রিলেশনে যাওয়ার আগের ছবি এটা।
সে সব সময় আমাকে রিকোয়েস্ট করতো স্যার প্লিজ আপনার সাথে একটা ছবি তুলবো। তার সাথে আমার এটাই ফাস্ট কাপল পিকচার।
BNCC এর দায়িত্বে ছিলাম তাই সব সময় মেয়ে ক্যাডেটদের ইগ্নোর করতাম,কারন কোন বাজে রিপোর্ট পেলে আমার পুরো ক্যাডেট লাইফ শেষ।
কিন্তু সে সব সময় আমার পিছনে লেগেই থাকতো,কোন মেয়ে আমার সাথে কথা বলতে ভয় পেতো তার জন্য। তার একটাই কথা ছিলো ইমরান স্যারের সাথে কেউ কথা বলতে পারবা না আমি ছাড়া।
আস্তে আস্তে সে আমাকে স্যাফ থেকে ভাইয়া ডাকা শুরু করে দিলো(ক্লাসের বাইরে),এর মাঝে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম তার রান্না করা মাছের ঝোল আর ভাত খেয়ে গায়ে শক্তি বাড়লো আমি সুস্থ হয়ে উঠলাম,তবে তার হাতের পায়েস,নুডুলস,খিচুড়ি,গরুর মাংশের ঝোল ছিলো অতুলনীয়😋
এই জিনিস টা নিয়ে জুনিয়ররা কানাঘুষা শুরু করে দিলো তা আমি শুনতে পেতাম।
আস্তে আস্তে বুঝলাম সে আমাকে পছন্দ করে এবং সে তার ছোট বোনকে দিয়ে আমাকে আকারে ইংগিতে বুঝিয়ে দিলো😊
১৬-১২-২০১৭ প্রপোজ করলেন সে আমাকে, আমি লজ্জা পেয়ে নিজেই প্রপোজ করলাম🙈
আলহামদুলিল্লাহ তারপরে আমাদের সম্পর্কের যাত্রা শুরু হলো, কিছুদিন কথা বলার পরে একদিন তাকে আমার মায়ের সাথে কথা বলিয়ে দিলাম,তার কথা শুনে এবং ছবি দেখে মা তাকে পছন্দ করলো।
তার পরিবার ও আস্তে আস্তে জেনে গেলো সব কিছু, তার আব্বু আম্মু কিছু বলেনি তবে আমাদের সাপোর্ট দিতো তার আম্মু এবং তার খালামনি।আমার চাকরি হয়ে গেলো তাকে আমার সাথে বিয়ে দিবে এই কথা দিয়েছিলো আমাকে তারা।
সেই জন্য আমি ছোট একটা চাকরি শুরু করি,বেতন অনেক কম ছিলো তাই সে লজ্জায় তার আম্মুকে বলতে পারেনি আমার জবের কথা🙂তবে তার ব্যাক্তিগত কোন চাহিদা ছিলোনা।(গিফট,রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া এগুলো অপছন্দ ছিলো তার)
ডিপার্টমেন্ট এর ঝামেলার জন্য নেভিতে এপ্লাই করতে পারিনি,তার ফ্যামিলীর চাহিদা ছিলো সরকারী চাকরি হোক তা ছোট বা বড়🙂 এজন্য সরকারি চাকরির পিছনে অনেক ছুটেছি কিন্তু পাইনি।
আস্তে আস্তে মনমালিন্য বাড়তে থাকে দূরত্বের কারনে।সে আমাকে অনেক ভালোবাসতো,অনেক কান্নাকাটি করতো আমার জন্য,দেখা হতো না অনেক দিন। অনেক দিন পরে (৫মাস) দেখা করেছিলাম সেদিন অনেক কান্না করেছিলো।
দুরত্বের কারনে আমাদের ঝগড়াঝাটি ও বাড়তে থাকে।
সে অনেক রাগী ছিলো কারন সে পরিবারের বড় মেয়ে এবং আদরের দুলালী ছিলো তাই। আর আমি পরিবারের ছোট এবং আদরের তাই আমার ও রাগ জিদ অনেক বেশি ছিলো।
