Tomai pabo bole

2 6
Avatar for Hasan16
4 years ago

#তোমায়_পাবো_বলে

#পর্ব_০৩লিরা তাহিনের জন্য খাবার নিয়ে এসেছে।তাহিন ভেবে পায় না এ বাসার লোকজন এরকম কেনো?এই যে লিরা নামের মেয়েটা এলো একবার নক করার প্রয়োজন মনে করলো নাহ!আশ্চর্য!হতে তো পারতো ও নিনিতার বয়ফ্রেন্ড।তখন ওরা যদি অপ্রীতিকর অবস্থায় থাকতো!কারো নূন্যতমনিনিতা ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে বললো,

___"এগুলো নিয়ে যাও।"কিছু লাগবে না।"

লিরাও প্রতিত্তোরে হেসে চলে গেল।তাহিন সোফায় গিয়ে ভদ্র ছেলের মতো বসে রইলো।নিনিয়া অপজিট পাশে বসে বললো,

___"হঠাৎ আমার বাসায়।কি মনে করে?"

নিনিতা ভেবেছে বিকালে আশফাক চৌধুরীর সাথে কথা হয়েছে এ নিয়ে কথা বলতে এসেছে তাহিন।আসতেও পারে তাহিন যে কতটা বেপরোয়া নিনিতা আশফাক চৌধুরীর সাথে কথা বলে বুঝতে পেরেছে।

তাহিন আমতাআমতা করে বললো,

___"আসলে তুমি তোমার ক্যামেরার লেন্স ফেলে এসেছিলে।আমি ভাবলাম দিয়ে যাই।"

নিনিতা উঠে দাঁড়িয়ে তাহিনের দিকে বললো,

___"থ্যাঙ্কিউ।"

তাহিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।ও নিনিতাকে মিথ্যে বলেছে।নিনিতা কোনো লেন্স ফেন্স ফেলে আসেনি।তাহিন উল্টো নিজের টাকা খরচ করে লেন্স কিনে এসেছে।শুধু নিনিতার কাছাকাছি থাকবে বলে।

নিনিতা বললো,

___"বিয়ার খাবেন?"

___"হুম খাওয়া যায়।চলো বাইরে যাই,এখানে আর যাই কিছু পাওয়া যাক না কেনো বিয়ার তো আর পাওয়া যাবে না।"

তাহিন দাঁড়িয়ে গেল।তাহিনের খোঁচাটা নিনিতার বুঝতে একটুও সময় লাগেনি।নিনিতা মিষ্টি হেসে বললো,

___"কোথাও যেতে হবে না।এখানেই বসুন।"

তাহিন বসলো না।নিনিতার রুমটা ছোট।ছোট এই রুমটাতে ছয়টা কর্ণার স্ট্যান্ড হারিকেন ল্যাম্প এবং দুইটা ম্যাজিক ল্যাম্প।

চারদিকে সাদা ইয়া বড় বড় পর্দা।সোফা,কুশন,বিছানার চাদর,বালিশ,এমনকি মেঝেটা পর্যন্ত ঝকঝকে সাদা।একটা মানুষের সাদা এতো কেনো পছন্দ ভেবে পায় না তাহিন।শুধু নিনিতার বেডের মাথার ওপরে পেইন্টিংটা ছাড়া।পেইন্টিংটা বহু রঙে রঙিন।দেয়ালের মাঝামাঝি-তে রাখা পেইন্টিংটা।পেইন্টিংটাতে কোনো কিছু নেই শুধু রঙ ছাড়া।সাদার মাঝে রঙিন হয়ে ফুটে উঠেছে।

সম্পূর্ণ ঘরের রঙ কেড়ে নিয়েছে এই পেইন্টিং।খুব একটা আসবাবপত্র নেই।নিনিতা মেয়ে কিন্তু একটা ড্রেসিংটেবিল ওর রুমে নেই।হাউ ইজ পসিবল!তাহিন বললো,

___"তোমার রুমটা খুব ছোট নিনিতা।"

নিনিতা সাদা পর্দার আড়াল থেকে দুটো বিয়ারের বোতল বের করলো।একটা তাহিনের হাতে দিলো।তাহিন অনুভব করলো বিয়ারের বোতল ঠান্ডা শীতল।সবেমাত্র ফ্রিজ থেকে বের করা হয়েছে।নিনিতা বললো,

___"ছোট না।পর্দা দিয়ে ঢেকে ছোট করে ফেলেছি।পর্দার আড়ালে একেকটা ভাগ করা আছে।এতো বড় রুম যে দেখলে খেলার মাঠ মনে হয়।তাই এ ব্যবস্থা।"

