আমার জিবনের ১৯ টা বছর কাটিয়ে দিলাম মা ছাড়া।এতোদিন জানতাম আমার মা মারা গেছে।আর এখন যখন ১৯ বছর পর জানতে পেলাম আমার মা বেচে আছে আবার নাকি আমার একটা বড় ভাই ও আছে।এই কথাটা শুনার পর আমার মাথায় যেন আকাশ ভেংে পরেছে।
আব্দুল চাচা আমাদের বাড়িতে কাজ করে।উনিই আজকে আমাকে এই কথা জানিয়েছে আমার মা নাকি বেচে আছে।আমার বাবা কোনদিন আমার মায়ের কোন ছবি আমাকে দেখাই নি।এই বিষয় টা আমার কাছে বিষন অবাক লাগতো
যখনি বাবাকে বলতাম মায়ের একটা চবি দেখাও না আমাকে।বাবা বলতেন তার কাছে নাকি মায়ের কোন ছবি নেই।উনি সব সময় এই ব্যাপার টা ইগনোর করার চেষ্টা করতো।
কিন্তু বাবাকে প্রতিদিন রাতে দেখতাম কিছু একটা হাতে নিয়ে নিজে নিজে কথা বলতো।আর কান্না কান্না ভাব করে থাকতো।
আমি রুহি অনার্স পাস্ট ইয়ারে পড়ি।ছোট থেকেই লন্ডনে বড় হয়েছি।এখনো লন্ডনেই আছি।জিবনে যা চেয়েছি তাই পেয়েছি।অবাব কি জিনিস সেটা বাবা আমাকে কোনদিন বুজতেই দেয় নি।টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি সব কিছুই আছে আমার।
কিন্তু সব থেকে কি লাভ।আমার যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ টাই নেই।সেটা হলো আমার মা।তবু ও সব সময় হাসি খুশি থাকতাম।মানুষ কে হাসাতে আমার খুব ভালো লাগে
আমার বাবা লন্ডনের অনেক বড় বিজনেসমেন।খুব ভালোবাসে আমাকে।ওনার নাকি এই পৃথিবীতে একমাত্র আপনজন আমিই আছি।সব সময় আমার ভালোর দিকটা আগে দেখবে
একদিন বাবা বাড়িতে ছিল না।আমি একটা জায়গায় ঘুরতে যাবো বলে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলাম।তখন দেখি আব্দুল চাচা তার নিজের রুমে একটা ছবির সাথে কথা বলছে। আর কাদছে।আমি তার রুমে জাওয়াতেই তিনি ছবি টা লুকিয়ে রাখে
রুহিঃ কি হয়েছে চাচা তুমি কাদছো কেন।আর তোমার হাতে ওটা কি
আব্দুল চাচাঃ কই কিচ্ছু না তো।তুমি কোথায় যাচ্ছো মামুনি?
রুহিঃ চাচা তোমার হাতে ওটা কি আমাকে দেখাও না প্লিজ।
আব্দুল চাচাঃ এ এ এটা! এটা আমার মেয়ের চবি
রুহিঃ তুমি মিথ্যা কেন বলছো চাচা।তোমার তো কোন মেয়ে নাই।আর কি আছে এই ছবিতে যে তুমি আমার কাছ থেকে লুকাতে ছাইচো।প্লিজ বলো না আমাকে
আব্দুল চাচাঃ তুমি কোথায় যেন যেতে চাইছিলে যাওনা মা
রুহিঃ চাচা তোমাকে আমার কসম বলো এই চবিতে কি আছে।তুমি ছবিটি আমাকে দেখাচ্ছো না কেন
এইবার আব্দুল চাচা হু হু করে কান্না শুরু করে ছবি টিকে জরিয়ে ধরে
মারে এইটা যে তোর মায়ের চবি
রুহির চোখ দিয়ে জরনার মতো পানি বইতে থাকে।আব্দুল চাচার হাত থেকে ছবি টা টান দিয়ে নিজের বুকের মধ্যে রাখে।আর ইচ্ছে মতো চুমু দিতে থাকে
চবিতে একটা খুব সুন্দর মেয়ে বউয়ের সাজে বসে আছে।দেখতে একদম রুহির মতো দেখা যায়।মনে হচ্ছে এটা রুহির ছবি।এটা ওর মায়ের বিয়ের চবি
চাচা তুমি এই ছবিটা কোথায় পেলে?
