প্রকৃতপক্ষে নীতিহীনতায় দুর্নীতি।দুর্নীতির গতি,প্রকৃতি বহুমুখী এবং বিচিত্র। দুর্নীতি সমাজের প্রচলিত নীতি আদর্শ ও মূল্যবোধ এর পরিপন্থী মূলক আচরণ।প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সাধারণত ঘুষ,বল প্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শন,প্রভাব ও ব্যক্তি বিশেষ কে বিশেষ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে জনপ্রশাসনের ক্ষমতার অপব্যবহার দ্বারা ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়ার দুর্নীতি বলে।ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক অনুযায়ী- দুর্নীতি হচ্ছে ব্যক্তিগত লাভের জন্য সরকারি ক্ষমতার ব্যবহার,সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঘুষ প্রদান,সরকারি ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে মুনা ফলা সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত প্রাণী দুর্নীতির সঙ্গে রাজনৈতিক দুর্নীতির কোনো পার্থক্য করা যায়না।
দুর্নীতির কারণ
সরকারি প্রশাসন যন্ত্রগুলোকে রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা।
দুর্নীতি দমন কমিশনসহ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকারিতা।
দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া।
ক্রমবর্ধমান ভোগবাদী প্রবণতা।
নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
দুর্নীতি বিষয়ক জার্মানির বার্লিন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশ পাঁচবার পরপর শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
দুর্নীতির ধরনঃ
দুর্নীতির প্রধান কয়েকটি ধরন হল ঘুষ,অবৈধ কাজের সুবিধা লাভ, চাঁদাবাজি,সরকারি কোষাগার থেকে চুরি ডাকাতি,অবৈধ পৃষ্ঠপোষকতা,স্বজনপ্রীতি, অবৈধভাবে চাকরি প্রধান, অর্থ আত্মসাৎ,কাউকে সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ ইত্যাদি।
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য করণীয়ঃ
স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে প্রভাব মুক্ত স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন জরুরি।বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ।
দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের শাস্তি
দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন
দুর্নীতি দমনে জাতীয় কমিটি
সামাজিকভাবে বয়কট
দুর্নীতি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশে। ২০০৩ সালের ৩ অক্টোবর সঙ্গে সাধারণ পরিষদে দুর্নীতিবিরোধী সনদ প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালের ৯ ডিসেম্বর মেক্সিকোতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।এই কারনে ৯ই ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ সনদে প্রায় ১১০ টি দেশ স্বাক্ষর করেছে।বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক এ সনদ অনুস্বাক্ষরের ফলে ২০০৭ সালের ২৭ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ জাতিসংঘ সনদের অংশীদার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে দেশেকে দুর্নীতি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন নাগরিকের সদিচ্ছা ও সততা। দুর্নীতি রোধে নাগরিকদের সঠিক সময়ে বিশেষ করে তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে মানুষকে নৈতিক জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ যেন সে অনুসরণ করে চলে- তার যেন সমাজের কালোত্তীর্ণ মানদণ্ড, নীতি ও প্রথার প্রতি আনুগত্য থাকে। দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যক্তি-পর্যায়ে কর্তব্যনিষ্ঠা ও সততা, তথা চরিত্রনিষ্ঠা খুবই দরকার। এজন্য বিদ্যমান আইনকানুন, নিয়মনীতির সঙ্গে দুর্নীতি দমনকে একটি আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করতে হবে।
Greatfull article dear