সিলেটের ভেতরে সালমা যে কলেজে ভর্তির ফরম কিনতে যাচ্ছে, সে কলেজেই তার সঙ্গে আমার দেখা হচ্ছে। আমার সঙ্গে তার দেখা অনিচ্ছাকৃত হলেও, তার সঙ্গে আমার দেখা হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে। সে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে, আমি যে তার পিছু নিয়েছি। আর পিছু নিয়েছি সেই ইন্টার লেভেল থেকে। এখন তার অনার্সে ভর্তির পালা। পাত্তা সে কোনোদিন দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না; আমি জানি। কিন্তু আমি যে নাছোড়বান্দা, সহজে পিছু ছাড়ার পাত্র আমি নই।
আজ এসেছি নতুন আরেকটি কলেজে। সালমার পিছু পিছু এসে কখন যে কলেজের ভেতরে ঢুকে পড়েছি; খেয়াল করিনি। নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে এ যেন কলেজ নয়, যেন একটা ফুল বাগান। যেদিকে তাকাই; লাল, কালো, সাদা, গোলাপি ফুল আর ফুল। কলেজে এতো এতো ফুল দেখে মনে হচ্ছে, এ কলেজে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। ছাত্ররা বোধহয় খুব একটা কলেজে আসে না, তাই ভ্রমরের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
ভর্তির ফরম কেনার জন্য সালমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছি। সে ফরম কিনে চুপচাপ চলে যাচ্ছে। এবার আমার পালা। ফরম বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিত একটা লোক বললো__
'ছাত্রীর নাম?'
এমন প্রশ্ন শুনে দিনের শুরুতেই গেলো মেজাজটা বিগড়ে। দিলাম আচ্ছা মতো ঝাড়ি__
'ওই মিয়া, আমারে দেখে কি মেয়েমানুষ মনে হয়?'
লোকটা চেয়ার থেকে দাপাদাপ দাঁড়িয়ে গেলো। মারমার কাটকাট ভঙ্গিতে বললো__
'এই যে মিস্টার, চোখ কি হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘুরে বেড়ান? কলেজে ঢোকার আগে কলেজের নাম দেখেননি? যান, এক্ষুণি কলেজের নামটা দেখে আসুন।'
লোকটার এমন অপ্রাসঙ্গিক কথা আর অসদাচরণ দেখে লজ্জায়, অপমানে ভর্তির ফরম না কিনে সোজা কলেজের বাইরে চলে এলাম। লোকটার কথামতো কলেজের সাইনবোর্ডটার দিকে তাকালাম। তাকানো মাত্রই আমার চোখ দুটো এক্কেবারে ছানাবড়া হয়ে গেলো! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে না পেরে পথচারী একজনকে জিজ্ঞেস করলাম__
'ভাই, এই কলেজটার নাম কী?
- সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ।
আমি ভুল শুনেছি নাকি ভুল দেখেছি তা জানি না। তবে কী এক অজানা ভয়ে বুকটা ধকধক করে কেঁপে উঠলো। এখন কী হবে, যদি সালমা এখানে ভর্তি হয়। তাকে যদি প্রতিদিন দু বেলা না দেখি আমার ঘুম হয় না, আর সে যদি এখানে ভর্তি হয়; তাহলে আমার সব শেষ। আমার ভালোবাসার কী হবে?
একটা টেলিফোন সার্ভিসের দোকান থেকে সঞ্চিতাকে ফোন দিলাম। সঞ্চিতা সালমার খুব কাছের বান্ধবী। সে জানালো, সে আর সালমা দুজনেই সরকারী মহিলা কলেজে ভর্তি হবে। সে ভর্তি হবে তার বান্ধবীর কারণে, আর সালমা ভর্তি হবে আমার কারণে। যাতে খুব সহজে আমি তার নাগাল না পাই। আমার হাত থেকে বাঁচতে নিরুপায় হয়ে সে এখানে ভর্তি হচ্ছে, নইলে সিলেট সরকারী এমসি কলেজে ভর্তি হবার খুব ইচ্ছে ছিল তার।
কলেজ ছুটি হয়ে গেছে। কী করবো না করবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না। কলেজ গেইটে কর্মরত দারোয়ান চাচার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট এগিয়ে দিলাম। দারোয়ান চাচা নিতে চাচ্ছেন না। অবশেষে নিলেন। দুজনের ঠোঁটে জ্বলছে দুইটা জ্বলন্ত সিগারেট, এক সঙ্গে দুজনে সিগারেটে সুখটান দিচ্ছি। আমি নাকের দু ফুটো দিয়ে কয়লার ট্রেনের ধোঁয়ার মতো ধোঁয়া বের করছি। একটু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দারোয়ান চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম__
'চাচা, দেশের বাড়ি কই?'
