#অবহেলার_পরিণাম
পর্ব - ৪
মনি মেঘালয় কে সালাম করতে যায় তখনই মেঘ বলে ওঠে,,
-এই একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেনা।আর শোনো আজকে বাসায় অনেক গেস্ট আছে তাই এই রুমে থাকতে দিচ্ছি। কালকের পর আর আমার রুমে ভুল করেও আসবেনা।
-আমি আপনার স্ত্রী এই রুমে থাকার অধিকার আমার ও আছে।
আমি শুধু মাহিকে ভালবাসি সো আমার কাছে স্ত্রীর অধিকার দেখাতে আসবেনা।
-বিয়ে কেন করলেন আমায়?
-বাবার জন্য বিয়েটা করতে বাধ্য হয়েছি।
-আমার জীবন টা নষ্ট করার কোনো দরকার ছিল কি?
মেঘালয় কোনো উত্তর না দিয়ে বারান্দায় চলে যায়।মনি জানতো এমন কিছুই হবে তাই চুপচাপ বালিশ নিয়ে সোফায় ঘুমিয়ে পড়ে।
হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় মনির। প্রায় সকাল হয়ে গেছে, মেঘ ঘুমিয়ে আছে বাচ্চাদের মতো,মনি মুচকি হাসি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যায়।সবাই মনিকে দেখে অবাক হয়,কেউ ভাবেনি নতুন বউ এতো সকালে নিচে আসবে।
মনি সবাইকে সালাম দেয়, আসসালামু আলাইকুম।
মনি মা:তুই আমার ছেলের বউ না,আমার মেয়ে আমি কিন্তু তোকে তুমি করে বলতে পারবোনা।
-শায়লা তোর ছেলের বউ টা কিন্তু খাটি সোনা, মুখ দেখলেই মায়াই পড়ে যায়।
শায়লা বেগম :যতসব আদিক্ষেতা।কি এমন পেলে আপা এই মেয়ের মাঝে বুঝিনা,আর রেহেনা তোমাকেও বলি এই মেয়েকে নিয়ে এতো ঢং করার কিছু নেই।
এই যে মেয়ে আমাদের সবার জন্য চা নিয়ে আসো তো,,
-এখুনি নিয়ে আসছি মা,
-মা?কে তোমার মা?তোমার মতো মিডিল ক্লাস মেয়েকে আমি আমার ছেলের বউ হিসেবে মানিনা।
ঠিক তখনই রফিক আহম্মেদ সেখানে চলে আসে,
-শায়লা কি বলছো তুমি এসব,ও আমার বাড়ির লক্ষি।বাড়িতে কি কাজের লোকের অভাব পড়েছে যে ও কাজ করবে তাও বিয়ের পরের দিন।
-না বাবা আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি তো এই বাড়ির বৌ আর উনি আমার শাশুড়ী মা। তার আদেশ শির ধার্য।
মনি চলে যায় রান্না ঘরে,,
-একটু তেই হার মানলে চলবে না মনি।সামনে যে আরো অনেক লড়াই বাকি আছে।তোকে যে সফল হতে হবে।
-মনি মা আমি কি পারবো?
-অবশ্যই পারবি মা,(চোখের পানি মুছে দিয়ে)
এখন যা তো মেঘকে চা দিয়ে আয় আমি বাকিদের দিচ্ছি।
মনি এসে দেখে মেঘালয় ঘুমিয়ে আছে এখনো,
-এই যে শুনছেন
-এই যে,
-কি হয়েছে কি এতো চিল্লিয়ে ডাকার কি আছে।আর তোকে না বলেছি আমার থেকে দূরে থাকবি(রেগে)
-না মানে আপনার জন্য চা নিয়ে এসেছিলাম,
-আমি কি বলেছিলাম নিয়ে আসতে?
এমন সময় বৃষ্টি আসে,,
-ভাইয়া আসবো?
-আয়,
-বাবা তোমাকে নিচে যেতে বলেছে আর ভাবি তুমি আমার সাথে চলো।
মনি বৃষ্টির সাথে নিচে চলে যায়,মেঘালয় উঠে ফ্রেশ হতে যায়।
,
,
রাতে রিসেপশন পার্টি সবাই কমিউনিটি সেন্টারে যাওয়া শুরু করেছে।শুধু বৃষ্টি আর মনি পরে যাবে।মনিকে সাজাতে পার্লার থেকে লোক এসেছে।রেড পাড়ের হোয়াইট কালারের লেহেঙ্গা সাথে ম্যাচিং জুয়েলারি হালকা সাজে অপরুপ সুন্দর দেখাচ্ছে মনিকে।ঠিক যেন সাদা পরী।
-ভাবি তোমায় কিন্তু দারুণ লাগছে
-তোমাকেও সুন্দর লাগছে।
-এবার চলো সবাই ওয়েট করে আছে আমাদের জন্য।
সেন্টারে রফিক আহম্মেদ এর বন্ধু, আত্নীয়স্বজন সবাই এসেছে।মনির মামা,হাসি ও কিছু অতিথিরাও এসেছে।
মনির প্রবেশে সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে,যেন এতো সুন্দর মানুষ আগে কখনো দেখেনি।
মনি মামার কাছে যায়,,
-মামা মা আসেনি?
-নারে মা তোর মা আসতে চাইনি তাই রেখে আসলাম,
-মা ভালো আছে তো?
আলহামদুলিল্লাহ, তুই গিয়ে বোস।
-এই আপি কি সুন্দর লাগছে রে তোকে,ভাইয়া দেখলে তো চোখ সরাতে পারবেনা।কিন্তু ভাইয়াকে তো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না।
হাসির কথায় মনি মুচকি হাসে।
- উনি হয়তো কোনো কাজে গিয়েছেন।চলে আসবে,,
রফিক আহমেদ সবার সাথে মনির পরিচয় করিয়ে দেয়।সবকিছুর মাঝেও মনির মুখটা মলিন
মেঘালয় কে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না।
মেঘালয় না থাকায় মনি কে মামার সাথে যেতে দেয় না রফিক আহম্মেদ।
পার্টি শেষে মনি রুমে এসে মেঘের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। অনেক রাত হয়েছে এখনো মেঘালয় আসেনি।মনি ফোন টা হাতে নেই।ফোন দিতেই রিসিভ করে,,
-আসসালামু আলাইকুম,
-কে বলছেন?
-আমি মনি,,কোথায় আপনি?
-আমি যেখানেই থাকি তোমায় বলতে হবে?ব্যাস্ত আছি ফোন রাখো,,
সেদিন আর মেঘালয় আসেনি। মনি সারারাত অপেক্ষা করে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পড়ে,,
সকালে ঘুম ভাংতেই নিচে চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে যায় মনি,,বিপদের আশংকায় বুকটা কেঁপে ওঠে,,
0
9