আজ ভার্সিটির প্রথম দিন মনের মাঝে একটা ভয় কাজ করছে। জানি এখানে কেউ আমাকে চিনবে না, তবু মনের মাঝে এক অজানা ভয় আমাকে আঁকড়ে ধরে রাখছে।
এসব চিন্তা করে করে গেইট দিয়ে ডুকছি তখনি,
ঠাসসসস করে যেন আমার গালে তবলা বাজিয়ে দিলো।
এরকম পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না, তাই ভয় পেয়ে চমকে গেলাম।
দেখতে ত ভদ্র মনে হয় কিন্তু চরিত্র এতো খারাপ কেনো?(একটি মেয়ে) আপনি আমাকে চড় দিলেন কেন?আর কি আবোল তাবোল বকছেন ?(আমি)
আমি আবোল তাবোল বলছি! দিনে দুপুরে মেয়েদের ইভটিজিং করিস আর বড় বড় কথা। ঐ ইশরাত ধরতো মালটাকে! তার পাশের মেয়েটিকে বলল।
দেখুন আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি এখানের কাওকে চিনি না, আর ইভটিজিং তো দূরের কথা!(আমি)
কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলো না, তাদের ইচ্ছে মতো কিল ঘুসি মারতে লাগলো, আমি তাদের অনেক বললাম আমি কাউকে কিছু বলিনি। যখন আমাকে মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে গেছে তখন বলল,
আজকের মতো ছেড়ে দিলাম, নেক্সট টাইম যদি কাউকে ইভটিজিং করিস বা করতে চেষ্টা করিস তাহলে তোর খবর আছে। বলে মেয়ে গুলো চলে গেল।
আমি চারদিকে তাকিয়ে দেখি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। কেউ এগিয়ে আসলো না।
লজ্জায় মাথা নিচু করে হেটে যাচ্ছি।
আমি মনে করছি প্রথম দিন কেউ হয়তো যার্গ করবে কিন্তু এবাবে মার খেতে হবে তাও মেয়েদের হাতে । ভালো হতে এখানে আসলাম কিন্তু এখানে থাকলে কি আমি ভালো হতে পারবো! চিন্তা করে করে ক্লাসে ডুকে পড়লাম।
আমার বাজির টাকা দে। (মেয়েটি)
তাতো পাবি, কিন্তু ছেলেটিকে মনে হয় একটু বেশিই মার দিয়ে ফেললম না!(ইশরাত)
নিলা কখনো সহজে ছেড়ে দেয় না, আমি যখন কথা দিয়েছি তা ভালো করেই পূরণ করবো কোথাও একটু ছাড় দেবো না!(নিলা)(মানে যে মেয়েটি মারলো)
কিন্তু একটা জিনিস খুব অদ্ভুত লাগলো, (ইশরাত)
কি?(নিলা)
আমারা এর আগে যতগুলো ছেলেকে পিটিয় ছিলাম সবাই মার খেয়ে কান্না করছে আবার কেউ কেউ পায়ে ধরে মাফ চায়ছে।কিন্তু দেখ এই ছেলে ওহ করেও বলল না, শুধু একটা কথায় আমি কাউকে কিছু বলিনি। আর চোখ দুটো জ্বলন্ত আগুন মতো লাল হয়ে গেছে। (ইশরাত)
হুম তা ঠিক,কিন্তু তাছাড়া তুই এতো কিছু নোটিশ করছিস ঘটনা কি!মার দিতে গিয়ে প্রেমে পড়ে গেলি নাকি! নিলার কথা শুনে সবাই জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
তুই পাগল হয়ে গেছিস নাকি!ওর মতো ক্ষেত,অানস্মার্ট ছেলের প্রেমে পড়বো আমি!(ইশরাত)
বলা তো যায় না (নিলা)
ফাজলামো বন্ধ কর তার তোর বাজির ৫০০০টাকা ধর। (ইশরাত )
আজ তোদেরকে আমি লান্সের সময় খাওয়াবো।(নিলা)
বলে রোমের দিকে সবাই হাটা শুরু করে।
• সকালে নিলা আর ইশরাত বাজি ধরেছিল ১০ মিনিটের ভিতরে যে প্রথম ভার্সিটিতে ডুকবে তাকে ইচ্ছা মতো পেটাবে৷ আর কপাল দোষে প্রথম ডুকলো নীল।তারপর কি হলো আপনারাই দেখলেন।
এটা ইশরাত আর নিলার নতুন না, প্রায় সময় এরকম করে সবার সাথে। নিলার বাবা এ শহরে এমপি,আর ইশরাতের বাবা পুলিশ কমিশনার সাথে ভার্সিটির সভাপতি। তাই ভয়ে কেউ কিছু বলে না।
ক্লাস রোমে বসে আছি কিন্তু কেউ আমার পাশে বসছে না। কারণ, সবার মতো আমি স্মার্ট নয়, আমার না আছে দামি পোশাক, চুল গুলো এলোমেলো, মুখে খোচাখোচা দাড়ি, মেয়েদের পিটানের ফলে শরীরে দাম হয়ে গেছে।
