অফিসের বস যখন বর

0 4
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

অফিসের বস যখন বর

সিজন 2

part9

স্যার আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো, স্যারের এরকম ব্যবহারের কি মানে কিছুই বুঝতে পারছি না, স্যার এভাবে রেগে আছে কেন? আর তার হাতেই বা আঘাত লাগলো কিভাবে? এসব ভাবতে ভাবতেই বাসায় ঢুকলাম বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে চেন্জ করে বসে বসে আম্মুর সাথে কথা বলছি, হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো ফোন তুলে দেখি দিয়া ফোন করেছে ফোনটা রিসিভ করলাম,

আমি--- হ্যালো আস্সালামু আলাইকুম,

দিয়া--- ওয়ালাইকুম আস্সালাম, কোথায় তুমি?

আমি--- বাসায় আছি, কেন?

দিয়া--- তারাতাড়ি রেডি হয়ে বাসার সামনে দাঁড়াও আমি আসছি তোমাকে নিয়ে শপিং মলে যাবো,

আমি--- কিন্তু?

দিয়া--- কোনো কিন্তু নয়, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমি আসছি,

আমি--- ওকে,

ফোন কেটে দিয়ে রেডি হতে যাবো তখন আম্মু বললো,

আম্মু--- কি হয়েছে?

আমি--- আমাকে দিয়ার সাথে বেরোতে হবে,

আম্মু--- একটু আগেই না ফিরলি এখন আবার বেরোবি?

আমি--- হ্যাঁ আম্মু দিয়া আসছে, তুমি নীলা সিমি কে বলো কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করতে, দিয়া অনেক দিন আগে থেকেই আমাদের বাসায় আসতে চায় কিন্তু আমি সময় করে নিয়ে আসতে পারিনি,

আম্মু--- আচ্ছা আমি সবকিছুর ব্যবস্থা করছি,

আম্মু নীলা আর সিমি কে নিয়ে কিচেনে চলে গেলো আমি তৈরি হয়ে গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম কিছুক্ষণ পর একটা গাড়ি এসে আমার সামনে দাঁড়ালো গাড়ি থেকে দিয়া নেমে এলো,

দিয়া--- রেডি হয়ে এসেছো? চলো যাই,

আমি--- আগে আমার বাসায় চলো আম্মুর সাথে দেখা করে আসবে,

দিয়া--- আজ তো একদম সময় নেই অন্য একদিন আন্টির সাথে দেখা করতে আসবো,

আমি--- আরে চলো তো আম্মু নীলা সিমি সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে আমি সবাই কে বলেছি তুমি আসবে,

দিয়া--- তাহলে আর কি করা চলো সবার সাথে একবার দেখা করে যাই,

আমি--- হুম এসো,

দিয়া কে নিয়ে বাসার ভেতরে এলাম, দিয়া আম্মু কে সালাম দিলো নীলা সিমির সাথে কিছুক্ষণ কথা বললো,

আম্মু--- তোমরা সবাই বসো আমি আসছি, সিমি একবার আমার সাথে আয়,

আম্মু চলে যাওয়ার পর আমরা বসে বসে কিছুক্ষণ গল্প করলাম এরমধ্যে আম্মু নাস্তা নিয়ে এলো, দিয়া কে নাস্তা দিয়ে আম্মু আমার পাশে বসলো,

আম্মু--- তোমার বাড়ির সবাই কেমন আছে?

দিয়া--- আলহামদুলিল্লাহ ভালো,

আম্মু--- সামনের সপ্তাহে নিশাতের এঙ্গেজমেন্ট তোমাকে কিন্তু আসতেই হবে,

দিয়া--- নিশাত তোমার এঙ্গেজমেন্ট? কই আমাকে তো বললে না,

আমি--- কি বলতাম বলো তো? এসব কিছু তো আজকেই ঠিক হলো,

দিয়া--- ওহ্ আচ্ছা, আন্টি ছেলে কি করে?

আম্মু--- ছেলে কলেজের প্রফেসর, কিছুদিন আগে লন্ডন থেকে পড়ালেখা শেষ করে এসেছে,

দিয়া--- ওহ্ তো পাত্র কি আপনাদের পূর্ব পরিচিত?

আম্মু--- না আসলে নিশাত ওর ছোট ভাইকে পড়াতো সেই সুত্রে ওদের সঙ্গে আমাদের পরিচয়,

দিয়া--- ওদের বাসা কোথায়?

