দুষ্টু চাচাতো বোন যখন মিষ্টি গার্লফ্রেন্ড
পর্বঃ-২০
আবিরের আম্মুঃঠাসসসসসসস তোকে বড়দের মাঝে কথূ বলতে বলেছে কে??
(মিলিকে থাপ্পড় দিলো।মিলি চোখ মুছতে মুছতে রাগ করে চলে আসলো।রুমে এসেই মিলি আবির কে কল দিচ্ছে সব কিছু জানানোর জন্য কিন্তু ফোন বাজছে আবির কল রিসিভ করছে না।অনেক বার কল দিলো কিন্তু কল রিসিভের কোনো খবর ই নেই)
মিলিঃআহহহহহহ ভাইয়া কলটা তো রিসিভ করো।ধ্যাত আর কত কল দিলে রিসিভ করবা তুমি?
(অপর দিকে)
(আধুর আম্মু রুমে যাচ্ছি তখন)
আধুর আম্মুঃ(আধুকে)তোর মুখের দিকে তাকাতে ইচ্ছে হয় না।ওই মুক নিয়ে আমার সামনে আর আসিস না।(চোখের পানি মুছলো)
আবিরের আম্মুঃ(আধুর আম্মুকে)আহহহহা এগুলো কি বলছো তুমি?আধু ছোট মানুষ ভুল করেছে করেছে তাই বলে এভাবে বলবে?
আধুর আম্মুঃ(একটু কড়া গলায়)সে ভুল করেছে এই কথাটা যদি আপনি আগে বুঝতেন তাহলে আধুকে ওইভাবে অপবাদ গুলো দিতেন না।আর অপরাধ করলে আধুও একা করেনি আর আধুকে তো আপনারাই ছোট বলতেন তাহলে সে আবির কে কিভাবে ফাঁসাতে পারে?যায় হোক আমি তো মা তাই মেয়েকে বলা বাজে কথা গুলো আমার কলিজাতে এসে লেগেছে।
দাদিঃআধু বেশি দুষ্টামী করতো তাই হয় তো তাকে বকাঝকা করছে।এগুলো তেমন কোনো কথা না বউ মা।
আধুর আম্মুঃসে গুলো আপনাদের কাছে তেমন না হতে পারে কিন্তু আমার কাছে কথা গুলো পাহাড়ের চাইতেও ওজন বেশি।আমি তো কাউকে বলিনি যে আমার ছোট মেয়েটাকে এটা করেছে সেটা করে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে।
দাদিঃকি বলতে চাইছো কি তুমি বউ মা।
আধুর আম্মুঃকি আর বলবো মা সকাল থেকেই তো চুপই আছি আমার তেমন কিছু বলার নেই।
আবিরের আম্মুঃযায় হোক মা কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।আমরা অতি শীগ্রই মিরার আবিরের বিয়ে দিয়ে সব পরিস্থিতি ঠিক করে নিবো।এখন এগুলো নিয়ে কথা না বাড়ানোই ভাল।
আধুর আম্মুঃকথা আর বাড়ানোর কি আছে?কথা যা বলার তা তো আগেই বলে ফেলেছেন আর নতুন করে কিছু বলার থাকলে বলেন আমি আধুকে ডাকছি।
(বলেই আধুর আম্মু চলে গেলো।আর অপর দিকে আধু)
(আধু দরজা লাগিয়ে ওয়াশরুমে ঝর্নার নিচে বসে আছে।রুমে এসেই সে ওয়াশরুমে এসেছে।হাঁটুর সাথে মুখটা গুঁজে ঝর্নার পানি গুলোর সাথে আধুর চোখের পানি গুলো প্রতিযোগিতা করছে যে কে আগে বের হবে।)
