সায়েলের ব্যাবহারে ক্ষুব্ধ মেরিন। কী নেই তার!! রূপ, যৌবন, ঐশ্বর্য্য, সবি তো আছে। শত- সহস্র পুরুষের আরাধ্যা সে! তবে ঐ ধর্মান্ধ কেন তাকে উপেক্ষা করলো!
ওর দিকে তাকালো না পর্যন্ত!!
রাগে, কষ্টে অশ্রু বেয়ে পড়লো মেরিনের সুন্দর গাল বেয়ে।
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
মুসলিম পরিবারের ছেলে সায়েল।
ছোট বেলা থেকেই ধর্মীয় অনুশাসনে বড় হয়েছে।
তার আর তার মায়ের ছোট্ট পরিবার।
লন্ডনের ক্যামব্রিজে পড়ছে এখন। সহশিক্ষা হারাম জেনেও তাকে এখানেই পড়তে হচ্ছে। বাবার ছোট্ট বিজনেসটা এখনো মা’ই দেখছে।
সহপাঠীদের লাগামহীন চলাফেরা তাকে ভীষণ পীড়া দেয়।
তাই সাধ্যমত ইসলামের দাওয়াত দেয়ার চেষ্টা করে।
দুদিন পর।
আবারো সেই আকুলকরা সুরটা শুনতে পেল মেরিন। কুরআন তিলাওয়াত করছিল সায়েল।
: হাই সায়েল! বলেই সায়েলের গা ঘেঁষে বসল মেরিন। উদ্দেশ্য- “আজ তাকে রূপের ফাঁদে ফেলতেই হবে।”
একটু সরে বসল সায়েল।
: সায়েল!
: জ্বী বলুন!
: আমরা বন্ধু হতে পারি?
: না, সেটা সম্ভব নয়।
: কেন ? কিছুটা ঝাঁঝের সাথে প্রশ্ন করল মেরিন।
: আমার ধর্ম সেটা সমর্থন করে না। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে জবাব দিল সায়েল।
: সায়েল ! আমার চেহারার দিকে তাকিয়ে কথা বলো প্লীজ!
এভাবে অন্য দিকে তাকিয়ে কথা বলে কেন তুমি আমায় ইনসাল্ট করছো? কিছুটা দুঃখিত স্বর।
: সরি মেরিন! আপনি ভুল বুঝছেন। আপনাকে ইনসাল্ট (অপমান) করার কোন উদ্দেশ্যই আমার নেই।
: তবে? আমাকে তোমার ভালো লাগে না , এই তো?
: না মেরিন সেটাও নয়!
: তাহলে আমি দেখতে খুব কূৎসিত না? আর ঐদিন তো আমার সাথে হাত টাও মেলালে না। কথাগুলো বলে কিছুটা ইমপ্রেস করতে চাইল নিজের দিকে।
: না মেরিন আপনি কুৎসিত নন। কিন্তু আমাদের ধর্মীয় আদেশ হলো- প্রত্যেক নারী- পুরুষ যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে। আর আপনার সাথে হাত মেলাই নি কারণ আমাদের ধর্মে স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীকে স্পর্শ করা নিষেধ।
: তাই !! সায়েলের কথা শুনে মেরিন চমকে চাইলো তার দিকে। তোমাদের ধর্মে স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীকে স্পর্শ করা নিষেধ? এত শুদ্ধতা তোমাদের ধর্মে?
: হ্যাঁ মেরিন। আমাদের ধর্মটা পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধতম, সবচেয়ে পবিত্রতম ধর্ম।
: এই ফ্রি মাইন্ড দেশে তুমি এত কঠিনভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চল , সত্যিই অবাক হচ্ছি!
সায়েল! আমি কি তোমার ধর্ম সম্পর্কে আরো কিছু জানতে পারি ?
: অবশ্যই। তবে প্লীজ আমার বাসায় যাবেন। আমার মায়ের কাছে আপনার প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর পাবেন। ইনশাআল্লাহ।
যদিও ধর্মীয় আলোচনা। তবুও ‘না-মাহরাম’ হিসেবে মেরিনকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে সায়েল।
সায়েল কে ধন্যবাদ জানিয়ে উঠে দাঁড়ালো মেরিন।
সায়েলের বলা কথাগুলো তার ভেতরটা তোলপাড় করে দিচ্ছে।
স্বামী স্ত্রীর প্রতি, স্ত্রী স্বামীর প্রতি কতটা ট্রাস্টি এরা!
স্ত্রীর অবর্তমানে আমার হাতটা পর্যন্ত ধরলো না সায়েল!
কতটা ভাগ্যবান সায়েলের মত যুবকদের স্ত্রীরা!
এ মুহূর্তে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্ভাগাদের একজন মনে হচ্ছে মেরিনের। বুকের ভেতর ঝেঁকে বসেছে একরাশ শূন্যতা…
(চলবে)
খুবি সুন্দার একটা ইসলামিক গল্প দেয়ার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