কথা বলতে বলতে নিনিতা বোতলের ছিপি খুলে ফেলল।তারপর এক চুমুকে কম অর্ধেক খেয়ে ফেলল।তাহিন অবাক হচ্ছে।ও তো ভেবেছিল নিনিতা অন্য টাইপের মেয়ে।এসব খায় না।তাহিন জিজ্ঞেস করলো,

___"সবসময়ই খাও?"

___"সবসময় না,মাঝেমধ্যে।বিয়ার খাওয়া ভালো।সপ্তাহে কিংবা মাসে একবার হলেও বিয়ার খাওয়া উচিত।বিয়ার অনেক ফল দিয়ে বানায়।সাইট এফ্যাক্ট থেকে বেনেফিট বেশি।আমি কিন্তু এলকোহল ফ্রি বিয়ারের কথা বলছি।"

___"বিয়ার নিয়ে পিএইচডি করেছো দেখছি।আর কি জানো?"

নিনিতা চুপ করে গেল।সব কথা সবাইকে বলতে নেই।নিনিতাকে চুপ থাকতে দেখে তাহিন ভ্রু কুঁচকে বললো,

___"কিছু বলছো না যে।"

___"এমনি।বাদ দিন।"

নিনিতা বারান্দায় গেল।তাহিনও ওর সাথে গেল।তাহিন বারান্দায় গিয়ে অবাক হয়ে গেল।বারান্দার দেয়ালের গা ঘেঁষে পাতাবাহার,মানিপ্লান্ট,বনসাই,ছোট পাম গাছ,ফরচুন ট্রি,চায়নিজ কামিনী নানা ধরনের গাছ।সেই সাথে অর্কিড সাজানো আছে।পাটের তৈরি শিকা ঝুলে তাতে মাটির হাঁড়িতে আরও রঙিন গাছ।দুটো টুল,সাইড টেবিল আর একটা রকিং চেয়ার।আরেক পাশে নিচে দেয়ালের গা ঘেঁষে অনেক হারিকেন লাইট।

পাশে একটা বুক শেল্ফ।

নিনিতা বাইরে সোডিয়ামের দিকে চোখ রেখে বললো,

___"বাইরে যাবেন।চলুন হেঁটে আসি।"

তাহিন সঙ্গে সঙ্গে বললো,

___"হুম যাবো।"

তাহিনের অবস্থা মেঘ না চাইতে জল পাওয়ার মতো।নিনিতা গায়ে জ্যাকেট জড়িয়ে নিলো।ফাল্গুন মাস শীত যাই যাই বলেও এখনো যায়নি।

নিনিতা আর তাহিন পাশাপাশি হাঁটছে।পিনপতন নিরবতা।তাহিন বললো,

___"নিঃসন্দেহে তুমি ভালো ফটোগ্রাফি করো।কিন্তু তোমার ছবিতে ফিলিংস নেই।"

নিনিতা দাঁড়িয়ে গেল।তারপর বললো,

___"ফিলিংস নেই।"

তাহিন হেসে বললো,

___"উহুম নেই।যদিও তোমার মন রাখতে বলা উচিত ফিলিংস আছে।কিন্তু সত্যিটা হলো নেই।"

___"ফটোগ্রাফারের ফিলিংস কেউ দেখে না।যারা মডেলিং করে, যাদের ছবি তোলা হয় তাদের কেমিস্ট্রি দেখে,তাদের ফিলিংস উপলব্ধি করে।আপনি কিন্তু আমার কাজের দিকে আঙ্গুল তুলছেন।ডোন্ট ডু দিস।"

___"তুমি হাইপার হয়ো না।ফটোগ্রাফার এবং মডেল উভয়ের ফিলিংস প্রয়োজন।আচ্ছা বাদ দাও।কখনো প্রেম করেছো?"

___"ফটোগ্রাফি করতে প্রেম করা লাগে না।"

তাহিন চুপ।

নিনিতা এই ঠান্ডায় আইস্ক্রীম কিনলো।দুজনেই একসাথে হেঁটে হেঁটে আইস্ক্রীম খেল।আস্তে আস্তে হেঁটে বাসায় ফেরার সময় নিনিতা বললো,

___"সব মেয়ে একরকম না।তাই তাদের পটানোর ধাঁচ আলাদা করা উচিত।আমার টাইপের মেয়ে গুলোকে খাওয়ালে,গিফট করলে কিংবা নানা কৌশলে ইম্প্রেস করলেও পটে না।তাই বলে যে পটে না ব্যাপারটা এরকমও না।পটে তবে সেটা অনেক সাধনা তপস্যার ফল।কেউ টাইমপাস করতে এতো সময় নষ্ট করে না।তাহিন চৌধুরী এমন সস্তা পটানোর কৌশল অবলম্বন করবে বলে আমার জানা ছিলো না।"

