তার থেকেও বেশি কিছু

0 11
Avatar for moli
Written by
3 years ago



প্রায় এক ঘন্টা ধরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি। হাঁটু পর্যন্ত লম্বা চুলগুলোকে কিছুতেই বাধতে পারছি না। কতরকমভাবে বাধছি কিন্তু কোনোটাই মনে ধরছে না আমার। মাঝে মাঝে তো ইচ্ছে করে চুলগুলোকে কেঁচি দিয়ে ঘ্যাচাং করে কেটে ছোট করে ফেলি। কিন্তু তখনই মনে পড়ে সায়ন ভাইয়ার কথা। লম্বা চুল উনার অনেক পছন্দ। যদিও আমার চুলের প্রসংশা কোনোদিনই করেন নি উনি। তাতে কি লম্বা চুল উনার পছন্দ এটাই বড় কথা।

আমার পেছনে সোফায় বসে চুপচাপ আমার কাজ দেখে চলেছে বেস্টু সারা। তার মুখের অবস্থা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমার কাজে প্রচুর বিরক্ত সে। তার বিরক্তি দমাতে আমিই বললাম

" কিরে মুখটাকে এমন কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানিয়ে রেখেছিস কেনো? "

আমার কথায় চেচিয়ে বলে উঠলো সারা

" তো কি করবো? রাতে ফোন করে বললি আজ যেনো একটু তারাতাড়ি তোদের বাসায় চলে আসি। তোর কথামতো চলেও এলাম। কিন্তু আসার পর থেকেই তুই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছিস। না নিজে কিছু বলছিস আর না আমাকে কিছু বলতে দিচ্ছিস। তোর কাজ দেখতে দেখতে আমি হাঁপিয়ে উঠেছি অথচ তুই করতে করতে হাঁপাচ্ছিস না। "

" রিল্যাক্স, এতো হাঁপাস না পরে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবি। "

"ফাজলামো বন্ধ করবি প্লিজ। ব্যাপার কি বলতো আজ তোর মুড এতো ভালো কেনো আর সাজুগুজুই বা করছিস কেনো? "

"আমার মুড অলটাইম ভালো থাকে। আর সাজুগুজুর কি দেখলি সামান্য কাজল, লিপস্টিক আর চুলটা বাধছি।"

"তোর জন্য এটুকুই অনেক সাজ। সে যাই হোক যাবি তো ভারসিটি কিন্তু হাবভাব দেখে তো মনে হচ্ছে বয়ফ্রেন্ডর সাথে ডেটিংএ যাচ্ছিস। "

"তার থেকেও বেশি কিছু। "

"মানে?"

"আরে ভারসিটিতে সায়ন ভাইয়ার সামনে যাবো না? "

"সেতো রোজই যাস তাহলে আজ এতো হম্বিতম্বি কেনো রে?"

"কারণ আজ থেকে আমার নিউ মিশন শুরু। "

"কিসের মিশণ? "

"সায়ন ভাইয়াকে আমার ভালোবাসাটা বোঝানোর মিশন। "

"এটা কি তুই আজ নতুন শুরু করলি নাকি এটাতো সেই তিন বছর আগে থেকেই শুরু করেছিস। "

" কিন্তু এটাই শেষ চেষ্টা। এবার আর না পারলে উনাকে সারা জীবনের জন্য হারিয়ে ফেলবো আমি। "

"তোর কি মনে হয় তিন বছরে যে তোর ভালোবাসা বুঝলো না সে এইকয়দিনেই তোর ভালোবাসা বুঝবে? "

সারার কথায় বুক চিরে বেরিয়ে এলো একটা দীর্ঘশ্বাস। আমি নিজেও জানি সায়ন ভাইয়া এতো সহজে মেনে নিবেন না আমায়। উনার সব অপমান সহ্য করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে রেখেছি আমি। এখন শুধু একটাই চাওয়া উনি যেনো আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পারেন।

" কিরে কি ভাবছিস? "

" না কিছু না। "

" যেচে অপমানিত হতে যাবি?"