চাচাঃ আমার কাছে ছিল তোমার মায়ের এই ছবিটা
রুহিঃ তুমি আমাকে আগে বলো নি কেন চাচা
তারপর আবার চবি টার সাথে কথা বলতে থাকে।
মা তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে কেন?আমার যে খুব কষ্ট হয় তোমার জন্য।তুমি কেন চলে গেলে আমাকে ছেড়ে😭😭
আব্দুল চাচাঃ তোমার মা মারা যায় নি মা।উনি এখনো বেচে আছে
রুহির মনে হচ্ছে ওর পায়ের নিছের মাটি সরে যাচ্ছে।চাচা এসব কি বলছে
আব্দুল চাচাঃ তোমার মা এখনো বেচে আছে মা।তোমার যখন ৪ বছর বয়স তখন তোমার বাবা আর মায়ের কিছু একটা নিয়ে জগরা হয়।আমি জানি না তাদের মাঝে কি নিয়ে জগরা হয়।তোমার একটা ভাই ও আছে ও তখন ৮ বছর বয়সি ছিল।তোমার বাবার সাথে তোমার মায়ের জগরা হওয়ার পরে তোমার মা তোমার ভাইকে নিয়ে আলদা হয়ে যায়।আর তোমার বাবা তোমাকে নিয়ে এই বিদেশের মাটিতে চলে আসে।আমি পুরো ঘটনা জানি না মা।পুরো ঘটনা শুধু মাত্র তোমার মা আর বাবাই জানবে
তারপর উনি আরো কয়েকটা ছবি এনে আমাকে দেখাতে থাকে।
একটা ছবির মধ্যে আমি মায়ের কোলে আছি আর ভাইয়া বাবার কোলে আছে।সবার মুখে হাসি ফুটে রয়েছে।
রুহিঃ চাচা আমি মায়ের কাছে যেতে চাই
চাচাঃ কিন্তু মা তোমার বাবাকে তুমি কি বলবে।আর উনি যদি জানতে পারে আমি তোমাকে তোমার মায়ের কথা বলে দিয়েছি।তাহলে খুব খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে
রুহিঃ তুমি বাবার কথা চিন্তা করো না চাচা।আমি ওনাকে কিছু একটা বলে মেনেজ করে নিবো।আর বাবা কোন দিন ও জানতে পারবে না।তুমি আমাকে মায়ের কথা বলেছো।তুমি শুধু আমাকে আমাদের বাংলাদেশের ঠিকানা টা বলো
তারপর চাচা আমাকে আমাদের বাংলাদেশের ঠিকানা টা বলে দিলো।
আমি নিজের রুমে গিয়ে ভাবতে থাকি কি বললে বাবা আমাকে বাংলাদেশে যেতে দিবে
অনেকক্ষণ পর একটা বুদ্ধি পেলাম
সন্ধ্যা বাবা বাড়িতে ফিরে আসে।আমি বাবার রুমে গিয়ে দেখি বাবা একটা ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে
আমাকে দেখে বলে।কিছু বলবি মা
রুহিঃ আসলে বাবা তোমাকে একটা কথা বলতাম।তুমি রাগ করবে না তো
বাবাঃ রাগ করবো কেন।আমি কি আমার মায়ের উপর রাগ করে থাকতে পারি!
রুহিঃ বাবা 1 সপ্তাহ পর বৃষ্টির বিয়ে।ও বললো আমি না গেলে নাকি ও কিছুতেই বিয়ে করবে না।ও বললো কালকেই আমাকে বাংলাদেশ যেতে
বাংলাদেশের কথা বলতেই বাবার মুখটা কেমন জানি চিন্তার ফুটে উঠলো
বাবা তুমি বিশ্বাস না করলে বৃষ্টির সাথে কথা বলতে পারো।দেখো ও কি বলে
বাবাঃ কিন্তু মা তুমি একা একা কিভাবে যাবে? ওখানে তোমার অনেক বিপদ হতে পারে
রুহিঃ সেটা নিয়ে তুমি চিন্তা করো না।আমাকে ইয়ার ফোট থেকে বৃষ্টি ড্রপ করে নিবে।
বাবার মন চাইছিল না আমাকে দিতে তারপরে ও আমার খুশির জন্য দিয়ে দিলেন
তারপর আমি খুশিতে বাবাকে কয়েকটা চুমু দিয়ে বাবার রুম থেকে চলে আসি।
আর বৃষ্টি হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।ও এখানে পড়তে এসেছিল।মাত্র এক মাস আগে কলেজ বন্ধ ছিল বলে দেশের বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিল
পরের দিন খুব সকাল সকাল বেরিয়ে পরি।বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি।
বাবা নিজের খেয়াল রেখো।আর আমি মাত্র কয়েক দিন পরেই পিরে আসবো।তুমি চিন্তা করো না
বাবা আমার কপালে কয়েক টা চুমু দিয়ে বলে।সাবধানে যাবি না।আর সময় মতো আমাকে ফোন দিছ।
রুহিঃ ঠিক আছে বাবা(মুচকি হেসে)
তারপর আমি চাচার কাছে যাই।
চাচা বাবার দিকে খেয়াল রেখো।আমি কয়দিন পরেই চলে আসবো।আমার জন্য দোয়া করো চাচা।আমি জানি না সামনে আমাদের জিবনে কি ঘটতে চলেছে
চাচা চোখের পানি মুছে বলে।সাবধানে যাবি মা।নিজের খেয়াল রেখো
সকাল ৮ টায় আমার ফ্লাইট।সময় মতো বিমানে গিয়ে উঠি।
খুব খুশি খুশি লাগছে আজ।মনের আনন্দে নাচতে ইচ্চে করছে।
কিন্তু পরক্ষনেই আমার হাসি উদাও হয়ে গেল যখন দেখলাম আমার পাশে একটা ছেলে এসে বসছে
#পিরে কি পাবো তাকে###
0
5