রির্টান অভ শী

1 20
Avatar for soyed
Written by
4 years ago

1st part

কিরে মিরা তুই হাতে লিপষ্টিক দিতেছোস কেন?

মিরা..দোস্ত,দোস্ত ব্রেকআপের ফিল নিতেছি।আমারতো ব্লেড দিয়ে হাত কাটার সাহস নাই‌,তাই লিপষ্টিক দিতেছি।দেখ লিপষ্টিকের রং আর রক্তের রং তো একই তাই না।

তিশা..ব্রেকআপ মানে দোস্ত তোর আবার ব্রেকআপ হইছে।(কাদোকাদো গলায়)

মিরা..হুম।ওই সালা নাকি আমার থেকে ভালো একটা মেয়ে পাইছে।মেয়েটা নাকি আমিরিকায় থাকে।তাই আমার সাথে ব্রেকআপকরছে।

মিরা কাদো কাদো গলায় বলে..দোস্ত আমি কি দেখতে খারাপ বলতো।

তিশা..নাহ কখনো না তুই তো দেখতে আমার থেকেও ভালো,তুই নিজের থেকেও ভালো দেখতে।😛

তিশা..আচ্ছা দোস্ত এটা তোর কত নাম্বার ব্রেকআপ হইলো জানি।

মিরা..23 নাম্বার।

তিশা..হুম এখন তুই কাদা বন্ধ করে দিয়ে 24 না্ম্বার মিশনে নেমে পর।আমি তোর সাথে আছি।

অল দ্যা বেষ্ট দোস্ত।

(আসুন পরিচিত হই,,তিশা আর মিরা।দুজন দুজনের বেষ্ট ফ্রেন্ড।গল্পের নায়িকা কিন্তু তিশা)

রোজ সকালের মতো আজও তিশা বের হয় তার ক্রাশকে একপলক দেখার জন্য।

তিশা..সালা আবুল আমি তিনমাস ধরে ওর পিছনে ঘুরি আর ওই সালা একবারও আমার দিকে তাকায় না।ওই সালার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে আমার 10000 টাকাই শেষ হয়ে গেছে।(মনে মনে)

কিছুক্ষন হাটার পরে তিশা তার ক্রাশের দেখা পায়।

তিশা..আজ পর্যন্ত সালার নামও জানতে পারলাম না।না আজ তাকে ধরবোই।আজ ছাড়বো না।

কিছুক্ষন ছেলেটার পিছনে হাটার পর তিশা দেখে

প্রতিদিনের মতো আজও গাছের নিচে গিয়ে বসে।

তিশা আর দেরি না করে দৌড়ে গিয়ে তার পাশে বসে।তিশা পাশে বসতেই প্রতিদিনের ন্যায় ছেলেটি উঠে চলে যেতে ধরে।কিন্তু তিশা টেনে

ধরে বসিয়ে দেয়।

তিশা..এইযে মি.চশমাওয়ালা পাট দেখান খুব।প্রতিদিন যখন আমি এসে বসি তখন আপনি উঠে চলে যান।আমি এতদিন থেকে আপনার পিছনে ঘুরি তবুও একটি বারও আমার দিকে তাকান না।কি ব্যাপার বলেন তো?

ছেলেটি তিশার এতগুলো কথার জবাবে শুধু মুচকি হাসি দিয়ে উঠে চলে যায়।

তিশাও নাছোড়বান্দা‌ সেও ছেলেটির পিছন পিছন

যায়।

তারা হাটতে হাটতে একটা পার্কে চলে আসে।পার্কে গিয়ে ছেলেটি একটা বেঞ্চে বসে।

তিশাও গিয়ে ছেলেটির পাশে বসে।

তিশা..এইযে মি.এদিকে তাকান,আরে তাকান না।

তিশার কথা ছেলেটি একবার আড়চোখে তিশার দিকে তাকায়।

তিশা..আপনার নাম কি?

