#প্রিয়জন নই প্রয়োজন
#
#পর্বঃ২
ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় দিন পা রাখতে না রাখতে
এমন একটা কান্ড দেখব সেটা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি...!
ক্যাম্পাসের মাঠে রুবাই সজ্ঞে বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় মিমি কই থেকে যেন উড়ে এসে লাঠি দিয়ে রুবাই কে উরাধুরা মারতে লাগলো
দুইটা বারি দিতেই তৃতীয় বারিটা আমি আটকে বলতে লাগলাম
কি ব্যাপার রুবাইকে মারছেন কেন তার অপরাধ কি...? (আমি)
আপনিও যেমন আপনার বন্ধুও ঠিক তেমন (রেগে হাফাতে হাফাতে বলল)
কি করেছে ও সেটা তো এড লিস্ট বলবেন...? (আমি)
জয়াকে বাজেভাবে চিঠিতে প্রোপজ করেছে সেটা আবার জয়ার ব্যাগে গুজে দিয়েছিলো। জয়ার মা চিঠিটা দেখে জয়াকে অনেক বকা দেই। যার কারনে সে এখন ক্যাপাসে আসতে পারছে না (মিমি)
মিমি যা বলছে সেটা কি সত্যিই (রুবাইকে উদ্দেশ্য করে)
জয়াকে আমি প্রোপজ করেছিলাম ঠিক কিন্তু বাজেভাবে করেনি তো (রুবাই)
আরেকবার মিথ্যা কথা বললে এই লাঠি দিয়ে তোর মাথা ফাটিয়ে ফেলব বদ ছেলে কোথাকার (মিমি রেগে বলল)
আপনি এক্টু শান্ত হন প্লিজ। রুবাই সত্যিই করে বল জয়াকে বাজে প্রোপজাল্টা দিয়েছিলি কিনা (আমি রেগে)
তোরা কেন বুঝতে পারছিস না। আমি জয়াকে ভিশন ভালোবাসি। ওকে কেন বাজে ভাবে প্রোপজ করতে যাবো (হতাশ হয়ে বলল রুবাই)
তাহলে অই চিঠিটা জয়ার ব্যাগে কে দিলো (মিমি)
আমি কীভাবে বলবো (রুবাই)
এই লাঠির বারি খেলে সবই বলতে পারবি (এই বলে যেই বারি মারতে যাবে এমন সময়
জয়া এসে বলতে লাগলো
মিমি থাম ওর কোনো দোষ নেই (জয়া)
কি বলছিস দোষ নেই মানে (মিমি অবাক হয়ে মারা বাদ দিয়ে বলল)
রুবাই আমাকে চিঠি দিয়েছিলো ঠিকই কিন্তু সেটা সরিয়ে রফিক বাজে চিঠিটা আমার ব্যাগে গুজে দেই ফলে যা হবার তাই হলো (জয়া)
দেখলেন তো শুধু শুধু রুবাইকে এতক্ষণ মারলেন (মিমিকে উদ্দেশ্য করে বললাম )
সরি রুবাই (মিমি মাথা নিচু করে)
ইটস অকে আর হ্যা আজ জয়াকে কিছু বলতে চাই (রুবাই)
হ্যা বলো (জয়া)
আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি সেটা অবশ্য তুমি জানো। কিন্তু কোনো না কোনো কারনে আমার প্রোপজাল্টা গ্রহন করতে পারছো না তাই তো (রুবাই)
নিশ্চুপ (জয়া)
আজ একবার তোমার মুখে শুনতে চাই আমাকে ভালোবাসো কিনা
হ্যা
অথবা
না
যদি উত্তরে না আসে তাহলে কথা দিচ্ছি আজকের পর থেকে আর কোনোদিন তোমাকে বিরক্ত করব না। এখন তুমি নিশ্চিতে বলতে পারো বললো... (রুবাই জিজ্ঞেস করে বলল)
নিশ্চুপ (জয়া)
জয়া ভালোবাসলে আজকেই বলে দে এভাবে ঝুলিয়ে রাখা ঠিক হবে না (মিমি)
মিমি ঠিকই বলছে ভালোবাসলে এভাবে
ঝুলিয়ে রাখা ঠিক হবে না (আমি)
নিশ্চুপ (জয়া)
জয়া চুপ করে থাকো না কিছু তো একটা বললো (রুবাই)
নিশ্চুপ (জয়া)
দোস্ত বুঝতে পারছি জয়া আমাকে কখনো ভালোবাসে নাই। চল ক্লাসে যায় (এই বলে যেই রুবাই ক্লাসে যেতে ধরল ঠিক তখনই জয়া পিছন দিক থেকে জয়া বলে উঠলো
রুবাই দাড়াও (জয়া)
