Crush jokon bor

0 8
Avatar for Hasan16
4 years ago

Crush যখন বর😍

#Season_4

#Part_52

তনু ফোনটা রেখে দিয়ে হাসতে হাসতে বারান্দায় চলে গেলো,

আর ভাবতে লাগল শিশিরের সাথে আজ একটু মজা করবে,,

তনু সব রেডি করে নিলো, এবার শুধু শিশির আসার পালা

শিশির দুপুরবেলায় বাসায় ফিরলো,,

রুমে ঢুকে দেখলো তনু নেই,

কি ব্যাপার আসার সময় তো ওকে ড্রয়িং রুমেও দেখলাম না, তাহলে গেলো কই

শিশির পিছন ফিরতে যাবে তার আগেই তনু একটা লাল ফিতা দিয়ে শিশিরের চোখটা বেঁধে দিলো

শিশির-কে?

তনু-আপনার বউ

শিশির-আচ্ছা তো দুপুরবেলা রোমান্স করতে মন চাইতেসে বুঝি?

তনু-লুকোচুরি খেলবো

শিশির-আমি কিন্তু তোমাকে নিমিষেই ধরে ফেলতে পারবো

তনু-দেখা যাক

শিশির হাত থেকে ব্যাগটা রেখে তনুকে খুঁজতে লাগলো

তনু রুম থেকে বেরিয়ে গেছে

শিশির ও আস্তে আস্তে রুম থেকে বের হলো,

কারন তনুর গায়ের ঘ্রান রুম থেকে চলে গেসে সেটা শিশির বুঝতে পেরেছে

তনু ঠিক যেদিকে যেদিকে যাচ্ছে শিশির ঠিক সেদিকেই যাচ্ছে

তনু হাঁপিয়ে গেসে পালাতে পালাতে,উফ এই ছেলেটা এত ফার্স্ট,ভালো করেই ফিতা বেঁধেছি,আমাকে তো দেখার চান্স নাই,তাহলে পিছে পিছে আসে কেমনে

তনু মা বাবার রুমের দরজার সামনে এসে হাঁপাচ্ছে,,পুরো বাসা শিশির চক্কর দেওয়াইসে

শিশির হাসতে হাসতে আসতেসে

তনু ভয়ে রুমের ভিতরে চলে গেলো

ভিতরে ঢুকতেই পা পিছলিয়ে দুম করে নিচে পড়ে বসে গেলো তনু,

শিশির-তনু??

রুমে মা বাবা নেই তারা ১১টার দিকে একটা দাওয়াতে গেসে, অপু আন্টির ছেলের আকিকায়

শিশিরের বাবা মদ খায়, তাই উনার সোফার পাশের সেন্টার টেবিলে এক গ্লাস মদ নেওয়া ছিল,আকিকাতে তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে চলে যাওয়ায় এই গ্লাসের মদ খাওয়া হয়নি উনার,

তনু নিচে বসে ঢোক গিলতেসে শিশিরের মুখে হাসি দেখে,

শিশির শার্টের হাতা উঠাতে উঠাতে এগোচ্ছে

তনু টেবিলে তাকিয়ে দেখলো এক গ্লাস কোকাকোলা,

এটা যে মদ হতে পারে তা তনু জানে না,কারন শেখর চৌধুরীকে তনু অনেক অনেক ভালো জানেন,আর ভালো মানুষ যে মদ খায় সেটা তনু মানে না,,আর এ বয়সে কেনোই বা উনি মদ খাবেন?

তনু তাই একদমই ভাবেনি এটা মদ হতে পারে,

কোকাকোলা ভেবে ঢকঢক করে পুরা গ্লাসের মদটা খেয়ে নিলো,

মুখ মুছতে ব্রু কুঁচকিয়ে গ্লাসটার দিকে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো তনু,এটা কি জিনিস ছিল,টেস্ট পুরা ফালতু,মনে হয় ডেট ওভার হয়ে গেসে,

শিশির-তনু?

৫মিনিট হয়ে গেসে শিশির রুমে হেঁটে তনুকে খুঁজেই পেলো না, তনু নিচে বসে চোখ মুখ ডলতেসে শুধু

তারপর উঠে দাঁড়ালো,

এগিয়ে গিয়ে শিশিরকে ধরে ফেললো

তনু-ধরে ফেলেছি😍

শিশির-মানে?

