অনেক বেশি ভালোবাসি

0 1
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

💞অনেক বেশি ভালোবাসি 💞

##পর্ব- ০২

.

-- কারণ বাড়িতে অনেক লোকজন। দেখে মনে হচ্ছে কোনো অনুষ্ঠান হবে মনে হয়। হঠাৎ করে ছোট্ট একটা মেয়ে এসে সোহেল ভাইকে বললো,মামা আমার জন্য চকলেট এনেছো।

-- সোহেল ভাই অনেকটা বিরক্তিকর ভাব নিয়ে বললেন, যা একখান এখন বিরক্ত করিস না।

-- মেয়েটা কিছু না বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।এটা দেখে সোহেল ভাই ধমক দিয়ে বললেন,কী হলো কথা কানে যায় নি।এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?

-- সোহেল ভাইয়ের ধমক শুনে মেয়েটা ভয় পেয়ে কেঁদে দিলো।

তানভীর - এইটুকু একটা বাচ্চার সাথেই এমন আচরন করা ঠিক হয়নি ভাইয়া।

সোহেল - এতো কথা না বলে চলো আমার সাথেই তোমার রুম দেখিয়ে দিয়ে আসি।

(বলেই চলে গেলেন)

-- মেয়েটা এখনো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। মেয়েটার বয়স মনে হয় চার বছরের কাছাকাছি হবে।দেখতে খুবই কিউট। সোহেল ভাইকে মামা বলে ডাকলো তাহলে তো ভাইয়ের ভাগ্নি হয়। কিন্তু ভাইয়া ওর সাথেই এমন আচরন করলো কেন?কিছুই বুঝলাম না।

তানভীর - তুমি আমার সাথে‌ চলো। আমি তোমাকে চকলেট দেবো।(চোখের পানি মুছে দিয়ে)

মেয়েটি - সত্যি বলছো তুমি আমায় চকলেট দিবে।(অনেকটা খুশি হয়ে)

তানভীর - হুম।চলো আমরা সাথে।

-- মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে সোহেল ভাইয়ের পেছনে পেছনে যেতে লাগলাম। সোহেল ভাই আমাকে উপরে একটা রুম নিয়ে গেলেন।

সোহেল - এটাই শুভর রুম তুমি এখানে থাকো। শুভ মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে।

তানভীর - ঠিক আছে ভাইয়া।

সোহেল - একি তুমি ওকে এখানে নিয়ে এসেছে কেন? ওই তুই ওর সাথে এসেছিস কেন? কোলে থেকে নেমে নিচে যা।(জোরে ধমক দিয়ে)

তানভীর -ও আমার সাথেই থাকুক। আপনি যান কোনো সমস্যা হবে না।

-- সোহেল ভাই কিছু না বলে কিছুটা রেগে রুম থেকে চলে গেলেন। আমি মেয়েটিকে খাটের উপর নামিয়ে দিয়ে। ব‍্যাগটা খাটের উপর রাখলাম। খাটের বসতেই মেয়েটি বললো, জানো সোহেল মামা খুব পচা।আমায় শুধু বকে আর মারে। একটুও ভালোবাসে না আমায়।

তানভীর - তোমার সাথে এইরকম আচরন করে কেন? (কিছুটা অবাক হয়ে)

মেয়েটি - জানি না।

তানভীর - আচ্ছা তুমি এখানে বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। কোথাও যাবে না কিন্তু।

মেয়েটি - ঠিক আছে।

-- তারপর তাড়াতাড়ি করে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। রুমে এসে দেখি মেয়েটি খাটের উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে। আমি ওর কাছে গিয়ে ব‍্যাগ থেকে চকলেট বের করে ওর হাতে দিলাম। চকলেট পেয়ে খুশি হয়ে বললো, এই সবগুলো চকলেট আমার।

তানভীর - হে তোমার।

মেয়েটি - তুমি অনেক ভালো।(গালে কিস করে)

তানভীর - কী করলে এটা। তোমাকে কে শিখিয়েছে এইসব?(কিছুটা অবাক হয়ে)

মেয়েটি - আমার নিশি আন্টি।

তানভীর - ওহ্‌। আচ্ছা তোমার নাম কি?