" ধুর অপমানিত হতে যাবো কেনো। আর তুই কি বলতো কোথায় আমাকে সাহস দিবি তা না আমায় আরো দুর্বল করে দিচ্ছিস। "

" আমি তোকে দুর্বল করে দিচ্ছি? "

" তা নয়তো কি। একটা কথা কি জানিস বেস্টফ্রেন্ড হচ্ছে গ্লুকজের মতো। দুজনের কাজই হচ্ছে দুর্বল হয়ে গেলে শক্তি যোগান দেওয়া। "

" হয়েছে তোর মহামূল্যবাভ ভাষণ থামা। এখানে বস আমি চুল বেধে দিচ্ছি। "

অবশেষে সারা সমস্যার সমাধান স্বরূপ চুলে ক্রিসক্রস বেণী করে দিলো। সবুজ থ্রিপিস, মাথায় বেণী, হাতে চিকন ফিতার কালো ঘড়ি, চোখে হালকা কাজল, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক ব্যাস আমি তৈরি। সারার সাথে বেরিয়ে পরলাম ভারসিটির উদ্দেশ্য।

আমি আর সায়ন ভাইয়া একই ভারসিটিতে পড়ি। উনি মাস্টার্সে আর আমি অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে। আপু অন্য ভারসিটিতে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে। আমি আরেকটা ভারসিটিতে সুযোগে পেয়েছিলাম কিন্তু সায়ন ভাইয়া এইখানে পড়েন বলে এই ভারসিটিতে ভর্তি হয়েছি।

🍁🍁

ভারসিটিতে ঢুকতেই চোখ পরলো ক্যাম্পাসে। ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন সায়ন ভাইয়া। কি সুন্দর করে হাসছেন উনি। এই হাসিটাই তো সারাজীবন দেখতে চাই আমি।

সারাকে ক্লাসে পাঠিয়ে সায়ন ভাইয়ার কাছে গেলাম। আমাকে দেখেও কোনো ভাবান্তর হলো না উনার। অথচ উনার সব ফ্রেন্ড আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আমি মিষ্টি করে হেসে উনাকে বলে উঠলাম

" আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে সায়ন ভাইয়া। একটু এদিকে আসবেন? "

" আমার সাথে তোর আবার কিসের কথা? "

" সেটা শুনলেই বুঝতে পারবেন। এখন একটু ওদিকে চলুন না প্লিজ। "

আমার কথায় উঠে দাঁড়ালেন উনি। উনার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার সাথে যেতে হচ্ছে উনাকে। দুজনেই চলে আসছিলাম তখনই উনার ফ্রেন্ড রাহুল ভাইয়া বলে উঠলেন

"হেই মাইশা তোমায় আজ দারুণ লাগছে। "

উনার কথায় কেমন অস্বস্থি হচ্ছে আমার। তবুও মুচকি হেসে বললাম

" ধণ্যবাদ, ভাইয়া। "

" এসব নেকামো করার জন্য আমার সময় নেই। তারাতাড়ি আয়। "

সায়ন ভাইয়ার কথায় চলে এলাম উনার সাথে। বড় বটগাছটার নিচে এসে বললাম

" এসব হচ্ছেটা কি ভাইয়া? "

" কিসব হচ্ছে? "

" আপনি জানেন না আমি কিসের ব্যাপারে কথা বলছি? "

" ভণিতা না করে কি বলতে চাইছিস সেটা বল। "

" আপনি কি জানেন না আপনার আর আপুর বিয়ের কথা চলছে? "

" হ্যাঁ, জানি তো। "

" আপনি কি বিয়েটা করবেন? "

" না করার কি আছে। তোকে আমি আগেও বলেছি মা যাকে আমার জন্য পছন্দ করবে আমি তাকেই বিয়ে করবো।"

" আপনি এটা করতে পারেন না সায়ন ভাইয়া। "

" কেনো পারি না? "

"কারণ আমি আপনাকে ভালোবাসি। "

" এই তোর লজ্জা করে না। তোকে বারবার ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও বেহায়ার মতো আমাকে ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিস। "

" না করে না। আমি আপনাকে এতো ভালোবাসি আপনি কখনোই তার মূল্য দেননি। আমাকে একটু বলবেন প্লিজ কেনো আপনি আমায় ভালোবাসেন না। "

" তোর মতো বেহায়া মেয়েকে আর যাই হোক ভালোবাসা যায় না। "

"আমি বেহায়া? "

" অভিয়েসলি, এতোকিছুর পরেও তুই আমার পেছনে পড়ে আছিস। মিনিমাম সেল্ফ-রেস্পেক্টটুকুও নেই তোর মাঝে। "

উনার কথায় চোখ থেকে টপটপ করে পানি পরছে। কাউকে সত্যি ভালোবাসলেই বোধ হয় আমরা বেহায়া হয়ে যাই।

" এসব ন্যাকা কান্না বন্ধ কর। বিয়ে আমি মালিশাকেই করছি। "

" কিন্তু আপু যদি আপনাকে বিয়ে না করে? "

" এই মিহির আহমেদ সায়নকে রিজেক্ট করার যোগ্যতা তোর বোনের নেই। তবে আমি জানি মালিশা আমাকে ভয় পায়। প্রমিস করছি ওর মন থেকে সব ভয় দূর করে দেবো। ওভারঅল আমি মালিশাকেই বিয়ে করছি সেটাও তোরই চোখের সামনে। গট ইট?"

