love story

2 17
Avatar for shohid75
3 years ago

পর্ব: ১
আজ ভার্সিটির প্রথম দিন। অনেকটা বিরক্তি নিয়ে ভার্সিটিতে পা দিয়েছি। এই ভার্সিটিতে আমি ভর্তি হতে চাই নি কিন্তু বাবা মুখের উপর কিছু বলতেও পারিনি। এই ভার্সিটিটা রের্গিং এর বিখ্যাত তাই চারদিকে চোখ বুলিয়ে হাটছি। কখন বিপদের মুখে পড়তে হয় বলা যায় না। আসে পাশের সবাই মর্ডান ড্রেস পরা। বুঝাই যাচ্ছে বড়লোক বাবা ছানা সবগুলো। অবনি একবার ওদের দিকে তাকিয়ে নিজের দিকে তাকালো। সাদা জামার সাথে মেরুন রং এর ওড়না পরেছে সে। না খারাপ লাগছেনা তাকে ভালোই লাগছে। নিজেকে নিজে কথাটা বলে মুচকি হেসে সামনে হাঁটতেই হাসি গায়েব হয়ে গেলো। যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। চারপাশে তাকাতে তাকাতে বাঘের গুহায় এসে পড়েছি। সামনে কিছু ছেলে মেয়ে রের্গিং করছে। অবনি আল্লাহর নাম নিতে নিতে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে একটা মেয়ে ডেকে উঠলো,
-"এই যে মামনি কোথায় পালাচ্ছো? এইদিকে আসো।"
অবনির মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো। এইসব রের্গিং সহ্য করতে পারেনা আর যারা এইসব করে তাদের দুই চোখে দেখতে পারেনা। অবনি বিরক্তি নিয়ে তাদের কাছে গেলো।
দুটো মেয়ে তিনটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। মেয়ে দুটো জিন্স আর শার্ট পরে আছে। দেখতে সুন্দরি বলা চলে। একটা ছেলে বাইকে বসে সিগারেট ফুকছে আর ফোনে গেম খেলছে তার কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। ছেলে দেখতে বেশ। ব্লাক টি-শার্ট আর জিন্স পরেছে। হাতে দামি ঘড়ি। মাথায় ঝাকরা চুল, চাপ দাড়ি, চোখে সানগ্লাস। এককথায় মেয়েদের জাতীয় খাবার ক্রাশ খাওয়ার মতো। বাকি দুটো তার পাশেই বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। তারাও চলে টাইপ। মেয়ে দুজনের মধ্যে একজন এগিয়ে এসে বলল,
-"কি মামনি পালাছিলে বুজি?"
-"পালাতে যাবো কেনো? আমার ক্লাস আছে ক্লাসে যাচ্ছিলাম।" বিরক্তি নিয়ে বলল অবনি।
-"বাহ! মামনির দেখি খুব মুখ চলে। সিনিয়রদের যে সম্মান দিতে হয় যানো না?"
-"আমার লেট হচ্ছে। কিছু বলার থাকলে বলুন।"
পাশের মেয়েটা রেগে এসে বলল,"এই মেয়ে এটিটিউড কাকে দেখাচ্ছো? যতখন আমরা না বলবো এখানে এইভাবে দাড়িয়ে থাকবে।"
অবনি চুপ করে সেখানেই দাড়িয়ে রইলো। এদের খেপালে যে তার ভার্সিটি লাইফটা নরক বানিয়ে দেবে সে যানে। পুরো স্টাডি করেই এই ভার্সিটিতে পা দিয়েছে।
ছেলে দুটোর মধ্যে একটা বলল,"কি জিনিস দেখ। এইখানে এমন মেয়ে আর একটাও দেখেনি। এই ড্রেস আর এটিটিউড এ কি না লাগছে উফফ মামা। "
পাশে ছেলেটা বলল,"দিয়া না থাকলে এখনি পটিয়ে নিতাম সোহান। কি কিউট মেয়েটা।"
ওদের দুজনের কথাশুনে মেঘ ফোন থেকে মাথা তুলে সামনে তাকালো। অবনির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। কোমরে নিচ পর্যন্ত লম্বা চুল, বড় বড় চোখ, চোখের পাপড়ি ঘন, গোলাপি ঠোঁটগুলো একটু পর পর দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরছে। সে দিকে তাকিয়ে মেঘে যেনো একটা হার্ট বিট মিস করে গেলো। অবনি বার বার ঘড়ি দেখছে আর মুখের সামনে অবাধ্য চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে।
মেঘ সোহান আর সাদের দিকে তাকিয়ে বলল,"নিজেদের নজর ঠিক কর তোদের ভাবি হয়।"