মেয়েটি - আমার নাম তিন্নি। কিন্তু তুমি কে? তোমাকে তো আগে কখনো দেখিনি?

-- ও তোমার মামা তিন্নি।আগে তো কখনো আমাদের এইখানে আসেনি।তাই তুমি দেখতেও পাওনি। আমার বন্ধু হয় বুঝলে।

তিন্নি - হুম বুঝেছি।

দড়জার দিকে তাকিয়ে দেখি শুভ দাঁড়িয়ে আছে। আমি উঠে দাঁড়াতেই শুভ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

শুভ - কেমন আছিস ভাই? কতদিন পর তোকে দেখলাম।( অনেকটা খুশি হয়ে)

তানভীর - হয়েছে ছাড় এবার।

শুভ - কিরে আমায় উপর রাগ করে আছিস ?

তানভীর - কি কথা ছিলো আর কি করেছিস?

শুভ - কী করবো বল? তোকে আনতে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় ছোট্ট মামি এসে বললো তার মেয়েও নাকি আজকে আসছে। আমাকে বললো তাকে যেনো বাস স্টেশন থেকে নিয়ে আসি। ভেবেছিলাম তোদের দুইজনকে একসাথে নিয়ে বাসায় ফিরবো। বড় মামার মেয়ে নিলাও আমার সাথে গোলো। কিন্তু দুই বোনের দেখা হওয়ার পর বায়না ধরলো শপিং করতে যাবে।তাই আমিও সাথে গেলাম আর কি।

তানভীর - হুম।তুই তো আবার মেয়েদের আবদার ফেলতে পারিস না।

শুভ - আরে না তর আম্মুর ভয়ে।

তানভীর - আম্মুর ভয়ে মানে?

শুভ - যাক বাদ দে এইসব। এই হলো তিন্নি তানিশা আপুর মেয়ে। তুই চলে যাওয়ার একমাস পরেই আপুর বেবি হয়।

তানভীর - কিহ্। তিন্নি তানিশা আপুর মেয়ে।

(অনেকটা অবাক+খুশি হয়ে)

শুভ - হে।

-- সাথে সাথে তিন্নিকে জড়িয়ে ধরলাম। তিন্নি কে জড়িয়ে ধরতেই তিন্নি বললো, তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরলে কেন?

তানভীর - একটু আগে না বলেলে তোমার সোহেল মামা তোমাকে একটু ও ভালোবাসে না। শুধু বকে‌। আজ থেকে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসবো। তাই তো জড়িয়ে ধরেছি।

তিন্নি - সত্যি বলছো।( জড়িয়ে ধরে)

তানভীর - হুম সত্যি বলছি।

তিন্নি - কখনো সোহেল মামার মতো

মারবে না তো।

তানভীর - কিহ্। সোহেল মামা তোমাকে মারে।

তিন্নি - হে গতকালের নিয়ে চারবার আমাকে থাপ্পড় মেরেছে।দেখলে না তোমার সামনে

কিভাবে বকা দিয়েছে আমাকে।

-- শুভর দিকে তাকেই শুভ মাথা নিচু করে

দাঁড়িয়ে রইল।

তানভীর - আর কে কে তোমার সাথে এইরকম আচরন করে?

শুভ - আমি তোকে সব বলবো পরে। তিন্নি এইসব জিগ্গেস করার কি দরকার বল?

-- এমন সময় রুমে শুভর ছোট্ট বোন নিশি আসলো।নিশি রুমে আসতেই তিন্নি এক দৌড়ে গিয়ে নিশির কুলে উঠে পড়লো।

নিশি - ভাইয়া ওনি কে?

