আসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলে ভালো আছেন। আপনারা হয়তো ইতি মধ্যেই বুজতে পারছেন আমি আজ কি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। জি, আমার মাতৃভাষা বাংলা।
আমি একজন বাংলাদেশী আর আমাদের দেশের মাতৃভাষা বাংলা। তবে এই ভাষার পিছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস। আপনাদের অনেকেরই জানা। মূলত বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে তারই কিছু অংশ আমি তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি এইখানে।
আমাদের এই মাতৃভাষা বাংলাকে অর্জন করতে ভাষাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিলো আন্দোলন যা আমরা ভাষা আন্দোলন হিসেবে জানি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় গড়ে ওঠে একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মূলত মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন সময়ে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সৃষ্ট আন্দোলনের মাধ্যমে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
বাংলা ভাষার পটভূমি :১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে ।পাকিস্তান সরকার ঘোষণা করেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের এক মাত্র ঘোষণার ভাষা। এ প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
তারা আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সরকার ১৪৪ধারা জারি করার ঘোষণা দেন এবং সকল প্রকার মিছিল, সমাবেশ, বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
এ সময় পুলিশের লাঠি চার্জ ও বর্বর গুলি বর্ষণে সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর আরো অনেকেই শহীদ হন। ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার নতি স্বীকার করেন। ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এছাড়া ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লিখিত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রবর্তিত হয়।
সেই থেকে প্রতি বছরই আমরা ২১ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছি
আন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি : ১৯৯৯সালে শহীদের আত্নদানের স্মৃতিতে বাংলা কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যা বৈশিকপর্যায়ে গভীর শ্রদ্ধার সাথে "বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস" হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
আমাদের সকলের উচিত নিজ নিজ মাতৃভাষাকে সম্মান করা ও যথার্থ মর্যাদা দেওয়া। মাতৃভাষা নিয়ে এরকম আন্দোলন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আমি গর্বিত আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে।
আমার লিখাটা পড়ার জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
অনেক দিন পর খুব ভালো একটা বিষয় নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। সত্যি এই রকম বিষয় নিয়ে কেউ কখনও কথা বলতে চায় না, এইসব বিষয় আমাদের জানতে হব, জানাতে হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তানা হলে তাদের অতীতে কি ঘটেছিল বা আমাদের বাংলাভাষা কোথায় থেকে আসলো সব কিছু জানতে হবে। আমার পক্ষ থেকে আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।