#শূন্য_থেকে_ভালোবাসা
#পর্ব_১৪_এবং_শেষ
অাকাশ ময়নাকে মারতে থাকে,একটা সময় ময়না অার সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,অার ফ্লোরে ছিটিয়ে পড়া অনেক গুলো কাঁচের টুকরো ময়নার হাতে ঢুকে যায়,অাকাশের সে দিকে কোন খেয়াল নাই,
অাকাশ,থাক তুই এভাবে,তুই অাজ থেকে অার অামার কাছে অাসতে পারবি না,বলে অাকাশ ময়নাকে রুমে অাটকে সে বের হয়ে চলে যায়,বেশ অনেকটা সময় পর রুমে অাসে,অার রুমে এসে দেখে সারা ফ্লোর রক্তে লাল হয়ে অাছে,পাশেই ময়না অজ্ঞান হয়ে পড়ে অাছে,
ময়নার দিকে নজর পড়তেই দেখে,ময়নার হাত কেটে রক্ত বেয়ে পড়তেছে,অাকাশ পাগলের মত হয়ে যায়,ইশ মেয়েটাকে তখন মনে হয় বেশিই মেরে ফেলেছি,
ময়না..?
এই ময়না,
ময়নার কোন রেসপন্স নাই,
অাকাশ,ঘাবরে যায়,অাল্লাহ ওর কিছু হয়ে গেলো নাতো,
ওর কিছু হয়ে গেলে অামি শেষ,রোহান.....?
এই রোহান..?
রোহানকে ডাক দেয়,
রোহান,অাকাশের ডাক শুনে রুমে দৌড়ে অাসে,
ভাইয়া কি হয়েছে..?
অাকাশ,ময়না...!
রোহান, ময়নার অবস্থা দেখে ওহ সিট,ভাই এভাবে না মারলেও পারতি,
রোহান অাগেই জানতো এমন কিছু হবে,কারন অাকাশের রাগ সম্পর্কে সে অবগত,
অাকাশ,দেখ মাথায় রাগ ছিলো, পুরা রাগ ওর উপরে ঝেড়েছি,তখন এতকিছু মাথায় ছিলো না,ভাই তুই একটা কাজ কর, ডাক্তার করিম সাহেবকে ফোন কর, অার এখনি বাসায় অাসতে বল,
রোহান,অাচ্ছা দাড়া দেখছি কি করা যায়,অার এখন তো অনেক রাত অাসে কিনা কো জানে...!
রোহান ডক্টর করিমকে ফোন করে,এটা অাকাশদের ঘরোয়া ডাক্তার,
রোহান,হা ভাইয়া ফোন করেছি উনি অাসছে,
একটু পর
ডক্টর করিম সাহেব এসে,দেখি কি হয়েছে,
দেখার পড়ে,এই ওষুধ গুলো লেখে দিয়ে গেলাম সেগুলো খাইয়ে দিবেন,
অার রোহান তুমি একটু বাহিরে যাও,তোমার ভাইয়ার সাথে একটু কথা অাছে,রোহান বাহিরে চলে যায়,
মিস্টার অাকাশ,এখন তো একটু অন্তত রাগটা কমাও বিয়ে করেছো,
ঘরের বউকে কেউ এভাবে মারে,
অাকাশ মাথা নিচু করে অাছে,
হাতের অবস্থাটা দেখেছো তুমি,কাঁচের টুকরো গুলো যেভাবে বিঁধেছে অার একটু হলে রগ কাটা যেত,অার সারা শরীর এ মাইরের দাগ,প্লিজ এবার একটু অন্তত রাগটাকে দমিয়ে ফেলো,
অাকাশ,ক্ষমা করবেন স্যার, এমনটা অার হবে না,
ডক্টর, মেডিসিন গুলো সময় মত খাইয়ে দিও, অামি ঘুমের ঔষধ দিয়ে গেছি,এখন অাপাদত ভালো অাছে,বলে ডক্টর সাহেব চলে যায়,
অাকাশ,নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে কেন যে মেয়েটাকে এভাবে মারলাম,
রোহান...?
রোহান,হা ভাইয়া..?
