বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বড় দেশগুলোর সমর্থন চায় ঢাকা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ সংকটের একটি টেকসই সমাধানের জন্য বড় দেশগুলোর সমর্থন চায় বাংলাদেশ। বুধবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সম্ভাব্য অনিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক (রোহিঙ্গা শিবিরে খুনের ঘটনা)। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে এ অঞ্চলে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।’ খবর ইউএনবির
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাপান, চীন, ভারত ও কোরিয়ার মতো দেশগুলো যারা মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হওয়ার ফলে যদি পুরো অঞ্চলে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তাহলে তারা তাদের বিনিয়োগের ফলাফল নাও পেতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের আহ্বানে কোনো দেশই দ্বিমত পোষণ করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আপনি মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছেন। এটি ভালো। তবে যদি অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তবে সেখান থেকে আপনি প্রত্যাশিত ফলাফল পাবেন না। সুতরাং, আসুন একসাথে কাজ করি (টেকসই সমাধান খুঁজতে)।’
ড. মোমেন বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার রোহিঙ্গা শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করতে চেয়েছিল এবং শিবিরগুলোকে নিরাপদ রাখার প্রয়াসে সেখানে ইন্টারনেটের ফোরজি নেটওয়ার্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে যে শিবিরগুলো থেকে মেয়ে ও শিশু পাচার হচ্ছে এবং পাচারের অংশ হিসেবে পাচারকারীরা উচ্চ-গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্মার্টফোনের মাধ্যমে মেয়ে ও শিশুদের ছবি শেয়ার করছে।
ড. মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো ইন্টারনেট বন্ধের বিরোধিতা করেছে এবং এটিকে তাদের মূল ইস্যু বানিয়েছে।
সম্প্রতি তার কুয়েত সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য প্রথম থেকেই কুয়েত বাংলাদেশকে সমর্থন করে আসছে এবং ‘তারা আমাদের সমর্থন করবে’।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সেনা অভিযান এবং রাখাইন প্রদেশে গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম সময়সীমা ঠিক হলেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে ঘোষণা দেয়ায় সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো উদ্যোগ নিলেও, এ বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
খুব ভালো লিখেছেন। আমার লেখা ঘুরে আসবেন।