লেবাননের রাজধানী বৈরুত হঠাৎ করেই কেঁপে উঠেছিল মঙ্গলবার। বৈরুত বন্দরের একটি ওয়্যারহাউসে দুই হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত করা ছিল। তা থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না বলেই এরকম ভয়াবহ একটি পরিস্থিতির শিকার হতে হলো লেবাননকে।
এরকম বিস্ফোরণ বাংলাদেশেও ঘটতে পারে যে কোনো সময়। আমরা যদি লেবাননে ঘটে যাওয়া ঘটনার পেছনের কথাগুলো খুঁজি তাহলে দেখতে পাব, ২০১৪ সালে একটি পণ্যবাহী জাহাজে করে ওই রাসায়নিক দ্রব্য এসেছিল, কিন্তু কাগজপত্রে গণ্ডগোল থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের জিনিস বাজেয়াপ্ত করে। তারপর বন্দরের রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে মজুত করা হয়। পণ্যগুলো নিয়মমতো নিলামের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও গত ছয় বছরে সে কাজ করা হয়নি। সেই পণ্যগুলো যদি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিলাম করা হতো, তাহলে হয়তো এদিন দেখতে হতো না।
এরকম বিস্ফোরণের ঘটনা প্রায় বছরই ঘটতে দেখা যায়। যখন গণমাধ্যমগুলো অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সরব থাকে তখন উঁচু মহল থেকে লোকদেখানো কিছু কাজ করা হলেও ঘটনার রেশ কাটতেই প্রতিশ্রুতিও ফুরিয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীনও হয়েছি। ঢাকার মীরহাজিরবাগে আবাসিক ভবনগুলোয় পরিবার নিয়েও যেরকম মানুষ বসবাস করে, তেমনি কারখানা দিয়েও কেউ কেউ জর্দা তৈরি করে থাকে। বেশ কয়েকবার আগুন লাগলেও বড় আকার ধারণ না করায় গণমাধ্যমগুলোয় আসেনি। তাই এখনও সেই আগের মতোই চলছে কার্যক্রম।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণ হয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে। এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহƒত হয়, তবে এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় কৃষিকাজে সার ও বিস্ফোরক হিসেবে। আগুনের সংস্পর্শে এলে এটি অত্যন্ত সক্রিয় বিস্ফোরক হিসেবে কাজ করে। অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে লেবাননে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও আমাদের দেশের সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার জন্য অন্য কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের আগুনে সাধারণ জনগণ পুড়ে মরবে!
শিল্পকারখানার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দেওয়া, সুদক্ষ দমকল বাহিনী তৈরি করে রাখা এবং শহরের রাস্তাগুলো প্রশস্ত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এর আগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এরকম অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে। তাই আমাদের আগের ঘটনা এবং লেবাননে অসতর্কতার কারণে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে, যাতে আমরা আমাদের দেশে এরকম বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে পারি।
হুম আপনি ঠিকই বলেছেন।প্রতিরোধ করা প্রতিকারের চেয়ে ভালো।এক্ষেত্রে সরকারের ও সুনজরের প্রয়োজন রয়েছে