চালাক প্র লেভেলের,নিবেদিতা খুব সহজেই সহপাঠী সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে,বন্ধু হওয়ার পরে ছোটখাটো চিরকুট আদান-প্রদান এবং কি নিবেদিতা একদিন রুদ্রকে পছন্দ করে শব্দটি তাকে জানিয়ে দেয়,
রুদ্র সাতপাঁচ না ভেবে অনেকটাই নীরব থেকে সম্মতি জানায়, তারা একসাথে প্রাইভেট পড়ে,কলেজের সামনে ফুচকা আড্ডায় মেতে উঠে,হয়তো নিবেদিতা রুদ্রকে অনেক বেশি ভালোবাসতো, কিন্তু একদিন রুদ্র স্বাভাবিক চিন্তা থেকে দেখল যে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে,আর তারা দুজনেই ভালো স্টুডেন্ট বিজ্ঞান বিভাগের টপ ফাইভ এ থাকে সবসময়,
রুদ্র চিন্তা করল যে নবম-দশম পর্যায়ে যেন পড়ালেখার কোন সমস্যা না হয় সেজন্যই রিলেশন থেকে সরে আসে, রুদ্র নিবেদিতার ভালোর জন্য রিলেশন থেকে সরে আসে, রুদ্র তাকে দিক নির্দেশন না করার ব্যাপারে অসম্মতি জানায়,
ব্যাপারটা এরকম ছিল যে রুদ্র ওর সামনে এমন ভাব করত মনে হয় ওকে দেখলেই এসে পৃথিবীর সবচাইতে বাজে বস্তু বাজে মানুষ সে দেখতো,দুনিয়ার সবচাইতে নোংরা অবহেলা রুদ্র করে যেত,আসলেই রুদ্র মন থেকে তাকে অনেক ভালবাসত শুধু নিবেদিতার ভালো ফলাফলের জন্য ভালো ক্যারিয়ারের জন্য এটা কখনোই প্রকাশ করেনি,
মেট্রিক পরীক্ষা শেষে একদিন রেজাল্ট হয় দুজনেই জিপিএ ফাইভ কে পাস করে,তাদের মধ্যে স্থান কত দূরত্ব হয়ে যায়, দুজনের ভালো কলেজে পড়ে;তখন একজনের কলেজ থেকে অন্যজনের কলেজের দূরত্ব প্রায় 200 কিলোমিটার,
ছেলেটি ওকে ভালোবাসতো পছন্দ করত কারন ওর জীবনে শুধু নিবেদিতা নামে মেয়েটা ছিল.উড়নচন্ডী মাঝে মাঝে টেক্সট করা হতো ,রুদ্র চেয়েছিল যে সে মেডিকেল কলেজে পড়বে, আর নিবেদিতা হয়তো চেয়েছিল কোন ভার্সিটিতে শিক্ষকতা করবেন,
যখন ইন্টার এর ফলাফল হয় দুজনেই ভালো ফলাফল করে, কিন্তু রুদ্র অল্পকিছু নাম্বারের জন্য হয়তো মেডিকেলে পড়াশোনা করতে পারেনি,নিবেদিতা ঠিকই দেশের নামকরা ইউনিভার্সিটি তে চান্স পায়,হয়তো রুদ্র তখন মানসিকভাবে হতাশ থাকে তাকে সাপোর্ট করার মত কেউ ছিলনা ,তাকে সাপোর্ট দেওয়ার মত নিবেদিত হারিয়ে গিয়েছিল ,তার অন্যতম কারণ রুদ্র হয়তো মেডিকেল কলেজে পড়তে পারেনি,এজন্য নিবেদিতা ঠিকই তার কাছ থেকে গুটিয়ে নেয়,
প্রকৃতপক্ষে রুদ্র সবসময় নিবেদিতার ভালো চাহিত,নিবেদিতার ভালোর জন্য সে মনের বিরুদ্ধে যোগাযোগ বন্ধ করে,
রুদ্র সবসময় মনে করতো যে যখন আমি ভালো মেডিকেলে চান্স পাবো,হয়তো তখন পারিবারিকভাবেই এ নিবেদিতা কে নিয়ে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখবো,হয়তো নিবেদিতা কাছে সব সময় রুদ্রর থেকে তোদের ক্যারিয়ার এর মূল্য বেশি ছিল,
রুদ্রা একদিন আমাকে বলে ভালোবাসাটা আসলে ভিন্ন এক জিনিস,আমিতো নিবেদিতার চেহারা দেখে ওকে ভালোবাসিনি, আজ যদি ওর চেহারায় আগুনে জ্বলছে যায় তাহলে কি আমি ওকে ভালোবাসবো না,আমারটা ভালোবাসা ছিল আমি হয়তো ভুল মানুষকে ভালোবেসেছিলাম,
নিবেদিতা আমার ক্যারিয়ারকে ভালবেসেছিল আমাকে না আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে,
ঈদের কয়েকদিন আগে শপিং এ গিয়েছিল রুদ্র,হঠাৎ করে পিছন থেকে নিবেদিতা এসে জিজ্ঞেস করে কিরে কেমন আছিস, রুদ্র বলে জি ভালো এই শব্দ টা বলেই পিছনে না তাকিয়ে শপিং মল থেকে বাইরে চলে আসে,
হয়তো সেদিন কি আমার দেখা সবথেকে আশ্চর্যজনক একটি দিন,কারণ সেদিন আমি দেখেছি রুদ্র এর চেহারায় রাগ কি করে ফুটে উঠে, দিন শেষে রুদ্র শুধু নিবেদিতার ভালই চায় সব সময় শুভ কামনা জানা, তার কোন আক্ষেপ অভিযোগ নেই,
রুদ্ধ তাকে মনে ও রাখেনি তার কারণ সে এভাবে ব্যাখ্যা করে, ভালো মানুষদের মনে রাখা যায় ,কিন্তু দুনিয়ার সবথেকে নিকৃষ্ট মানুষ যারা যাদের সবকাজে স্বার্থ জড়িত তাদের মনে রাখাটা দায়,