#তুমি আছো তাই❤

0 2
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

#তুমি আছো তাই❤

#part :02

চোখদুটো হালকা খুললো নিশি।।ওর দিকে এগিয়ে আসা স্টিকটা কেউ একজন চেপে ধরে আছে শক্ত করে।।নিশি একটা ঢোক গিলে পাশে তাকালো,,,,সাদা শার্ট,,কালো জিন্স,,,পরিহিত একটা ছেলে একহাত পকেটে রেখে অন্যহাতে স্টিকটা চেপে ধরে আছে অনেকটা স্টাইল নিয়ে।।নিশি তাকাতেই ছেলেটাও আড়চোখে তাকালো কিন্তু প্রায় সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিলো।।কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকটা ছেলে এসে দাঁড়ালো ছেলেটির পাশে,,,আর চোখের ইশারা পেয়েই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে বেদড়াম পেটাতে লাগলো।।।কিন্তু সেদিকে নিশির কোনো খেয়ালই নেই,,,সে তো অবাক চোখে ছেলেটিকে দেখছে।।।ছেলেরাও যে এতো সুন্দর হতে পারে নিশির তা জানা ছিলো না।।সৃষ্টিকর্তা যেনো পৃথিবীর সব ইনোসেন্স এই ছেলেটির গায়ে ঢেলে দিয়েছেন।।গায়ের রং টাও কি ভয়ংকর সুন্দর।।ছেলেটির গায়ের রংটা নিশির গায়ের রঙের চেয়েও উজ্জল দেখাচ্ছে।।।বিষয়টি নিশির কাছে মোটেও ভালো লাগছে না।।ছেলেদের এতো সৌন্দর্য প্রকৃতিও মেনে নিতে নারাজ।।সৌন্দর্যে শুধুমাত্র মেয়েদের আদিপত্য,, সেখানে ছেলেদের উপস্থিতি গ্রহনযোগ্য নয় ।। নিশির ঘোর কাটলো নিরার চিৎকারে,,,,লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিরার দিকে তাকালো,,,

নিরাঃ ভাইয়া????(বলেই দৌড়ে গেলো ছেলেটির দিকে)

নিশি কিছুই বুঝতে পারছে না,,,ছেলেটা নিরার ভাইয়া??কই ওদের বাসায় তো কখনো দেখে নি,,,,ভ্রু কুচঁকে ওদের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করছে নিশু।।

ভাইয়া??তোর হাত থেকে তো ব্লিডিং হচ্ছে,,,নিশ্চয় মারামারি করছিলি??দাড়া আমি বাসায় গিয়েই মাকে বলবো যে তুই ভার্সিটি গিয়ে গোন্ডামী করিস।।

এহহহহ,,,আসছে,,,মাকে বলবো(মুখ ভেঙচিয়ে) আমি না থাকলে তো মাথাটাই দুভাগ হয়ে যেতো,,আবার বড় বড় কথা।।আর গাধার মতো এখানে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন তাও আবার এতো গন্ডগোলের মাঝে ??(মাথায় চাটি মেরে)

হুহ ভাইয়া,,,বোনকে রক্ষা করা তো ভাইয়ের রেসপন্সিবিলিটি।।। আর তুই তো তোর রেসপন্সিবিলিটি পালন করার সুযোগই পাস না উল্টো আমি তোকে মার বকা থেকে বাঁচাই,,তাই ভাবলাম তোকে একটা সুযোগ দেওয়া যেতেই পারে,,,কি বলিস নিশু??(নিশির দিকে তাকিয়ে)

এএ,,হ,,হ্যা।।

অনেক হয়েছে পাকামো,, এখন আল্লাহর ওয়াস্তে অফ যা,,,,, আর এইযে আপনি?(নিশিকে উদ্দেশ্য করে)ওর না হয় মাথায় ছিট আছে,,কিন্তু আপনি কি দেখতে এভাবে দাড়িয়ে ছিলেন?? যদি কিছু হয়ে যেতে??

