" একটু চাওয়া 🥀💝 "
পর্ব : ০১
নীল : এইযে শুনুন.. আপনার ওড়নাটা ঠিক করে নিন৷রিক্সার চাকায় লাগতে পারে ওড়না,তখন কিন্তু আপনার ই ক্ষতি হবে৷
কথাটা শেষ করেই বাইক নিয়ে সামনে চলে গেল সে৷রিক্সাতে বসা তানজিদা ছেলেটার কথা শুনেই সঙ্গে সঙ্গে নিজের ওড়না ঠিক করে নিল৷কিন্তু ছেলেটার চেহারা দেখতে পেল না,কারণ নীল বাইক নিয়ে সামনে চলে গেছে অনেক দূর৷সাদা রঙের একটা শার্ট পড়া আছে৷
আসলেই তো ওড়না টা যদি চাকায় লেগে কোনো একটা দূর্ঘটনা হয়ে যেত তাহলে কতোই না খারাপ হতো ব্যাপার টা৷কিন্তু ছেলেটাকে যে ধন্যবাদ জানাবে তার সুযোগ টাও পেল না বেচারী৷তানজিদা নিজের গাড়ী করেই অফিসে যাচ্ছিল কিন্তু মাঝ রাস্তায় গাড়ী বন্ধ হয়ে আর স্টার্ট হচ্ছেনা৷আর তার উপর আবার আজকে অফিসে অনেকের ইন্টারভিউ নিতে হবে তাকে৷সেজন্য একটা রিক্সা নিয়ে যাচ্ছিল,তখনই তো এমনটা হলো৷
সেসব কথা বাদ,কিছুক্ষণের মধ্যেই সে অফিসে পোঁছে গেল৷ভাড়া মিটিয়ে সোজা চলে আসল নিজ কেবিনে৷১০.৩০ বাজে মানে আরো ৩০ মিনিট বাকি আছে ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার৷বসে বসে অফিসের ফাইলগুলো দেখতে লাগল৷
যথাসময়ে ইন্টারভিউ শুরু হলো৷বাইরে সবাই বসে আছে অনেক আশা নিয়ে৷কারণ কোম্পানীটায় স্টাফদের সাথে কোনো বাজে ব্যবহার করা হয়না আর বেতনও ভালো৷নামী দামী একটা কোম্পানী তানজিদার বাবার৷কিন্তু তার অবর্তমানে তানজিদা সবকিছু দেখাশোনা করছে৷
বাইরে সবাই দোয়া-প্রার্থনা করছে যাতে চাকরিটা পেয়ে যায়৷এক এক করে সবার ডাক পড়ল৷শেষের দিকে এসে ডাক পড়ল নীল নামের একটা ছেলের৷সে ভদ্রভাবে তানজিদার কেবিনে গেল৷..
নীল : আসসালামু আলাইকুম,ম্যাম৷ভেতরে আসতে পারি ?
তানজিদা : ওয়ালাইকুমুস সালাম,জ্বী ভেতরে আসুন৷ (টেবিলে রাখা ফাইলগুলো দেখতে দেখতেই বলল)
নীল : ধন্যবাদ...