আর একমিনিটও দাঁড়ালেন না উনি। গটগট করে চলে গেলেন আমার সামনে থেকে। সায়ন ভাইয়া যেটা বলে সেটাই করে। তাহলে কি সত্যি সত্যিই আপু রাজি হয়ে যাবে?

" কিরে এবারেও মানলো না তো? "

সারার কথার কোনো জবাব দিলাম না। কিই বা বলার আছে আমার।

" এই তুই না বললি বেস্টফ্রেন্ড হলো গ্লুকজের মতো। তাই তোকে শক্তি দিতে চলে এলাম। একদম মন খারাপ করবি না। উনি একদিন তোকে ঠিকই বুঝবে। শুধু একটাই চিন্তা সেদিন খুব দেরি না হয়ে যায়। "

" জীবনের শেষ নিঃশ্বাসের আগেও যদি উনি আমাকে ভালোবাসার কথা বলেন তাহলেও আমি উনাকে মেনে নেবো। "

🍁🍁

ক্লাস শেষ করে মাঠে হাঁটছি আমি আর সারা। তখনই কানে এলো রাহুল ভাইয়ার কন্ঠ।

" হেই মাইশা বাসায় চলে যাচ্ছো?"

" জ্বি ভাইয়া। "

"চলো আজকে তোমাদের দুজনকে ফুচকা ট্রিট দেই। "

সারা বললো " কেনো ভাইয়া? "

"এমনি আজকে আমার মুড অনেক ভালো তো তাই ভাবলাম তোমাদের ট্রিট দিই। "

মুড ভালো থাকলেই ট্রিট দেয় এটা আজকে নতুন শুনলাম। তাও আবার ফ্রেন্ডদের নয় জুনিয়রদের। এমনিতেই আমি ফুচকা পাগল তার ওপর উনি এতো করে বললেন তাই আর না করতে পারলাম না। খাওয়া শেষে চলে এলাম বাসায়। কিন্তু বাসায় এসেই এতো ভালো একটা খবর পাবো ভাবতে পারিনি আমি।

প্রায় এক ঘন্টা ধরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি। হাঁটু পর্যন্ত লম্বা চুলগুলোকে কিছুতেই বাধতে পারছি না। কতরকমভাবে বাধছি কিন্তু কোনোটাই মনে ধরছে না আমার। মাঝে মাঝে তো ইচ্ছে করে চুলগুলোকে কেঁচি দিয়ে ঘ্যাচাং করে কেটে ছোট করে ফেলি। কিন্তু তখনই মনে পড়ে সায়ন ভাইয়ার কথা। লম্বা চুল উনার অনেক পছন্দ। যদিও আমার চুলের প্রসংশা কোনোদিনই করেন নি উনি। তাতে কি লম্বা চুল উনার পছন্দ এটাই বড় কথা।

আমার পেছনে সোফায় বসে চুপচাপ আমার কাজ দেখে চলেছে বেস্টু সারা। তার মুখের অবস্থা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমার কাজে প্রচুর বিরক্ত সে। তার বিরক্তি দমাতে আমিই বললাম

" কিরে মুখটাকে এমন কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানিয়ে রেখেছিস কেনো? "

আমার কথায় চেচিয়ে বলে উঠলো সারা

" তো কি করবো? রাতে ফোন করে বললি আজ যেনো একটু তারাতাড়ি তোদের বাসায় চলে আসি। তোর কথামতো চলেও এলাম। কিন্তু আসার পর থেকেই তুই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছিস। না নিজে কিছু বলছিস আর না আমাকে কিছু বলতে দিচ্ছিস। তোর কাজ দেখতে দেখতে আমি হাঁপিয়ে উঠেছি অথচ তুই করতে করতে হাঁপাচ্ছিস না। "

" রিল্যাক্স, এতো হাঁপাস না পরে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবি। "

"ফাজলামো বন্ধ করবি প্লিজ। ব্যাপার কি বলতো আজ তোর মুড এতো ভালো কেনো আর সাজুগুজুই বা করছিস কেনো? "

"আমার মুড অলটাইম ভালো থাকে। আর সাজুগুজুর কি দেখলি সামান্য কাজল, লিপস্টিক আর চুলটা বাধছি।"

"তোর জন্য এটুকুই অনেক সাজ। সে যাই হোক যাবি তো ভারসিটি কিন্তু হাবভাব দেখে তো মনে হচ্ছে বয়ফ্রেন্ডর সাথে ডেটিংএ যাচ্ছিস। "

"তার থেকেও বেশি কিছু। "

"মানে?"

