বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। প্রতিটি ঋতুই রঙে ওরূপে, ছন্দে ও সুরে স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঋতুর আবর্তন এর মধ্যে প্রতিফলিত। গীষ্ম ,বর্ষা, শরৎ ,হেমন্ত, শীত ও বসন্ত এই ছয়টি ঋতুর তাপমাত্রা বৃষ্টিপাত বায়ুপ্রবাহের তারতম্যে একটি আরেকটি থেকে আলাদা।
বাংলাদেশের ঋতু চিত্রে শীতের সকাল ভিন্নধর্মী আবহে দৃশ্যমান। কুয়াশার আবরণ ও ঠান্ডার কম্পনে শীতের সকাল বাংলার গ্রাম ও নগর জীবনে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ধরা দেয়। শীতের সকালে কুয়াশার আবরণে ঢাকা থাকে রক্তিম সূর্য। টুপটাপ ঝরে পড়ে শিশির বিন্দু।
নাসের ডগায় , সর্ষের পাপড়িতে জমে থাকে রুপালি শিশির। লেপ কাঁথা ফেলে কেউ সহজে বাইরে বেরোতে চায় না। কুয়াশার অবগুন্ঠন ঠেলে যখন জ্বলে ওঠে বীরু সূর্য তখন ঝিমিয়ে পড়া জীবন প্রবাহ জেগে ওঠে মৃদু উত্তাপের আশায়। শীতের সকালে কর্মমুখর জীবনের এক ভিন্ন প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়।
জীবিকার টানে কর্মজীবী মানুষ শীতকালের প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশা উপেক্ষা করে পা বাড়ায় পথে। চাকুরীজীবী, জেলে-তাঁতী, কৃষক-শ্রমিক ,সবাই ছুটে নিজ নিজ কর্মস্থলে। শীতের সকালে গ্রাম-বাংলা-কুয়াশার আবরণে ঢাকা থাকে। মাঠ- প্রান্তর, গাছপালা সবই থাকে দৃষ্টির অগোচরে।
শীতের প্রকোপে কাপতে থাকে ছেলে বুড়ো সকলে। কাতা কম্বল চাদরের আবরণে সকলেই চেষ্টা করে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে। অনেকে কর কুটুর নাড়ার কুন্ডলী জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করে। গ্রামীণ জীবনে শীতের সকালে এক চিরপরিচিত দৃশ্য। খেজুরের রস শীতের সকালের এক সুমিষঠ পানীয়। শীতের সকালে নগরজীবনে ঢাকা পড়ে কুয়াশার চাদরে।
বাংলাদেশের জনজীবনে শীতের সকাল কষ্টকর হলেও এর মনোরম প্রভাবটুকু সবার কাছে উপভোগ্য।
You wrote very well