যতোটুকু মনে পড়ে অষ্টম শ্রেনীতে যখন পড়ছি, এক বন্ধু বইটা এনে দিয়েছিলো পড়তে। প্রথম তিন চার পৃষ্ঠা পড়ার পর আগ্রহ তেমন একটা পাচ্ছিলাম না, অচেনা নিষিদ্ধ একটা জগতের হাতছানি ছিলো প্রথম পাতাগুলিতে। সে কারনেই বোধহয় বইটা শেষ করার ইচ্ছে জেগেছিলো। স্কুল, স্যারের বাসা প্রাইভেট সবকিছু মিলে আসলে দিনে বই পড়ার সময় আসলে খুব বেশি থাকতো না, আমাদের বই পড়াটা তাই ছিলো স্কুলে, ক্লাসের ফাঁকে। বই পড়ার অভ্যাসটা এখন প্রায় নেই বললেই চলে। অথচ বেশিরভাগ বই আমার পড়া সেই স্কুল জীবনে ক্লাসের ফাঁকে। গর্ভধারিণী বইটার মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে জয়িতার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম আমরা। আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা চলতো জয়িতা কে নিয়ে, ঠিক এমন একটা জীবন চাইতাম আমরা তখন, কল্পনা করতাম জয়িতা, সুদীপ, আনন্দ, কল্যাণদের মতো সব ছেড়ে দিয়ে এমন একটা জায়গায় চলে যাবো যেখানে কেউ চিনতে পারবে না আমাদের, ছোট বাচ্চাদের পড়ালেখা শেখাবো, অনুন্নত একটা জাতিগোষ্ঠীকে আলোর মুখ দেখাতে সাহায্য করবো। আমাদের মনোজগতে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছে এই বইটা। আমরা আমাদের কল্পনার একটা জগৎ তৈরি করে নিয়েছিলাম আমাদের মতো করে ।
সমরেশ পড়া শুরু তখন থেকে।তারপর থেকে বহু উপন্যাস পড়া হয়েছে। কিন্তু গর্ভধারিণীর আবেদন ছিলো অন্যরকম। উপন্যাস এর শেষের দিকে এসে তবে আমরা কেউই কেন জানি সেই সাহসী জয়িতার পরের কাজটাকে সমর্থন করতে পারি না। শেষদিকে মনে হয়েছিলো জয়িতা তার আর্দশ থেকে দূরে সরে গেছে হঠাৎ।
প্রথম দিকের সমরেশ এর লেখাগুলোর যে ধার ছিলো এখনকার লেখা গুলোতে সেগুলো খুঁজে পাই না আমি। এটা হতে পারে, মুগ্ধ হবার বয়সটা আমি পার করে এসেছি। এখন কোন কিছুই মনে সহজে দাগ কাটে না!
I read this book. Amazing one. Loved it. Thanks for posting.