২০২২ সালে সবধরনের স্কুল-মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষার দু'টি ট্রেড বাধ্যতামূলক শিক্ষামন্ত্রী

11 30
Avatar for Ashiky85
4 years ago

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এমপি বলেছেন, ইচ্ছা থাকা সত্ব্বেও করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বাধ্যতামূলক কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করা সম্ভব হয়নি। আমাদের লক্ষ্য ছিল স্কুল ও মাদ্রাসায় উভয়ধরনের প্রতিষ্ঠানে নিম্নমাধ্যমিকের প্রত্যেক শ্রেণিতে অন্তত দু'টি করে ট্রেড চালু করা হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা হাতেকলমে শিক্ষা নিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। তবে ২০২২ সালে এটি সবধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রবর্তন করা হবে। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে।

আজ সোমবার বেলা ২ টায় ‘কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা: এসডিজি অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক ভার্সুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত এ সেমিনারটি জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খাঁন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোরাদ হোসেন মোল্লা। ইরাব সভাপতি মুসতাক আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাব্বির নেওয়াজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল আলম সুমন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইরাবের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশ (টেকবিডি) সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলাম, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা জয়নুল আবেদিন জিহাদী, ইরাব সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম জসিম, প্রচার সম্পাদক রশিদ আল রুহানী, আইসিটি সম্পাদক মুরাদ হোসাইন ও সদস্য তানিয়া আক্তার।

সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার হার ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে। আমরা প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছি। এগুলো হবে অত্যন্ত আধুনিক মানের। নিয়োগ করা হবে দক্ষ শিক্ষক। এতে থাকবে আধুনিক বিভিন্ন ট্রেড। তিনি বলেন, জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাধারণ শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষাতেও আমরা কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করছি। ২০২১ সালে চালু করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু করোনার পরিস্থিতেতে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী না হলে আশা করছি ২০২২ সালে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করতে পারব। নবম-দশম শ্রেনিতেও কারিগরি শিক্ষার অন্তত দুটি ট্রেড বাধ্যতামূলক করবার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাভাবনা বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, জাতিরজনক বিজ্ঞান মনস্কতা, কর্মমূখী শিক্ষা, বাস্তবমূখী শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি গ্রহণের মানসিকতা ও অভিযোজনের ইচ্ছা থাকতে হবে। সেজন্য মনের দরজা জানালাটাকে খোলা রাখতে হবে। সময়ের সঙ্গে নিজেকে উপযোগী করে নেয়া এবং মনে রাখতে হবে কোন কাজই ছোট নয়।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কারিগরির প্রসারে প্রয়োজন মান উন্নয়ন। আমাদের দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সেই নিয়োগ দেবার বড় উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মানসম্মত ল্যাবরেটরি, তাতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইত্যাদি থাকতে হবে। এই শিক্ষায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ থাকা খুব জরুরি। এনিয়েও সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, শর্ট কোর্স নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমাদের এই শিক্ষাতে যেতেই হবে। কারণ আজকে একটা ডিগ্রি করে কাজে যাবো। এরপর আমার কিন্তু বারবার ডিগ্রি করতে আসার সুযোগ নেই। কাজেই ডিগ্রির কোর্সটাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ছোট মডিউল করতে হবে। যার যে মডিউল প্রয়োজন সেটাতে সে শর্ট কোর্সে শিক্ষার্জন করে ডিগ্রি নেবে।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইবতেদায়ী শিক্ষকদের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। তিনি এসব মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির সম্মতি দিয়েছেন। এটি নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের এমপিওভুক্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া এমপিওভুক্তকরণ এর ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো ঠিক করতে আমরা কাজ শুরু করেছি। এমপিও নীতিমালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবশ্যই ইবতেদায়ী মাদ্রাসার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এ খাতে অর্থ বরাদ্দ ছিল না। অর্থের জন্য আমরা লিখেছিলাম।মন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখন এমপিওভুক্তি করেছি তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে এখন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করলে অনুমোদন নিয়ে স্থাপন করতে হবে। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায়, যত্রতত্র যেকোনভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে ফেলেন। এরপর নানানভাবে চাপ প্রয়োগ করেন অনুমোদন ও স্বীকৃতির জন্য। গত কয়েকবছর ধরে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতিবালে শর্ত দেয়া হয় যে কেউ এমপিওভুক্তি চাইবে না। কিন্তু সকলেই এমপিও চায়। শেখ হাসিনার সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সত্যি। কিন্তু তারপরেও যদি প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে থাকে তবে সরকারের সমন্বয় করার সাধ্য কতোটুকু আছে সেটাও বুঝতে হবে।শিক্ষামন্ত্রী এসময় উল্লেখ করেন, কারিগরি শিক্ষাগ্রহণের পর কোন শিক্ষার্থী বেকার থাকছে না। তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বরং যারা অন্যান্য শিক্ষায় আছে তারা সনদধারী হয়েও কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আমাদের এদিকেও মনোযোগ দিতে হবে সকলকে চাকরী খুঁজলে হবে না। উদ্যোক্তা হতে হবে। অনেককেই নিজের কর্মসংস্থান নিজেকেই সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে হাতে-কলমে দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। আগামী দিনে এর বিকল্প কোন পথ নেই। কাজেই সেই মনোভাবটিও আমাদের গড়তে হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো.আমিনুল ইসলাম খান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা খুবই প্রয়োজন। ইতিমধ্যে কারিগরি শিক্ষায় বয়স উঠিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে সবাই শেখার সুযোগ পায়।এছাড়া মানসম্মত শিক্ষাটাও খুব দরকার। মানসম্পন্ন শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে। যদি শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ে, সামাজিক দায়বদ্ধতা বাড়ে এবং নৈতিকভাবে আলোকিত হয় তবে সে ধরনের শিক্ষাকেই আমরা মানসম্মত শিক্ষা বলতে পারি। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় মূল বিষয় হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তির ও জাতীয় উন্নয়ন। তাই কর্মমুখী শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সকলকে কাজ করতে হবে।বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কাশেম বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদী সংক্ষিপ্ত কোর্সটি একজন অষ্টম শ্রেণী থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত যেকোনো শিক্ষার্থীরাই এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান করতে পারে। অর্থাৎ এই কোর্সটা যদি খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করে কোন শিক্ষার্থীর চাকরি পেতে কোন অসুবিধা হবে না। তাই কারিগরি শিক্ষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা যদি সম্ভব হয় সেটা যে স্তরেই হোক না কেন তার কর্মসংস্থানের অভাব হয় না। তাই মানসম্পন্ন শিক্ষাটা খুব জরুরী।বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোরাদ হোসেন মোল্লা বলেন, "২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবছর ২৩-২৮ লক্ষ লোক শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী এই জনশক্তিকে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে তুলতে হবে। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ মাদরাসা শিক্ষার মানউন্নয়নে সকলের সমান সুযোগ, শিক্ষকদের জীবনমানের উন্নয়ন, বৃত্তি সম্প্রসারণ, জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ এবং মাদরাসায় বাণিজ্য বিভাগ চালু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে এই সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে শিক্ষা ও শিক্ষক সমাজ উপকৃত হচ্ছে। মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী বলেন, সরকার গত একযুগে মাদ্রাসা শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। এর অধীনে ৮০টিতে অনার্স ও ২৮টিতে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চলছে। এছাড়া অধিদফতর ও বিভাগও করা হয়েছে। এসবের মধ্যেও আরও কিছু দেবার আছে। বিশেষ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা খুব জরুরি।প্রকৌশলী আবদুল আজিজ বলেন, কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে সরকার নানানধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে উপযুক্ত জনবল তৈরি করতে হলে এই শিক্ষায় এখনও যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো দূর করতে হবে। বিশেষ করে চারবছরের ডিপ্লোমা ডিগ্রি শিক্ষার্থী হার বৃদ্ধিতে বড় বাধা। তবে এসব শিক্ষার্থীর জন্য যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক কোর্স দুইবছরের জন্য করা যায় তাহলে আবার কারিগরি শিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রী বেড়ে যাবে।

8
$ 0.00
Avatar for Ashiky85
4 years ago

Comments

Such a great initiate it is. Education with practice in real life is better than any kind of education. We all need to introduce this from very childhood. Now the authority is taking actually this process. Undoubtedly this will be helpful to our regular and Commerce student.

$ 0.00
4 years ago

It's good to know

$ 0.00
4 years ago

Thanks

$ 0.00
4 years ago

Awesome article dear Thanks 🥰

$ 0.00
4 years ago

Most welcome dear..

$ 0.00
4 years ago

Same too you

$ 0.00
4 years ago

খুবই গুরুপ্তপূর্ন আর্টিকেল😍😍😍

$ 0.00
4 years ago