মাফিয়া কিং
পর্ব ৪
-------------------------
----------- -------------
-------- ---------
বেগুনি রংয়ের আবছা লাইটের আলোয় এগিয়ে আসছে একটা ছেলে। যখনি সবার সামনে আসলো তখন সবাই পিছে সরে গেলো। ছেলেটার পিছনে অনেক গার্ডস। সবার হাতেই পিস্তল। লাইট জ্বলে উঠলো সবাই পিছনের দিকে সরে যেয়ে বলে উঠলো সাইমন
মেহেরাব বেশ অবাক হয়ে বোকা চাহনিতে ওদের দিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখছে বেশ পরিপাটি আছে। লক্ষ করলো ফ্লোরে পড়ে থাকা ছেলেটার দিকে। জড়োসড়ো ভাবে গুটিয়ে বসে আছে।
ছেলেটার নাম আহাদ
আহাদঃ ভাই আমার ভূল হয়ে গেছে আমি কখনো কোন কিছু নিয়ে মুখ খুলবো না।
সাইমনঃ কে জানতো তুই সেদিন ওখানে ছিলি৷ আমি তো ভাইকে বলছিলাম কেউ একজন হয়তো আমাদের দেখছে সে বলছে নেই কেউ। কিন্তু তুই সেই যে আমাকে হুমকি দিস। তোকে আমি এখানেই
- কুল বেবি কুল। এত ব্যস্ত হচ্ছো কেন। এখানে দেখছো কত মানুষ। ( পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠ)
সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেলো। সবথেকে বেশি অবাক হয়ে গেলো মেহেরাব। মেয়েটি আর কেউ নই প্রিয়ন্তি। মেহরাব শখ্ড হয়ে যায়।
সাইমনঃ এসো আমার মাফিয়া। তোমার অপেক্ষায় তো ছিলাম।
প্রিয়ন্তি এসে রাহাতের বুকের উপর পা উঠিয়ে দিয়ে
প্রিয়ন্তিঃ কি বলবি বল এখানে সবাই আছে। দেখি কে আমার বা*** ছিঁড়তে পারে। বল
রাহাতঃ না আপু আমি কিছু বলবো না। আমি কিছু দেখিনি ( কান্না করে হাত জোড় করে)
সাইমনঃ কিছু বলবি না। তোকে তো আজ
প্রিয়ন্তিঃ তোর বলা আর না বলা মাই ফুট।
কোমড় থেকে পিস্তল বের করেই রাহাতের কপাল বরাবর গুলি চালিয়ে দেয়। রাহাত মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সবাই চোখ বন্ধ করলে ও মেহেরাব চোখ বন্ধ করেনি। এটা প্রিয়ন্তির চোখ এড়ালো না। লক্ষ করলো ওর পাশে যেয়ে বসছিলো এই সেই ছেলেটা।
প্রিয়ন্তিঃ এই ছেলে এই দিকে আয়
মেহেরাব কাচুমাচু হয়ে এগিয়ে গেলো আর কাঁপতে লাগলো। সবাই চোখ খুললো
সাইমনঃ প্রিয়ন্তি চলো এখান থেকে। আর সরি গাইস তোমাদের সময় নষ্ট করে ফেললাম। এই হারামিটা এসে এখানেই ঢুকলো। আদনান ইনজয় পার্টি।
প্রিয়ন্তিঃ একটু কাজ আছে ওয়েট।
সাইমনঃ দেখছিস ছেলেটা ভয়তে কাচুমাচু হয়ে কাপতেছে কখন না জানি আবার প্যান্ট ভিজিয়ে দেয়। চল
প্রিয়ন্তিঃ আরে ওই ছেলে আমার পাশে যেয়ে বসছিলো। আমি একা মেয়ে দেখে কি লাইন মারতে গেছিলি
মেহেরাব চুপ
প্রিয়ন্তি মেহেরাবের গালে ঠাস ঠাস করে চড় বসিয়ে দেয়।
আইরিনঃ প্রিয়ন্তি আপু ও এখানে নতুন ও তেমন ছেলে না। খুব ভালো একটা ছেলে। ওকে ছেড়ে দিন।
প্রিয়ন্তিঃ কেন কে হয় তোর। ও তো কিছু দেখছে যদি বলে দেয়।
আইরিনঃ ও কিছু বলবে না ও কিছু দেখেনি। মেহেরাব কিছু দেখছিস।
মেহেরাবঃ ন ন ন না আপু ( কেপে কেপে)
সবাই অট্টহাসিতে হেসে উঠলো