আম্মু--- আমাদের এখান থেকে কাছেই,

দিয়া--- আচ্ছা আন্টি আজ তাহলে উঠি আমাদের দেরী হয়ে যাবে অন্য একদিন এসে অনেকক্ষন গল্প করবো, নিশাত চলো,

আম্মু--- আচ্ছা এসো,

বাসা থেকে বেরিয়ে দিয়ার সাথে গাড়িতে এসে বসলাম, ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিলো আমি আর দিয়া পিছনের সিটে বসেছি দুজন চুপচাপ বসে আছি নিরবতা ভেঙ্গে দিয়া কথা বলা শুরু করলো,

দিয়া--- এই বিয়েটা কি তুমি মন থেকে করতে চাইছো?

আমি--- হুম,

দিয়া--- পাত্রকে কি তোমার পছন্দ?

আমি--- কাব্য কে আমার পছন্দ না হলেও এই বিয়েটা আমাকে করতে হবে, কারণ আম্মু চাইছে এই বিয়েটা হোক আম্মুই কাব্য কে আমার জন্য সিলেক্ট করেছে আম্মুর কথা ফেলতে পারিনি তাই এই বিয়েতে রাজি হয়েছি না হলে এখন আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিলো না আমি চেয়েছিলাম নীলা সিমি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর বিয়ে করবো,

দিয়া--- তারমানে শুধু মাত্র তোমার আম্মুর জন্যই তুমি রাজি হয়েছো তাই তো?

আমি--- হুম, আম্মুর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিলো কিছুদিন আগে ডক্টর আম্মুকে সব সময় হাসিখুশি টেনশন ফ্রি রাখতে বলেছে,

দিয়া--- বুঝলাম কিন্তু তোমার ইচ্ছে না থাকলে তোমার আম্মু কে বলে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে পারো,

আমি--- তার আর কোনো উপযুক্ত কারণ নেই, আমি আম্মুর কথার অবাধ্য হতে পারবোনা আর আমার তো কোনো পছন্দের মানুষ নেই যার জন্য বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে হবে,

দিয়া--- আচ্ছা ভাইয়ার কি হয়েছে? হাতে রক্ত দেখলাম,

আমি--- আমিও দেখেছি স্যার কে অনেক বার জিজ্ঞেস ও করেছি কিন্তু স্যার তো কিছুই বললো না,

দিয়া--- বাড়ি ফিরেও তো কিছু বললো না শুধু বললো আমার হাত টা ব্যান্ডেজ করে দে, আচ্ছা ভাইয়া আজ এতো তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলো কেন?

আমি--- সেটা তো আমি জানিনা আমিতো ছুটি নিয়ে কাব্যের সাথে মিট করতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে ফেরার পথে স্যারের সাথে আমার দেখা তারপর সে আমাকে আমার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো,

দিয়া--- ওহ্ আচ্ছা, আমরা চলে এসেছি চলো আগে শপিং করি তারপর অন্য কথা বলবো,

আমি--- ওকে চলো,

দিয়া আর আমি অনেক কেনাকাটা করালাম তারপর সন্ধ্যার পর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,দিয়া আমাকে অনেক কিছু উপহার দিয়েছে আমিও ওকে ওর পছন্দ মতো একটা ড্রেস গিফট করেছি, দিয়া আমাকে আমার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো, পরের দিন যথা সময়ে অফিসে চলে এলাম, আমি বসে বসে একটা ফাইল চেক করছিলাম তখন হঠাৎ আমার ফোনে রিং বেজে উঠলো ফোনটা তুলে দেখি দিয়া ফোন করেছে,

আমি--- আস্সালামু আলাইকুম, কেমন আছো?

দিয়া--- ওয়ালাইকুম আস্সালাম ভালো, তুমি এখন কোথায়?

আমি--- আমিতো অফিসে আছি,

দিয়া--- ভাইয়া কে ফোন করে পাচ্ছি না, তুমি একটু ভাইয়াকে ফোনটা দাও তো,

আমি--- আচ্ছা ঠিক আছে একটু অপেক্ষা করো আমি দিচ্ছি,

ফোনটা নিয়ে তারাতাড়ি করে স্যারের কেবিনে এলাম স্যার কয়েক টা ফাইল নিয়ে কাজ করছে,

আমি--- স্যার আসবো?

বস--- হ্যাঁ এসো, কিছু বলবে?

আমি--- (আমার ফোনটা এগিয়ে দিয়ে) স্যার দিয়া আপনার সাথে কথা বলবে, আপনাকে নাকি ফোন করে পাচ্ছেনা তাই আমাকে ফোন করে আপনাকে দিতে বললো,

বস--- ও হ্যাঁ আমার ফোনের ব্যাটারি ডেড তাই সুইচস্টপ হয়ে গেছে, তুমি এখন যাও পরে এসে ফোনটা নিয়ে যেও

আমি--- ওকে স্যার,

স্যারের কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে আমি আমার কাজে মন দিলাম প্রায় আধঘন্টা পর স্যার আমার ফোনটা নিয়ে আমার কেবিনে এলো,

বস--- এই নাও তোমার ফোন, বাই দা ওয়ে থ্যাংক ইউ,

আমি--- কেন স্যার?