আধুঃ(কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত)আমিইই আমিইই কি এমন করেছি যে সবাই মিলে আমাকে এতবড় শাস্তি দিচ্ছে?(চিৎকার দিয়ে)কি করেছি আমি?কেনো হবে আমার সাথে এমন?আমি তো শুধু ভালোবেসেছি।ভালোবাসা কি অন্যায়?না কি যোগ্যতার মাপকাঠিতে ভালোবাসা হয় যোগ্যতা আমার নেই?আমি কি এক্কেবারে অযোগ্য?কেউ আমাকে ভালোবাসে না।যাদের কে কাছের ভাবতাম আজকে তারাই আমাকে ছুঁড়ে ফেললো।কেউ আমার মুখটা দেখতে চাই না।কি করবো আমাকে বলে দাও?কি করলে তোমরা সবাই মুক্ত হবে?(যেনো পাগলের মতো হয়ে)কি করবো আমি?কি করবো?সবাই তো আমার মৃত্যু কামনা করে আমি তো সবার কাছে বোঝা তো কি করি?(দাঁতে আঙ্গুল কাটতে কাটতে।ভিজে কাপড়ে পাগলদের মতো করে দাঁড়ালো।ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে কি যেনো খুঁজতে লাগলো।)(আবার বলতে লাগলো)আমাকে কেউ চাই না আমি একটা বোঝা।(অনেক খোঁজার পরে একটা ব্লেড পেলো।ধার গুলো চিকচিক চিকচিক করছে।)
আধুঃ(ব্লেড টা হাতে নিয়ে মানুষিক রোগীদের মত করে)হ্যাঁ পেয়েছি এটাতে সব শান্ত করে দিতে পারবে।বাসাতে শান্তি আসবে।আমিও কারো কাছে বোঝা থাকলাম না।সবাইকে মুক্ত করে দিবো।(তারপর হাসতে লাগলো।আসতে আসতে ব্লেড টা হাতের কাছে নিয়ে এসে দিলো এক টান)আহহহহহহহহহহহহ।(আবার আরেকটা টান)আহহহহহহহহহহহহহ,উফফফফফফফফ(চোখ দিয়ে লোনা পানি বের হচ্ছে বুক ফেটে চিৎকার।আরেকটা টান দিয়েই)আল্লাহ গো আহহহহহহহ(জিহ্বাতে কামড় দিয়ে ব্যাথা সহ্য করার চেষ্টা করছে।)হাত দিয়ে ফিনকি আকারে রক্ত বের হতে লাগলো।কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ততে চারপাশ বিছানা রঙিন হয়ে গেলো।আসতে আসতে শরীরের শক্তি ও হারাচ্ছে চোখ কেমন যেনে অন্ধকার হয়ে আসলো।
আধুঃ(রক্তের দিকে তাকিয়ে)তোরাও আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিস তাই না?তোরাও আনাকে পছন্দ করিস না?আমাকে ভালোবাসিস না।(হাসতে লাগলো)আহহহহহহহহহহ
(আধুর আম্মু আধুর রুমে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো।আধুর এমন আত্ম চিৎকার শুনে দরজার কাছে আসলো)
আধুর আম্মুঃ(হাজারো ভুল করলেও মা তো কখনো দুরে সরিয়ে দিতে পারে না।নক করে)আধু??আধু???আধু??(টোকা দিচ্ছে দরজায় কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ নেই।এবার জোরে জোরা দরজায় বাড়ি দিয়ে)আধু???কি হলো কথা বল?আধু?মা আমার কথা বল?
(আধুর মায়ের বুকের হার্টবিট কেমন যেনো বাড়তে লাগলো।এবার চিৎকার দিয়ে)আধুউউউ?কথা বল মা?আধুউউউ?(এবার কেঁদে দিয়েছে)কি হলো কথা বল?
(মিলিও দৌড়িয়ে আসলো চাচির চিৎকারে)
মিলিঃকি হয়েছে ছোট আম্মু?
আধুর আম্মুঃ(কেঁদে কেঁদে)আধুর কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছি না শুধু একবার চিৎকার শুনতে পেয়েছি।ও মিলি আমার মেয়েটা কিছু করে দেয় নি তো মা।দেখ না মিলি দেখ?
