"আমাকে অপমান করা? এই ধারাকে? আমি পেত্নি? আমাকে কেউ পছন্দ করবেনা? ওদের বয়ফ্রেন্ড আছে তার মানে কি ওরা সুন্দরী? আমি খ্যাত? আনস্মার্ট? "
ভার্সিটিতে যেতে রাগে গজগজ করতে করতে এসব কথা বলছিল ধারা ৷ কাল তার কিছু ফ্রেন্ডস তাকে অপমান করেছ ৷ হঠাৎ একটা রেস্টুরেন্টের সামনে পড়লো ৷ বান্ধবীদের ওসব কথায় রাগে কাল রাতেও কিছু খায়নি আবার সকালেও কিছু খাওয়া হয়নি ৷ তাই সোজা রেস্টুরেন্ট ঢুকলো খাবার জন্য ৷ মাল্টা কালারের ড্রেস পরা তার ৷ লম্বা সিল্কি চুল, উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং ৷ হিল পায়ে হন হন করে হাঁটছিল ধারা ৷
"আউচচচচচ "
হঠাৎ এমন শব্দে পিছনে ফিরে তাকালো ধারা ৷ দেখলো একটা ছেলে খাইয়ালামু লুক নিয়ে পা ধরে তাকিয়ে আছে তার দিকে ৷ ধারা তার পায়ের দিকে তাকিয়ে আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারলো যে তার পায়ের হিল দিয়ে সে ছেলেটির পা পিষে দিছে যার ফলে ছেলেটির পা অনেকটা ছিলে গেছে রক্তও বের হচ্ছে হালকা ৷ একটু ঢোক গিলে সে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে দেখলো ছেলেটি কটমট করে তাকিয়ে আছে তার দিকে ৷ দু একজন মানুষও এগিয়ে আসছে তার দিকে ৷ ভয় বাবাজি তার মাথায় ভর করলো ৷ দিলো এক ছুট ৷ পিছন থেকে শুধু একটাই কথা শুনতে পেয়েছিল যেটা সেই ছেলেটা বলছিল
" এই মাল্টি কালার এই মেয়ে দাঁড়াও বলছি "
ক্লাস রুমে এসেই ধারা তার বেস্ট ফ্রেন্ড পরিকে সবটা খুলে বললো ৷ সবটা শুনে পরি তো হেসে গড়িয়ে পড়ছে ৷ দাঁত কেলিয়ে বললো
" মাল্টি কালার ৷আহা আহা কি কিউট নাম "
ধারা রাগী চোখে তাকালো ৷ পরি আবারও কেলিয়ে বললো
" দোস্ত ছেলেটা কেমন দেখতে রে? ছেলেটার দেওয়া মাল্টিকালার নামটা কিন্তু ফাটাফাটি লাগছে ৷ ইশ ৷ যদি আমাকে কেউ এভাবে বলতো ৷ মাল্টিকালার ৷ হিহিহি ৷ "
রাগে ধারার মাথা ফেটে যাচ্ছে ৷ পরিকে যেই তাড়া করতে যাবে ওমনি ক্লাসে ঢুকলেন আনোয়ার স্যার ৷ বললেন
" আজকে তোমাদের ইংলিশ টিচার আসতে পারবেন না ৷ ওনায় পায়ে নাকি কি প্রবলেম হয়েছে ভার্সিটিতে আসায় সময় কিভাবে যেনো পায়ে ব্যাথা পেয়েছেন ৷ তাই আমিই আসলাম তোমাদের ক্লাস নিতে ৷ "
পায়ের কথা শুনতেই রাগ ছেড়ে আবারও ভয় মামাজি ধারাকে চেপে ধরলো ৷ পরি ফিসফিস করে বলল
" হ্যাঁ রে দোস্ত বায় এনি চান্স তুই যার পায়ের সিংহাসনে তোর পায়ের হিল প্রতিষ্ঠিত করেছিস সেটা আমাদের ইংলিশ স্যার নয়তো? "
" ওমন অলক্ষুণে কথা কইস না বোন ৷ ওই ব্যাটা আমারে সামনে পাইলে সিউর দু চারটা চড় মেরে বসবে ৷ আর যদি ঐ ব্যাটা এখানকারই টিচার হয় তাইলে আমি ডাইরেক্ট এই ভার্সিটি ছাইড়া দিয়া স্বামীর ঘর করুম ৷ "
প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুজে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাড়িতে গেল মেঘ ৷ মেঘের এ অবস্থা দেখে ছুটে আসলো মেঘের মা ৷ বললো
" কি হইছে আব্বাজান? আপনি এমন খোঁড়াইতেছেন কেন? আপনার কি ছোটোবেলার সেই প্যান্ট ভরে মুতার রোগ ফিরে আসলো নাকি? "
এমনিতেই রেগে বোম হয়ে আছে মেঘ ৷ দাঁটকিটমিটিয়ে বললো
" শাট আপ মা ৷ আমার পায়ের দিকে তাকাও ৷ "
পায়ের অবস্থা দেখে আতঙ্কে রিপা বেগম চিল্লায়ে বললেন
" কি হয়েছে পায়ে? মনে হচ্ছে কেউ পাড়া দিয়েছে ৷ কোনো হিল -এর ছাপ ৷ কোন মেয়ের কাছে গিছিলি তুই? আল্লাহ ৷ পায়ের কি অবস্থা ৷ "
মায়ের চিল্লাচিল্লি শুনে মেঘের বড় ভাই রোদ নিচে এসে বললো
" কি হয়েছে মেঘ? তোর তো আমি ভর্সিটিতে পাঠিয়ে ছিলাম ৷ বাট এত তাড়াতাড়ি কেন? আর পা কাটলো কিভাবে? "
মেঘ এবার দাতমুখ খিঁচিয়ে কটমট করে বিড়বিড়য়ে বললো
" ঐ মাল্টি কালারের বদমাইশ মেয়েটারে যদি একবার পায় আল্লার কসম ওরে তো আমি,,,,,, "
অবশেষে
পর্ব ০১