তাহিন থেমে গেল।নিনিতা জ্যাকেটের পকেট থেকে ক্যামেরার লেন্সটা তাহিনের হাতে দিয়ে বললো,

___"লেন্সটা আমার না।আমার কাছে আসার এটা শুধু মাত্র কৌশল ছিল।আমি আমার কাজ নিয়ে অনেক সেনসিটিভ।আমার ক্যামেরার প্রতিটা পার্ট আমার মুখস্ত।এখন বলতে পারেন যে আমি বুঝেও কেনো আপনাকে তখন কিছু বললাম না।প্রশ্ন করার আগে জবাব দিচ্ছি।কারণটা হচ্ছে আমি আপনার উদ্দেশ্য বোঝার চেষ্টা করছিলাম।দ্বিতীয়বার এমনটা করবেন না।ভালো থাকবেন।"

নিনিতা হেঁটে চলে গেল।একবার যদি পেছন ফিরে তাকাতো তবে তাহিনের হতভম্ব হওয়া চেহারা খানা দেখতে পেত।

তাহিন ক্লাবে ঢুকে ইচ্ছা মতো মদ খাচ্ছে।নিনিতা ওকে সস্তা বলেছে।যে তাহিন দশমিনিটে মেয়ে পটিয়ে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।আর সেই তাহিনকে কিনা সস্তা বলেছে।রাতুল অনেকবার তাহিনকে থামানোর চেষ্টা করেছে লাভ হয়নি রাতুল বললো,

___"আমি আগেই বলেছিলাম।প্লানটা স্কিপ করতে তুই তো আমার কোনো কথাই শুনিস না।"

তাহিন মাতাল হাসি দিয়ে বললো,

___"নিনিতার দুর্বলতায় আঘাত হানলে কেমন হয় রাতুল?"

___"ইউ ডোন্ট ডু দিস তাহিন।মেয়েটা তোর কোনো ক্ষতি করেনি তুই কেনো মেয়েটার ক্ষতি করবি।হোয়াই?"

তাহিন রেগে বললো,

___"আগে করেনি।এখন তো করেছে।ওই মেয়ের জন্য নিজের বাপ-মা চৌদ্দগুষ্টি কথা শোনায়।আমার বাপ অপদার্থ বলে।বাইরে বেরুতে পারি না যখন তখন মিডিয়ার হামলা করে আর বাড়িতে ডিজগাস্টিং।তারপরও বলবি ক্ষতি করেনি।"

রাতুল খানিকক্ষণ চুপ থেকে বললো,

___"তাই বলে তুই মেয়েটার ফিলিংস নিয়ে খেলতে পারিস না।শেষ মেষ তুই এই নোংরা খেলায় নামবি।ছিঃ।"

তাহিন মাতাল কণ্ঠে বললো,

___"তাহিন চৌধুরী সব পারে সব।"

___"ও যদি তোর বা আমার বোন হতো।"

তাহিন চোখ-মুখ শক্ত ___"সস্তা শব্দটা বলার আগে জিভ টেনে ছিড়ে ফেলতাম।"

___"নিনিতা ঠিকই বলেছে তুই সত্যিই চিপ মাইন্ডের।"

রাতুল কথাটা বলতেই তাহিন ওর মুখে ঘুষি মারলো।রাতুল ছিটকে নিচে পরে গেল।ক্লাবের অন্যরা রাতুলকে তুলে দাঁড় করালো।তাহিন আরেকটা ঘুষি দিলো।রাতুল এবার তাহিনের গায়ে হাত তুলতে গিয়েও তুললো না, কেঁদে দিলো।কখনো ভাবেনি বন্ধুত্বের মাঝে এমন একটা দিন আসবে। দ্বিতীয় ঘুষিতে রাতুলের নাক ফেটে গেছে,রক্ত বের হচ্ছে।তাহিন নিজেই আবার রাতুলকে জড়িয়ে ধরলো।জাপ্টে ধরে বললো,_"আ'ম সরি।আমার মাথা ঠিক ছিলো না।সরি।"

রাতুল কিছু না বলে তাহিনকে জড়িয়ে ধরলোচলবে,,,

2
$ 0.00
Avatar for Hasan16
4 years ago

Comments

Where are the other parts?? Why this stories start from part 3 or 4?? You should keep continuing stories from first part itself.

$ 0.00
4 years ago

Next time i will give serialy

$ 0.00
4 years ago