সাইমনঃ প্রিয়ন্তি এসব আবুলের পিছে পড়ে না থেকে চল এখনি প্রশাসন আসবে।
প্রিয়ন্তিঃ এই শোন যদি কোন রকম মুখ খুলিস তবে তোকে এভাবে মেরে দিবো। কারো কিছু করার থাকবে না।
সাইমন প্রিয়ন্তিরা চলে গেলো। এতক্ষণে দিবার নেশাটা কেটে গেলো
দিবা হাহাহাহাহা করে হেসে উঠলো। সবাই অবাক হয়ে গেলো।
দিবাঃ ভার্সিটিতে বাঘ সেজেছিলে এখানে বন্ধুক দেখেই বিড়াল হয়ে গেলি। দেখ দেখ কেমন করে কাপছে
আইরিনঃ এই মেহেরাব চল এখান থেকে।
আইরিন মেহেরাবকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। দিবা হাসতে থাকে। সবাই সেখান থেকে বের হয়ে আছে।
মেহেরাব চুপ করে হাটছে কোন কথা বলছে না। আইরিন বকবক করেই যাচ্ছে।
আইরিনঃ এই মেহেরাব ( ডাক্কা মেরে)
মেহেরাবঃ হ হ হ্যা আপু ( সম্মতি ফিরলো)
আইরিনঃ ভয় পেয়ে আছিস এখনো। এসব ভূল যা। ওরা ভালো না। যে কাউকে মারতে দ্বিধা করে না৷
আদনান গাড়ি এনে ব্রেক করলো ওদের সামনে
আদনানঃ এভাবে চলে আসলে কেনো। গাড়িতে উঠো
আইরিন মেহেরাবকে নিয়ে গাড়িতে উঠলো তারপর চলে গেলো
প্রশাসনের লোক কিছুক্ষণ পর চলে আসলো
রিয়াদঃ কে খুন করছে
ক্লাবের সবাই মাথা নিচু করে আছে। রিয়াদ ধমকের সুরে বললো কিন্তু কেউ মুখ খুললো না। রিয়াদের ফোনটা বেজে উঠলো। রিসিভ করতেই
- কেসটা ধামাচাপা দিয়ে দিন তাতে আপনারই ভালো। গর্ত খুড়ে সাপ বের করেন না তাহলে শোবল খেতে হবে।
রিয়াদঃ কে বলছিস। হ্যালো হ্যালো
ফোনটা টুং টুং টুং করে কেটে গেলো।
রিয়াদ এখানকার ওসি। ওর আন্ডারে ১০ টা থানা। খবর পেয়েই ছুটে আসছে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কাউকেই ধরতে পারছে না।
রিয়াদঃ মিডিয়া জানাজানি হওয়ার আগে একে সরিয়ে ফেলো। ঠিক একদিন সবাইকে ঠিকি খুজে বের করবো।
পরেরদিন
ভার্সিটিতে
মেহেরাবঃ আপু আপু আপু
আইরিনঃ কি হয়েছে বল
মেহেরাবঃ প্রিয়ন্তির সম্পর্কে জানতে চায় বলো না। পার্কে দেখলাম শান্ত শীস্ত ভাবে বসে ছিলো তাহলে
আইরিনঃ চুপ কর এই বিষয়ে কোন কথা তুলবি না। মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল
মেহেরাবঃ না আমি শুনবো৷ এর আসল কাহিনি বলেন না প্লিজ
আইরিনঃ ওকে রাতে বাসায় আসিছ তখন শুনিস। প্রিয়ন্তিকে নিয়ে ভার্সিতে কোন কথা তুলবি না।
মেহেরাবঃ কেন আপু
আইরিনঃ ও এই শহরের মাফিয়া। কালকেটো একটা। যা ক্লাসে।
মেহেরাব চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়লো আইরিন ক্লাসে চলে গেলো
রোজিঃ মেহেরাব তুই এখানে দাড়িয়ে কেন। ক্লাসে চল
মেহেরাবঃ হুম আপনি যান আমি আসছি
রোজিঃ এখানে এখন থাকতে হবে না চল। আর আমাকে আপনি বলবি না।
মেহেরাবঃ এই মেয়েটা আবার সিগারেট খাচ্ছে ক্যাম্পাসে ওকে তো
মেহেরাব গতিতে যেয়ে সিগারেট টা নিয়ে ফেলে দিলো
মেহেরাবঃ এসব আপনাদের মুখে শোভা পায় না।
দিবাঃ তুই আবার আমারটা ফেলে দিছিস তোর এত বড় সাহস
রোজিঃ দিবা কিছু বলিস না। নতুন ও এখানে তাই কিছু জানে না।
