পরিচয়হীন ছেলে

0 7
Avatar for soyed
Written by
4 years ago

পরিচয়হীন ছেলে

পর্বঃ (৬)

তারিফঃ দোস এখানে কি হয়েছে রে, এতো ভিড় কেনো...?

আমিঃ আমিও তো জানিনা এখানে কি হয়েছে, এই বলে ভিড়ের সামনে যেতেই দেখি একটা ছেলে সবার কাছে সাহায্য চাচ্ছে আর কান্না করছে, কিন্তু এই ছেলেকে সবাই চিড়িয়াখানার প্রানীর মতো দেখছে কেউ কোনো কথা বলছে না।

তা দেখে আমার রাগ উঠে গেলো, সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকটা ছেলেকে সড়িয়ে ভিড়ের ভেতর ঢুকেই...

আমিঃ এইযে ভাই তোমার কি হয়েছে...?( ছেলেটাকে বললাম)

ছেলেটাঃ ভাই আমি একজন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে ( কান্না করতে করতে) তাই বলে কি আমার মনে ভালোবাসা আসতে পারে না। আমি নিলাকে ভালোবাসতাম, তাই প্রপোজ করায় মুন্না ভাই আমাকে অনেক মেরেছে। আর ভার্সিটি থেকে বের করে দিয়েছে। ভাই আমার বাবা অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছে। যদি আমাকে এই ভার্সিটি থেকে বের করে দেয় তাহলে আমি কোথাও যাবো,, এই বলে আবার কান্না করতে লাগলো....

আমিঃ আচ্ছা আচ্ছা আমি দেখছি, তুমি কান্না থামাও। আসো আমার সাথে আসো... ( ছেলেটার হাত ধরে উঠিয়ে)

ছেলেটা উঠে আমার সাথে আসতে লাগলো। উপস্থিত সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

তারপর আমি তারিফ আর ওয়াজেদ পিন্সিপাল স্যারের রুমে গেলাম ছেলেটাকে নিয়ে...

পিন্সিপাল স্যার আমাকে আর ওয়াজেদকে দেখেই সঙ্গে সঙ্গে দাড়িয়েই...

পিন্সিপাল স্যারঃ তোমরা এখানে, কিছু লাগবে...?

আমিঃ না স্যার আমাদের কিছু লাগবে না, কিন্তু স্যার এই ছেলেকে নাকি ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে...?

স্যারঃ না মানে, আসলে বাবা হয়েছে কি তুমি তো আর নাদিমকে চিনো না। নাদিমের ছোট ভাই মুন্না, তাই মুন্না যা বলে তাই করতে হয়। তা নাহলে তো বুঝতেই পারছো আমার কি হবে...

আমিঃ স্যার আমি সব বুঝতে পারছি, তাই বলছি এই ছেলের বহিষ্কার ফিরিয়ে নিন। আর আপনার কোনো ভয় নেই, ওই নাদিম বা মুন্না আপনার কোনো কিছুই করবে না...

স্যারঃ কিন্তু...

আমিঃ কোনো কিন্তু না স্যার, আপনি আমার উপরে ভরসা রাখতে পারেন...

স্যারঃ ঠিক আছে বাবা, তাই হবে...

স্যারের এইরকম কান্ড দেখে তারিফ হা হয়ে তাকিয়ে আছে। কারণ স্যার মুন্না বা নাদিমের কথা ছাড়া অন্য কারো কথা শুনে না। আর সেখানে আমাদের কথা শুনে সব মেনে নিলো,, তারপর ছেলেটি স্যারের কথা শুনেই আমার হাত ধরেই...

ছেলেটিঃ ভাই আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো...

আমিঃ আরে আরে ধন্যবাদের কি আছে, আমরা তো মানুষ। আর মানুষতো মানুষেরই পাশে থাকবে। এখানে ধন্যবাদ দেয়ার কিছু নেই ভাই। আর হ্যাঁ নিলা তো মনে হয় তোমাকে ভালোবাসে না। তাই বলছি ওর পেছন ঘুরা বাদ দাও,,এই কথা বলে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম... ।

একটু পরেই ক্লাস শুরু হবে, তাই তারাতারি ক্লাসের দিকে যাচ্ছি, সাথে তারিফ আর ওয়াজেদও ছিলো। তখনই হঠাৎ টাইলসে পা পিছলে সোজা ফ্লোরে পড়ে গেলাম, কিন্তু আমি একা না আমার সাথে ধাক্কা খেয়ে কে যেনো আমার উপরেই পড়ে গেছে, আমি ব্যথা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাকাতেই দেখি নিলা চিল্লাচ্ছে আর আমার বুকের মধ্যে কিল দিচ্ছে। তারমানে নিলা আমার উপরে পড়েছে, আজকে যে কপালে কি আছে আল্লাহ জানে, এই বলে নিলাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পরলাম। নিলা রেগে তারাতারি উঠেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে লাগলো...