সবার মতো নীলের সাথেও একই সাওয়াল-জওয়াব হলো 🤣৷ইন্টারভিউ শেষে যে যার যার বাড়ি চলে গেল ঠিকানা দিয়ে৷বেচারা নীল মন খারাপ করে বাসায় চলে আসল৷কারণ তানজিদা নীলের সাথে তেমন ভালো কোনো ব্যবহার করেনি৷সেজন্য সে ভেবে নিয়েছে তার চাকরিটা হবেনা৷
ছেলেটার নাম মো আবু বক্কর সিদ্দীক৷ডাকনাম নীল৷পরিবারে মা-বাবা,দুই বড় ভাই আছে৷দুইজনই বিবাহিত৷আর দুইজনের ই ছোট দুইটা ছেলে আছে৷কিন্তু নীল বাসায় থাকেনা৷বর্তমানে ঢাকায় থাকে সে৷রাগারাগি করে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে৷বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তার শেষ কথা - " আমি মরে যাবো কিন্তু এই বাসায় আর ফিরে আসবো না৷চিন্তা করো না,আমার কাফনের টাকাও দিতে হবেনা৷ " কান্না করতে করতে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে আজ ৩ বছর হলো৷বর্তমানে ওর একটা বন্ধুর বাসায় থাকে ঢাকায়৷বলতে গেলে নিজের ভাইয়ের মতোই৷তার মা-বাবাও নিজের ছেলের মতোই দেখে৷
নীল এর আগেও ২টা ভালো কোম্পানীতে কাজ করেছে কিন্তু ছেলেটার প্রচন্ড রাগ হওয়ায় সেখানে টিকতে পারেনি৷কোনো অন্যায় সহ্য করতে পারেনা৷হোক সেটা কোনো বয়স্ক কিংবা কোনো নেতা৷১ম অফিস থেকে বের করা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে৷এর জন্য ওই অফিসের ম্যানেজারকে থাপ্পর সহ্য করতে হয়েছে৷আর ২য় অফিস থেকে বের হয়ে গেছে নিজে থেকেই৷একে তো সারাক্ষণ কাজ করতে হয় আর একটু পর পর বস এসে পটরপটর করত৷সেজন্য বসের সাথে ঝগড়া করেছে কিন্তু নীলকে বের করে দিতে চায়নি সে৷কারণ জানে যে নীল অন্য সব স্টাফদের থেকে একটু মনোযোগ সহকারে সব কাজ করে৷কিন্তু নীল নিজেই বের হয়ে গেছে সেখান থেকে৷
৷
ইন্টারভিউ দিয়ে বাইক নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসল৷নিচে বাইক রেখে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগল৷..
মাহী : ওগো প্রাণের স্বামী..
নীল : আল্লাহ্ এই পাগলিটা এখনই আসল.. (আস্তে আস্তে বলল)
মাহী : কি হলো কি বললে শুনি ? (কিছুটা রেগে)
নীল : কই কি বললাম তাই ? আর এইভাবে যখন তখন না ডাকলে হয়না ?
মাহী : জ্বী নাহ্ হয়না আমার৷
নীল : তোমার ভাইয়া কোথায় ?
মাহী : ভাইয়া তো বাইরে গেছে তুমি বের হওয়ার একটু পরেই৷ওর গপ্পেন এর সাথে ঘুরতে গেছে৷
নীল : তুমি কি করে জানলে ? (কিছুটা অবাক হয়ে)
মাহী : ওর মেসেঞ্জারে সব চ্যাট দেখে ফেলা আমি ৷(কিছুটা ভাব নিল)
নীল : হায় আল্লাহ্
মাহী : যাও গো সোনা৷এখন বিশ্রাম করো তুমি৷
নীল : ধুন্যুবাদ
মাহী : এটা আবার কেমন কথা৷
নীল : আমি বলি আরকি হিহিহি
মাহী : এত্তো বড় একটা গাধা হিহি করতে লজ্জা করেনা?.
নীল : রুমে যাই একটু যেতে দাও
মাহী : যাও গো জান পাখি যাও..
নীল চুপচাপ উপরে চলে আসল রুমে৷নীলের বন্ধুর নাম সাগর৷ওর বাসাতেই থাকে৷আর মাহী হলো সাগরের আপন বোন৷মেয়েটা নীলকে ভালোবাসে খুব সেটা সাগরও জানে৷এই সাগর ই হয়তো একমাত্র ভাই যে এটা জানা সত্ত্বেও বন্ধুকে কিছু না বলে আরো উৎসাহ দিচ্ছে 😄৷মাহী এইবার ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্রী৷সবকিছু বোঝার যথেষ্ট জ্ঞান হয়েছে৷পরীর থেকে কোনো অংশে কম না সে৷তাদের থেকেও সুন্দর বলা চলে৷
নীল রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল৷চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে আছে আর পরিবারের সাথে কাটানো পুরাতন কথাগুলো ভাবছে৷হঠাৎ গালের উপর গরম নিঃশ্বাস অনুভব করতেই চোখ খুলে দেখে মাহী একদম ওর কাছাকাছি৷নীলের চোখ খোলা দেখে ওর গালে একটা চুমু এঁকে দিল.... 😳
.
.
.
[.......... চলবে ..........]
মাত্র শুরু করলাম তাই তেমন ভালো নাও হতে পারে 🙂☺
0
2