অাকাশ,মেডিসিন গুলো একটু নিয়ে অায় এখনো বেশি রাত হয়নি,
রোহান,মেডিসিন,অানতে যায়,একটু পর,ধর ভাইয়া মেডিসিন,
অামি রুমে অাছি কিছু লাগলে অামায় ডাক দিস,বলে রুমে চলে যায়
অাকাশ,অাচ্ছা,
ময়নাকে খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে,
অাকাশ গিয়ে ময়নার পাশে বসে,
ময়নার চেহারার দিকে নজর পড়তেই অাকাশ লক্ষ করে ময়নার চেহারাটা কেমন ফেকাসে হয়ে অাছে,মেয়েটাকে অামি এই ভাবে মারলাম, নিজেকে নিজে ধিক্কার জানায়,হাতটা কতখানি কেটে গেছে,
ময়নার হাতটা অাস্তে অাস্তে উপরে তুলে,
তারপর ময়নার ক্ষতস্থান টাতে অালতো করে একটা চুমু খায়,অাবার যায়গাতে রেখে দেয়,তারপর ময়নার বুকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ঘুমাই পড়ে,
সকাল,বেলা ময়নার ঘুম ভাংতেই দেখে,শরীরটা ভাড় ভাড় লাগছে,
কি হলো,শরীরটা ভাড় ভাড় লাগতেছে কেনো,
ভালো করে খেয়াল করে দেখে কেউ একজন তাকে জড়াই ধরে অারামে ঘুম যাইতেছে,
হুহ,বদ লোক দেখো না,রাতে অামাকে মেরে এখন অাবার অামাকেই জড়িয়ে ধরে ঘুম যাচ্ছে,😐
ডাইনোসর,একটা
ময়না,চুপ করে শুয়ে অাছে,একটু পর অাকাশের ঘুম ভাঙ্গে,
দেখে ময়না তার দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে অাছে,এই তুমি কখন উঠেছো,
ময়না,অনেক অাগে..?
অাকাশ,তাহলে অামাকে ডাকলে না কেন..?
ময়না,হুহ ডাকতে অামার বয়েই গেছে,
অাপনি কে যে অাপনাকে ডাকতে যাবো,
অাকাশ,কে মানি জানো না,অামি তোমার হাসবেন্ড..!
ময়না,হুহ অাসছে,কালকে অামাকে কি ভাবে মারছে,
এখন অাসছে হাসবেন্ড,
অাকাশ,অামার বউটা খুব ব্যথা পাইছে তাই না,
অাচ্ছা দেখি এখন অাদর করে দিচ্ছি,
ময়না,লাগবে না অামাদ অাদর😏
অাকাশ,তোমার না লাগলেও অামার লাগবে,
বলে ময়নাকে কাছে টেনে নেয়,তারপর অাস্তে অাস্তে ময়নার ঠোঁটের দিকে এগোতে থাকে,ময়নার ঠোঁট জোড়া অনবরত কাঁপতেছে,
অাকাশ,ময়নার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে করে নেয়,
বেশ অনেকটা সময় পড়ে ছাড়ে...!
দুজনেই হাপাইতেছে,😪
ময়না,অাচ্ছা অামি ভুল করলে অাপনি কি সব সময় অামাকে এ ভাবে মারবেন...?😔
অাকাশ,নাহ কখনোই না,কালকে একটু বেশি রাগ উঠে গেছিলো,তাই মাথা ঠিক ছিলো না,অার অামি অামার সোনা বউকে কখনোই মারবো না,বলে জড়িয়ে ধরে,
কিন্তু কখনো যদি অামাকে ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করো জানে মেরে দিবো,
ময়না, নাহ কখনো যাবো না,
তারপর অাকাশ ময়নাকে ছেড়ে উঠে পড়ে,
উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়,পরে নাস্তা এনে ময়নাকে নাস্তা খাইয়াই দেয়,কারন ময়না অসুস্থ, নিজের হাতে খেতে পারবে না,
অাকাশ,ময়না সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অফিস যায় না,
এভাবে কিছুদিন কেটে যায়,ময়না এখন পুরোপুরি ভাবে সুস্থ, হটাৎ একদিন, অাকাশ রোহানকে ডাক দেয়...?
রোহান,হা ভাইয়া বল কি জন্য ডেকেছিস,
অাকাশ,রুমে বসে অাছে পাশে ময়নাও,
দেখ তোকে যে জন্য ডেকেছি,ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিস,
রোহান,হা ভাইয়া বল...!
