অবশ্যি এই সময়টাতে টিভিতে কিছুই দেখায়না। তারপরেও ইজিচেয়ারে বসে দুলতে দুলতে চ্যানেল পাল্টাচ্ছি কারণ লোকাল চ্যানেলগুলোতে বারবার দেখাচ্ছে যে শহরের জেলখানা থেকে এক ভয়ঙ্কর খুনী পালিয়েছে। টিভিতে খুনির ছবিও দেখাচ্ছে। ফোন করে কেউ পুলিশে খবর দিয়েছে যে তাকে দেখা গেছে এই আবাসিক এলাকায়। গা শিউরে ওঠার মতো খবর।
ক্যঁরররররচচচ!
চমকে উঠলাম আমি! নিচতলার সদর দরজাটা খুলে ফেলেছে কেউ। মরচে ধরেছে কলকব্জায়, যতই আস্তেই খোলা হোক না কেন, আওয়াজ পাওয়া যাবেই।
টিভিটা বন্ধ করে দিলাম। ঘরটাতে খোলা জানালা দিয়ে চাঁদের আলো আসছে। আবছা আলোয় পথ দেখে এগিয়ে গেলাম দরজার সামনে। নিচ তলায় পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছে বাড়িটা। ভয় পেলে মানুষের শিরদাঁড়া বেয়ে কি যেন নেমে যায় জানেনই তো, আমিও তাই অনুভব করলাম।
নাহ, মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ওপরে আসার আগেই আমার পালাতে হবে। নিজের জীবন বাঁচাতে হবে আমাকে।
খোলা জানালার কাছে এগিয়ে গেলাম। শাদা মোটা একটা পাইপ নেমে গেছে ওপর থেকে নিচে। জানালা দিয়ে বের হয়ে হাত বাড়িয়ে আঁকড়ে ধরলাম পাইপটা। নামতে শুরু করলাম। পাইপটার চারদিনে কি সুন্দর আইভিলতা প্যাঁচানো ছিলো। দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে বোধহয়। ধুর ছাই! জাহান্নামে যাক আইভিলতা।
পাইপ বেয়ে পিছলে পিছলে আধ মিনিটেই নিচে নেমে এলাম। যাক বাবা! বাঁচা গেলো। মহাকর্ষ না অভিকর্ষ, কি যেন একটা আছে না? সেটাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না।
দৌড়োতে শুরু করলাম। পেছন থেকে গুম গুম আওয়াজ আসছে। এত সহজ না বাছাধন। ওক কাঠের পেল্লায় দরজা ভাঙ্গার আগেই আমি নিরাপদ জায়গায় চলে যাবো!
বেশ খানিকটা পথ দৌড়ে এসেছি। দূর থেকে দেখছি শোবার ঘরে আলো জ্বলছে। ঘরে ঢুকেছে অবশেষে!
খিক খিক করে হাসছি আমি। কি মজাটাই না হচ্ছে এখন সেখানে!
ঘরে এখন পুলিশ ঢুকেছে। আমিই ওদের ফোন করেছিলাম!
শোবার ঘরে ঢুকে যখন পুলিশ ব্যাটারা দেখবে বিছানায় গলাকাটা দুটো লাশ, লালচেকালচে রক্ত থইথই করছে ঘরময়, কি মজাটাই না হবে!
সামনে আমার এখন আরেকটা বাড়ি। রক্তাক্ত ধারালো ছুড়িটা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি সেদিকে। হাসিমুখে, নতুন শিকারের খোঁজে।
(বিদেশী গল্প অবলম্বনে)
Amazing