রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।আগে ওকে বারবার দেখেছিলালরঙের শাড়িতেদালিম ফুলের মতো রাঙা;আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,আঁচল তুলেছে মাথায়দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্বঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়শালবনের নীলাঞ্জনে।থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়েআমাকে করলে নমস্কার।অস্থিরতায় —কেন এ-সব কথা,এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।আমি ছিলেম অন্য সমাজবিধির পথ গেল খুলে,আলাপ করলেম শুরু —কেমন আছ, কেমন চলছে সংসারইত্যাদি।সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়েযেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,কোনোটা বা দিলেই না।বুঝিয়ে দিলে হাতের বেঞ্চিতেওর সাথিদের সঙ্গে।এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।মনে হল কম সাহস নয়;বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।গাড়ির আওয়াজের আড়ালেবললে মৃদুস্বরে,“কিছু মনে কোরো না,সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;দূরে যাবে তুমি,দেখা হবে না আর কোনোদিনই।তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,শুনব তোমার মুখে।সত্য করে বলবে তো?আমি বললেম, “বলব।”বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,“আমাদের গেছে যে দিনএকেবারেই কি গেছে,কিছুই কি নেই বাকি।”একটুকু রইলেম চুপ করে;তারপর বললেম,“রাতের সব তারাই আছেদিনের আলোর গভীরে।”খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;আমি চললেম একা।
রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা, ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।আগে ওকে বারবার দেখেছিলালরঙের শাড়িতেদালিম ফুলের মতো রাঙা;আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,আঁচল তুলেছে মাথায়দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্বঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়শালবনের নীলাঞ্জনে।থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়েআমাকে করলে নমস্কার।অস্থিরতায় —কেন এ-সব কথা,এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।আমি ছিলেম অন্য সমাজবিধির পথ গেল খুলে,আলাপ করলেম শুরু —কেমন আছ, কেমন চলছে সংসারইত্যাদি।সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়েযেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,কোনোটা বা দিলেই না।বুঝিয়ে দিলে হাতের বেঞ্চিতেওর সাথিদের সঙ্গে।এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।মনে হল কম সাহস নয়;বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।গাড়ির আওয়াজের আড়ালেবললে মৃদুস্বরে,“কিছু মনে কোরো না,সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;দূরে যাবে তুমি,দেখা হবে না আর কোনোদিনই।তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,শুনব তোমার মুখে।সত্য করে বলবে তো?আমি বললেম, “বলব।”বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,“আমাদের গেছে যে দিনএকেবারেই কি গেছে,কিছুই কি নেই বাকি।”একটুকু রইলেম চুপ করে;তারপর বললেম,“রাতের সব তারাই আছেদিনের আলোর গভীরে।”খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;আমি চললেম একা।