অাকাশ,দেখ জীবন টা তোর তাই ডিসিশন টাও তুই নিবি,
তুই যদি ময়নার মিতাকে সত্যি ভালোবেসে থাকিস তাহলে তুই ময়নার মিতাকে জীবন সঙ্গী করে নিতে পারিস,
ময়না তো অাকাশের কথা শুনে অাকাশ থেকে পড়ছে মত অবস্থা,
এদিকে অাকাশের কথা শুনে,রোহানের যেন গলার পানি শুখিয়ে গেছে,
রোহান চুপ করে অাছে,
অাকাশ,কিরে কথা বলছিস না কেন...?
রোহান,ভাইয়া, অামি সত্যি মেয়েটাকে ভালোবাসি,মেয়েটা কি করে তা নিয়ে অামার মাথা ব্যথা নেই,শরীর যদি সব হয়, তাহলে বিয়ে না করে পতিতালয় গিয়ে চাহিদা মিটালেই হয়,অামার শরীর চাইনা,অামার ভাবীর মিতাকে চাই,
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে,ভাবির মিতা কি অামাকে মেনে নিবে নাকি,
অার তা ছাড়া পল্লী থেকে ওকে ছাড়বে কিনা...!
অাকাশ,এটা তুই অামার অার তোর ভাবির উপরে ছেড়ে দে,
তুই রেডি হয়ে নে বাকিটা অামারা সামলে নিচ্ছি,
রোহান,অাচ্ছা ভাইয়া,রোহান রুমে চলে যায়,
অাকাশ,অার ময়না গিয়ে ময়নার মিতাকে নিয়ে অাসে,মোটা অংকের একটা টাকা দিয়ে,
অাগামী শুক্রবারে রোহান অার ময়নার মিতার বিয়ে,
দেখতে দেখতে সময় প্রায় চলে এসেছে,
অার মাত্র দুই দিন বাকি অাছে,
হটাৎ অাকাশের মা অার বাবা লাগেজ নিয়ে হাজির,
রোহান,বাবা তোমারা..?
বাবা,হা তো অাসবো না,তোরা দুই ভাই তো অামাদেরকে পর মনে করিস,তাই বিয়ে করবি বলিস নি,তাই তোরা অামাদেরকে ভালো না বাসতে পারিস, কিন্তু তোরা তো অামাদের সন্তান, অামরা তোদের ভালোবাসি,অার ছেলের বিয়ে বলে কথা,মিস করা যায় নাকি.,
রোহান,হা বাবা ভালো করেছো,
বাবা,কিরে অাকাশ কোথায়..?
রোহান,ভাইয়া উপরের রুমে অাছে,
বাবা,তুই দারা অামি যাচ্ছি,
অাকাশ, হটাৎ চমকে যায়,বাবা তুমি..?
বাবা,কেন অাসতে পারিনা নাকি,অামার ছেলের বিয়ে অামাদের কি অধিকার নাই,ছেলের বিয়েতে অাসার..?
অাকাশ,বাবা কি বলছো তুমি এসব,অামি তোমাকে এমনিতে অাজ ফোন দিতাম,
ময়না এসে অাকাশের বাবাকে ছালাম করে,
অাকাশের বাবা,মা বেচে থাকো,
অাকাশ,তোর মাও এসেছে,প্লিজ অামার দিকে তাকিয়ে অন্তত কোন রাগারাগি করিস না,মাত্র দুইদিন এই তো তারপর অামরা চলে যাবো,
ময়না,বাবা চলে যাবেন মানি,
কোথাও যেতে পারবেন না অাপনি,
এখানেই থাকতে হবে অাপনাদের,
বাবা,মা রে অামাদের কি সেই কপাল অাছে নাকি যে ছেলে সন্তান নিয়ে এক সাথে শুখে শান্তিতে থাকবো,
ময়না,না বাবা যাওয়া চলবে না,
বাবা,অাকাশ অামার বউমা একদম তোর মায়ের মত হয়েছে,
বিনয়ী, মানে অাকাশের অাসল মার কথা বলছে,
কথা বলে বাপ ছেলে বউমা মিলে নিচে নামে,
ময়না, গিয়ে মা কে সালাম করে,
মা,জড়িয়ে ধরে,শুখি হও মা তোমরা,
অাকাশ,অন্যদিকে মুখ ফিরে দাড়িয়ে অাছে,মহিলাটাকে সে মার চোখে কখনোই দেখতে পারে না,
অাকাশের মা,অাকাশের কাছে গিয়ে,হটাৎ
অাকাশ, কি করছো কি তুমি,পা ছাড়ো,
অাকাশের মা,না অামি পা ছাড়বো না,তুই যতক্ষন না অামাকে মা বলে বুকে টেনে নিবি কান্না করতে করতে,
অাকাশ,ময়নার দিকে তাকায়,ময়না চোখের ভাষায় করুন শুরে অনুরোধ করছে,
অাকাশ,মা পা ছাড়ো প্লিজ বলে, মা কখনো সন্তানের পায়ে পড়তে হয়না,মা যা হয়েছে হয়েছে,অামি সব ভুলে গিয়েছি,
বলে বুকে টেনে নেয়,অার কান্না করে দেয়,
অাকাশের বাবা,বাহ মা ছেলের কি মোহাব্বত, অামরা তো পর অামাদের কেউ বুকে টেনে নেয় না,
বাবা তুমিও অাসো,অাকাশ তারপর তার বাবা মাকে জড়াই ধরে,
অাকাশের বাবা,সবাই অাছে কিন্তু অামার ছোট বউমা কই..?