- নেত্রকোনা।
'বউ ছেলেমেয়ে কই থাকে, এখানে?'
- না বাবাজি, ওরা দেশের বাড়ি থাকে।
'ও আচ্ছা, কিছু মনে না করলে বলবেন কি এখানে বেতন কত পান?'
- পাঁচ হাজার টাকা বাবাজি।
'সংসার চলে এই টাকায়?'
- হ্যাঁ বাবাজি, আল্লাহ্র রহমতে কোনোরকম চলে যায়।
'আমি যদি আপনাকে আগামীকাল নগদ এক লাখ টাকা দিয়ে দেই আর প্রতিমাসে দশহাজার টাকা করে বেতন দেই, তাহলে কি এই চাকরিটা আমাকে দিয়ে দেবেন?'
আমার মুখে এ কথা শুনে দারোয়ান চাচা তুমুল আনন্দে হাসতে শুরু করলেন। দেখে মনে হচ্ছে উনার কাছে এটা ছিল এযাবতকালের সেরা জোকস। আমি উনার হাসিরে উপেক্ষা করে বারবার বলতে লাগলাম__
'সিরিয়াস চাচা, মজা না।'
দারোয়ান চাচা ভ্রুকুঁচকে বললেন__
'আপনি দারোয়ানির চাকরি দিয়ে কী করবেন; বাবাজি? বড়োলোক মানুষ, শিক্ষিত মানুষ।'
- দরকার আছে চাচা, কাল থেকেই চাকরিটা আমার খুব প্রয়োজন। প্রিন্সিপাল হোক আর কলেজ কর্তৃপক্ষ হোক, আগামীকাল যে কেউর সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন। আর বলবেন, আমি আপনার ভাতিজা। আপনি আর এই চাকরি করবেন না, এখন থেকে আমিই করবো।
দারোয়ান চাচা মাথা নেড়ে সমর্থন দিলেন। বাসায় এসে আম্মুকে বললাম, আমি আর কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো না, প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়বো এবং কালই ভর্তি হবো। ভর্তি হতে প্রথমেই লাগবে এক লাখ টাকা, এরপর থেকে প্রতিমাসে দশ হাজার টাকা। এতো বড়ো এমাউন্ট শুনে আম্মুর মাথা পুরাই আউলাইয়া গেছে। আম্মুকে হুমকি দিয়ে বললাম__
'টাকা না দিলে আর পড়বো না, এখন ইচ্ছে তোমার।'
পরদিন সকালে দারোয়ান চাচার হাতে এক লাখ টাকা তুলে দিলাম। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না আমি যে সত্যি সত্যি চাকরিটা চাই। দারোয়ান চাচা প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করাতে আমাকে অফিস রুমে নিয়ে যাচ্ছেন। অফিসের দরজায় ওই লোকটার সঙ্গে দেখা, যে কি না গতকাল ফরম বিতরণের দায়িত্বে ছিল। আমি লোকটাকে দেখে না দেখার ভান করে এদিকসেদিক তাকাচ্ছিলাম। লোকটা তখন আমাকে দেখে বলল__
'এই ছেলে, তুমি ওই বদ ছেলেটা না? যে কি না গতকাল নিজের জন্য ফরম কিনতে এসেছিল!'