"আরে ভারসিটিতে সায়ন ভাইয়ার সামনে যাবো না? "

"সেতো রোজই যাস তাহলে আজ এতো হম্বিতম্বি কেনো রে?"

"কারণ আজ থেকে আমার নিউ মিশন শুরু। "

"কিসের মিশণ? "

"সায়ন ভাইয়াকে আমার ভালোবাসাটা বোঝানোর মিশন। "

"এটা কি তুই আজ নতুন শুরু করলি নাকি এটাতো সেই তিন বছর আগে থেকেই শুরু করেছিস। "

" কিন্তু এটাই শেষ চেষ্টা। এবার আর না পারলে উনাকে সারা জীবনের জন্য হারিয়ে ফেলবো আমি। "

"তোর কি মনে হয় তিন বছরে যে তোর ভালোবাসা বুঝলো না সে এইকয়দিনেই তোর ভালোবাসা বুঝবে? "

সারার কথায় বুক চিরে বেরিয়ে এলো একটা দীর্ঘশ্বাস। আমি নিজেও জানি সায়ন ভাইয়া এতো সহজে মেনে নিবেন না আমায়। উনার সব অপমান সহ্য করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে রেখেছি আমি। এখন শুধু একটাই চাওয়া উনি যেনো আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পারেন।

" কিরে কি ভাবছিস? "

" না কিছু না। "

" যেচে অপমানিত হতে যাবি?"

" ধুর অপমানিত হতে যাবো কেনো। আর তুই কি বলতো কোথায় আমাকে সাহস দিবি তা না আমায় আরো দুর্বল করে দিচ্ছিস। "

" আমি তোকে দুর্বল করে দিচ্ছি? "

" তা নয়তো কি। একটা কথা কি জানিস বেস্টফ্রেন্ড হচ্ছে গ্লুকজের মতো। দুজনের কাজই হচ্ছে দুর্বল হয়ে গেলে শক্তি যোগান দেওয়া। "

" হয়েছে তোর মহামূল্যবাভ ভাষণ থামা। এখানে বস আমি চুল বেধে দিচ্ছি। "

অবশেষে সারা সমস্যার সমাধান স্বরূপ চুলে ক্রিসক্রস বেণী করে দিলো। সবুজ থ্রিপিস, মাথায় বেণী, হাতে চিকন ফিতার কালো ঘড়ি, চোখে হালকা কাজল, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক ব্যাস আমি তৈরি। সারার সাথে বেরিয়ে পরলাম ভারসিটির উদ্দেশ্য।

আমি আর সায়ন ভাইয়া একই ভারসিটিতে পড়ি। উনি মাস্টার্সে আর আমি অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে। আপু অন্য ভারসিটিতে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে। আমি আরেকটা ভারসিটিতে সুযোগে পেয়েছিলাম কিন্তু সায়ন ভাইয়া এইখানে পড়েন বলে এই ভারসিটিতে ভর্তি হয়েছি।

🍁🍁

ভারসিটিতে ঢুকতেই চোখ পরলো ক্যাম্পাসে। ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন সায়ন ভাইয়া। কি সুন্দর করে হাসছেন উনি। এই হাসিটাই তো সারাজীবন দেখতে চাই আমি।

সারাকে ক্লাসে পাঠিয়ে সায়ন ভাইয়ার কাছে গেলাম। আমাকে দেখেও কোনো ভাবান্তর হলো না উনার। অথচ উনার সব ফ্রেন্ড আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আমি মিষ্টি করে হেসে উনাকে বলে উঠলাম

" আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে সায়ন ভাইয়া। একটু এদিকে আসবেন? "

" আমার সাথে তোর আবার কিসের কথা? "

" সেটা শুনলেই বুঝতে পারবেন। এখন একটু ওদিকে চলুন না প্লিজ। "

আমার কথায় উঠে দাঁড়ালেন উনি। উনার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার সাথে যেতে হচ্ছে উনাকে। দুজনেই চলে আসছিলাম তখনই উনার ফ্রেন্ড রাহুল ভাইয়া বলে উঠলেন

"হেই মাইশা তোমায় আজ দারুণ লাগছে। "

উনার কথায় কেমন অস্বস্থি হচ্ছে আমার। তবুও মুচকি হেসে বললাম

" ধণ্যবাদ, ভাইয়া। "

" এসব নেকামো করার জন্য আমার সময় নেই। তারাতাড়ি আয়। "