শিশির ওর চোখ থেকে ফিতা খুলে নিলো

শিশির-ধরবো তো আমি তোমাকে,তুমি আমাকে ধরসো কেন?

তনু দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে থেকে শিশিরের শার্টের বোতাম খুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো

শিশির -আবার কি,বোতাম খুলো কেন

তনু ২/৩টা বোতাম খুলে শার্ট টেনে ধরে ভিতরে নিজের মুখ লুকালো

শিশির-তনু?

তনু-উমমমম শিশিরবাবু

শিশির তনুর কথা শুনে চোখ কপালে তুলে তনুর মুখ টেনে নিজের দিকে ফিরালো

শিশির-আমাকে এখন এটা বলো না যে তুমি মদ খেয়েছো?

তনু-হুম খাইসি,কোকাকোলা

শিশির-কই পেলে?

তনু আঙ্গুল তুলে টেবিলের দিকে দেখালো

শিশির-মনে হয় বাবার বিয়ারের বোতলের মদ খাইসে,

খাইসে রে আমি শেষ!!!,বাবা যে ব্রান্ডের মদ খায় ওটা একবার খেয়ে আমারই নেশা হয়ে গেসিলো,its too dangerous, গোটা ২দিনেও এটার নেশা ছাড়ে না,শেষমেষ তনুই খেয়ে নিলো?আমি শেষ

তনু শিশিরের বুকে আবার মুখ ডুবালো

শিশির-তনু, তুমি না লক্ষী মেয়ে চলো আমার সাথে

শিশির তনুর হাত ধরে টেনে ওদের রুমে নিয়ে আসলো

তনু দুম করে নিয়ে বসে গিয়ে শিশিরের পা জড়িয়ে ধরলো

তনু-আমি যাব না কোথাও

শিশির -বেডে এসে শোও, আমি তোমার জন্য তেতুলের জুস আনতেসি,

তনু-কোনো জুস না, ঐবার জুস খাওয়ায় আমার নেশা কাটাইসো,এবার আমি নেশা কাটাতে দিব না, এই নেশাই ভালো,পৃথিবী হাল্কা লাগে,সব হাল্কা লাগে

শিশির-আমার পা ছাড়ো তনু

শিশির তনুকে ধরে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলো

তনু মুচকি হেসে শিশিরের শার্ট টেনে ধরে ওকে কাছে নিয়ে আসলো

শিশির টান টা সামাল দিতে না পেরে তনুর গায়ে গিয়ে পড়লো

তনু-আহা কত কিউট লাগতেসে আমাদের দুজনকে

তনু বেডের পাশে থাকা দেয়ালের বিরাট বড় আয়নার দিকে চেয়ে কথাটা বললো

শিশির তনুর তাকানো দেখে নিজেও তাকালো আয়নার দিকে

তনু শুয়ে আছে তার উপর শিশির

শিশির-তোমার মাথা পুরা গেসে

শিশির উঠে দাঁড়িয়ে গেলো

তনু-যাও যাও তেতুলের জুস আনো,আমি তোমারে খাওয়াই দিব

শিশির-ওটা তোমার জন্য😒

শিশির নিজে রান্নাঘরে গিয়ে তেতুলের জুস বানিয়ে নিলো,চিনি দিলোই না,কারন ভালো করে টক না খেলে ওর মাথার থেকে নেশা নামবে না

শিশির অফিস থেকে এসে এখনও fresh ও হয়নি,,

রুমে ঢুকে দেখলো তনু নেই কোথাও,আবার গেলো কোথায় মেয়েটা উফ!!

শিশির টেবিলের উপর গ্লাসটা রেখে পিছনে তাকাতেই ওর চোখ কপালে উঠলো

তনু একটা ওড়না নিয়ে শাড়ী বানিয়ে পরেছে,ব্যাস!!