না,,মা,,মানে,,আসলে,,,,,(মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে নিরা বলে উঠলো)

ভাইয়া???তুই আমাকে তাড় ছিঁড়া বলছিস??(মুখ গোমরা করে)

কই বললাম??তুই তো আমার বলার আগেই স্বীকার করে নিচ্ছিস।।।(দাঁত কেলিয়ে)।।

নিশি সেদিন খিলখিল করে হেসে উঠেছিলো।।হাসির তোড়ে ভাসিয়ে নিয়েছিলো নিলয়ের মনটাকেও।।নিশিকে বুঝতে না দিলেও সেদিনই নিলয় খুন হয়েছিলো সেই নীল পরিটাতে।।।

বর্তমানে,,,,,

তিন ঘন্টা হতে চললো, নিশির ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে নিলয়।। উদ্দেশ্য নিশিকে এক নজর দেখা আর কালকের জন্য ক্ষমা চাওয়া।।নিলয় জানে নিশি তাকে দেখলে রেগে যাবে,,,,কিন্তু তাতে তার কোনো যায় আসছে না,,রাগুক,, মারুক,, যা ইচ্ছা করুক,,তবুও নিলয় ধমে যাওয়ার পাত্র নয়।।তার যে নিশিকে চায়ই চায়।।কাল রাতে এক মিনিটের জন্যও চোখের পাতা বুজে নি সে।।শুধু সকাল হওয়ার অপেক্ষায় ছটফট করেছে।।।নিশির ঘৃনা নিয়ে বেঁচে থাকা নিলয়ের পক্ষে সম্ভব নয়।।।তাইতো সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েছে ভার্সিটির উদ্দ্যেশে।।কিছুক্ষণ আগেই নিশি ভার্সিটিতে ঢুকেছে,,,নিলয়ের উপস্থিতি বুঝতে পেড়েও একবারও তাকায়নি তার দিকে,,,নিশি থেকে পাওয়া প্রথম অবহেলা মেনে নিতে পারছে না নিলয়,,ইচ্ছে করছে সবকিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলতে।।আরো প্রায় চার ঘন্টা পর নিশি ক্লাস শেষ করে ভার্সিটি গেটে এসে পৌছাঁলো,,,পার্কিং এ চোখ যেতেই থমকে গেলো নিশি।।নিলয় এখনো দাঁড়িয়ে আছে,,এলোমেলো চুল,, পরনে রাতের টি-শার্ট আর টাউজার,, হাতে জ্বলন্ত সিগারেট,,,লাল হয়ে থাকা চোখ দুটো,,,অনেক কিছুই সাক্ষ্য দিচ্ছে,, প্রকাশ করছে অনেক আকুতি কিন্তু নিশি অপারগ।।নিলয়কে এই অবস্থায় দেখে অবাক হলেও নিজের রাগ ভুলেনি সে।।।তাইতো অবলিলায় নিলয়কে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়,,,,

নিশু,,,,,,

নিলয়ের এই গভীর মায়ায় মাখা ডাকে থমকে দাঁড়ায় নিশি।।এই ডাককে উপেক্ষা করার ক্ষমতা যে তার নেই।।।কিন্তু না,,আজকে আর দাঁড়াবে না সে,,,কিছুতেই না।।নিশি আবার পা বাড়াতেই হাত চেপে ধরলো কেউ।।নিশি ঝটকা দিয়ে পেছনে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো,,,,

ছাড়ুন আমায়,,,হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মি???