ছেলেটি একটা মুচকি হাসি দেয়।

তিশা..আজবতো আমি আপনাকে আপনার নাম

জিজ্ঞেস করছি আর আপনি পাগলের মতো

হেসেই চলেছেন।আচ্ছা আপনি কি মৃগী রুগি নাকি?

ছেলেটি..আচ্চা আপনি আমার পিছনে কেন ঘুরেন?

ছেলেটির এমন কথায় তিশা হতবাক হয়ে যায়।

তিশা..আসলেই তো আমি কেন তার পিছনে ঘুরি,আরে সে তো আমার ক্রাশ।ওফ ভয়েসটা কি মিষ্টি।(মনে মনে)

তিশা..আচ্ছা আপনার‌ নাম কিন্তু এখনো বলেননি(কথা ঘুরিয়ে)

ছেলেটি..নাম শুনে কি করবেন?

তিশা..আজব জনগণতো আপনি নাম শুনে মানুষ কি করে।

ছেলেটি..কি করে?

তিশা..কি করে মানে ঐ নাম ধরে তাকে ডাকে।আচ্ছা আপনি যেহেতু নাম বলতে চাচ্ছেন না তাহলে আমি আপনার একটা নাম রাখি।

ছেলেটি..থাক লাগবে না।আমার নাম শান্ত।

ডা.সীমান্ত কবির শান্ত।

তিশা..আপনি ডক্টর!!দেখে তো মনে হয় নিজেই রুগি।সারাক্ষন চুপ করে বসে থাকেন।আচ্ছা আপনার রুগিরা আপনাকে নিশ্চয় পাগল ডাক্তার

বলে ডাকে।

শান্ত মুচকি হাসে কিন্তু কিছু বলে না।

তিশা..কথা বলেন না কেন?ব্যাপার কি?আচ্ছা আপনি কি একাকিত্বে ভুগছেন।

তাহলে আজই চলে আসুন আমাদের বাসায়।অল টাইম গল্প চলে।😜

শান্ত..আচ্ছা আপনি আমার পিছনে এভাবে পড়ে আছেন কেন?

তিশা..এমনি কেন কোন সমস্যা।

শান্ত..হুম বিরাট সমস্যা।

তিশা..যতই সমস্যা থাক আমি তবুও আপনার সাথে থাকবো।

শান্ত তিশাকে কিছু না বলে আবার হাটতে শুরু করে।

তিশা..আচ্ছা আপনি এভাবে চুপচাপ থাকেন কেন?আপনাকে এভাবে একদম মানায় না।(কান্না করে)

শান্ত অবাক হয়ে তিশার দিকে তাকায়।

শান্ত..আরে আরে আপনি কাদছেন কেন?

তিশা..তো আপনি এভাবে চুপচাপ থাকেন কেন?

শান্ত..আজবতো আমি চুপচাপ থাকি সেটা আমার ব্যাপার আপনি কাদতেছেন কেন?

তিশা..আপনি কেন চুপচাপ থাকেন বলেন না।প্লিজ,প্লিজ,প্লিজ বলেন।

শান্ত তিশার দিকে তাকিয়ে একটা দির্ঘস্বাষ নেয়।তারপর বলে.

শান্ত..শুনবেন সময় হবে!

তিশা..আরে আমিতো সারা দিনই ফ্রি।আপনি বলেন।

শান্ত..চলেন কোথাও বসি।তারপর তারা গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে।

তিশা..এবার বলেন।

শান্ত..শুনেন---

শান্ত..যখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি।সবকিছু বুঝতে‌ শিখেছি।আমার বাবা ও মা দুজনেই বিসিএস ক্যাডার ডাক্তার।

আমরা তখন ময়মনসিংহে থাকি।

আব্বু-আম্মু দুজনেই একই মেডিকেলের

ডাক্তার।এজন্য সবাই ওখানে একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম।আমার কোনো ভাই-বোন নেই।আমি একাই।

