vul

1 10
Avatar for mobile
Written by
4 years ago

#গল্প ----ভুল

পর্ব--০৩

""""আর প্রেম নয়,,, এবার সোজা বিয়ে,,

কার্ড ছাপাতে দিয়ে দিয়েছি অলরেডি"""

মাইশার ফোন ম্যাসেসটা দেখে মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। গলা শুকিয়ে গেছো।

তলে তলে তাহলে এতো দুর!!!

মাইশা কি তাহলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?? বা যাওয়ায় প্লান করছে?

ম্যাসেস টা দোখার পর ওর মোবাইলটা আগের জায়গায় রেখে আমি আবার আয়নার সামনে দাড়াইলাম।

নিজেকে প্রশ্ন করছি

কি আছে নিলয় এর মাঝে যে,,, ওর জন্য আজ আমি আমার ভালোবাসাকে হারাতে চলছি?

ওদিকে মাইশা ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়ে এসে আমাকে দেখে বললো,,,, সেকি তুমি এখনো দাড়িয়ে আছো কেন?

গলাটা শুকিয়ে গেছে,,, এক গ্লাস পানি দিবা?

টেবিলে আছে নিয়ে খাও। আর সরো আমাকে আজ তারাতারি অফিসে যেতে হবে।

নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে।

যে মেয়েটা অফিসে যাওয়ার আগে প্রতিদিন আমাকে ৩-৪ বার দেখে নিতো কিছু মিসিং কি না। আর আজ সে????

মানুষ কতো তারাতারি পরিবর্তন হতে পারে মাইশাকে না দেখলে হয়তো জানতাম ই না।

টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে পানি পান করে বেরিয়ে পড়লাম অফিসে যাওয়ার জন্য।

অফিসে নিজের রুমে বসে আছি এমন সময় বসের কল আসলো।

হ্যালো স্যার বলুন।

আপনি আমার রুমে আসুন তো কথা আছে।

স্যারের রুমে চলে গেলাম।

আমাকে দেখে স্যার বললো।

কি সমস্যা আপনার??

ক কই কিছু না তো স্যার

কিছু না তাহলে অফিসে এসে এরকম করে থাকেন কেন? কাজে মন নাই। সব সময় টেন্স দেখায় কেন আপনাকে?

আমি চুপ.....

কি সমস্যা কি খুলে বলুন। ভাবির সাথে ঝামেলা??

নাকি অন্য কিছু?

আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ই আছি,,,কিছু বলছি না। আর বলবই বা কি??

যে আমার স্ত্রী অন্য কারো সাথে পরকীয়া করছে সেই জন্য??

দেখুন আপনার যে সমস্যাই হোক না কেন। সেটা কালকের মধ্যেই মিটিয়ে নিবেন।

এভাবে অফিস চলে না।

অফিসে কাজ থাকে সেগুলো তো করতে হবে তাই না?

জ্বী স্যার....

আপনাকে কাল ছুটি দেওয়া হলো। আপনি আপনার সমস্যা সমাধান করে তারপর অফিসে আসবেন।

এখন আসুন আপনি।

আমি স্যারকে সালাম দিয়ো চলে আসলাম নিজের রুমে।

চেয়ারে বসে বসে ভাবছি

কি কপাল আমার,,,,

আমি কিছুদিন ধরে চিন্তিত সেটা স্যার বুঝলেও যে বোঝার সে বুঝে না।

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করলাম।

অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতে একটু দেরি হয়ে গেলো।

বাসায় এসে দেখি মাইশা বসে আছে।

আমাকে দেখে বললো

তারাতারি ফ্রেস হয়ে আসো

খাবে।

আমার আজ শরীর টা ভালো নাহ। তাই তারাতারি ঘুমাতে হবে।

আমিও হুমম বলে ওয়াশ রুম গেলাম।

ফ্রেস হয়ে এসে ডিনার করে শুয়ে পরলাম দুজনে।

আমি মাইশার বিপরিত মুখে শুয়ে আছি।

তা দেখে মাইশা আমাকে টেনে চিৎ করে নিয়ে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।