নিশু,,নিশু প্লিজ শান্ত হও,,,

আমি কি বলছি আপনি শুনতে পাচ্ছেন না??আই ছে লিভ মি,,,(চেঁচিয়ে)

ও,,,ওকে,,,ওকে।।এই দেখো ছেড়ে দিয়েছি,, প্লিজ এবার তো শান্ত হও,,আমার কথাটা একটু শুনো,,প্লিজজ(করুন চোখে)

কি শুনবো??কি শুনাতে চান আপনি??আপনি কি বুঝতে পারছেন না,,,আপনার সাথে কথা বলতে আমার রুচিবোধে বাধে,,,

নিশু,,,(অবাক চোখে)

কি? নিশু কি বলুন??সত্যিটা শুনতে কষ্ট হচ্ছে বুঝি??বাট আই কান্ট হেল্প,, ইউ হেভ টু একসেপ্ট ইট,,,

বলেই হাঁটা দিলো সামনের দিকে,,, পিছন থেকে কিছু ভাঙার আওয়াজ পেয়েও ফিরে তাকায় নি নিশি,,,,নিজেকে কোনোভাবেই দুর্বল করতে চায় না সে ,,,নিলয়কে বলা প্রতিটি কথা নিজের বুকেও আঘাত করেছে তীক্ষ্ণভাবে কিন্তু তবু নিশি নিলয়কে ক্ষমা করবে না,,কিছুতেই না।।।

রক্ত মাখা হাত নিয়ে টলমলে চোখে নিশির যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে নিলয়।।বুকে ভয়,, তার একটা ভুলে নিশিকে হারিয়ে ফেলতে হবে না তো???না কিছুতেই না,,,এত সহজে তোমাকে আমি হারাতে দিবো না নিশু ,,তুমি চাইলেও না।।।তোমাকে যে বড্ড প্রয়োজন,,,তুমি ঠিকই বলেছো,,একসেপ্ট তো করতে হবেই,,,কিন্তু আমাকে না তোমাকে,,,ইউ হেভ টু একসেপ্ট মাই এপোলজি এন্ড লাভ,,,,

আআআআআআআআআআআআআ,,,,

এই চুপপ চুপপ(নিশির মুখ চেপে ধরে)চেঁচাচ্ছো কেন??গণদোলাই খাওয়াবা নাকি??আর কথা না বলে উমম উমম করছো কেন??(নিশি চোখ দিয়ে ইশারা করায় মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিলো নিলয়)ওহ্,,,সরি সরি,,,আর ইউ অলরাইট??

(জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে,,,চিৎকার করে)আ,,,আপনি আপনি এতো রাতে আমার বেডরুমে আসার সাহস করলেন কিভাবে??

সাহসের কি আছে নিশু??আর্মি ট্রেনিং নেওয়া আছে আমার,,,তোমার ব্যালকনি দিয়ে রুমে ওঠে আসা,,, আমার জন্য রীতিমতো দুধ ভাত।।।(বাঁকা হাসি দিয়ে)

কিহহ্(অবাক হয়ে)আ,,,আপনি ব্যালকনি দিয়ে রুমে ঢুকেছেন??

তা নয়তো কি??তোমার কি মনে হয়?? এতো রাতে আমি তোমার বাবা থেকে পারমিশন নিতে যাবো আর তোমার হিটলার বাপ নাচতে নাচতে রাজি হয়ে যাবেন???

এই,,একদম বাবাকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না,,,(রাগী চোখে)আমি এক্ষুনি বাবাকে ডাকছি,,,তারপর বুঝবেন কতো ধানে কতো চাল,,,হুহ,,,

আগে ড্রেস তো পড়ে নাও।।(শয়তানি হাসি দিয়ে)

মানে??(ভ্রু কুচঁকে)

নিলয়ের চোখের ইশারা পেয়ে নিশি নিজের দিকে তাকালো।।তাকিয়েই চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম,,,ওর গায়ে যে শুধু টাওয়াল জড়ানো তা নিশির মনেই ছিলো না।।।ওয়াশরুম থেকে ড্রেস নিতে বের হতেই নিলয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে চেঁচিয়ে উঠে নিশি,,,,ভয় আর রাগের চোটে নিশির মাথাতেই ছিলো না যে,, ও উইথআউট ক্লথ দাড়িয়ে আছে।।লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে তার,,,বেডশিটটা কোনো রকম গায়ে জড়িয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,,

