গল্প------->🌺আলো🌺 পর্বঃ ১৮। | | ভোর এখন আল্লাহর অশেষ রহমতে পুরোপুরিভাবে সুস্থ। ভোরের সুস্থ হওয়াতে.. একটা নতুন কম্পানির সাথে ডিল হবে কিছুদিন পর তারা আজ রাতে একটা পার্টি থ্রো করেছে। যেহেতু আলো ভোরের পি.এ. তাই আলোরও যেতে হবে। আর ভোর কয়েকজন কলিগ আর ফ্রেন্ডদেরও ইনভাইট করেছে সে পার্টিতে। | মাত্র লাঞ্চ করে ভোর রুমে এলো। এসেই শুয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণ পর আলোও এলো। আলো এসে সোফাতে শুয়ে পড়ল। আলো সোফাতে শুয়ে পড়ায় ভোর অবাক হলো। তাই... ভোরঃঃ কি ব্যাপার? তুমি সোফাতে? | আলোঃঃ-------- | ভোরঃঃ কথা বলছ না কেন? এভাবে তাঁকিয়ে আছো কেন? | আলোঃঃ এমনি। ((চোখ বন্ধ করে নিলো)) | ভোর উঠে আলোর কাছে গিয়ে আলোর কপালে হাত দিলো.. | ভোরঃঃ না। জ্বর তো আসে নি। তবে কি হয়েছে? | আলোঃঃ কিছু না। আপনি যান। ((চোখ খুলে)) | ভোরঃঃ বেডে চলো। | আলোঃঃ আপনার পাশে শুবো না। | ভোরঃঃ তুমি তো আমার পাশে কখনোই শোও না। শোও আমার বুকের উপর। চলো আমি ঘুমাবো একটু। | আলোঃঃ তো যান ঘুমাতে আমি ধরে রেখেছি? | ভোরঃঃ এভাবে কথা বলছো কেন? তুমি আমার অভ্যাস খারাপ করে দিছো। তাই আমার ঘুম আসবে না চলো। | আলোঃঃ আমি কি খারাপ করেছি? কখন? | ভোরঃঃ এই যে আমার বুকে শুয়ে শুয়ে। আমাকে জড়িয়ে ধরে। এখন এগুলা ছাড়া আমার ঘুম আসবে না। সো চলো। | আলোঃঃ অভ্যাস চেন্জ করিয়ে দিবো আজ থেকে। আর ঘুমাবো না আপনার বুকে বা আপনার পাশে। যান। | বলেই আলো চোখ বন্ধ করে ফেললো। আর আলোর কথা শুনে ভোরের প্রচন্ড রাগ হলো। তাই আলোকে ধুম করে কোলে তুলে নিলো। আলো পুরো শকড। তবুও মোচড়ামুচড়ি করছে ভোরের কোলে বসে। ভোর আলোকে বেডে শোয়ালো তারপর আলোর বুকের উপর মাথা দিয়ে আলোকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে। আলো তো নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। তাই........ | আলোঃঃ সরুন। আমাকে এভাবে ধরার অধিকার আপনার নাই। ছাড়ুন বলছি। | ভোরঃঃ আমি চাই না তুমি ভোর চৌধুরীর আগের রূপটা দেখো। সো স্টপ। | আলোঃঃ আপনাকে ছাড়তে বলছি ছাড়ুন। বলেছি না আমাকে ধরার অধিকার আপনার নাই। ((রাগী মুডে)) | ভোরঃঃ তাহলে কি অন্য পুরুষের আছে?((অগ্নিময় দৃষ্টি)) | আলোঃঃ কার আছে জানি না। কিন্তু আপনার নাই। ((ভোরের হাত বাহু থেকে সরিয়ে)) | ভোরঃঃ আলো এবার কিন্তু বেশি হচ্ছে। আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি। | আলোঃঃ So what! ছাড়ুন। ((ধাক্কা দিয়ে)) | ভোরঃঃ তোর হঠাৎ কি হয়েছে? একবার যদি সরে যাই তো তুই হাজার বার চাইলেও পাবি না আমাকে।