বাংলার প্রকৃতি

6 31
Avatar for mottakin123
4 years ago

প্রকৃতির রূপসী কন্যা আমাদের এই বাংলাদেশ। সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় এদেশ প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য ও সম্পদে ভরপুর। এদেশের নদী, মাঠ, অরণ্য আর পাহাড়ের রূপ দেখে আমরা মুগ্ধ হই। এদেশের দিগন্ত জোড়া ফসলের ক্ষেত, দখিনা বাতাসে দোল খায় মাঠের ফসল। সবুজের বুক চিরে বয়ে গেছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও কর্ণফুলির মতো বড় বড় নদী। বাংলার গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর ও মনোরম। কৃষকের হালচাষ, রাখালের বাঁশির সুর, আম, জাম, কলা, নারিকেল, তাল, সুপারির বনবীথি। পাখির কলরবে এখানে সূর্য ওঠেÑ পাখির ডানায় ভর করে সন্ধ্যা নামে। জলময় প্রশস্ত বিলের পানিতে সবুজ পাতার গালিচার উপর সহ¯্র শাপলা ফুলের শুভ্র হাসি প্রাকৃতিক শোভার এক অনুপম রূপ, এক অতুলনীয় ছবি।
এই রূপ মাধুর্যে আবেগাপ্লুত হয়ে কবি গুরু লিখেছেনÑ ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’ তাঁর কবিতা, গানে তিনি বাংলার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। যুগে যুগে রতœগর্ভা বাংলা মায়ের কোলে জন্ম নিয়েছেন, জসিম উদ্দিন, জীবনানন্দ দাশ, মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো প্রতিভাবান এবং দেশপ্রেমিক সন্তান। যারা তাঁদের কলমের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধশালী করেছেন। তাঁদের উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্মের মধ্যে রয়েছেÑ ‘নকশী কাঁথার মাঠ, রূপসী বাংলা, মেঘনাদবধ’ কাব্যের মতো বিখ্যাত সব কাব্যগ্রন্থ। তাছাড়া আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম আমাদের এই বাংলায়। নজরুল ছিলেন এক অনন্য প্রতিভা। গান, নাটক, উপন্যাস, কবিতা, গজলের মতো সৃষ্টিকর্মে তিনি আমাদের বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের লেখার প্রেরণা যুগিয়েছে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা উপাদান। কবি জীবনান্দ দাশের কবিতায় বাংলাদেশের প্রকৃতির রং ও রূপের বিচিত্র প্রকাশ ঘটেছে। কবি বাংলাদেশের অসংখ্য নদীর সমাবেশ দেখে একে ‘জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাঙলা’ বলে অভিহিত করেছেন। বাংলার প্রকৃতি তাঁর কবিতায় নতুন পরিচয়ে ধরা পড়েছে। প্রকৃতি প্রেমিক এই কবি প্রকৃতি থেকেই তাঁর কবিতার রূপরস সংগ্রহ করেছেন। তাইতো তাঁর কবিতায় উঠে এসেছেÑ
আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে-এই বাংলায়; হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে; হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে; কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল ছায়ায়; ষড় ঋতুর লীলাভূমি আমাদের এ বাংলাদেশ ঘন সবুজের আল্পনায় ছাওয়া। ঋতুর পালাবদলের সাথে সাথে বদলে যায় আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্যপট। দৃষ্টিনন্দন ফুলের শোভায় বিমোহিত হই আমরা। আমরা পুলকিত হই রঙ-বেরঙের পাখির কলকাকলিতে। বাংলা মায়ের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যে অভিভূত হয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতায়, লিখেছেনÑ নমঃ নমঃ নমঃ সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি! গঙ্গার তীর, ¯িœগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি। অবারিত মাঠ, গগণললাট চুমে তব পদধূলি ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।
ভাটি বাংলার রূপের দৃশ্য একটু ব্যতিক্রমী। সেই রূপের সুধা পান করেÑ মরমী কবি হাছন রাজা, শাহ্ আব্দুল করিম মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছেন তাদের গানের মধ্য দিয়ে। প্রকৃতিই তাদেরকে ভাবুক করে তুলেছে এবং সেই ভাবের সাগরে ডুবে গিয়ে তারা লিখেছেনÑ লোকে বলে বলে রে, ঘর বাড়ি ভালা নায় আমার, কী ঘর বানাইমো আমি শূন্যেরও মাঝার। (হাছন রাজা)
কোন মিস্তরী নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়, ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায়।’ (শাহ আব্দুল করিম)। এভাবে বাংলা মায়ের সন্তানেরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাঁর রূপলাবণ্যে মুগ্ধ হয়ে, তাকে ভালোবেসে নিজের জীবন স্বার্থক করে গেছেন। সবুজের চাদরে ঢাকা আমাদের এই দেশ। এই দেশের প্রাকৃতিক শোভা আমাদের মুদ্ধ করে। যে দিকে তাকাই সে দিকেই ঘন সবুজের আচ্ছাদন। পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের ভাষায়Ñ
বনের পরে বন চলেছে বনের নাহি শেষ/ ফুলের ফলের সুবাস ভরা একোন পরীর দেশ। ধন-ধান্যে পুষ্পে ভরা সোনার দেশ, সবুজ দেশ, সুন্দর দেশ-আমাদের এই বাংলাদেশ। শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মতো সুন্দর বাংলাদেশ। এদেশের সবুজ প্রকৃতি আমাদের হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরে দেয়। আমরা মনে প্রাণে দেশমাতাকে ভালোবাসি

5
$ 0.00
Avatar for mottakin123
4 years ago

Comments

Good one..support me back bro

$ 0.00
User's avatar Din
4 years ago

Nice

$ 0.00
4 years ago

nc

$ 0.00
4 years ago