দাড়িয়ে কি হবে আমার উত্তর তো আমি পেয়ে গেছি (রুবাই)
আমি কি একবারও বলছি তোমাকে ভালোবাসি না (মুখে একরাশ হাসি নিয়ে)
তারমানে তুমিও আমাকে ভালোবাসো (রুবাই)
গাধা একটা কিছুই বুঝে না (জয়া রুবাইয়ের সামনে গিয়ে)
বাহ কি চমৎকার রোমাঞ্চকর মুহূর্ত (মিমি পিছন থেকে বলে উঠলো)
ইয়ে মানে (জয়া আমতা আমতা করে বলতেই মিমি বলে উঠলো
হইছে আর বলতে হবে না। এখন আমাদের কে ট্রিট দিতে হবে (মিমি)
হ্যা হ্যা সেটা তো অবশ্যই (রুবাই)
সরি তখন এক্টু রেগে থাকার কারনে (রুবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল মিমি)
এগুলো কোনো ব্যাপার না।আর হ্যা আজ থেকে যেহেতু জয়া সাথে রিলেশনে জড়িয়ে গেলাম। তো তোমরা দুইজন ভালো ফেন্ড হতে পারো (রুবাই)
অসম্ভব ওর সাথে জীবনেও ফেন্ডসিপ করবো না (মিমি)
এই যে হেলো আমার কোনো শখ নেই আপনার সাথে ফেন্ডসিপ করতে (আমি)
মিমি ফেন্ডসিপ করে নে প্লিজ (জয়া)
সরি জয়া এর সজ্ঞে ফেন্ডসিপ করতে পারবো না (মিমি)
জয়া ওকে জুর করছো কেন ফেন্ডসিপ তো জুর করে হই না। তাছাড়া প্রথমে যেহেতু আমাকে ইন্সারট করেছে সুতরাং আমিও ওনার সজ্ঞে ফেন্ড সিপ করবো না (আমি)
জয়া ওনার সাথে ফেন্ডসিপ করার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই সুতরাং এ বিষয় নিয়ে কথা না বললে অনেক খুশি হবো (মিমি)
আচ্ছা ঠিক আছে সেটা তোদের ব্যাপার ফেন্ডসিপ করবি কি না। এখন চল (জয়া)
কোথায়...? (মিমি)
রেস্টুরেন্টে (জয়া)
রনিও আমাদের সাথে আই (রুবাই)
ওনি গেলে আমি যাবো না (আমি)
জয়া তুইও ভালো করে শুনে রাখ এই বদ লোকটা গেলে আমিও যাবো না (মিমি)
এই যে হেলো কথাবার্তা এক্টু ভালো করে বলুন (আমি)
আপনার কাছ থেকে আমাকে শিখতে হবে (মিমি)
আরে থাম থাম তোরা কি শুরু করেছিস বলতো (জয়া)
ধুর এখানে আর এক মুহুর্তও থাকা যাবে না (এই বলে মিমি রাগে গজ গজ করতে চলে গেলো আর এইদিকে সবাই হা হয়ে মিমির চলে যাওয়ার প্রানে তাকিয়ে রইল। কি থেকে কি হলো কেউ কিছুই বুঝতে পারলো না।
জয়া তোমার বান্ধবী এমন কেন (আমি)
ও এক্টু এইরকমই যাকে সহ্য করতে না পারে তার সাথে ফেন্ড সিপ করবে তো দুরের কথা কোনো কথাই বলতে চাই না (জয়া)
আচ্ছা ঠিক আছে। মিমির থেকে নই এক্টু দুরের থাকবো। আর হ্যা তোমাদের নতুন রিলেশনে অভিনন্দন (আমি)
ধন্যবাদ (জয়া)
আমার বন্ধুটাকে এক্টু দেখে রেখো কেমন (আমি)
হ্যা হ্যা সেটা তো অবশ্যই (জয়া)
বেস রুবাই আর জয়া রিলেশন জড়িয়ে গেলো। রুবাই আমার কলেজ লাইফের বন্ধু আর জয়ার কথা আমাকে অনেক বারি বলছে কিন্তু সে জয়াই যে এই জয়া হবে সেটা কল্পনায় করতে পারেনি। যাই হক বন্ধুটা একলা থেকে ডাবল হয়ে গেলো।
বেস এইভাবেই ক্যাম্পাসের সকলের কাছে প্রায় ভালোই বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো কিন্তু মিমির সাথে কোনোভাবেই বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো না। সেটা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা ও আমার নেই...
তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম
মিমি কেন জানি আমাকে সহ্য করতে পারে না। আমি ও মিমির থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করি। এভাবেই সবার সাথে ভালোই দিনকাল চলছিলো
একদিন হঠাৎ করে ক্লাস রুম থেকে বের হতেই পিছন থেকে রুবাই ধাক্কা মারাই মিমির উপর পড়ে যাওয়াই মিমি বলে উঠলো
এইটা কি হলো... (ভিশন রেগে)
আসলে....( বলতেই
ঠাসসসস (করে সজোরে থাপ্পড় মেরে দিলো)
বেস পিছন থেকে জয়া এসে মিমিকে বলতে লাগলো
মিমি এইটা কি করলি (জয়া)
হ্যা যা করেছি ভালোই করেছি (রেগে বলল)
সামন্য একটা বিষয় নিয়ে রনিকে থাপ্পড় মারতে পারলি (জয়া)
মিমি ও তো আর ইচ্ছে করে তোমার উপর পড়েনি আমি একটু ফাজলামো করে ধাক্কা মেরেছিলাম। থাপ্পড়টা মারতে হলে আমাকে মারতে ওকে কেন মারলে (রুবাই)
নিশ্চুপ (মিমি)
এইদিকে আমি তো কল্পনা ও করতে পারিনি মিমি আমাকে এইভাবে থাপ্পড় মারবে। বেস আমাকে চুপ হয়ে যাওয়া দেখে জয়া বলে উঠলো
রনি প্লিজ মন খারাপ করিশ না। মিমির হয়ে আমি তোর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি (জয়া)
জয়ার কথা শুনে দ্বিতীয় কোনো কথা না বলে সেখান থেকে বাড়িত চলে আসলাম।
বাড়িতে এসে মাথায় একটা কথাই শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে। মিমি কীভাবে আমাকে থাপ্পড় মারতে পারলো এমনটা তো হবার কথা ছিলো না। যাই হক মিমির সাথে আজকের পর থেকে একেবারেই কথা বলা বন্ধ করব।
বেস যে ভাবা সেই কাজ তারপর থেকে ক্যাম্পাসে গেলে কোনো সময় মিমির সাথে কথা তো বলতামই না। যদি সামনে এসে পড়তো কখনো তার চেহারা ফিরে ও দেখতাম না।
এভাবে কেটে গেলো ১ একটা বছর। বেস দেখতে দেখতে এক্সাম ও চলে আসলো। আমি আমার মতো পড়াশোনা শুরু করে দিলাম এক্সাম ও কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেলো
রেজাল্টের দিন সবাই ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছি এর মধ্যে মিমি আমাদের আড্ডায় যোগ হলো। বেস মিমি বসা থেকে উঠতে যাবো ঠিক তখন জয়া আর রুবাই বলে উঠলো
কিরে উঠলি কেন (জয়া)
আমার এক্টু অইদিকে কাজ আছে যেতে হবে (আমি)
বুঝতে পারছি কেন এখানে থাকতে চাচ্ছিস না।(জয়া)
তোরা আড্ডা দে আমি আসছি (এই বলে সেখান থেকে সরে গেলাম)
১০ঃ ৩০ মিনিটে রেজাল্ট পাবলিশ করা হলো সবার আগে গিয়ে আমার রেজাল্ট দেখতেই খুশিতে আত্তহারা হয়ে গেলাম । বেস তারপর কোনো কিছু না ভেবে জয়া আর রুবাই যেখানে আড্ডা দিচ্ছে সেখানে যেতেই লক্ষ্য করলাম মিমি তাদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে তবে মন্টা ভিশন খারাপ করে তাকে দেখেই সেটা বুঝা যাচ্ছে। বেস সেদিকে কোনো খেয়াল না করে রুবাই আর জয়ার উদ্দেশ্য বলতে লাগলাম
কি আগেই বলেছিলাম না রেজাল্ট ভালো করবো দেখলি তো (খুশিতে আত্তহারা হয়ে)
হ্যা দেখলাম তো আমাদেরটা ভালোই রেজাল্ট আসছে কিন্তু মিমির রেজাল্টটা ভালো হইনি (জয়া)
সেটা তার ব্যাপার (একথা বলতেই মিমি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করলো।
আসলে একটা কথা কি জানেন এক্সামের সময় জয়া আর রুবাইকে হেল্প করেছি ঠিকই কিন্তু মিমিকে এক্টু ও দেখাইনি যার ফলে আজ রেজাল্ট একদমই খারাপ করে ফেলছে সে
এভাবেই চলছিলো দিনকাল একদিন ক্যাম্পাসে বসে ফেসবুকিং করছিলাম এমন মিমি এসে বলল....?
!
!
(চলবে)
0
13
Written by
soyed
soyed
4 years ago
Written by
soyed
soyed
4 years ago