দারোয়ান চাচা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন__
'কী কন স্যার! সে এখানে ফরম কিনতে কেন আসবে? সে তো আমার ভাতিজা। এখন থেকে সে-ই এই কলেজের দারোয়ানগিরি করবে।'
প্রিন্সিপাল স্যারের অফিসে ঢুকলাম। সব শুনে তিনি বললেন__
'সাদেক মিয়া, ছেলেটার তো বয়স অনেক কম! তোমার ভাতিজা তাই চাকরিটা দিয়ে দিলাম। অন্য কেউ হলে দিতাম না।'
প্রিন্সিপাল স্যার আমার সামনে একটি হলুদ কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন__
'সাদেক মিয়া, তাকে বলো পাঁচ বছরের এ চুক্তিপত্রে সাক্ষর করতে। আর বলো এই পাঁচ বছরের ভেতরে কোথাও সে নড়চড় হতে পারবে না। পরে তাকে বুঝিয়ে দিও; কলেজ ছুটির পর প্রতিদিন তাকে মেয়েদের টয়লেটরুম, ওয়াসরুম, ক্লাসরুম, কলেজের আঙিনা পরিষ্কার করতে নীলা বেগমকে হেল্প করতে হবে।'
- অবশ্যই বলবো স্যার, ভাতিজা আমার কাজেরকাজি। দশজনের কাজ একাই করতে পারে, ভরসা রাখুন।
রেডি হচ্ছি, এখন প্রাইভেট ভার্সিটিতে যাবো। আম্মুর কাছে আজ আমার প্রাইভেট ভার্সিটি লাইফের প্রথম দিন আর আমার কাছে আজ হলো দারোয়ানি চাকরির প্রথম দিন। আমার ক্লাস হবে টয়লেটে, কলেজ গেইটে, ওয়াসরুমে, আঙিনায়। হাতে কলমের বদলে যোগ হবে বেতের লাঠি আর ঝাড়ু। ভাবতেই গা শিউরে উঠছে।
সকালে দারোয়ান চাচার ছোট্ট বাসায় হাজির হলাম। এখন থেকে এই বাসা আমার। রুমের দেয়ালে শ্যাওলা জমে আছে। ঘরের ভেতর আলোবাতাসহীন একটা ভ্যাপসা গন্ধ বিরাজ করছে। একজন সুস্থ মানুষ একমাস এখানে থাকলে নির্ঘাত অসুস্থ হয়ে যাবে। চাচা কীভাবে এতো দিন এমন একটা রুমে থাকলেন, সে ভাবনা আর নাই ভাবী। চাচা আমাকে উনার দারোয়ানি পোশাক পরিয়ে দিচ্ছেন। পোশাক বেশ ঢিলেঢালা হয়ে যাওয়াতে নিজেকে অনেকটা মদন মদন লাগছে। লাগুক, দারোয়ানের আবার স্মার্টনেস কী?
পোশাকের রঙ অনেকটা দেখতে গু কালারের মতো। আগে কড়া হলুদ ছিল। ময়লা হতে হতে পোশাকের এই অবস্থা হয়েছে। গায় জড়াতে ঘিনঘিন করলেও ভেতরে ভেতরে এক অন্যরকম আনন্দ অনুভূত হচ্ছে। আজ থেকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা সালমাকে যখন তখন দেখতে পাবো। চোখাচোখির বৈধতা পেয়ে গেছি। এ আনন্দ এখন কই রাখি?
হাতে বেতের লম্বা একটা লাঠি নিয়ে গেইটে দাঁড়িয়ে আছি। এই লাঠিটার আপাতত কাজ হলো কুত্তা তাড়ানো। ফুল গুলো একটা একটা করে বাগানে ঢুকছে। সবাই ঢুকছে আর ঘুরে ঘুরে আমায় দেখছে। এমন করে দেখার প্রথম কারণ; আমি নতুন দারোয়ান। আর দ্বিতীয় কারণ; আমি একটা নাদুসনুদুস টাইপের স্মার্ট ছেলে। অনেকে ক্রাশ খেতে গিয়েও খাচ্ছে না, আমি দারোয়ান বলে হোঁচট খাচ্ছে। কিন্তু হাসাহাসি ঠিকঠাক হচ্ছে। তাদের এমন আনন্দ দেখে আমার মস্তিষ্কে রবিঠাকুরের সেই অমর গানটি বাজতে লাগল__
"ফুলে ফুলে দুলে দুলে বহে কী বা মৃদু বায়।"
আমি গানের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে না রেখে ডিউটিতে মনোযোগী হয়ে উঠলাম। হঠাৎ দেখলাম সালমা আর সঞ্চিতা আমার পাশ দিয়ে গেইটের ভেতরে প্রবেশ করছে। মনে হচ্ছে কেউই খেয়াল করেনি। কয়েক পা এগিয়ে যাবার পর সঞ্চিতা সালমাকে বলল__
'দারোয়ানের দিকে খেয়াল করেছিস, অয়ন নাতো?'
সঞ্চিতার সন্দেহজনক কথা শুনে সালমা দুই কদম পিছ পা হয়ে আমার সামনে এসে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ালো। আমাকে দেখে রেগেমেগে পুরাই আগুন। শিমুল বনের মতো তার মুখটা রেগে আগুন লাল হয়ে গেছে। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। তার কাজল কালো চোখের দিকে তাকানোর ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা এখনো আমাকে দেননি। সালমা আমার গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলল__
'ছেঁচড়া, মানুষ হবি কোনদিন?'