মেঘের কথাশুনে সোহান আর সাদ হা হয়ে গেলো। মেঘ ওদের পাত্তা না দিয়ে দিয়া আর জেরিনের কাছে গিয়ে বলল,
-"একে এখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছিস কেনো?"
জেরিন বলল,"জুনিয়র হয়ে আমাদের এটিটিউড দেখাচ্ছিলো। কতো বড় সাহস ওর।"
মেঘ অবনির কাছে গিয়ে বলল,
-"এই মেয় নাম কি তোমার? কোন ডিপাটমেন্ট?"
অবনি কেনো যেনো এইছেলেকে ভয় লাগছে। কি লম্বা আর গম্ভীরভাবে কথা বলছে। স্কুলের ম্যাথ টিচারের কথা মনে পড়ে যায় এমন ভয়েস শুনলে। অবনি ঢোক গিলে বলল,
-"আমার নাম অবন্তিকা অবনি। সাইকোলজি ডিপাটমেন্ট ফাস্ট ইয়ার।"
মেঘ ভ্রু কুঁচকে আরো গম্ভীর গলায় বলল,
-"তা মিস অবন্তিকা অবনি আপনি কি বড়দের সম্মান করতে জানেন না? এইবার থেকে প্রতিদিন ভার্সিটিতে ঢুকে প্রথমে আমাদের সালাম দিয়ে ক্লাসে যাবেন মনে থাকবে?"
অবনি কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,
-"জি মনে থাকবে। আমি কি এখন যেতে পারি?"
মেঘ বাকা হেসে বলল,
-"হুম যেতে পারো তার আগে একটা গিফট নিয়ে যাও।"
অবনি কৌতুহলি হয়ে মেঘের দিকে তাকালো। মেঘ জেরিনকে ডেকে বলল,
-"তোর গাড়িতে যে গিফট বক্সটা আছে নিয়ে আয়তো।"
জেরিন হাসতে হাসতে বলল এক্ষুনি নিয়ে আসছি।
অবনির এদের হাবভাব ভালোলাগছে না।
জেরিন বক্সটা এনে মেঘকে দিলো। মেঘ হেসে বলল,"তো মিস অবন্তিকা অবনি আপনি এই গিফট বক্সটা এখনি এখানে আমাদের সামনে খুলবেন।"
অবনি বক্সটা হাতে নিয়ে একবার বক্সটাকে দেখছে আরেকবার ওদের দিকে তাকাচ্ছে। সবাই কেমন রহস্যময় হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। অবনি আল্লাহর নাম নিয়ে বক্সটা খুললো। তারপর ভাবলেশহীনভাবে একবার বক্স আরেকবার মেঘদের দিকে তাকাচ্ছে। বক্সে তেলাপোকা কিলবিল করছে। অবনি মোটেও তেলাপোকা ভয় পায় না। কিন্তু ওরা যেভাবে উত্‍সুকভাবে তাকিয়ে আছে অবনির মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি উদয় হলো। অবনি আহহহ তেলাপোকা বলে চিত্‍কার দিয়ে বক্সের সব তেলাপোকা ওদের দিকে ছুড়ে মেরে দৌড়ে ক্লাসের দিকে চলে গেলো। কিছুদূর গিয়ে ওদের দিকে তাকালো। দিয়া আর জেরিন তেলাপোকা বলে চিত্‍কার করে গলা পাটিয়ে ফেলছে। মেঘ সরে যাওয়ায় তার গায়ে পড়েনি। সোহান আর সাদ দূরে ছিলো বিদায় তারাও বেঁচে গেলো। সাদ দৌড়ে গিয়ে দিয়ার মাথা আর জামা কাপড় থেকে তেলাপোকা সরাছে। জেরিন তেলাপোকা সরাচ্ছে কম লাফাচ্ছে বেশী। অবনি দূর থেকে এইসব দেখে হাসতে হাসতে ক্লাসে চলে গেলো।
মেঘ অবনিকে হাসতে দেখে ঠিকই বুজেছে অবনি ইচ্ছে করে করেছে। মেঘের মুখেও হাসি ফুটে উঠলো।
মনে মনে বলল,"অবন্তিকা অবনি তোমাকে তো আমার চাই এট এনি কস্ট। তুমি শুধু আমার। তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব। প্রতিটা মুহুর্ত তুমি আমার নজরে থাকবে।"
(কমন একটা থিম। বাট গল্পটা নিজের মতো করেই লিখবো। গল্পটা কাল্পনিক তাই বাস্তবতা খুঁজবেনা। কিছুকিছু জায়গায় নিজে এক্সপেরিয়েন্স এড করবো। অনেকদিন ধরে গল্পটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই আজ দিয়ে দিলাম। আপনাদের রেসপন্স পেলে কনটিনিউ করবো। অভ্রটাও দিব টেনশন নিয়েনা। গল্প সম্পর্কে মতামত জানাবেন।)

9
$ 0.00
Avatar for shohid75
3 years ago

Comments

wow nice Romantic story...

$ 0.00
3 years ago

Nice love story. Next part please.... And please like comment back

$ 0.00
3 years ago