ঝগড়া করে একবার এক মাসের বেশি যোগাযোগ বন্দ ছিলো আমাদের।
তাই আমাদের দূরত্বের সুযোগ টা নিয়েছিলো তার কাজিন। খালামনির বাসায় বেড়াতে এসেছিলো তার কাজিন। তার কাজিন আমাদের সব কিছু জানতো। তবুও আমাদের দূরত্বের সুযোগটা সে লুফে নেয়। আমার এক্স এর সাথে সে কথা বলতে শুরু করে,আমার সে ও তার সাথে সুখ দুঃখের কথা শেয়ার করতে থাকে কাজিনের সাথে😊
তার পরিবার জিনিসটা বুঝতে পারে,কাজিন সরকারি চাকরিজীবি তাই তার ফ্যামিলি রাজি ও হয়ে যায়।
সব চেয়ে মজার বিষয় হলো আমি তাকে বিজি পেতাম এবং ওয়েটিংয়ে পেলে জিজ্ঞাসা করতাম কার সাথে কথা বলছিলা,তখন সে বলতো বাসায় সবাই ভাইয়ার সাথে বলতেছিলো😊
আমি বলতাম তার সাথে এত কথা কিসের? সে বলতো ফালতু কথা বলবেন না সে আমার আপন ভাইয়ের মতো।🤣
তারপরে আমি তার জন্য ভালো চাকরির আশায় পুরনো চাকরি টা ছেড়ে দিলাম। টানা ৪টা মাস ২২ দিন অনেক যন্ত্রনা সহ্য করেছি চাকরি ছিলোনা তাই।
তার জন্মদিনে আমার আমার চাকরির শেষ মাসের সব টাকা দিয়ে গিফট কিনেছিলাম।অনেক খুশি হইছিলো সে,এবং আমাকে ছুয়ে প্রমিজ করেছিলো যে তার কাজিনের সাথে তার কিছু নেই। আমি ও সব বিশ্বাস করেছিলাম।
তারপরে আমি আমার নতুন চাকরির জন্য চলে গেলাম বাড়ি থেকে,আলহামদুলিল্লাহ আগের চেয়ে অনেক ভালো একটা চাকরি পেলাম। কিন্তু সে আমার সাথে যোগাযোগ অফ করে দিলো। তাকে জানালাম আমার চাকরি হইছে কিন্তু কোন রেসপন্স পেলাম না।
তারপরে আমার জন্মদিন এলো সে রাত ১২.১ মিনিটে ফোন দিল,অনেক কান্না কাটি করছিলো সে,আমাকে শুধু বলতে লাগলো আমাকে মাফ করে দিয়েন আমি অনেক অন্যায় করেছি আপনার সাথে আমাকে মাফ করে দিয়েন। আমি কিছুই বুঝলাম না আমি তাকে বুঝালাম কিন্তু সে বুঝলো না অনেক কান্না করছিলো।
পরে ফোন রেখে দিলো,এবং পরের দিন আমাকে একটা পার্শেল পাঠালো। তাতে একটা কেক এবং একটা চিরকুট ছিলো সুধু লিখা ছিলো আমাকে মাফ করে দিয়েন প্লিজ। এই কথা টা অনেক বার লিখা ছিলো।
সে কোচিং এর জন্য ঢাকা আসে। সে কোচিং করতো অন্য জায়গা আমাকে বলছিলো ফার্মগেট, আমাকে ফার্মগেট যেতে বলছিলো আমি অফিস শেষ করে ফার্মগেট গেছি গিয়ে কল দিয়ে দেখ তার ফোন বন্দ। পুরো ফার্মগেটের সব কোচিং খুজেছি কিনতি তাকে পাইনি। ৬ঘন্টা ফার্মগেট ঘুরছি আর কাদছি তাকে দেখার জন্য। আমার দিকে মানুষ গুলো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলো কেমন যেন আমি পাগল। তার পরে এক্সিডেন্ট করলাম অল্পের জন্য বেচে গেছিলাম।
এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পরে হুট করে একদিন তার সো কল্ড আপন ভাই নামক ব্যাক্তি আমাকে ফোন দিয়ে বললো আমার আর সিমুর (ছদ্মনাম) বিয়ে ঠিক হইছে,তুমি আর কখনো তাকে কল টেক্সট কিছু দিবেনা। আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম, আমি সাথে সাথে তার আম্মু এবং বোন কে কল দিলাম তাদের কথায় বুঝলাম যে আসলেই ঘটনা সত্য।
ওই ছেলে আমাকে অনেক থ্রেড দিছে এবং অনেক উলটা পালটা বলছে আমি চুপ ছিলাম তার (এক্সের) কথা চিন্তা করে।
তবে এর ভিতরে আরো অনেক নিউজ জানতে পারলাম,তাকে নাকি ব্রেন ওয়াশ করা হইছে।তাকে তাবিজ করা হয়েছে হ্যান ত্যান। আমি সিউর হইলাম সে আমাকে কল দিয়েছিলো তখন।যে মানুষ আমাকে সব সময় আমাজে আপনি করে বলতো। সে ওই দিন আমাকে ডজন খানিক গালি দিলো। আমি চোখে পানি নিয়ে তাকে রিকোয়েস্ট করলাম গালি দিয়ো না, সে গালি দিতে দিতে ফোন রেখে দিলো🙂তার কিছুক্ষন পরে দেখি আমি হাসপাতালের বেডে।
আমি বুঝে গেলাম সে তার নিজের মাইন্ডে নাই😪
এটাই শেষ কল এবং কথা ছিলো।
আমি ভাবছিলাম যে ও হয়তোবা ফ্যামিলির প্রেসারে এগুলো করতে বাধ্য হইছে।কিন্তু আমি ভূল ছিলাম🙂
তারপরে তার মামাতো বোনের সাথে অনেক কথা বললাম সে আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।কিন্তু সে ও আমাকে পরে না করে দিলেন।
তারপরে তার মামাতো বোনের সাথে অনেক কথা বললাম সে আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।কিন্তু সে ও আমাকে পরে না করে দিলেন।
আমি রাগে দুঃখে নিজেকে শেষ করার প্লান করলাম।
এশার নামায পড়ে রুমের দরজা বন্দ করে ওড়না বাধছিলাম এমন সময় মা এসে দরজায় অনেক ধাক্কাধাক্কি করতে লাগলো। কারন মা জানতো যে আমাদের ব্রেকাপ হইছে। তারপরে দরজা খুললাম।এবং মা এসে আমাকে অনেক বুঝালো, পরে রাতে খাওয়াদাওয়া করলাম,মা ওই দিন আমাকে একা ছাড়েনি রাতে জেগে ছিলো আমার জন্য।
এর পর থেকে এখনো নামায পড়ে তার জন্য দোয়া করি,আল্লাহ তাকে যেন সারাজিবন অনেক সুখে শান্তিতে রাখে। কোন দুঃখ কস্ট যেন তাকে ছুতে না পারে।
২ বছর ৩ মাস ২ দিনের সম্পর্ক🙂
যানিনা সে কেমন আছে, তবে সব সময় তার জন্য শুভকামনা।
ভালো থেকো ভালোবাসা💔
তার মত জিবন সাথী পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যাপার।
খুব ভালো মেয়ে ছিলো সে,স্পষ্টভাষী, গুনবতী,রূপবতী,লক্ষী।
তার উপর আমার কোন রাগ ক্ষোভ নেই।
আমি এখন তার প্রশাংসা করি সবার কাছে।
এক্সকে দোষ দিয়ে ভালো সাজার মত ছেলে আমি না।সে অনেক অনেক লক্ষি একটা মেয়ে ছিলো।