শুভ - আমার বন্ধু।আর এতো কিছু জেনে তুই কী করবি? এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? কতোবার বলেছি তোকে তিন্নির খেয়াল রাখতে?( প্রচন্ডভাবে রেগে)

নিশি - সরি ভাইয়া। আসলে আন্টি বললো....

শুভ - আন্টি ,আন্টি কী বলেছে?(জোরে ধমক দিয়ে)

তানভীর - ওই তুই ওর সাথে এভাবে রাগ দেখাচ্ছিস কেন?

শুভ - এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন?যা এখান থেকে। আর হে তিন্নি কে সবসময় তোর সাথে রাখবি। একা একা বা বাড়ির কারো সাথেই বাড়ির বাহিরে বের হবি না। যা এবার....( কিছুটা রেগে)

-- সাথে সাথে নিশি কেঁদে কেঁদে তিন্নি নিয়ে রুম থেকে চলে গেল।

শুভ - সরি। আমাকে ভুল বুঝিস না ভাই । এই তিন বছরে বাড়ির সবাই অনেকটা বদলে গেছে। এই নে আমার মোবাইল। পরিবারের সবার ছবির আছে মোবাইলে দেখেনিস। যাতে চিনতে কোনো সমস্যা না হয়।একটা কাজে বাহিরে যাবার। আমার আসতে দেরি হবে।তুই রুমে রেস্ট নে।

-- মোবাইল খাটের উপর রেখে শুভ চলে গেল। বাড়ির আসার পর কারো সাথে কোনো কথা হয় নি। আম্মুকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। কেন আব্বু কে খুন করেছে ?তার কারণ আমাকে জানতেই হবে। যেকোনো মূল্যেও হলেও।

-- শুভর মোবাইল থেকে পরিবারের সবার ছবির গুলো এক নজরে দেখে শুয়ে পড়লাম।রাতে ঘুম থেকে উঠে দেখি সাথে আটটা বেজে গেছে। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে ওয়াসরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। রুমে আসতেই তিন্নি এসে বললো, মামা তোমাকে নিচে যেতে বলেছে?

তানভীর - ঠিক আছে চলো।

-- তিন্নির সাথে নিচে গিয়ে দেখি খাবার টেবিলে সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। শুভর ডাকে তিন্নিকে নিয়ে শুভর পাশে গিয়ে বসলাম।

-- এক নজরে সবাইকে দেখে নিলাম। আমার সামনে তানিশা আপু বসে ছিলো।বার বার আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। দেখে মনে হয় কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। কিন্তু বলছে না। সেইদিকে খেয়াল না করে আম্মুর দিকে তাকিয়ে রইলাম

-- হঠাৎ করে আম্মু আমাকে জিগ্গেস করলো,এই ছেলে তোমার বাসা কোথায়?

শুভ - আন্টি ওর বাসা সিলেট। আমার বন্ধু হয়।

( মিথ্যে বললো)

আম্মু - ওহ্। ঠিক আছে। সবাই খাওয়া শুরু করো তাহলে।

-- পানির গ্লাস হাতে নিলাম। তিন্নির হাত ধুয়ে দেবার জন্য। এমন সময় তানিশা আপু বললো,আমি খাবো না।

আম্মু - না খেলে নাই এটা বলার কী আছে। যতো সব।বাপের সাথে তোদের দুটাকেও মেরে ফেলা উচিত ছিল।(রেগে+ধমক দিয়ে)

-- আম্মুর এমন কথা শুনে রাগে আমার হাত থেকে গ্লাসটা পরে ভেঙ্গে গেল। সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সাথে সাথে টেবিল থেকে উঠে সোজা সাদে চলে গেলাম। সাদে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ কেউ একজন পেছন থেকে আমার কাঁধে হাত রাখলো। পিছনে তাকিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম।কাকে দেখছি আমি এটা তো............

।।

।।

।।

।।

।।

।।

//___________//চলবে//___________//

ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন..!!

1
$ 0.00
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

Comments