এই পাতলা ওড়না ছাড়া তার গায়ে একটা ছিটেফোটা কাপড় ও নেই

তনু মডেলদের মতো ঢুলে ঢুলে শিশিরের দিকে চেয়ে আছে

শিশির তনুর এমন বেশ দেখে হা করে টেবিল থেকে পানির গ্লাসের বদলে তেতুলের জুসটা নিয়ে ঢকঢক করে ৩ঢোক গিলে চোখ মুখ খিঁচে আবার রেখে দিলো,

ইস তনুর জন্য আনা এই টক চিনি ছাড়া তেতুলের জুস কিনা আমি খেলাম

শিশির কাশতে কাশতে খাটে বসে পড়লো

তনু-কি হইসে শিশির বাবু

তনু কথাটা বলতে বলতে এগিয়ে আসলো আর ওড়না ওর পায়ের নিচে পড়ে ঘুরে ঘুরে খুলে গেলো,একদম নিচে ফ্লোরে পড়ে গেলো

তনুর সেদিকে খেয়াল নেই,,হনহনিয়ে শিশিরের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে

শিশির মাথার চুল একটু টেনে চোখটা খুলে তনুকে এমন অবস্থায়য় দেখে ওর চোখ আগে ছিল কপালে এবার আসমানে চলে গেসে

চিৎকার দিয়ে বিছনা থেকে বেড শিটটা নিয়ে তনুকে ঢেকে নিলো শিশির

তনু-কি হয়েছে,এমন চিল্লান কেন?

মা দরজা নক করতেসে,মনে হয় এসে গেসে

মা-কিরে শিশির চিৎকার দিলি কেন,কি হয়েছে,তনু ঠিক আছে তো ?

শিশির-(না মা কিছু ঠিক নাই,)না আসলে হুম সব ঠিক আছে

মা-দরজা খুল

শিশির কি করবে এখন??,তনুর গায়ে শুধু বেডশিট তাও সেটা নিয়ে তনু টানাটানি করতেসে, শিশির তনুর হাত ধরে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে বাইরে দিয়ে দরজা লক করে তারপর গিয়ে মাকে দরজা খুলে দিলো

মা ভিতরে ঢুকে বললো তনু কোথায়

শিশির-ও তো বাথরুমে গেসে

তনু-শাশুমা আমি বাথরুমে ইচ্ছে করে আসিনি,তোমার ছেলে আমাকে আটকায় রাখসে

শিশির-মজা করতেসে মা,কি কারনে আসছো বলো

মা-তুই এখনও ফ্রেশ হস নাই,fresh হয়ে নে,,

শিশির-তোমরা না আকিকা অনুষ্ঠানে গেসিলে,এত তাড়াতাড়ি ফিরে আসলে যে

মা-আরে বলিস না আমি আকিকাতে যে গিফট দিব ভাবসিলাম সেটা নিতেই ভুলে গেসি,তোর বাবা জানে না সেটা কোথায় রেখেছি আমি,তাই নিজেই চলে এলাম নেওয়ার জন্য,

শিশির-ওহ আচ্ছা নিয়ে যাও তাহলে তাড়াতাড়ি

মা-না শুধু সেই কারন না তো,ওরা বলেছে তনুকে একটু দেখবে,অপু বিয়েতে তো আসে নাই,তুই তনুকে বল রেডি হয়ে আসতে,আমরা একসাথে যাব

শিশির-নাহহহহহহহ

মা-কেন?কি হইসে?

শিশির-আসলে তনুর শরীর ভালো না,যেতে পারবে না

তনু-শাশুমা মিথ্যা কথা বলতেসেন উনি,আমি একদম ঠিক আছি

মা-হুম,শিশির ওকে রেডি হয়ে আসতে বল,ততক্ষনে আমি গিফটটা নিই

মা চলে যাওয়ার সাথে সাথে শিশির দরজাটা আটকিয়ে বাথরুমের দরজাটা খুললো

তনু বেডশিট টেনে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসলো

তনু-কেমন হাসবেন্ড আপনি??আমাকে উনারা দেখতে চাইসে আমি সেজে গুজে যাব না?