মিলিঃছোট আম্মু তুমি শান্ত হও আমি দেখছি।আধুউ আপু দরজা খুলো।আধু আপু আধু আপু??
(এদিকে মিলি ডাকছে আধুর আম্মু জানালার পার গেলো।সব গ্লাস গুলো নাড়িয়ে দেখলো সব গুলোই এক করা শুধু একটা কেমন যেনো সরানো যাচ্ছে।)
(মিলি ডাকছে আর এদিকে আধুর আম্মু ও গ্লাসটা সরিয়েছে।গ্লাস সরানোর পরে যা দেখলো আধুর আম্মু তা দেখার জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না)
আধুর আম্মুঃ(গ্লাস খুলেই কম্পিত চিৎকার)আধুউউউউউউউ??(তারপরেই আধুর আম্মু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।আবিরের আম্মু আর দাদি চিৎকার শুনে মুহুর্তে দৌড়িয়ে।এসে দেখে আধুর আম্মু জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে পড়ে আছে।মিলি দৌড়ে গিয়ে গ্লাসের ভেতরে দেখে আধু ফ্লোরে নিস্তেজ দেহ পড়ে আছে আর আশেপাশে রক্তের নদী বইছে।বিছানার সাদা চাদরে রক্ততে অন্য রকম রং ধারন করেছে।আর আধু বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে)
মিলিঃ(কাঁদতে কাঁদতে)নাহহহহহ আধু আপুউউউউ??এটা তুমি কি করেছো আধু আপু?কি করলে তুমি এটা?আম্মুউউ তাড়াতাড়ি আসো?দাদি??
(আবিরের আম্মু এসে আধুকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে মুখে হাত।দাদি তো চিৎকার দিয়ে উঠেছে)
দাদিঃআধুরে কি করেছিস রে বোন তুই এটা?ওই কেউ দরজা টা খুল রে মিলি আবিরকে কল দে।
মিলিঃ(কাঁদতে কাঁদতে)কাউকে কল দেওয়ার সময় নই এখন প্লিজ দরজায় ধাক্কা দাও সবাই মিলে।নইতো আধু আপুকে আমাদের মাঝে আর কোনো দিন পাবে না।
(মিলি ধাক্কা দিচ্ছে দরজায় কিন্তু নড়াতেও পারছে না।)
আবিরের আম্মুঃ(এখন সেও কাঁদছে)দরজা টা যেভাবে হোক খুলরে মিলি।ভেঙে ফেল?কেনো করলি এমন তুই কেনো??
মিলিঃপ্লিজ আম্মু এখন অন্তত তোমার নাটক বন্ধ করো। আধু আপুর কিছু হলে তার জন্য তোমরাই দায়ী।(কেঁদে কেঁদে)
(তখনি আবির আর তার আব্বুর গলার স্বর শোনা গেলো।মিলি দেরি না করে দিলো দৌড়।)
(আবির কেবল কাজ শেষ করে আসলো)
মিলিঃ(আবিরের সামনে গিয়ে হাঁপা তে হাঁপাতে)ভাইয়া আধু আপু আধু আপু(আর কিছু বলতে পারলো না কেঁদে দিলো)
(আবির ও বুঝতে বাকি থাকলো না যে কিছু খারাপ হয়েছে।আবির দিলো দৌড় সাথে সাথে আবিরের আব্বুও।আবির দেখে নিচে তার ছোট আম্মু জ্ঞান হারিয়ে শুয়ে।সাথে সাথে দরজায় ধাক্কা।)
আবিরঃ(ঘাবরে গেছে শরীর একটুতেই ঘেমে একাকার)আব্বু ধাক্কা দাও প্লিজ।
(আবির আর তার আব্বু সমান তালে ধাক্কা দিতে লাগলো কিছুক্ষন