সবার সামনের সিটে বসে ছিলাম তখন কিছু ছেলে এসে বলল,
কিরে মাম্মা আজ দেখি আমাদের সিটে একটা ফকির বসে আছে!(একটি ছেলে)
ঐই শালা ফকিরের বাচ্চা আমাদের সিটে কি করছিস! তোর মতো ফকিরকে এই ভার্সিটিতে কে ভর্তি করছে? (লিডার টাইপের একটা ছেলে)
আরে রাজ ওর মতো একটা ক্ষতের সাথে কেনো এতো কথা বলছিস! শালারে লাথি মেরে সরাতো! (অন্য একটি ছেলে)
আপনারা আমার সাথে এরকম করে কথা বলছেন কেনো?(নীল)
তখনি রাজ নামের ছেলেটা নীলের কলারে ধরে বলল,
তোর মতো ফকিরের সাথে কি ভাবে কথা বলতে হবে তা কি তোর কাছ থেকে শিখতে হবে! (রাজ)
সরি!(নীল)
আজ তুই দাড়িয়ে ক্লাস করবি। কোথাও তোর জায়গা নেই। সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,
আর কেউ যদি এই ফকিরকে বসতে দিস তাহলে এমন অবস্থা করবো না তা চিন্তাও করতে পারবি না!(রাজ)
নীল কাঁদে একটি ব্যাগ নিয়ে মাথা নিচু দাড়িয়ে আছে। কেউ তাকে বসার মতো জায়গায় করে দিলো না।কিছুক্ষণ পর ক্লাসে স্যার ডুকলো, নীলকে উদ্দেশ্য করে বলল,
এই ছেলে কে তুমি? (স্যার)
জি আমার নাম নীল।(নীল)
তাতো বুঝতে পারছি কিন্তু এখনে কি কর।(স্যার)
আমি এখানে নতুন ভর্তি হয়েছি।(নীল)
তোমার মতো একটা ছোটলোকে কে এই রকম নামি দামি ভার্সিটিতে ভর্তি করলো! নিজের দিকে তাকিয়ে দেখো আর রোমের অন্যদের দিকে তাকিয়ে দেখো, কোনদিক দিয়ে তোমাকে এই ভার্সিটির ছাত্র মনে হয়!(স্যার)
আপনি একজন শিক্ষক হয়ে যদি এরকম মন মানসিকতা চলেন তাহলে ছাত্ররা কি শিখবে, দামি পোশাক পরলেই কি ভদ্রলোক হওয়া যায়! (নীল)
বেয়াদব! মুখের উপর আবার তর্ক করো?(স্যার)
বেয়াদব না শুধু একজন ইভটিজার। বাহির থেকে কে যেনো বলল।
নীলা যে! তুমি কি ওকে চিনো! (স্যার)
চিনার কি আছে এরকম ছেলে যে ইভটিজার তা মুখ দেখলেই বুঝা যায়। ভালো করে তাকিয়ে দেখুন স্যার কোথায় যেন মার খেয়ে এসেছে! (নীলা)
কি ডেঞ্জারাস মেয়ে বাবা নিজেই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারলো আবার মিথ্যা নালিশও করছে! মনে মনে (নীল)
তুমি ভিতরে আসো মা! এর এই ছেলে যাও পিছনে গিয়ে বসো। ভদ্র মতো চলবে তা নাহ হলে এখানে বেশি দিন টিকতে পারবে না। (স্যার)
নীল একটা রহস্যময় মুচকি হাসি দিয়ে পিছনে বসে পড়ল।
সারা ক্লাসে সে চুপচাপ ছিলো শুধু মনোযোগ দিয়ে স্যারের কথা শুনছে।
ক্লাস শেষে নীলা আর রাজ নীলের কাছে গিয়ে বলল,
শুন তোকে কেনো এতো মার আর অপমান করলাম জানিস!(নিলা)
কেনো?(নীল)
যাতে সবাই জানুক নিলা কি জিনিস! তার চোখে দিকে তাকিয়ে কেউ কথা না বলতে পারে। আর কেউ যদি সাহস করে তাহলে ওকে শেষ করার মেশিনও আছে আমার কাছে। রাজকে দেখিয়ে নীলকে বলল নিলা।
নিলার কথা শুনে নীল মুচকি হেসে মনে মনে বলল, আমার আসল রূপ দেখে বড় বড় গ্যাংস্টাররাও ভয়ে কাপে, আর একটি মেয়ে আমাকে ধমকি দিয়ে চলে যাচ্ছে আজ।
সেদিন নীল আর ক্লাস করলো না।
বাসায় চলে আসলো।
নীল এখানে ভাড়া একটি বাসা নিয়েছে। নীল ছাড়া তার সাথে আর কেউ থাকে না।
পরদিন নীল যখন কলেজে গেল…...
চলবে ……
#গল্পঃমুখোস_মানুষ
#লেখকঃঅচেনা_পথিক
#পর্বঃ১
,
,
প্রথম পর্ব তাই ছোট করে দিলাম।
আপনাদের সাড়া পেলে লিখবো না হলে এখানেই শেষ।
ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমার মনে হয় গল্পের শিরোনামে ভালোবাসার গল্প -১ এভাবে উল্লেখ করলে সকলের বুঝতে সুবিধা হতো৷ আর এক টাইটেল দিয়ে দুই রকম গল্প না লেখাই ভালো।