আমিও আর বাধা দিলাম না। যদিও এখন ওর এসব ন্যাকামো ভালোবাসা আমার আর ভালো লাগে নাহ।

মেয়ে মানুষ যে এতোটা পারফেক্ট অভিনয় করতে পারে সেটা মাইশাকে না দেখলে হয়তো জানতাম না।

মাইশা ঘুমাচ্ছে আর আমি ঘুমানোর চেষ্টা করছি।

কিন্তু কি জানেন তো কষ্টের রাত গুলো খুব লম্বা হয় আর খুব পেইনফুল হয়।

*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: "নিঃস্বার্থ ভালোবাসা"*

অনেক ক্ষন এপাশ ওপাশ করছি কিন্তু ঘুম আসছে না। মাথায় একটাই চিন্তা কেন করছে সে এমন???

আমার বুকের উপর মাইশার রাখা মাথা টা সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে রুমের ভিতর পায়চারি করছি। আর কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজছি।

এমন সময় মনে হলো মাইশার মোবাইলটা একটু দেখবো??

নাকি দেখবো না??

হ্যা ও না এর মাঝে মাইশার মোবাইলটা হাতে নিলাম।

নিয়ে ইনবক্সে গেলাম।

ইনবক্সে ঢুকেই দেখি নিলয়ের সাথে সারা দিন ভালই ভালই কথা হয়েছে মাইশার।

কৌতুহল নিয়ে ওপেন করলাম ওদের ম্যাসেস গুলো দেখার জন্য।

কিন্তু ম্যাসেস গুলো দেখে আমি অবাক।

মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো আমার ম্যাসেস গুলো দেখে। মাইশা প্রেগনেন্ট???

মাইশা আজ অফিস না করে হসপিটালে গেছে!!!

(((আপনাদের বোঝানোর জন্য ম্যাসেস গুলো তুলে ধরা হলো)))

ম্যাসেস গুলো হলো>>>

.

প্রথম থেকে >>>>

হসপিটাল পৌছাইছো?? (নিলয়)

হুম,,, মাত্র আসলাম

ডক্টরের সাথে কথা বলেছো?

নাহ সিরিয়ালে আছি।

আচ্চা,,, আচ্ছা, ডক্টর কি বলে আর টেস্ট করাতে বললে সব করবে। আর রিপোর্ট এ কি আসে জানাবে ওকে?

আচ্চা....

১ ঘন্টা পর আবার কথা বলে ওরা।

সব কিছু পজেটিভ আছে নিলয়।। মাত্রই টেস্ট করে রিপোর্ট নিয়ে বের হলাম।

সত্যি!!!

হুমম,,,ডক্টর বলেছে,,, বাবুটা ঠিক পজিশন এই আছে।

Wow........আচ্ছা এখন বাসায় যাও।। তোমার বর কে এসব জানাবে কখন?? ওর তো এখন জানা প্রয়জন।

আজ না,, কাল ওকে জানাবো।

আমি এখন বাসা যাবো।

বাই।

মাইশার পেট এ নিলয় এর সন্তান???

আমি দাড়িয়ে আছি না বসে আছি ভুলে গেছি। মাথা যেন আর কাজ করছে না। চার দিক কাঁপছে বলে মনে হচ্চে।