বস---এই যে তোমার ফোন থেকে আমাকে দিয়ার সাথে কথা বলিয়ে দিলে আমার কতো বড় উপকার হলো বলোতো ☺️?

আমি--- মোস্ট ওয়েল কাম স্যার

বস--- ওকে এখন কাজ করো আমি আসছি,

স্যার চলে গেলো আমি আবার কাজে মন দিলাম, অফিস টাইম শেষ হতেই আমি অফিস থেকে বেরিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি রিকশার জন্য, হঠাৎ আমার ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো ফোনটা তুলে দেখি কাব্য ফোন করেছে,

আমি--- হ্যালো,

কাব্য--- অফিস শেষ?

আমি--- হ্যাঁ,

কাব্য--- আচ্ছা তাহলে সেদিন যেখানে মিট করেছিলাম ওখানে চলে এসো আমি ওখানেই তোমার অপেক্ষা করছি,

আমি--- এখন তো বাসায় ফিরবো,

কাব্য--- বাসায় পরে ফিরবে এখন এখানে চলে এসো, আমি তোমার অপেক্ষায় আছি,

আমি--- হ্যালো... হ্যালো....

ধুর ফোনটা কেটে দিলো কি আর করা অনিচ্ছা সত্ত্বেও কফি শপে চলে এলাম, কফি শপে ঢুকে দেখি কাব্য একটা টেবিলে একা বসে আছে আমি গিয়ে ওর সামনের চেয়ারে বসলাম,

আমি--- এবার বলুন তো এতো জরুরি ডাকলেন কোনো?

কাব্য--- আগে তোমার হাত টা দাও,

আমি--- (আমার হাত দুটো বাড়িয়ে দিলাম) হুম এবার বলুন,

কাব্য আমার বাম হাতের আঙ্গুলে একটা স্বর্ণের আংটি পরিয়ে দিলো,

আমি--- এটা?

কাব্য--- এটা তোমাকে দেওয়া আমার প্রথম উপহার, আজ সবাই মিলে এঙ্গেজমেন্টের জন্য আংটি কিনতে গিয়েছিলাম সেখানে এটা আমার পছন্দ হয়ে যায় তাই তোমার জন্যে নিয়ে এলাম আর তোমার আঙ্গুলের মাপ ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য ভাবলাম আজকেই তোমাকে এটা দিয়ে দেই,আর এঙ্গেজমেন্ট এর আংটি আম্মুর কাছে আছে,

আমি--- ওহ্,

কাব্য--- কফি অর্ডার করি?

আমি--- ওকে,

কাব্য আর আমি কফি খাচ্ছি আর নানা রকম গল্প করছি হঠাৎ কাব্যের ফোন বেজে উঠলো,

কাব্য--- হ্যালো,

--- আপনি এক্ষুনি কলেজে চলে আসুন একটা মিটিং আছে সেখানে আপনাকে উপস্থিত থাকতে হবে,

কাব্য--- কিন্তু আমি তো এখনো কলেজ জয়েন করিনি, আর আপনি কে?

---- আমি আপনার কলেজের অফিস স্টাফ, এই মিটিং টা আপনার জয়েন করার জন্যই তাই দেরি না করে চলে আসুন,

কাব্য ফোন রেখে আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো,

আমি--- কি হয়েছে কাব্য?

কাব্য--- যেদিনই ভাবি তোমার সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাবো সেদিনই কিছু না কিছু হয়, আমাকে যেতে হবে কলেজে নাকি মিটিং আছে,

আমি--- ঠিক আছে আপনি যান আমি বাসায় চলে যাচ্ছি,

কাব্য--- ওকে,

কাব্য আর আমি কফি শপ থেকে একসঙ্গে বেরোলাম, কাব্য নিজের কাজে চলে গেলো, আমি হেঁটে হেঁটে কিছুটা পথ অতিক্রম করতেই কেউ একজন পিছন থেকে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো আমি সামনে ঘুরে দেখার চেষ্টা করলাম আমার হাত ধরে কে এভাবে টানাটানি করছে ততক্ষণে গাড়ির দরজা খুলে আমাকে জোর করে ভিতরে বসিয়ে দিয়ে গাড়ি লক করে দিলো

.......................

To be continue

(

2
$ 0.01
$ 0.01 from @TheRandomRewarder
Avatar for soyed
Written by
3 years ago

Comments