আমিঃ এইযে শুনেন আমি ইচ্ছে করে পড়ে যাইনি, পা পিছলে গিয়েছিলো তাই,, আর বলতে না দিয়েই...

নিলাঃ এই ছোটলোকের বাচ্চা তুই আমাকে চিনিস, আমি ইচ্ছে করলে তোকে এখনই এই ভার্সিটি থেকে বের করে দিতে পারি... ( রেগে)

আমিঃ.... ( কোনো কথা বলছি না, নিচের দিকে তাকিয়ে আছি)

নিলাঃ তোদের মতো ছোটলোকদের আমার চেনা আছে। সুন্দরী একটা মেয়ে দেখলেই গায়ে ঝাপিয়ে পড়ে। এই কথা শুনেই আমার মাথাটা গরম হয়ে গেলো, মনটা চাইছে ঠাসস করে একটা চর মেরে দেই কিন্তু না আমি এমনটা করবো না...

আমিঃ দেখুন আমরা গরীব হতে পারে কিন্তু ওইরকম ছেলে না,,, বলে নিলার দিকে তাকাতেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। কারণ এই প্রথম আমি নিলার দিকে ভালো করে তাকালাম, তাও আবার কাছ থেকে। নিলা দেখতে তো মাশাল্লাহ অপরূপ সুন্দরী, ওর চোখের দিকে তাকালে যেনো ভালোবাসার আভাস পাওয়া যায়। আমি এখন বুঝতে পারছি এই ভার্সিটির সবাই নিলার পেছনে ঘুরে কেন....

নিলাঃ আরে তোর মতো সব ছেলেরাই একই কথা বলে, ফাল্টু কোথাকার....

নিলার এই কথাগুলো শুনেই ওয়াজেদের রাগ আরো বেরে গেলো মনে হচ্ছে এখনই নিলাকে চর দিবে...

কিন্তু আজ আমিও সব ছেলেদের মতো নিলার প্রেমে পড়ে গেলাম। কি আছে ওর এই মায়াবী মুখটায়? আর চোখের ভেতর যে ভালোবাসা লুকানো আছে তা নিমিষেই আমার মনটা কেড়ে নিয়েছে...।

হঠাৎ ওয়াজেদ রেগে নিলাকে চর মারার জন্য সামনে আসবে তখনই আমি হাত দিয়ে ওয়াজেদকে থামিয়ে দিলাম। নিলা রেগে হন হন করে চলে গেলো অন্য ক্লাসে। নিলা আমাদের ব্যাচের কিন্তু অন্য ক্লাসের...

নিলা চলে যাওয়ার পরেই তারিফ বললো...

তারিফঃ এই নিরব ও যাই বলেছে বলেছে, তুই আবার জবাব দিতে গেলি কেন? এখন আমাদের অবস্থা কি হবে জানিস...?

ওয়াজেদঃ যা হবার হবে পরে দেখে নিবো, এখন চল ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে...

তারপর তিনজন মিলে ক্লাসে গিয়ে বসলাম কিন্তু আমার একটুও ভালো লাগছে না, শুধু নিলার মায়াবী মুখটাই আমার সামনে ভেসে উঠছে...

সারাটা ক্লাস এভাবেই চলে গেলো। আমি কখনোই ভাবিনি এই নিলার প্রেমে পড়ে যাবো কিন্তু কিভাবে কি হলো কিছুই বুঝলাম না। শুধু ওর চোখের দিকে তাকাতেই কাত হয়ে হয়ে গেলাম।

ক্লাস শেষ তাই আমরা আস্তে আস্তে বের হয়ে ক্যান্টিনে গিয়ে বসলাম কিন্তু তারিফ বার বার বলছে বাসায় চলে যেতে কিন্তু আমি আর ওয়াজেদ কেউ ওর কথা শুনছি না...

ওয়াজেদঃ আচ্ছা একটা মেয়ের এতো রাগ আর অহংকার কিভাবে থাকে...?

তারিফঃ আরে ওরা বড়লোক তাই এতো অহংকার। আর এমনিতেই ওর রাগটা একটু বেশি...

আমিঃ আচ্ছা এসব বাদ দে, এখন বল কি খাবি...?

তারিফঃ দোস আমার কাছে টাকা নাই...

ওয়াজেদঃ আরে বেটা আমি আছি কি করতে? আমার কাছে আছে । কি খাবি বল...

তখনই একটা ছেলে আমাদের সামনে এসেই তিনটা কোকাকোলা দিয়ে বললো...

ছেলেটিঃ মামা আগে কোকাকোলা খাও তারপর অন্য কিছু...

কথাটা শুনেই ওয়াজেদ দাড়িয়েই...

ওয়াজেদঃ কি হলো আপনার কাছে কি আমরা কোকাকোলা চেয়েছি...?

তখনই ওয়াজেদের

continue

2
$ 0.08
$ 0.08 from @TheRandomRewarder
Avatar for soyed
Written by
4 years ago

Comments