সঞ্চিতা আমার কাঁটা গায়ে নুনেরছিটা দিয়ে বলল__
'অয়ন ভাই, আপনাকে এই পোশাকে দারুণ মানিয়েছে। চালিয়ে যান।'
এই দিনের পর থেকে তারা আর কোনোদিন সিলেট সরকারী মহিলা কলেজে আসেনি। কিছুদিন পর খবর পেলাম, তারা এখন সিলেট সরকারী এমসি কলেজে ভর্তি হয়েছে। অনেকটা দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে দারোয়ানি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। দারোয়ান চাচা উল্টো হুমকি দিলেন, যদি ছেড়ে দেই উনি ব্লাকমেইলের মামলা দেবেন। জানাজানি হলে আমার নিজেরই ইজ্জত যাবে। তাই চুপচাপ চুক্তি অনুযায়ী ততদিন দারোয়ানি করে যেতে হবে। আর আম্মু যদি জানেন কু পথে টাকা নষ্ট করেছি লেখা পড়ার নামে, তাহলে আমাকে উনি কেটে টুকরো টুকরো করে সুরমা নদীতে ভাসিয়ে দেবেন।
আজ দারোয়ানি চাকরির বয়স হলো তিনবছর। আজ আমি ভয়ে পুরাই অস্থির। মাইনকার চিপায় পড়েও এতটা ভয় আগে কোনোদিন পাইনি, এখন যতটা পাচ্ছি। ছোটবোন ইমা এবার এইচ.এস.সি পাশ করেছে। তার ফাইনাল সিদ্ধান্ত, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি চান্স না পায়, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হবে। আর কোথাও ভুলে ভর্তি হবে না। পড়ছি এখন বিপাকে, তাকে দিনরাত বোঝাচ্ছি এই কলেজের লেখাপড়ার মান খুবই খারাপ। স্যারেরা আরো খারাপ। তারচেয়ে এমসি বা সিলেট সরকারী কলেজই বেস্ট। সেও আমার মতো নাছোড়বান্দী, মহিলাতেই ভর্তি হবে। আম্মুও তাল দিলেন, মহিলা কলেজই ভালো। বিশেষ করে ছেংড়া ইভটিজার পোলাপানের নাগাল থেকে মেয়েরা অনেকটা নিরাপদে থাকে, থাকে ঝামেলা মুক্ত।
আমি এখন প্রতিদিন নফল নামাজ পড়ে দোয়া করছি, বোনটা যেন শাহজালালে চান্স পায় আর আমি যেন ইজ্জৎ নিয়ে দারোয়ানি চাকরিটা ভালোয় ভালোয় শেষ করতে পারি।
কিছুদিন পর খবর পেলাম সে চান্স পায়নি। অতি সম্মানের সহিত অকৃতকার্য হয়েছে। আমার এখন ঘুম হারাম। যেকোনো দিন সে মহিলা কলেজে ভর্তি হতে আসবে। ভর্তি ফরম ইতিমধ্যে কাকে দিয়ে যেন সংগ্রহ করে ফেলছে। ইজ্জতের ভয়ে আমি এখন প্রতিদিন মাস্ক পরে দারোয়ানগিরি করি। হঠাৎ একদিন প্রিন্সিপাল স্যারের নজরে আসি। উনি জিজ্ঞেস করলেন__
'মাস্ক পরছ কেন?'
- স্যার, ধুলাবালি আর এলার্জির সমস্যা।
'মনে এনার্জি রাখবা, জগতে এলার্জি বলতে কিছু নেই! আর থাকলেও করতে হবে দারোয়ানি। এটা চীন নয় যে মাস্ক পরতেই হবে, এটা বাংলাদেশ। কথা বোঝা গেছে?'
মাস্ক পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাই আজ আমি মাস্কহীন। সাধারণ দিনের মতো আজও আমি গেইট পাহারায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি। ফুল গুলো ফুলের মালার মতো সারিবদ্ধভাবে বাগানে ঢুকছে। আমার ভেতর অন্যরকম এক লজ্জামাখা অস্থিরতা কাজ করছে। কখন জানি ছোটবোনের হাতে ধরা পড়ি। আমি এখন দেখতে পাচ্ছি ইমা গেইট দিয়ে প্রবেশ করছে। আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে গেইটের ভেতরে ঢুকেই হঠাৎ থমকে গেছে। চোখ দুটি আকাশে তুলে ফেলছে। সে এগিয়ে আসছে___
'ভাইয়া তুই! তুই এখানে দারোয়ানি করছিস! ছি ছি ভাইয়া ছি, তোর এতোই অধঃপতন। মেয়েদেরকে দেখার জন্য তুই মহিলা কলেজের দারোয়ান হয়েছিস! ছি।'
ইজ্জৎ বাঁচাতে গিয়ে এদিকওদিক না তাকিয়ে ইমার মুখটি চেপে ধরলাম। বেমালুম ভুলে গেলাম কোথায় কী করছি। ফুল বাগানের ফুল গুলো আর ফুল নেই, যেন একেকটা অগ্নিমূর্তি। সবার হাতে বিভিন্ন ব্রাণ্ডের জুতা। এখনি জুতার বৃষ্টি নামবে। এইতো নামছে, তুমুল বেগে নামছে। জুতার বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছি আমি....।