হাত পা কাঁপছে।

মাইশার মোবাইলটা আমার হাত থেকে পরে গেলো বিছানার ওপর।।

দিক বেদিক না পেয়ে হাত পা ছেড়ে দিয়ে বসে পড়লাম ফ্লোরে।

কি করবো না করবো বুঝতে পারছি না।

মাইশার দিকে তাকিয়ে দেকি ঘুমাচ্ছে।

যদিও আগে থেকে জানতাম মাইশা নিলয় প্রনয় করছে।

তবুও মনের মাঝে একটু বিশ্বাস বা আশা ছিলো

মাইশা হয়তো ওর ভুল বুঝবে।

ফিরে আসবে আমার কাছে।

কিন্তু নাহ,,, ভুল আমার।

আমিই বেহায়ার মতো এখনো ওদের মাঝে পরে আছি।

কিন্তু নাহ

আর নাহ

থাকবো না ওদের মাঝে

আজ এখন চলে যাবো

দুরে কোথাও।

অজানা কোন শহরে।

ফ্লোর থেকে উঠে দাড়ালাম।

ড্রিম লাইটের আলোয় নিজের জামা কাপর সব ব্যাগে গুছিয়ে নিলাম।

মাইশা এখনো ঘুমাচ্ছে।

চলে যাওয়ার আগে টেবিলে বসে একটা চিঠি লিখে রাখলাম।

রেখে ব্যাগটা নিয়ে মাইশাকে শেষ বারের মতো দেখে নিয়ে বেরিয়ে পরলাম রুম থেকে।

কিন্তু এখন আমি যাবো কোথায়??

এতো রাতে থাকবো কোথায়?

এসব ভাবতেই তানিয়ার কথা মনে পরলো।

আর কোন কিছু না ভেবে তানিয়াকে কল দিলাম।

তিন বার রিং হওয়ার পর কল ধরলো তানিয়া।

হ্যলো?? এতো রাতে কল করলি কেন?

খুব বিপদে পরছি দোস্ত। একটু হেল্প কর না।

কি!!! কি বিপদ?

আমাকে আজ রাতটা তোদের বাসায় একটি থাকতে দিবি??

হোয়াট!!! তুই........

প্লিজ এখন কোন প্রশ্ন করিস না।

পরে সব বলবো তোকে।

আচ্ছা তুই কোথায় আছি বল। আমি আমাদের ড্রইভারকে পাঠাচ্ছি।

একটু পর একটা ব্লাক কী কালারের গাড়ি এসে দাড়ালো আমার সামনে। আমিও উঠে পরলাম।

তানিয়ার বাসায় পৌচ্ছে দেকি তানিয়া আমার জন্য বসে আছে।

আমাকে দেখে বললো কি হয়েছে তো??

সব কিছু খুলে বললাম তানিয়া কে।

তারপর তানিয়া আমাকে নিয়ে একটা রুম গিয়ে বললো,,, এখানে আজ রাত টা ঘুমাও। কাল দেখছি কি কার যায়।

ধন্যবাদ..... টেনশন করিস না। আমি কালকেই দিনাজপুর চলে যাবো(দিনাজপুর এ আমার বাসা)

চুপ....... কোন কথা বলবি না। যা গুমিয়ে পর। আর হ্যা মাইশাকে নিয়ে আর ১ মিনিট ও ভাববি না।

তানিয়া চলে যাওয়ার পর আমি শুয়ে পড়লাম।

কিন্তু ঘুম আসছে না।

বার বার সেই ম্যাসেস গুলো ভাসছে চোখের সামনে।

আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে মাইশা এসব করছে।

কতো স্বপ্ন ছিলো দুজনের।

আমাদের প্রথমে কি বেবি হবে এবং কি নাম রাখবো সেটা নিয়ে ঝগরা করতে কতরে যে দুজনে কতো রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি

সে সিসাব নেই।

কিন্তু সেই মাইশাই কিনা আজ অন্য কারো বেবি পেটে নিয়ে মহা খুশি।

সকাল বেলা দরজায় কারো ঠকঠক শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।

দরজা খুলে দেখি মাইশা। হাতে একটা কাগজ নিয়ে দারিয়ে আছে।

> চলবে?

1
$ 0.00
Avatar for mobile
Written by
4 years ago

Comments

Nice article

$ 0.00
4 years ago