আপনি আসলেই একটা লুচু,,,একটা মেয়ের রুমে এভাবে চলে আসতে লজ্জা করে না??আপনার মধ্যে মেনারস্ এর "এম" পর্যন্ত নাই।।মানুষের প্রাইভেসি বলে যে কিছু থাকতে পারে,,এটা আপনার ভাবা উচিত ছিলো।।।আপনি ইচ্ছা করে এভাবে আসছেন যেনো আমাকে এই অবস্থায় দেখতে পারেন,,,,ছিহ,,,শেম অন ইউ মিষ্টার চৌধুরী,,,(প্রচন্ড রেগে).

আরে আজিব তো,,ইললোজিকেল কথা কেন বলছো নিশু,,,আমি কি জানতাম নাকি?? যে তুমি রুমে টাওয়াল পড়ে ঘুরে বেড়াও(বাঁকা হাসি দিয়ে)আর আমার কোনো ইনটেনশন ছিলো না তোমাকে এভাবে দেখার,,,

হুহ,,,আপনার কি ইনটেনশন সেটা আমি সেদিনই বুঝে গেছি,,,যেদিন আপনি..........ছিহহ্,,,

প্লিজজ নিশু,,,আমি তো সরি বলেছি,,,আর এতো কষ্ট করে এখানে আসার কারনও একটাই,,, জাস্ট তোমাকে সরি বলা,,প্লিজ মাফ করে দাও প্লিজজ(করুন কন্ঠে)

হাহা,,হাসালেন আমায়,,,সো কল্ড নিলয় চৌধুরী,,, আমার মতো সাধারণ মেয়েকে সরি বলতে,, বাড়ি বয়ে এসেছে তাও আবার এতো রাতে??বাহ,,দেট ওয়াজ আ গুড জোক,,,,এসব তো আপনাদের মতো ভিআইপিদের জন্য কমন রাইট??কে জানে কতো মেয়ে,,,,,(নিশিকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো নিলয়)

জাস্ট শাট আপ নিশু,,,সাট আপ,, ডেম ইট।।।তুমি আমার সম্পর্কে এমন ভাবলে কিভাবে??হাউ কোড ইউ??(দেয়ালের সাথে চেপে ধরে)একটা না হয় ভুল করেই ফেলেছি,,তারজন্য এতো শাস্তি??সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত তোমাকে সরি বলেই যাচ্ছি,,,তো বলেই যাচ্ছি,,বাট তোমার কোনো পাত্তায় নাই।।।আরে এতোবার ক্ষমা চাইলে তো আল্লাহও ক্ষমা করে দিবে,,,তাহলে তুমি কেনো পারছো না নিশু??কেনো???

নিশি নিজেও বুঝতে পারছে না,,,কেনো পারছে না সে নিলয় কে ক্ষমা করতে কেনো??একটু থেমে আবার বলতে শুরু করলো নিলয়,,,

বলো নিশু,,,প্লিজ বলো,,, কি করলে তুমি আমাকে ক্ষমা করবে,,,,প্লিজ বলো(করুন কন্ঠে)কিছুতো বলো নিশু,,প্লিজজজ।।

নিশি কি বলবে বুঝতে পারছে না,,নিশিকে চুপপ থাকতে দেখে নিলয় নিশিকে আস্তে করে ছেড়ে দিয়ে সরে গেলো।।পাশের দেয়ালে ক্রমাগত ঘুষি দিতে লাগলো,,,সকালের কেটে যাওয়া জায়গা থেকে রক্ত পড়ছে।।।নিশি এসবের জন্য প্রস্তুত ছিলো না,,,ভয়ে ওর শরীর কাঁপছে।।নড়ার ন্যূনতম শক্তি তার নেই,,,গলা থেকে কথা বের হচ্ছে না,,তবু কাঁপাকাঁপা স্বরে বলে উঠলো,,,