সায়ন ভাইয়ার কথায় চলে এলাম উনার সাথে। বড় বটগাছটার নিচে এসে বললাম

" এসব হচ্ছেটা কি ভাইয়া? "

" কিসব হচ্ছে? "

" আপনি জানেন না আমি কিসের ব্যাপারে কথা বলছি? "

" ভণিতা না করে কি বলতে চাইছিস সেটা বল। "

" আপনি কি জানেন না আপনার আর আপুর বিয়ের কথা চলছে? "

" হ্যাঁ, জানি তো। "

" আপনি কি বিয়েটা করবেন? "

" না করার কি আছে। তোকে আমি আগেও বলেছি মা যাকে আমার জন্য পছন্দ করবে আমি তাকেই বিয়ে করবো।"

" আপনি এটা করতে পারেন না সায়ন ভাইয়া। "

" কেনো পারি না? "

"কারণ আমি আপনাকে ভালোবাসি। "

" এই তোর লজ্জা করে না। তোকে বারবার ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও বেহায়ার মতো আমাকে ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিস। "

" না করে না। আমি আপনাকে এতো ভালোবাসি আপনি কখনোই তার মূল্য দেননি। আমাকে একটু বলবেন প্লিজ কেনো আপনি আমায় ভালোবাসেন না। "

" তোর মতো বেহায়া মেয়েকে আর যাই হোক ভালোবাসা যায় না। "

"আমি বেহায়া? "

" অভিয়েসলি, এতোকিছুর পরেও তুই আমার পেছনে পড়ে আছিস। মিনিমাম সেল্ফ-রেস্পেক্টটুকুও নেই তোর মাঝে। "

উনার কথায় চোখ থেকে টপটপ করে পানি পরছে। কাউকে সত্যি ভালোবাসলেই বোধ হয় আমরা বেহায়া হয়ে যাই।

" এসব ন্যাকা কান্না বন্ধ কর। বিয়ে আমি মালিশাকেই করছি। "

" কিন্তু আপু যদি আপনাকে বিয়ে না করে? "

" এই মিহির আহমেদ সায়নকে রিজেক্ট করার যোগ্যতা তোর বোনের নেই। তবে আমি জানি মালিশা আমাকে ভয় পায়। প্রমিস করছি ওর মন থেকে সব ভয় দূর করে দেবো। ওভারঅল আমি মালিশাকেই বিয়ে করছি সেটাও তোরই চোখের সামনে। গট ইট?"

আর একমিনিটও দাঁড়ালেন না উনি। গটগট করে চলে গেলেন আমার সামনে থেকে। সায়ন ভাইয়া যেটা বলে সেটাই করে। তাহলে কি সত্যি সত্যিই আপু রাজি হয়ে যাবে?

" কিরে এবারেও মানলো না তো? "

সারার কথার কোনো জবাব দিলাম না। কিই বা বলার আছে আমার।

" এই তুই না বললি বেস্টফ্রেন্ড হলো গ্লুকজের মতো। তাই তোকে শক্তি দিতে চলে এলাম। একদম মন খারাপ করবি না। উনি একদিন তোকে ঠিকই বুঝবে। শুধু একটাই চিন্তা সেদিন খুব দেরি না হয়ে যায়। "

" জীবনের শেষ নিঃশ্বাসের আগেও যদি উনি আমাকে ভালোবাসার কথা বলেন তাহলেও আমি উনাকে মেনে নেবো। "

🍁🍁

ক্লাস শেষ করে মাঠে হাঁটছি আমি আর সারা। তখনই কানে এলো রাহুল ভাইয়ার কন্ঠ।

" হেই মাইশা বাসায় চলে যাচ্ছো?"

" জ্বি ভাইয়া। "

"চলো আজকে তোমাদের দুজনকে ফুচকা ট্রিট দেই। "

সারা বললো " কেনো ভাইয়া? "

"এমনি আজকে আমার মুড অনেক ভালো তো তাই ভাবলাম তোমাদের ট্রিট দিই। "

মুড ভালো থাকলেই ট্রিট দেয় এটা আজকে নতুন শুনলাম। তাও আবার ফ্রেন্ডদের নয় জুনিয়রদের। এমনিতেই আমি ফুচকা পাগল তার ওপর উনি এতো করে বললেন তাই আর না করতে পারলাম না। খাওয়া শেষে চলে এলাম বাসায়। কিন্তু বাসায় এসেই এতো ভালো একটা খবর পাবো ভাবতে পারিনি আমি।

চলবে......

Sponsors of moli
empty
empty
empty

Thank You

2
$ 0.00
Sponsors of moli
empty
empty
empty
Avatar for moli
Written by
3 years ago

Comments