((প্রচন্ড রাগী মুডে)) | আলোঃঃ আমি চাই না আপনাকে ছাড়ুন। যত্তসব। | ভোর আর কিছু না বলে উঠে দেয়ালে একটা পাঞ্চ দিয়ে সোফাতে গিয়ে বসলো। আমো একটু ভয় পেলো। আলো বেডের অন্যপাশে গিয়ে বললো.... | আলোঃঃ আপনার শরীরে এত দুর্গন্ধ আগে জানতাম না। আগে এই বাজে গন্ধ পেলে আমি ককখনোই আপনার বুকে মাথা দিতাম না। ইয়াকককক ((মুখ টিপে হেসে)) | ভোরঃঃ Whattttt?? ((রাগি গলায়)) | আলোঃঃ জ্বী হ্যাঁ। পুরো পঁচাআআআআআআআআ মাছের গন্ধ। উহুম কি নোংরা কি নোংরা। ইয়াকককককক ((আবারও মুখ টিপ হেসে)) | আলোর কথা শুনে ভোর নিজের শরীর নাক দিয়ে গন্ধ নিচ্ছে। কই নাতো কোনো দুর্গন্ধ নাই। কত সুন্দর পারফিউমের স্মেল। ভোরের কান্ড দেখে আলো খিলখিল করে হেসে দিলো। এবার ভোরের বুঝতে বাকি নাই আলো ভোরকে রাগানোর জন্য এতক্ষণ নাটক করেছে। | ভোরঃঃ আজ তোমার খবর আছে। | বলেই আলোকে ধরতে এলো আলো সারাঘরে দৌড়াচ্ছে আর হাসছে। ভোরও ওকে ধরতে ওর পিছু ছুটছে। আলোর হাসিতে সারাঘর আনন্দে মো মো করছে। আলোকে ধরতে পারছে না তাই ভোর ****আআআআ**** বলে পা ধরে বেডে বসে পড়ল। আলো ভোরের ****আআআ*** শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ভোরের পায়ের কাছে গিয়ে পা ধরে... | আলোঃঃ কি হলো? ব্যথা করছে? ((অস্থিরতা মুখে)) | ভোরঃঃ হুম...((আলোর দিকে তাঁকিয়ে)) | আলোঃঃ কোথায়?? ((প্রায় কান্না কান্না কন্ঠ)) | ভোরঃঃ এখানে...((হাঁটুর একটু নিচে দেখিয়ে)) | আলোঃঃ খুব ব্যথা করছে না? আমি কেন যে এমন করলাম। আমার জন্যই এমন হয়েছে। কত কষ্ট হচ্ছে আআপনার।((যাহ কেঁদেই দিলো)) | ভোর আলোকে টেনে উঠিয়ে বেডে ফেলে আলোর উপরে উঠে... ভোরঃঃ ইশশশ কীভাবে কাঁদে। আমার কিছুই হয়নি। তোমাকে ধরার জন্য এমন করেছি। সো নো কান্না। তুমি দেখতে কালো... তার উপর পেঁচার মতো চেহারা... তার উপর এমন কান্না করলে তোমাকে ভুত ভুত লাগে। ((আলোর চোখ মুছতে মুছতে)) | আলোঃঃ আপনি জানেন না আপনি আমার কতটা sensitive জায়গা? তবুও কেন এমন করলেন? ((কান্নার আওয়াজ বেড়ে গেলো)) | ভোরঃঃ আর করব না। প্লীজ কেদো না। যাও এই কানে ধরেছি। | আলোঃঃ এটা আমার কান। ((ভোরকে মারতে মারতে)) | ভোরঃঃ ওহ হ্যাঁ তাই তো। উহহ আর মেরো না। | আলোঃঃ বাজে বডি স্মেলের লোক। ((চোখ মুছতে মুছতে)) | ভোরঃঃ বাজে স্মেল না? তোমার বডি স্মেল তো সো নাইস। আজ সব নিবো। ((আলোকে জড়িয়ে ধরে আলোর ঘাড়ে মুখ গুঁজে।)) | আলোঃঃ সরুন। আমি কালো... পেঁচা... ভুত... আপনি বলেছেন। আপনার সাথে আড়ি। আমি অন্যকাউকে খুঁজে নিবো যে এই কালো পেঁচা ভুতকে অনেক ভালোবাসবে। সরুন আপনি।((মুখ ভেংচি কেটে)) | ভোরঃঃ ওহ হ্যাঁ। অন্যকাউকে লাগবে আপনার। সরি। | বলেই ভোর উঠে যাচ্ছিলো। আলো হ্যাঁচকা টান দিয়ে নিজের ফেলে দিয়ে ভোরের ঠোঁট জোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয়। ভোর প্রথমে রেসপন্স দিচ্ছিলো না তাই আলো হাল্কা একটা কামড় বসিয়ে দেয়। ভোর আর নিজেকে রাগীমুডে রাখতে পারলো না। ভোরও রেসপন্স করলো। আর পাগলের মতো আলোর মাঝে ঢুবে যাচ্ছে। আলোর ঠোঁট ছেড়ে আলোর গলায় এলো তারপর ঘাড়ে। আর এক হাত দিয়ে আলোর পেটে স্লাইড করছে। আলোর কোনো হুস নেই। দুজনেই মাতাল। দুজন দুজনাতে হারিয়ে যাচ্ছে। | হঠাৎ আলোর ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা বাজতে বাজতে কেটে গেলো।