স,,,,স্টপ ন,,নিলয়।।।জাস্ট স্টপ

নিশির মুখে "নিলয়" নামটি শুনেই থেমকে যায় নিলয়।।।নিশি প্রথম দিকে নিলয়কে ভাইয়া বলে ডাকতো,,,নিলয় নিষেধ করার পর থেকে মিষ্টার চৌধুরী বলেই ডেকে এসেছে।।।আজ প্রথম নিশির মুখে "নিলয়" নামটি শুনে প্রচুর অবাক হয়েছে নিলয়,,তার চেয়েও বেশি খুশি হয়েছে।।।নিশির চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে অনবরত,,, আর নিলয়ের হাত থেকে রক্ত।।ইতোমধ্যে নিশির দরজায় ধাক্কা শুরু হয়ে গেছে,,,দরজার ওপাশে চিন্তিত বাবা অনবরত দরজায় কড়া নেড়ে যাচ্ছেন।।এবার নিশি নড়ে উঠলো,,,তাড়াহুড়ো করে ফাস্ট এইড বক্স এনে এগিয়ে দিলো নিলয়ের দিকে,,,কিন্তু নিলয়ের সেদিকে খেয়াল নেই,,একদৃষ্টিতে নিশিকে দেখছে সে।।কান্না করলে সব মেয়েদেরই কি এত্তো সুন্দর লাগে??নাকি শুধু ওর নিশিকেই এতোটা মায়াবি লাগে।।।এই মেয়েটা নিলয়কে প্রতিটা সেকেন্ডে পাগল করার জন্য অস্তির থাকে যেনো,,,নাক আর গাল লাল হয়ে একদম স্টোবেরি আইসক্রিমের মতো লাগছে নিশিকে,,,,

কি হলো মিস্টার চৌধুরী??নিন ব্যান্ডেজটা করে নিন,,,প্রচুর রক্ত ঝরছে(কাঁদো কাঁদো গলায়)

বলো ক্ষমা করেছো,,,

পাগলামো বাদ দিয়ে ব্যান্ডেজটা করে নিন,, প্লিজ

ওকে তাহলে ঝরতে দাও,,,যতোক্ষণ তুমি আমায় ক্ষমা না করছো,,ততক্ষণ এই রক্ত ঝরবে,,,,আই কান্ড হেল্প(বলেই বিছানায় বসে পড়লো)

কি করছেন কি??দেখুন বাবা ডাকছে,,আপনাকে এভাবে এখানে দেখলে হার্ট এ্যাটাক করবে,,প্লিজ ব্যান্ডেজটা করে নিন আর যান এখান থেকে,,,প্লিজজজ

ওকে,,,তাহলে তুমি বলো আমাকে ক্ষমা করেছো,,তাহলেই আমি চলে যাবো।।নয়তো এক পা ও নড়ছি না।।

এদিকে দরজায় আঘাতের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছে,,নিশি কি করবে বুঝতে পারছে না।।করুন দৃষ্টিতে নিলয়ের দিকে তাকালো কিন্তু নিলয় পাত্তায় দিলো না,,,তার এক কথা ক্ষমা না করলে সে যাবে না।।।অবশেষে নিশিকে নিলয়ের জেদের সামনে হার মানতে হলো,,সে ক্ষমা করেছে নিলয়কে,,, নিলয়ও আর দেরি করে নি উঠে চলে গেছে,,,নিশি অনেক বলেছিলো হাতের ব্যান্ডেজটা করে নিতে কিন্তু নিলয় শুনে নি।।।।