শিশির-তোমার হুস নাই,তুমি ওখানে গিয়ে গণ্ডগোল করতে চাও নাকি,মাথা কাটা যাবে আমার

তনু-কাটা গেলে ব্যান্ডেজ করে দিবোনি

কথাটা বলে তনু বেডশিট গায়ের থেকে ফেলে দিলো

শিশির চোখে হাত দিয়ে আরেকদিকে ফিরে গেলো

তনু হেসে দিয়ে আলমারি থেকে একটা জামা নিয়ে পরে শিশিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো

তনু-চলুন যাই

শিশির-না,তুমি মাকে বলবা আমরা যাচ্ছি না

তনু-মা চলো যাই,দেরি হচ্ছে তো😜

তনু নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো

শিশির মাথায় হাত দিয়ে ভাবতেসে কিভাবে কি করবে

মা-কিরে শিশির এখনও রেডি হস না কেন,দেরি হয়ে যাচ্ছে তো আমাদের

শিশির শার্টের বোতাম লাগিয়ে আসলো,তনু মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ঢুলতেসে

গাড়ীতে বসে তনু হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে শিশিরকে জ্বালাচ্ছে,

মা ফোনে বাবার সাথে কথা বলতেসে,

অপু আন্টির বাসায় এসেই মা শিশির আর তনুর আগেই চলে গেলো

তনু বারবার পড়ে যাচ্ছে আর শিশির টেনে টেনে ধরতেসে,কি মহা ঝামেলায় পড়লাম

ভিতরে ঢুকে শিশির আর তনু মিলে অপু আন্টি আর তার হাসবেন্ড জিসান আহমেদকে সালাম করলো

অপু আন্টি-বাহ বউতো বেশ এনেছিস

মা-কার পছন্দ দেখতে হবে না

শিশির দাঁত কেলিয়ে সবার সাথে কথা বলতেসে আর পাশে তাকিয়ে দেখলো তনু নেই

শিশির-তনু গেলো কই,,!!!!

শিশির চারিদিকে তনুকে খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখলো তনু কোকাকোলা গ্লাসে ঢেলে নিয়ে বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে আসতেসে

শিশির-কি?তোমাকে না বলসি আমার পাশে পাশে থাকতে

তনু-আরে কোকাকোলা বাবার রুমে খেয়েছিলাম যে ওগুলা খুব মজা ছিল,তাই এখন আবার নিলাম

তনু মুখে দিয়ে মুখ বাঁকিয়ে বললো এগুলা তো সেই কোকাকোলা না,

শিশির-কারন তখন কার গুলো বিয়ার ছিল,আর তোমার হাতের এগুলা আসল কোকাকোলা

তনু-তাহলে আমাকে নকল কোকাকোলা এনে দাও না প্লিস শিশিরবাবু

শিশির-না,চুপ থাকো,

তনু-না, এ্যা এ্যা😭

শিশির-চুপ চুপ,আস্তে আস্তে,আচ্ছা খাওয়াবো,কান্না থামাও

মা-শিশির তনুকে নিয়ে এদিকে আয় তো,,তোর রাফেজ আঙ্কেলের সাথে কথা বলে নে,উনিও আকিকাতে এসেছেন

শিশির তনুর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো

মিঃরাফেজ-আরে তনু না?যে শিশিরকে ওর বিয়ের দিন নাতাশার মত একটা মেয়ের থেকে বাঁচিয়ে ছিল,

মা-হুম

মিঃ রাফেজ-একটা কথা বলতে হবে আপনাদের বউয়ের মধ্যে দম আছে

মা-আর তাই সে চৌধুরী বাড়ির বড় বউ হয়েছে

তনু ফিসফিসিয়ে শিশিরকে বললো এই মিঃ রাফেজ নাকি শিশিরের বিয়ের সময় লুকিয়ে লুকিয়ে চিকেন লেগ পিস ৪টা খেয়েছিল তনু সেটা নিজের চোখে দেখেছে

শিশির তনুর কথা শুনে ফিক করে হেসে দিলো

মিঃ রাফেজ-কি এমন বললো তনু যেটা এত হাসির??আমিও শুনি

শিশির-আসলে ও বললো আর কি নাতাশাকে কেমনে বিদায় করেছে

মিঃ রাফেজ-ওহহ, আচ্ছা

শিশির তনুর গায়ে হেলান দিয়ে কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছে,

মাঝে মাঝে পড়ে যাওয়া ধরে শিশির তনুর পিঠের পিছন দিয়ে হাত দিয়ে ওকে আগলে ধরে আছে

চলবে♥

1
$ 0.00
Avatar for Hasan16
4 years ago

Comments