মাঝে মাঝে জীবনের প্রতি হতাশ হয়ে যায়। প্রচন্ড ক্ষোভ জন্মে এ দেশের মানুষদের প্রতি। কি করে একটা মানুষ আরেকটা মানুষের উপর নির্মম অমানবিক আচরণ করে এতোটা। যেখানে এ সময় আমাদের পরস্পরের পাশে থাকা উচিত সেসময় আমরা প্রতিনিয়ত পরিচয় দিচ্ছি নিজেদের পাশবিকতা প্রমানে। গতোকাল ঘুম ভেঙেই ফেইসবুকে এসে দেখলাম বাউল রণেশ দাশগুপ্তের সব বাসা বাড়ি, তার গানের খাতা সব মানুষরুপী কাপুরুষেরা এসে পুড়িয়ে দিয়েছে। উনি নিজের মতো করে গান গাইতো,গান নিয়ে থাকতো। ওনার অপরাধ কী ছিলো আসলে! সিলেট থাকার কারনে অনেকদি আশেপাশে বাউল, পল্লীগীতি গান শুনতে শুনতে এক সময় এই ঘরোনাকে ভালোবেসে ফেলি। ভীষণ অবাক হই, ব্যথিত হই এ ধরনের অমানবিকতার পরিচয় পেয়ে। উনি এইসব মানুষের পাশবিকতার প্রতিবাদ করেছে তার একমাত্র অস্ত্র তার গানের মাধ্যমে,
আমার চার দশকের বাদ্যযন্ত্র,
গানের খাতা নথিপত্র পুড়াইয়া করেছে ছাই
মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
বলো,ভাইগো ভাই, মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
ও ভাইগো ভাই,
আমার দোষ কি শুধু গান গাওয়া?
না ভাটির দেশে উজান বাওয়া
কোন দোষে শাস্তি পাইলাম,
একবার শুধু জানতে চাই।
চোখের সামনে এহেন কান্ড, ঘরবাড়ি হয় লণ্ডভণ্ড
আসমানতলে হইলো ঠাই,
মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
কেউ বলো ভাই, মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
ও ভাইলো ভাই, গুরু আমার আবদুল করিম বলেছিলেন গানে গানে মানুষ ভজো,
পরম খোঁজো, সুরই তারে কাছে আনে
আজকে তাঁরে স্মরণ করি,
গানের কথা খুঁইজা মরি মুখে কোনো ভাষা নাই,
মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
ভাইগো ভাই, মনের দুঃখ কার কাছে জানাই?
এই শোক তাকে আরো শক্তিশালী করে তুলুক, উনি তার শক্তিশালী কন্ঠকে সাথে নিয়ে এভাবে শিল্প রচনা করে প্রতিবাদ করুক যাবতীয় সব অন্যায় বঞ্চনার বিরুদ্ধে। মানুষের শুভ বুদ্ধি বিবেচনা বোধ ফিরে আসুক।জয় হোক মানবতার।
চারপাশে খারাপ যেমন আছে, ভালো মন মানকিতার লোক ও অনেক আছে। খারাপটা দেখে সবসময় আমরা মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে পড়ি আসলে।