আচ্ছা আপনার কোনো ভাইবোন আছে।হঠাৎ শান্ত তিশাকে এই প্রশ্ন করে।

তিশা..হুম।আমার দুই বোন,দুই ভাই আছে।

শান্ত..জানেন আপনি অনেক লাকি।আপনার ভাই-বোন সবাই আছে।কিন্তু আমার কেউ ছিল না। বাবা -মা থেকেও ছিল না থাকার মতো।তারা আমার কথা কখনো ভাবতো না । সবসময় টাকার পিছনে ছুটতো।

সেই সকাল 7 টার দিকে বের হতো আর

আসতো রাত 9-10 টার দিকে।সারাদিন আমি একাই বাসায় থাকতাম।তখন আমার একমাত্র বন্ধু ছিলো টিভিটা।এমনও দিন গেছে যে

আমার বাবা মায়ের সাথে আমার দেখা

হয়নাই।

জানেন আমি কখনো আমার বাবা-মায়ের সাথে এক টেবিলে বসে কোনো খাবার খেতে পারি নাই।

কখনো নিজের ইচ্ছে মতো চলতে পারি না।তাদের

ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা।

এইযে আমি আজ ডাক্তার সেটাও আমার ইচ্ছাতে হয়নি।কিন্তু তবুও আমি এপেশা‌ টাকে ভালোবাসি।

আমার ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস জানে আমি তাদের ঘৃনা করি।এইযে আমি যে এই টি-শার্ট,প্যান্ট পড়ে আছি সেটাও আমার পছন্দ মতো নয়।

আমার সারাজিবন কেটেছে একাকিত্বে।কখনো কাউকে পাশে পাইনি।সবসময় একাই সব কাজ করেছি।

এভাবে থাকতে থাকতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।

যখন মন খারাপ তখন ভাবি যে আমারতো দুনিয়াতে কেউ নেই।আমি একাই।কিন্তু মন তবুও মানতে চায় না।

জানেন একদিন আমি বাহিড়ে বের হয়ে ছিলাম।বাসায় এসে দেখি কিছু লোক আব্বু আর আম্মুকে ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলে রেখে গেছে।

সেদিনই আমি বুজেছিলাম যে বাবা-মা আমার জিবনে কি ছিলো।

এখন একটা বাড়িতে আমি একাই থাকি।মন খারাপ করি না।

এসব কথা বলতে বলতে শান্ত কেদে ফেলে।আবার বলে..

আমার না কারো কাছে কোনো আবদার নেই।কিন্তু মনের ভিতরে একটা রাগ আছে।যারা আমার বাবা-মাকে হত্যা করেছে তাদের প্রতিশোধ নেওয়া।

বাবা-মা মারা যাওয়ার পর আমি একেবারেই ভেঙ্গে পড়ি।পাশে শান্তনা দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না।তখন সারাদিন আজেবাজে জিনিস খেতাম।

জড়িয়ে পড়লাম এক অন্য জগতে।যে জগতে সবাই সুধু পছন্দ করে রক্তের রং।তুমি নিশ্চয়

মি.রাফিয়ানকে চেনো।

তিশা..হুম মি.রাফিয়ান।শুনেছি খুব ভয়ংকর মানুষ।কেউ নাকি আজ পর্যন্ত তাকে দেখেনি।

শান্ত..হুম তাকে কেউ দেখেনি।কিন্তু আমি দেখেছি।আমি তার আন্ডারে প্রায় 6মাস কাজ করেছি।

ছয় মাস কাজ করার পর আমি আবার পড়াশুনায় মন দেই।ভালো করে পড়াশুনা করে

আজ আমি ডাক্তার।কিন্তু বের হয়ে আসতে পারিনি‌ ঐ পথ থেকে।

তিশা..আমাকে সবসময় তোমার পাশে থাকার সুযোগ দেবে.

শান্ত.....................

চলবে----

#রির্টান অভ শী

#

3
$ 0.17
$ 0.17 from @TheRandomRewarder
Avatar for soyed
Written by
4 years ago

Comments

গল্প টা খুব সুন্দর হয়েছে part 2 কবে দিবেন।

$ 0.00
4 years ago