ভূমিকা:
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বেকারত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা। কাজের অভাবে সামাজিক বিজ্ঞানের ভাষা বেকারত্ব। বেকারত্ব একটি দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। বেকারত্ব মানবজীবনের জন্য অভিশাপের পাশাপাশি জাতীয় জীবনের জন্য এক বিশাল বোঝা। বেকাররা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। বেকাররা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। এটি পরিবেশ ও আইন শৃঙ্খলা হ্রাস করে, সামাজিক মূল্যবোধকে ক্ষুন্ন করে।
আমার দেশে বেকারত্বের সমস্যা:
বাংলাদেশ মূলত কৃষিকাজ এবং স্বল্প পুঁজির উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এবং বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্যে বাস করে। শিল্পায়নের সুযোগ এখানে সীমিত।
তাই নিরক্ষরতা ও দারিদ্র্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর বড় কারণ হ'ল আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সামাজিক ব্যবস্থার সমন্বয়হীনতা। তার অর্থ আমাদের শিক্ষা মোটেই কর্মমুখী নয়। আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি তবে আমাদের দেশে সেই শিক্ষার প্রয়োগের কোনও কর্মক্ষেত্র নেই।
দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের শিক্ষিত যুবকরা তাদের বাবার পেশায় যেমন কৃষিকাজ, কৃষিকাজ, কুটির শিল্প ইত্যাদিতে ফিরে যেতে চায় না শিক্ষা পাওয়ার পরে। ফলস্বরূপ, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন আবিষ্কার, বহু মানুষের হস্তশিল্প করতে প্রযুক্তির প্রয়োগের কারণে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশ বর্তমানে একদিকে অশিক্ষিত বা অশিক্ষিত যুবক, অন্যদিকে শিক্ষিত কিন্তু অশিক্ষিত যুবকরা এই দুটি বিপরীত স্রোত বেকারত্ব সমস্যাটিকে আরও খারাপ করেছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কর্মক্ষম কিন্তু বেকার জনগোষ্ঠী সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
টষবিভিন্ন ধরণের বেকারত্ব:
সমাজবিজ্ঞানের ভাষায়, স্থায়ী বেকারত্ব, অস্থায়ী বেকারত্ব, সামরিক বেকারত্ব, ছদ্মবেশী বেকারত্ব ইত্যাদি, বিভিন্ন ধরণের বেকারত্বের কথা বলা হয়েছে।
মূলধন ও মূলধনের অভাবের কারণে আমাদের দেশে বড় আকারের শিল্প গড়ে উঠছে না। অল্প পুঁজি এবং বিভিন্ন সঙ্গে ব্যবসা সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে আমাদের দেশের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলস্বরূপ, কর্মসংস্থানের তীব্র অভাবের কারণে, দেশের যুবকদের একটি বড় অংশ কাঁধে কাটাচ্ছে তাদের দিনগুলি
নির্দিষ্ট কাজের প্রয়োজনে অতিরিক্ত শ্রম বিনিয়োগে নিযুক্ত বেকারত্ব। এই বেকারত্ব আমাদের দেশে কৃষিক্ষেত্রে উপস্থিত রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বছরে মাত্র কয়েক মাস কাজ থাকে, বাকি সময় কোনও কাজ হয় না। এ জাতীয় বেকারত্বকে সামরিক বেকারত্ব বলা হয়।
মধ্যবিত্ত পরিবারে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে বেকারত্ব বেশি। তারা সরাসরি উত্পাদন প্রক্রিয়ায় জড়িত নয়, পরোক্ষভাবে তাদের অবদান রয়েছে। এই ধরনের বেকারত্বকে ছদ্মবেশী বেকারত্ব বলা হয়।
আমাদের দেশে একটি মৌসুমী চাকরি বা একজনের চাহিদা রয়েছে পরিবর্তনের সাথে সাথে, সেই বিশেষ ধরণের কাজের সুযোগ নেই। এ জাতীয় বেকারত্ব মৌসুমী বেকারত্বের ধারায় চলে আসে।
যে কোন ধরণের বেকারত্ব কখনই কাঙ্ক্ষিত হয় না। বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। উচ্চ শিক্ষিত যুবকরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না, বা তাদের পছন্দের পেশায়ও চাকরি পাচ্ছেন না।
চাকরির মাধ্যমে বেকারত্বের সমস্যা সমাধানের খুব কম সুযোগ রয়েছে তা কাউকে বোঝানোর দরকার নেই। এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যোগ্য এবং দক্ষ লোকের অভাব নেই। সকলেই একটি মসৃণ এবং আকর্ষণীয় কাজ চায়। তবে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান নেই। তাই দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
বেকারত্বের সমস্যা সমাধান করুন:
বেকারত্ব আমাদের জন্য একটি জাতীয় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের জাতীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এর জন্য প্রথম প্রয়োজনটি সামাজিক কাঠামোর সাথে শিক্ষাব্যবস্থার একীকরণ জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা এবং যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা এবং কর্মজীবনমুখী শিক্ষার প্রচলন করা প্রয়োজন।
দেশে শিল্প কারখানা স্থাপন করে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা দরকার। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষার উপর আরও জোর দেওয়া উচিত। যুবকদের নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করে প্রযুক্তি শিক্ষায় বিনিয়োগ করা উচিত।
অন্য কথায়, উত্পাদনশীল শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের দেশে বেকারত্ব নিরসনে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। অন্যদিকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার পথ উন্মুক্ত করা দরকার। দক্ষ, দক্ষ নয় এমন যুবক-যুবতীদের সেখানে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলার জন্য নিয়োগ করতে হবে।
আজ দেশে শিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তোলা সবচেয়ে প্রয়োজন। চাকরীর মানসিকতা এড়িয়ে তরুণদের স্ব-কর্মসংস্থানের দিকে পরিচালিত করা দরকার। সরকার ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং শব্দ-মুখী লোন চালু করেছে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর জেলা এবং আপডেটিস্ট্রিক পর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম চালু করেছে। যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ এবং লোন সুবিধাদি ব্যবহার করে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর শিক্ষিত যুবক এবং স্বনির্ভর ব্যক্তি রয়েছেন।
দেশের যুবসমাজকে কৃষিকাজ, মৎস্য চাষ, পশুপালন, কৃষি খামার, দুগ্ধ খামার ইত্যাদিতে জড়িত হতে উত্সাহিত করতে হবে। এর জন্য আমাদের মিডিয়াতে প্রচার, প্রদর্শনী, পোস্টার এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।
অবশেষে আমরা বলতে পারি:
আমাদের দেশে বেকারত্বের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। শিল্পায়নের অন্যতম একটি উপায়। আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নের পাশাপাশি দ্রুত শিল্পায়নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। এর জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন।
অধিকন্তু, শিক্ষিত যুবকদের কেবল কাজের সোনার চাবি অনুসরণ করার মানসিকতা এড়িয়ে স্ব-কর্মসংস্থান সম্পর্কে চিন্তা করা প্রয়োজন। যুব সমাজকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে এবং জাতির কাঁধ থেকে বেকারত্বের বিশাল বোঝা দূর করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে এবং জনগণকে অবশ্যই কনসার্ট করতে হবে
English language 👇
https://read.cash/@Akash./unemployment-is-a-problem-in-my-country-36e312a4