রোহান,বাবা ও উপরের রুমে অাছে,অাপনারা এসেছেন সে জানেনা,
পড়ে রোহান গিয়ে ডেকে নিয়ে অাসে,
ময়নার মিতা অাই মিন রোহানের বউ
হবে কিন্তু হয় নাই,
সে এসে বাবা -মা দুজনকেই সালাম করে,
পড়ে অাকাশের মা,, তোমরা একটু দাড়াও অামি অাসছি বলে লাগেজটা খুলে দুইটা বক্স অানে,তারপর বক্স থেকে গলার হাড় বের করে দুই বউকেই দুইটা দেয়,
এগুলা তোদের জন্য,
সবাই তো মহাখুশী, সবার মধ্যে মিল মোহাব্বত হয়ে গেছে,
অাকাশ,বাবা অাজ থেকে তোমরা দুজন ও এই বাড়িতে থাকবে,
অাকাশের,বাবা তা না হয় থাকবো,কিন্তু একটা শর্ত অাছে,
অাকাশ,কি শর্ত..?
অামার বড় ছেলের বিয়ে অামি অাবার দেখবো,
অাকাশ,বাবা অামরা তো একবার বিয়ে করেছি,
অাকাশের বাবা,তা না হয় করেছিস,কিন্তু অনুষ্ঠান তো করিস নি,অাত্নিয় সজন কাউকে তো দাওয়া দিস নি,শুক্রবারে অাবার বিয়ে হবে তোদের,দুই ছেলের বিয়েই অামি একসাথে ধুমধাম করে দিবো,
অাকাশ,অাচ্ছা বাবা,তোমার যা ভালো লাগে,
পরে শুক্রবার চলে অাসে,অনেক অাত্নিয় সজন অাসে,রোহান অার অাকাশের ধুমধাম করে বিয়ে হয়,
(অার একটা কথা, ময়না অার ময়নার মিতার পরিচয় হাইড রাখে তারা তাদের বাবা মার কাছে,এবং সবার কাছেও,এতিম বলে চালিয়ে দেয়)
বাসর রাতে,রোহান রুমে ধুকে পড়ে,
অন্যদিকে অাকাশ ও রুমে ধুকে ময়না বউ সেজে ইয়াাা বড় একটা ঘোমটা দিয়ে খাটে বসে অাছে,
অাকাশের উপস্থিতি টের পেয়ে ময়না খাট থেকে নেমে এসে সালাম করে,
অাকাশ,এই এই কি করছো,তোমার স্থান অামার বুকে,পায়ে নয়,
যাও অজু করে এসো দুজনে মিলে নামাজ পড়বো,
তারপর দুজনে মিলে অজু করে নামাজ পড়ে,নামাজ পড়া শেষে অাকাশ ময়নাকে কোলে করে খাটে নিয়ে যায়,
এই অামার না অনেক দিনের স্বপ্ন,অামার একটা রাজকন্যা হবে,
ময়না,সরম পেয়ে,তো অামি কি করতে পারি..?😇
অাকাশ,তোমার কিছু করতে হবে না,সব অামিই করছি,
বলে ময়নার দিকে এগোতে থাকে,
তারপর কি অার ভাই জয় বাংলা কনসার্ট হবে অারকি😃
যান ভাই অার কত শুনতে ইচ্ছে হয় অন্যের ইতিহাস,
নিজে বিয়ে করে ইতিহাস তৈরি করুন,
সমাপ্ত,
ধন্যবাদ সকলকে এতদিন পাশে থেকে সাপোর্ট করার জন্য,
এ পর্য়ন্ত সবাই ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন,খোদা হাফেজ...!
0
14