বাবাকে যা তা বুঝিয়ে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে নিশি,,,ব্যালকনির দেয়ালে রক্তের ছাপ দেখে বুকের ভেতর মুচড় দিয়ে উঠলো নিশির।।নিলয়ের জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে,,ব্যান্ডেজটা করেছে কি না কে জানে??নিলয়ের হাই পার্সোনালিটিতেই নিশি পাগল হয়েছে,,,নিলয়ের প্রতিটি কথা নিশিকে চুম্বকের মতে আকর্ষন করে।।।আচ্ছা,,,নিশি যে নিলয়কে এতো ফিল করে,,নিলয়ও কি নিশিকে ফিল করে??হয়তো করে,,নয়তো এভাবে এতো রাতে কেনো তারসাথে ছুটে আসবে??আচ্ছা এমনও তো হতে পারে যে নিলয় গিল্টি ফিল করছিলো তাই ছুটে এসেছে।।নাহ,,আর ভাবতে পারছে না নিশি,,,যদিও নিলয় এতোদিনে এমন কোনো বিহেভ করেনি যাতে করে নিশি পজিটিব কিছু ভাবতে পারে,,আবার নেগেটিভ কিছুও তো বোঝায় নি,,,,আমার কি উচিত নিলয়ের সাথে এসব নিয়ে কথা বলা??যদি উনি মাইন্ড করে??করলে করলো কিন্তু কাল আমি উনাকে বলবোই,,,,

এদিকে নিলয় বাসায় এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে।।।অনেকদিন পর শান্তিতে ঘুমাবে সে,,আজ তার নিশু তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে,,,,উফফফ ভাবতেই আনন্দ লাগছে।।।এপোলজি একসেপ্ট করছো এবার লাভ টাকে ও যে একসেপ্ট করতে হবে মিস নিশু,,,, বলেই মুচকি হাসি দিলো।।নিলয়ের মা কিছুক্ষণ আগে চোখের পানি,,নাকের পানি এক করে,,, হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে গেছেন।।পুরো সময়টাতে নিলয় শুধু মুচকি হেসে গেসে,,মা কাঁদতে কাঁদতে একটা ধমকেও দিয়েছেন,,ব্যাথা পাওয়ার পরও এমন পাগলের মতো হাসছে কেন??তারউত্তরেও নিলয় মাকে একটা মুচকি হাসি উপহার দিয়েছে,,,,

নিরা আজ বাড়ি এসেছে,,,তাই নিশিকেও আসতে হয়েছে তার মান ভাঙাতে।।কিন্তু নিরা কোনো কথা শুনতে নারাজ,,,বিদায়ে নিশিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করবে আর সেই ইমোশন ক্যামেরায় ক্যাপচার করা হবে,,এমনই প্লেন ছিলো নিরার কিন্তু নিশির জন্য তার পুরো প্লেন ভেস্তে গেছে।।।তাই সে নিশির উপর ভিষন ক্ষেপে আছে।।।নিশিও হার মানার পাত্রী নয়,,চেষ্টা করেই চলেছে,,হঠাৎ একটা মেয়ে এসে নিরাকে জড়িয়ে ধরলো,,,নিরা ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে উঠে,, নিশিও অবাক হলো,,মানুষটাকে চিনতে পেরেই নিরা দেই চেঁচিয়ে উঠলো,

বউমনি?????

কি রে বিয়ে করে বউ মনিকে ভুলে গেছিস?(ছেড়ে দিয়ে মুখ গোমড়া করে)

কি যে বলো না?তুমিই তো দেশের বাইরে ছিলে,,,আমার বিয়েতেও এলে না,,(মুখ কালো করে)

এই তো চলে এসেছি,,আর যাচ্ছি না

সত্যিইই(এক্সাইটেড হয়ে)এনিওয়ে বউমনি ইউ আর লোকিং হট,,,, ভাইয়া তো তোমায় দেখেই ফিদা হয়ে যাবে,,,

হয়ছে দুষ্টামি না করে বল নিলয় কই??

নিশি আর দাড়িয়ে থাকতে পারলো না।।ওদের কথা শুনে আর কিছু বুঝোক আর না বুঝোক,,, নিশি এটা বুঝে গিয়েছে যে নিলয় এনগেজড ,,,,,, তাইতো,,নিরা মেয়েটাকে বউ মনি বলে ডাকছে,,,

চলবে......

1
$ 0.00
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

Comments