দিবাঃ বেশি হিরোগিরি দেখাস এখানে আমার সাথে ছোট লোকের বাচ্চা
ঠাস ঠাস ঠাস
মেহেরাব মুখে হাত দিয়ে পিছন ঘুরে চলে আসলো
রোজিঃ কি দরকার ওর সাথে এসব করার। ওর সাথে কথা বলতে সবাই ভয় পাই। আর তুই এসেই। শোন ওর সাথে লাগতে যাস না তাহলে তোকে থাকতে দিবে না এখানে মেরে ও ফেলতে পারে।
মেহেরাবঃ ঠিক আছে
মেহেরাব সোজা প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে চলে গেলো রোজি হা হয়ে তাকিয়ে আছে
প্রিন্সিপালঃ মেহেরাব কোন সমস্যা
মেহেরাবঃ আসলে স্যার ঐ যে দিবা ক্যাম্পাসে বসে ওপেনে সিগারেট খায় এটা কিন্তু অন্য শিক্ষার্থী নষ্ট হওয়ার লক্ষ্মণ
ঠাস ঠাস ঠাস ঠাস
মেহেরাব দু গালে হাত দিয়ে স্টং দাড়িয়ে আছে
প্রিন্সিপালঃ তুই কার সম্পর্কে কি বলছিস ওকে তুই কতটুকু চিনিস। আমি ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলাম তুই থাকতে পারবি এই শহরে। পুরো গুম হয়ে যাবি। আসছিস পড়াশোনা করতে ভালভাবে পড়াশোনা কর। যা৷
মেহেরাব প্রিন্সিপাল স্যারের উপর বেশ অবাক হয়ে গেলো তার এই ব্যবহারে। মেহেরাব সিড়ি বেয়ে নেমে ক্লাসে চলে আসলো।
প্রিয়ন্তিঃ দিবা কি হয়েছে এত রেগে আসিছ কেনো
দিবাঃ ওই ক্ষ্যাত ছোট লোকের বাচ্চা আমার নামে প্রিন্সিপালের কাছে নালিশ করছে। প্রথম দিন এসে আমাকে আই লাভ ইউ বলছে
প্রিয়ন্তিঃ কি বলছিস তুই এসব ( অবাক হয়ে)
দিবাঃ ঠিকি বলছি ওকে না মারলে আমার আর শান্তি হবে না। ওকে আজ
প্রিয়ন্তির গলা শুকিয়ে গেলো পাশে বোতলের পানি নিয়ে ঢকঢক করে খাচ্ছে। দিবা অবাক হয়ে গেলো
দিবাঃ কি হয়েছে
প্রিয়ন্তিঃ কিছু না। ও ক্লাস থেকে বের হলে আমাকে খবর দিস বাকীটা আমি দেখে নিবো।
দিবাঃ ঠিক আছে।
প্রিয়ন্তি চলে গেলো আর ভাবছে কে ছেলেটা। নীল প্রথম দিন এসে আমাকে প্রপোজ করছিলো। প্রিয়ন্তি বেশ ঘাবড়ে যায়।
রোজিঃ তুই প্রিন্সিপালের রুমে গেছিলি কেন
মেহেরাবঃ এমনি কাজ ছিলো।
মেহেরাব ক্লাস থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে যেতেই ঘিরে ধরে ওকে। মেহেরাব বেশ অবাক হয়। ভিড় থেকে প্রিয়ন্তি হকি হাতে এনে মেহেরাবের পায়ে সজোরে বারি দেয় মেহেরাব বসে পড়ে
প্রিয়ন্তিঃ নতুন এসেই এতকিছু শুরু করে দিসিছ৷ আমার লোকের গায়ে হাত দিছিস দিবাকে প্রপোজ করিস। হিরো সাজছিস। তোর হিরোগিরি এখানে ( বলেই হকি দিয়ে পিঠ বরাবর বারি মারে৷ মেহেরাব ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো।)
শফিঃ আপু তুমি আমার কাছে দাও আমার প্রতিশোধ আমি নিবো। কিং হতে আসছে৷
প্রিয়ন্তিঃ এই বিড়াল হবে কিং হাহাহাহাহাহা।।
সবাই হাসিতে মেটে উঠলো
মেহেরাবকে ইচ্ছা মতো মারতে লাগলো প্রিয়ন্তি। সবাই শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে। মেহেরবা চোখ বন্ধ করবে এমন সময় দু গাড়ি পুলিশ চলে আসলো। সবাই সরে গেলো।
to be continue...................
0
6