পরীক্ষণে আবারো বেজে উঠলো। এবার আলোর কানে শব্দ পৌঁছালো। আলোর ঘোর কেটে গেলো। কিন্তু ভোর তো আলোকে ছাড়ার নাম গন্ধ নেই। আর বজ্জাত ফোনটা বেজেই যাচ্ছে। আলো ভোরকে সরিয়ে ফোনটা নিবে তার আগেই কলটা কেটে গেলো। আর কল এলো না ফোনে। কিন্তু আলোর তো ঘোর কেটেই গিয়েছে। | ভোর আলোর ঘাড়ে ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করছিলো তখন.... আলোঃঃ স্যার... | ভোরঃঃ ------------- | আলোঃঃ স্যাররর.... ((মাথাটা একটু ঝাঁকিয়ে ভোরের)) | ভোরঃঃ হুমমম....... | আলোঃঃ আমাকে আপনি ভালোবাসেন?? | আলোর প্রশ্ন শুনে ভোর চুপ হয়ে গেলো। | আলোঃঃ স্যার? | ভোর আস্তে করে আলোকে ছেড়ে উঠে বেলকনিতে গিয়ে ইজি চেয়ারটাতে বসে পড়ে চোখ বুঝে। আর আলোর অজান্তেই আলোর চোখ ভিজে উঠলো ভোরের এমন বিহেভিয়ারে। | আলো ফোনটা হাতে নিলো আর হাতে নিতেই ফোনটা ফেলো দিলো। আলোর মুখে একটা ভয়ের ছাপ দেখা দিলো। আলো অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে চিৎকার দিয়ে উঠে বললো... নাআআআআ.... | আলোর চিৎকার শুনে ভোর দৌড়ে এলো।ভোরকে দেখা মাত্রই আলো ভোরকে ঝাপটে শক্ত করে ধরে কাঁদতে লাগলো আর প্রলেপ বকতে শুরু করলো.... আলোঃঃ না। না। কিছু হবে না। (( ভোরকে শক্ত করে ধরে)) | ভোরঃঃ আলো কি হয়েছে? কি হবে না? এমন করছো কেন? | আলো কিছু না বলে ভোরকে শোয়ালো আর ভোরকে জড়িয়ে ধরে আলো শক্ত করে ঘুমিয়ে পড়ল। ভোরও কিছু জিজ্ঞেস না করে আলোকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। | মাগরিবের আজানের শব্দে আলোর ঘুম ভাঙ্গে। আলো উঠে নামাজ পড়ে ভোরকে তুললো। ভোর উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো। | আলো শাড়ী নিয়ে শায়লা চৌধুরীর রুমে গেলো।শায়লা চৌধুরী শাড়ী পড়িয়ে দিলো। শায়লা চৌধুরীর রুম থেকে বের হয়ে আলো রুমে যাবে তার আগে আলো শাড়ীটা একটু মর্ডান স্টাইলে করে নিলো। এরপর রুমে গেলো। | ভোর শার্ট পড়ছে... আলো গিয়ে ভোরের টাইটা লাগিয়ে দিচ্ছে। ভোর আলোকে দেখে.. | ভোরঃঃ তুমি কি এভাবে যাবে? | আলোঃঃ হ্যাঁ। কেন খারাপ লাগছে? | ভোরঃঃ হুম। শাড়ী ঠিক করো। | আলোঃঃ না। আমি এভাবেই যাবো। | ভোরঃঃ দেখাতে ভালো লাগে এসব।((আলোর পেটে হাত দিয়ে)) | আলোঃঃ মিরা তো এভাবে আসে।(( পুরো পেট বের করে)) আমি তো তাও সম্পূর্ণ পেট বের করিনি। | ভোরঃঃ Just shut up... | বলেই ভোর আলোর পেটটা ঢেকে দিলো আর বুকের আঁচলটাও টেনে দিলো। | ভোরঃঃ হুম। এখন একদম ঠিক আছে। আমার কোর্টটা তুমি নিয়ে এসো। আমি গাড়ী বের করছি গিয়ে। | আলোঃঃ আচ্ছা। | ভোর বের হয়ে গেলো। আর আলো গিয়ে শায়লা চৌধুরীকে বলে বেরিয়ে গেলো। | | | চলবে.............. ((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। পরবর্তী পর্ব পেতে সাথে থাকুন।ধন্যবাদ🙂))
3
10
ভালোবাসার গল্পটা পড়ে অসম্ভব ভালো লেগেছে। এতো সুন্দর গল্প উপহার দেয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ জানাই।